ঢাকা, শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫
৭ চৈত্র ১৪৩১, ২০ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫
৭ চৈত্র ১৪৩১, ২০ রমজান ১৪৪৬

এবার ভারতের যুদ্ধজাহাজ পারস্য উপসাগরে

কালের কণ্ঠ অনলাইন
কালের কণ্ঠ অনলাইন
শেয়ার
এবার ভারতের যুদ্ধজাহাজ পারস্য উপসাগরে

ওমান সাগর ও পারস্য উপসাগরীয় এলাকায় এবার যুদ্ধ জাহাজ মোতায়েন করেছে ভারত। ইরাকের দুটি মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর উদ্ভুত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নিলো ভারত।

ভারতের নৌবাহিনী বলছে, নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে ও সমুদ্র বাণিজ্যের নিশ্চয়তা প্রদানে তারা যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে। যুক্তরাষ্ট্র-ইরান উত্তেজনার মধ্যে যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় তাদের এই প্রস্তুতি।

ভারতীয় নৌবাহিনীর বরাত দিয়ে এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, উপকূলীয় এলাকায় নজর রেখেছে ভারত। যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সক্রিয় অবস্থায় রাখা হয়েছে নৌবাহিনীকে। নজরদারি চলবে আকাশপথেও।

কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে আনন্দবাজার পত্রিকায় বলা হয়, ‘আমেরিকার প্রতি বিশ্বস্ত থেকেও ইরানকে চটাতে চাইছে না ভারত।

চাবাহার বন্দরে বিপুল বিনিয়োগ, ইরানের সহায়তায় পাকিস্তানকে এড়িয়ে আফগানিস্তানসহ পশ্চিম এশিয়ার বাণিজ্যিক যোগাযোগ বাড়ানো, পরে ফের তেল আমদানির রাস্তা খুলে রাখার মতো বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভারতের কাছে।’

এ প্রেক্ষিতে নয়া দিল্লিকে তেহরানের কাছ থেকে দূরে রাখাটা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে বিশ্লেষকরা। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সে অভিপ্রায় বাস্তবায়ন হওয়াটা কঠিন হবে বলেই মনে করেন তারা।

আগামীতে আমেরিকা ও ইরানের মধ্যকার দ্বন্দ্ব কতদূর যেতে পারে তাই নিয়ে শঙ্কিত গোটা বিশ্ব ।

ইতিমধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অর্থনীতির উপর । উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে ভারতে বছরে চার হাজার কোটি ডলার বিদেশি মুদ্রা আসে যা দেশের মোট বিদেশি মুদ্রা আমদানির অর্ধেকেরও বেশি। ওমান ও পারস্য উপসাগরের মধ্যবর্তী ক্ষুদ্রাকার হরমুজ প্রণালীর মাধ্যমে তেল উত্তোলনের ক্ষেত্রেও ভারতের যথেষ্ট নির্ভরতা রয়েছে। অশান্তি বাড়লে পারস্য উপসাগরের হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও করছে ভারত।

বাড়তি নিরাপত্তার খাতিরে গত বছরই ওমান উপসাগরীয় এলাকায় আইএনএস চেন্নাই ও আইএনএস সুনয়না নামে দু’টি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছিল ভারতীয় নৌসেনা।

এবার আরও সতর্ক পদক্ষেপ নিতে চলেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী । এখনকার উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ৪০০০ টন ওজনের ক্ষেপণাস্ত্রবাহী আইএনএস ত্রিকাণ্ডকেই উপসাগরীয় এলাকায় বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিল ভারতীয় নৌসেনা।

উল্লেখ্য পারস্য উপসাগর দিয়ে দিনে মোটামুটি পাঁচ থেকে আটটি অশোধিত তেলের ট্যাঙ্কার যাতায়াত করে ভারতের। ট্যাঙ্কারে কপ্টার-ডেক থাকলে, প্রয়োজনে যাতে সেখানে নৌবাহিনীর কপ্টার নামানো যায়, তারও বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।

ভারতীয় নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে,  যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে সক্ষম তলওয়ার-ক্লাস ফ্রিগেট যুদ্ধজাহাজ আইএনএস ত্রিকাণ্ড। রাশিয়ার বানানো এই যুদ্ধজাহাজ ২০১৩ সালে ভারতের নৌসেনার হাতে আসে। উপসাগরীয় এলাকার আকাশেও নজরদারি চালাবে ভারতীয় বিমানবাহিনী। তার জন্য সর্বাধুনিক সি-১৭ গ্লোবমাস্টার-৩ এয়ারক্রাফ্টকে উপসাগরীয় এলাকায় পাঠানো হচ্ছে।

ওদিকে ভারতে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আলি শেগেনি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি স্থাপনে ভারত কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করলে সেটিকে স্বাগত জানাবে ইরান। 

তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির জেরে কোনওভাবেই ছাবাহার বন্দরে ভারতের কাজে ব্যাঘাত পড়বে না।

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যেতে চাইছে না ইরান। কিন্তু, নিহত জেনারেল কাসেম সোলেইমানির জনপ্রিয়তা এতটাই ছিল যে, মার্কিন হামলার জবাব না দিলে জনরোষের মুখে পড়তে হতো তেহরানের ক্ষমতাসীনদের। তাই 'প্রতিশোধ' নেওয়া হয়ে গেলে, এবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চাইছে ইরান।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ভারত সরকারের বিরুদ্ধে ইলন মাস্কের এক্সের মামলা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ভারত সরকারের বিরুদ্ধে ইলন মাস্কের এক্সের মামলা
সংগৃহীত ছবি

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কন্টেন্ট অপসারণ করতে বেআইনি আদেশের অভিযোগে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন প্ল্যাটফর্ম এক্স। মুম্বাই থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত ভারত বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে একটি, যারা সরকারিভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কন্টেন্ট অপসারণের জন্য সবচেয়ে বেশি সংখ্যক অনুরোধ জানায়।

মামলাটি ভারত সরকারের সেন্সরশিপ ক্ষমতার বিরুদ্ধে এক্সের সর্বশেষ চ্যালেঞ্জ।

এমন সময়ে এই চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে, যখন ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্টারলিংক ও টেসলা বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারতে প্রবেশের প্রস্ততি নিচ্ছে।

মামলাটি ভারতের তথ্য প্রযুক্তি আইনের একটি বিধানকে কেন্দ্র করা হয়েছে, যার অপব্যবহার করে সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কন্টেন্ট ব্লক করার আদেশ দিয়ে থাকে।

আইনি সংবাদ সম্পর্কিত ভারতীয় ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ‘এক্সের মতে এই বিধানটি তথ্য ব্লক করার ক্ষেত্রে একটি বেআইনি সমান্তরাল কৌশল হিসেবে অপব্যবহার করা হচ্ছে।’

এই সপ্তাহের শুরুতে মামলাটির সংক্ষিপ্ত শুনানিতে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি।

আগামী ২৭ মার্চ দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকের একটি আদালতে এই মামলার শুনানি হবে।

ভারতে কন্টেন্ট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আইনি লড়াইয়ে মাস্কের এই প্ল্যাটফর্মটি নতুন নয়। ২০২৩ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের সমালোচনাকারী টুইট ও অ্যাকাউন্টগুলো অপসারণের আদেশকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করে টুইটার (এক্স-এর আগের নাম)। তখন ভারতীয় আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে প্ল্যাটফর্মটিকে ৬১ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা করে।

প্রায় এক বছর পর এক্স জানায়, নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্ট ও পোস্টগুলোতে সরকারের ব্লক করার আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট আপিল বিচারাধীন রয়েছে।

২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোম্পানিটি এক পোস্টে বলেছিল, ‘আমাদের অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভারত সরকারের ব্লকিং আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট আপিল এখনো বিচারাধীন রয়েছে। আমরা আমাদের নীতি অনুসারে প্রভাবিত ব্যবহারকারীদের এই পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে নোটিশও দিয়েছি।’

পোস্টে আরো বলা হয়, আইনি বিধিনিষেধের কারণে আমরা নির্বাহী আদেশগুলো প্রকাশ করতে পারছি না। তবে আমরা বিশ্বাস করি, স্বচ্ছতার জন্য সেগুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করা অপরিহার্য।

না প্রকাশ করলে জবাবদিহিতার অভাব ও স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত গ্রহণের দিকে পরিচালিত করতে পারে।’

মন্তব্য

তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করলেন প্রেসিডেন্ট

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করলেন প্রেসিডেন্ট
প্রধানমন্ত্রী কামেল মাদৌরি। ছবি : এএফপি

তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ প্রধানমন্ত্রী কামেল মাদৌরিকে নিয়োগের এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে বরখাস্ত করেছেন। তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশটির ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক স্থবিরতার প্রেক্ষাপটে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। 

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সাইদ মন্ত্রীদের কর্মক্ষমতার তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, অনেকেই প্রয়োজনীয় মান পূরণ করেননি।

তিউনিসিয়ার জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেশি। গত মাসে তিনি অর্থমন্ত্রী সিহেম বোঘদিরিকেও বরখাস্ত করেছেন।  

মাদৌরির স্থলাভিষিক্ত হন পূর্বের গণপূর্তমন্ত্রী সারা জাফরানি জেনজরি। যিনি একজন প্রকৌশলী এবং ২০২১ সাল থেকে সরঞ্জাম ও গৃহায়ন মন্ত্রী।

দুই বছরেরও কম সময়ের মধ্যে তিনি তিউনিসিয়ার তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী।

সাইদ ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি ২০২১ সালে এক বিশাল ক্ষমতা দখলের ঘটনা ঘটিয়েছিলেন, যা সমালোচকদের মতে গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা এবং অধিকার হরণ করেছিল। তবে, সাইদের সমর্থকরা বলেছেন, তিনি কয়েক দশক ধরে দুর্নীতিতে জর্জরিত দেশটির অদক্ষতার বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিশ্রুতি পালন করেছেন।

মন্থর প্রবৃদ্ধি ও উচ্চ বেকারত্বসহ গুরুতর আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত ব্যাপক ঋণগ্রস্ত তিউনিসিয়ার মন্ত্রীদের কর্মক্ষমতা নিয়ে সাম্প্রতিক অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাঈদ। শুক্রবার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এক সভায় এক বক্তৃতায় সাইদ বলেন, ‘অনেক সরকারি স্থাপনায় অপরাধী চক্র সক্রিয়। তাদের অবসান ঘটানোর এবং প্রতিটি কর্মকর্তাকে জবাবদিহি করার সময় এসেছে।

উত্তর আফ্রিকার দেশটির সরকারি অর্থব্যবস্থা একটি তীব্র সংকটের মুখোমুখি হয়েছে যার ফলে চিনি, চাল এবং কফিসহ গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সাইদ বলেন, ‘সকল নাগরিকের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা মুক্তির লড়াই চালিয়ে যাব... আমরা সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেব।

’ 

মন্ত্রী ও বিচারকদের বরখাস্ত করার পূর্ণ ক্ষমতা থাকা প্রেসিডেন্ট ২০২৪ সালের আগস্টে মাদৌরিকে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেন। সেই সময় তিনি আরো ১৯ জন মন্ত্রীকে রদবদল করেন। ‘রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ স্বার্থ’ এবং ‘জাতীয় নিরাপত্তার’ প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তিউনিসিয়াও একটি অভূতপূর্ব অভিবাসী সংকটের জন্য ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হচ্ছে, কারণ সাব-সাহারান আফ্রিকা থেকে হাজার হাজার মানুষ ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টায় দেশটিতে আসছে। কর্তৃপক্ষ ভূমধ্যসাগর পার হতে বাধা দেওয়ার পর হাজার হাজার অভিবাসী দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আমরা এবং জেবেনিয়ানার মতো বনে তাঁবুতে বসবাস করছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানায়, ২০২৫ সালে তিউনিসিয়ার বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মাত্র ১.৬ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ঋণের পরিমাণ জিডিপির প্রায় ৮০ শতাংশ, যা ২০১৯ সালে সাইদ ক্ষমতা গ্রহণের আগে ছিল ৬৭ শতাংশ।

মন্তব্য

গাজা ও ইয়েমেনে হামলা : মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান আলী খামেনির

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
গাজা ও ইয়েমেনে হামলা : মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান আলী খামেনির
ছবিসূত্র : এএফপি

গাজায় ইহুদিবাদী ইসরায়েলের আগ্রাসন পুনরায় শুরু হওয়ায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনি এই আগ্রাসনকে বড় ধরনের অপরাধ ও বিপর্যয়কর বলে মন্তব্য করেছেন। ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনার উদ্ধৃতি দিয়ে তেহরান থেকে এএফপি আজ এ খবর জানায়।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা গতকাল বৃহস্পতিবার ফার্সি নববর্ষ ১৪০৪ শুরু হওয়া উপলক্ষে দেওয়া ভাষণের একাংশে এসব মন্তব্য ও আহ্বান তুলে ধরেন।

খামেনি বলেছেন, এ ঘটনা পুরো মুসলিম উম্মাহর সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়, তাই গোটা উম্মাহকে সব ধরনের মতভেদ ভুলে এই অপরাধের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে হবে। ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের সব অঞ্চলের মুক্তিকামী সবাইকে এই বিশ্বাসঘাতকতামূলক ও বিপর্যয়কর অবস্থা মোকাবেলা করতে হবে। যাতে আবারও শিশু হত্যা, ঘরবাড়ি ধ্বংস ও ফিলিস্তিনি জনগণকে শরণার্থী হতে না হয়। 

তিনি আরো বলেন, মার্কিন সরকারও এই বিপর্যয়ের শরিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী মার্কিন সরকারের  সম্মতিতে এই অপরাধযজ্ঞ চালিয়েছে ইসরায়েল।

ইয়েমেনের ওপর ও দেশটির বেসামরিক জনগণের ওপর হামলাও আরো এক অপরাধ, যা অবশ্যই ঠেকাতে হবে।

তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, দামেস্কে ইরানের কয়েকজন সামরিক উপদেষ্টার শাহাদাতবরণ, ইরানি জাতির জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির শাহাদাত এবং এরপর তেহরান ও লেবাননের তিক্ত ঘটনাবলীর কারণে ইরানি জাতি ও ইসলামী উম্মাহ বেশ কয়েকজন মূল্যবান ব্যক্তিত্বকে হারিয়েছে এই ফার্সি বছরে।

লেবানন ও ফিলিস্তিনি জাতির নানা সংকট মোকাবেলার ক্ষেত্রে ইরানি জাতি উদার চিত্তে তাদের লেবাননি ও ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের সহায়তায় বন্যার জোয়ারের মতো সাহায্যের বিপুল চালান পৌঁছে দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা। আর এর মধ্য দিয়েও ইরানি জাতির উচ্চতর মনোবল ও আধ্যাত্মিক শক্তি ফুটে উঠেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

খামেনি এ প্রসঙ্গে প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রতি ইরানি জনগণের বিস্ময়কর সহায়তা, বিশেষ করে ইরানি নারীদের স্বর্ণালংকার উপহার দেওয়ার ঘটনাকে ইরানের ইতিহাসের অবিস্মরণীয় ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ইরানি জাতির দৃঢ় সংকল্প ও ইচ্ছাশক্তি, প্রস্তুতি ও আধ্যাত্মিক মনোবল প্রিয় এই জাতির ভবিষ্যৎ ও সব সময়ের জন্য মূল্যবান পুঁজি এবং এর ফলে এই দেশটির ওপর আল্লাহর অনুগ্রহের ধারা অব্যাহত রয়েছে।

সূত্র : এএফপি, বাসস 
 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সুদানে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ দখলে নেওয়ার দাবি সেনাবাহিনীর

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সুদানে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ দখলে নেওয়ার দাবি সেনাবাহিনীর
খার্তুমে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের প্রবেশপথে সুদানের সেনাবাহিনীর সদস্যরা। ছবি : আলঅ্যারাবিয়া

সুদানের নিয়মিত সেনাবাহিনী বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের দিকে অগ্রসর হয়েছিল। আজ শুক্রবার সেনাবাহিনী খার্তুমে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। প্রায় দুই বছর আগে এই প্রাসাদটি আধা সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছিল। সুদানের রাষ্ট্রীয় টিভি এবং সামরিক সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে।

 

সূত্র জানিয়েছে, আধা সামরিক র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) সদস্যদের ধাওয়া করার জন্য সুদানের নিয়মিত সেনাবাহিনী প্রাসাদের আশপাশের এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে। এ বিষয়ে আরএসএফের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, রাজধানী খার্তুমের কিছু কেন্দ্রীয় এলাকায় মাঝেমধ্যে গুলিবর্ষণের শব্দ শোনা গেছে।

জাতিসংঘের মতে, এই সংঘাত বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকটের দিকে পরিচালিত করেছে।

যার ফলে দেশজুড়ে বেশ কয়েকটি স্থানে দুর্ভিক্ষ এবং রোগব্যাধি দেখা দিয়েছে। আধা সামরিক র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এবং সুদানের নিয়মিত সেনাবাহিনী উভয় পক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে, অন্যদিকে আরএসএফের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগও আনা হয়েছে। উভয় পক্ষই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

আরো পড়ুন
উত্তর কোরিয়া পৌঁছেছেন মস্কোর শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা সের্গেই

উত্তর কোরিয়া পৌঁছেছেন মস্কোর শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা সের্গেই

 

২০২৩ সালের এপ্রিলে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আধা সামরিক বাহিনী দ্রুত প্রাসাদ এবং রাজধানীর বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়।

কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সুদানের সশস্ত্র বাহিনী আবার ফিরে এসেছে এবং নীল নদের তীরে প্রাসাদের দিকে অগ্রসর হয়েছে।

আরএসএফ খার্তুম এবং প্রতিবেশী ওমদুরমান এবং পশ্চিম সুদানের কিছু অংশের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। সেখানে তারা দারফুরে সেনাবাহিনীর শেষ শক্ত ঘাঁটি আল-ফাশির দখলের জন্য লড়াই করছে।

রাজধানী দখল করলে সেনাবাহিনীর মধ্য সুদানের সম্পূর্ণ দখল দ্রুত নিতে পারবে এবং দুই বাহিনীর মধ্যে দেশের পূর্ব-পশ্চিম আঞ্চলিক বিভাগ আরো শক্ত হতে পারে। উভয় পক্ষই দেশের অবশিষ্ট অংশের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং শান্তি আলোচনার কোনো প্রচেষ্টা বাস্তবায়িত হয়নি।

বেসামরিক শাসনে পরিকল্পিত রূপান্তরের আগে সুদানের সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল।

সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তার সাবেক ডেপুটি ও আরএসএফ কমান্ডার মোহাম্মদ হামদান দাগলোর মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং এক কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। শুধু বৃহত্তর খার্তুম অঞ্চল থেকেই ৩৫ লাখের বেশি মানুষ নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে, যা যুদ্ধের আগের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি।

এই সংঘাত সুদানকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। উত্তর ও পূর্ব অংশ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, আর পশ্চিম ও দক্ষিণের বেশির ভাগ এলাকা আরএসএফের দখলে।

সূত্র : রয়টার্স

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ