ভারতে ধ্রুপদি ভাষার মর্যাদা পেল বাংলা ভাষা

ডয়চে ভেলে
ডয়চে ভেলে
শেয়ার
ভারতে ধ্রুপদি ভাষার মর্যাদা পেল বাংলা ভাষা
ডয়চে ভেলে

ভারতে বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদি ভাষার স্বীকৃতি দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। বাংলাসহ মোট পাঁচটি ভাষাকে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার নরেন্দ্র মোদি মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাংলা, মারাঠি, পালি, প্রাকৃত ও অসমীয়া ভাষাকে ধ্রুপদি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে। এর আগে সংস্কৃত, তেলেগু, তামিল, মালয়ালম, কন্নড় ও ওড়িয়া ভাষাকে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল।

 এবার আরো পাঁচটি ভাষাকে এই স্বীকৃতি দেওয়া হলো।

কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেছেন, ‘ভারতের অত্যন্ত সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার ক্ষেত্রে এটা একটা ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। প্রকৃত বৈজ্ঞানিক তথ্য, গবেষণা ও ঐতিহাসিক তথ্যের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভবিষ্যতেও অন্য ভাষাকে ধ্রুপদি ভাষার মর্যাদা দিতে একই মাপদণ্ড ব্যবহার করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করে বলেছেন, ‘আমাদের সরকার ভারতের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার কাজ করে। আমরা আঞ্চলিক ভাষাগুলোকে জনপ্রিয় করার বিষয়ে দায়বদ্ধ। আমি অত্যন্ত খুশি যে অসমীয়া, বাংলা, মারাঠি, পালি ও প্রাকৃতকে ধ্রুপদি ভাষার মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই ভাষাগুলি অপূর্ব, তারা আমাদের অসাধারণ বৈচিত্র্যের সাক্ষ্য বহন করে।

ভারতে ধ্রুপদি ভাষা ঘোষণার মাপদণ্ড

জাতীয় স্তরে সাহিত্য একাডেমি ভাষা বিশেষজ্ঞদের কমিটি তৈরি করেছিল। তারা নির্দিষ্ট মাপদণ্ডের ভিত্তিতে কোনো ভাষা ধ্রুপদি কি না, তা নিয়ে সুপারিশ সরকারের কাছে জমা দেয়। 

মূলত পাঁচটি বিষয় এ ক্ষেত্রে দেখা হয়। ওই ভাষায় দেড় থেকে দুই হাজার বছরের ইতিহাস থাকতে হবে, প্রজন্মের পর প্রজন্মজুড়ে সেই ভাষায় কথা বলা বা লেখার ইতিহাস থাকতে হবে, পদ্য ও গদ্য লেখার চল থাকতে হবে এবং শিলালিপি বা ওই ধরনের কোনো প্রমাণ থাকতে হবে। এই ভাষা ও সাহিত্যের বিবর্তন হতে হবে ও আগের ভাষার সঙ্গে বর্তমান ভাষার যোগ থাকবে।

ধ্রুপদি ভাষা হলে কী সুবিধা?

ধ্রুপদি ভাষা হিসেবে কোনো ভাষা স্বীকৃতি পেলে সেই ভাষার প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। ধ্রুপদি ভাষার জন্য জাতীয় পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই ভাষার প্রচার ও প্রসারের জন্য চেয়ার তৈরি করা হয়।

২০২০ সালে সংস্কৃত ভাষার জন্য তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা হয়েছে। তামিলের প্রাচীন পুঁথির অনুবাদ, গবেষণার জন্য কেন্দ্রীয় স্তরে একটি সংস্থা তৈরি করা হয়েছে। কন্নড়, তেলেগু, মালয়ালম ও ওড়িয়া ভাষার জন্যও মহীশূরে সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজেস তৈরি করা হয়েছে। ধ্রুপদি ভাষা কাজের জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।

কৃতিত্ব নেওয়ার প্রতিযোগিতা

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরই বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদি ভাষার মর্যাদা দেওয়ার পেছনে কার কৃতিত্ব বেশি তা নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স-এ পোস্ট করে বলেছেন, ‘আমাদের দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে ভারত সরকার একটি ধ্রুপদি ভাষার মর্যাদা দিয়েছে। অনেক দিন ধরে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কাছে এসংক্রান্ত গবেষণালব্ধ বিপুল তথ্য জমা দিয়ে দাবি করছিলাম যাতে বাংলা ভাষাকে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়।’

মমতা বলেছেন, ‘আজ আমাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হলো। কেন্দ্রীয় সরকার আজ সন্ধ্যায় আমাদের দাবি মেনে নিয়েছে। অন্য কয়েকটি রাজ্যের ভাষা আগে এই স্বীকৃতি পেলেও বাংলাকে বঞ্চিত রাখা হয়েছিল। ভালো লাগছে, আমাদের লড়াইয়ে অবশেষে বাংলা ভাষা এই অভিপ্রেত এবং ন্যায্য স্বীকৃতি পেল।’ এরপর তৃণমূলের নেতা, সমর্থক, সাংসদরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে বলতে থাকেন, মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই বাংলা ধ্রুপদি ভাষার স্বীকৃতি পেল।

কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, ‘বাঙালি হিসেবে গর্ব করার দিন। আপনারা জানেন সাহিত্য একাডেমির অধীনে ভাষা বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি হয়েছিল। সেই কমিটি তাদের সুপারিশ দিয়েছে। সেই সুপারিশের ওপর ভিত্তি করে এই পাঁচটি ভাষাকে ধ্রুপদি ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সব সদস্যকে অসংখ্য ধন্য়বাদ জানাচ্ছি।’

বিজেপি নেতারা এভাবেই পুরো কৃতিত্বটা প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ও সাহিত্য একাডেমির কমিটিকে দিয়েছেন।

কী লাভ হবে?

সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী টিভি১৮কে বলেছেন, ‘এই স্বীকৃতি পাওয়ার ফলে ভবিষ্যতে বাংলা ভাষার উন্নতিতে তার প্রভাব পড়বে।  শিক্ষার ক্ষেত্রে, পরম্পরার ক্ষেত্রে, সাহিত্য পরম্পরার ক্ষেত্রে, গবেষণার ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়বে।’

সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় আনন্দবাজারকে বলেছেন, ‘বাংলার অনেক দিন আগেই এই মর্যাদা পাওয়া উচিত ছিল। সংস্কৃত, দক্ষিণ ভারতীয় ভাষা, ওড়িয়া এই সম্মান আগে পেয়েছে। মনে করা হয় মাগধী অপভ্রংশ থেকে বাংলা ভাষার জন্ম। হিন্দির পর বাংলাই সবচেয়ে বহুল প্রচলিত ভাষা।’ এই সম্মানে বাংলা ভাষার প্রসার বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

জেলেনস্কির নিজ শহরে রুশ হামলায় শিশুসহ নিহত ১৮

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
জেলেনস্কির নিজ শহরে রুশ হামলায় শিশুসহ নিহত ১৮
ছবিসূত্র : ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্সি

কেন্দ্রীয় ইউক্রেনীয় শহর ক্রিভি রিহে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছেন। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা এ খবর নিশ্চিত করেছেন। নিহতদের মধ্যে নয়জন শিশু বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি। জেলেনস্কির এই ক্রিভি রিহ শহরেই বেড়ে উঠেছেন।

স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র একটি আবাসিক এলাকায় আঘাত হেনেছে। ছবিতে নিহত একজনকে খেলার মাঠে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। অন্যদিকে আরো একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ১০ তলা ভবনের একটি ফ্ল্যাটের একটি বড় অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। আহতদের রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পরে দাবি করেছে, একটি রেস্তোরাঁয় ‘ইউনিট কমান্ডার এবং পশ্চিমা প্রশিক্ষকদের’ একটি বৈঠক লক্ষ্য করে তারা একটি ‘নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা’ চালিয়েছে। এ ঘটনায় ৮৫ জন নিহত হয়েছে বলেও তারা দাবি করেছে তবে কোনো প্রমাণ দেয়নি।

ইউক্রেনের সেনাবাহিনী জবাবে বলেছে,  রাশিয়া তার নিন্দনীয় অপরাধ ঢাকতে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। মস্কো সর্বাধিক হতাহতের জন্য একটি ক্লাস্টার ওয়ারহেডসহ একটি ইস্কান্দার-এম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় এই হামলাটি ২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণ-স্কেল আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ক্রিভি রিহতে সবচেয়ে মারাত্মক ছিল। জেলেনস্কি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘শুক্রবারের হামলায় কমপক্ষে পাঁচটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামালা অব্যাহত থাকার একটি মাত্র কারণ হচ্ছে, রাশিয়া যুদ্ধবিরতি চায় না এবং আমরা তা দেখতে পাচ্ছি।’

ক্রিভি রিহ-এর প্রতিরক্ষা প্রধান ওলেকসান্ডার ভিলকুল বলেছেন, একটি আবাসিক এলাকায় আঘাত হেনেছে। তিনি বলেছেন, ‘ক্ষেপণাস্ত্রটি বিস্ফোরিত হয়েছে... অনেক বেশি লোক আহত হয়েছে।

শিশুরা খেলার মাঠে বা তার কাছাকাছি মারা গেছে।’

ক্রিভি রিহ অবস্থিত ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলের প্রধান সেরহি লিসাক বলেছেন, ৪০ জনেরও বেশি লোককে আহত অবস্থায় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং সবচেয়ে ছোট আহতের বয়স মাত্র তিন মাস।

ক্রিভি রিহ-এর প্রতিরক্ষা প্রধান ওলেকসান্ডার ভিলকুল পরে আরো জানান, ‘শহরটিতে ব্যাপক ড্রোন হামলা হয়েছে, যার ফলে কমপক্ষে চারটি স্থানে আগুন লেগেছে।’

তিনি বলেন, ‘ড্রোনের আঘাতে একটি বাড়িতে একজন বৃদ্ধা নারী পুড়ে মারা গেছেন। অন্যত্র আরো পাঁচজন আহত হয়েছেন।’

সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেনে বিদেশী শান্তিরক্ষীদের মোতায়েন করার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্স উভয় দেশের সামরিক প্রধানরা দিনের শুরুতে কিয়েভে জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করেছেন। তবে সহিংসতা থামার তেমন লক্ষণ দেখা যায়নি।

সূত্র : বিবিসি

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ভূমিকম্পে কাঁপল পাপুয়া নিউ গিনি, সুনামি সতর্কতা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ভূমিকম্পে কাঁপল পাপুয়া নিউ গিনি, সুনামি সতর্কতা
প্রতীকী ছবি

ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত পাপুয়া নিউ গিনির একটি দ্বীপ। আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভের রিপোর্ট অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৯। এর কয়েক মিনিটের মধ্যে জোরালো ‘আফটারশক’ (ভূমিকম্পের পরবর্তী কম্পন) হয়, যার মাত্রা ছিল ৫.৩। জোড়া কম্পনের ফলে ওই এলাকায় সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

খবর এবিসি নিউজের।

স্থানীয় সময় অনুযায়ী, শনিবার ভোর ৬টা ৪ মিনিটে প্রথমবার কাঁপে পাপুয়া নিউ গিনির নিউ ব্রিটেন দ্বীপ। ওই দ্বীপের উপকূলের অন্তত ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পের উৎস। এর ফলে সমুদ্রে ঢেউয়ের উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা বেড়ে যায়।

 

আমেরিকার প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি সতর্কতা কেন্দ্র জানিয়েছে, নিউ ব্রিটেন দ্বীপে তিন থেকে নয় ফুট পর্যন্ত হতে পারে ঢেউয়ের উচ্চতা। এ ছাড়াও পাপুয়া নিউ গিনির বেশ কিছু দ্বীপে সুনামির ফলে উঁচু ঢেউয়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রতিবেশী সলোমন দ্বীপপুঞ্জেও এর প্রভাব পড়তে পারে। 

আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, পাপুয়া নিউ গিনিতে শনিবার ভোরে দুটি কম্পনের মধ্যে মাত্র ৩০ মিনিটের ব্যবধান ছিল।

আরো পড়ুন
চাহিদা বাড়ছে বাংকার বাড়ির, পারমাণবিক অস্ত্রের আঘাতেও থাকবে অক্ষত

চাহিদা বাড়ছে বাংকার বাড়ির, পারমাণবিক অস্ত্রের আঘাতেও থাকবে অক্ষত

 

দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর স্বতন্ত্র দ্বীপরাষ্ট্র পাপুয়া নিউ গিনি। এই অংশের অধিকাংশ দ্বীপই ভূমিকম্পপ্রবণ। কারণ, এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভূমিকম্প বলয়ের অন্তর্গত। যে সব দ্বীপে জনবসতি কম, সেখানে ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি তেমন হয় না। তবে কম্পনের ফলে ভূমিধস দেখা দিতে পারে।

 

মন্তব্য

চাহিদা বাড়ছে বাংকার বাড়ির, পারমাণবিক অস্ত্রের আঘাতেও থাকবে অক্ষত

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
চাহিদা বাড়ছে বাংকার বাড়ির, পারমাণবিক অস্ত্রের আঘাতেও থাকবে অক্ষত

ঠিক যেন স্বপ্নরাজ্য। সাজানো-গোছানো বিলাসবহুল প্রকাণ্ড অট্টালিকা। এই বাড়ির সৌন্দর্য বা গঠনশৈলী যে কাউকে মুগ্ধ করবে, তাতে সন্দেহ নেই কোনো। তবে এই বাড়ির ভেতরে ঢুকলে চোখ ছানাবড়া হয়ে যেতে বাধ্য।

বাড়ির নিচেই যে লুকিয়ে রয়েছে আস্ত একটি সামরিক গ্রেডের বাংকার! সাধারণ বোমা তো বটেই, পারমাণবিক অস্ত্রের আঘাত সহ্য করেও যা দাঁড়িয়ে থাকতে পারে অনায়াসেই। সেখানে সঞ্চিত রয়েছে জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সব সামগ্রী, মূল আবাসনের বাসিন্দাদের প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদা বিছানা। অথচ বাইরে থেকে দেখে এই বিপুল কর্মকাণ্ড অনুমান করার উপায় নেই কোনো। হালে নানা বৈশ্বিক কারণে এ জাতীয় বাংকার বাড়ির কদর বাড়ছে।

মাটির নিচে অত্যাধুনিক পন্থায় তৈরি করা হয় ঢাউস সুইমিংপুল। অত্যাধুনিক জিম আর মেডিক্যাল সেন্টার তো আছেই। এসব বাংকার বাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থা অসাধারণ। চলাচলের জন্য থাকে গোপন প্যাসেজ।

তবে সব কিছুতেই থাকে আধুনিকতার নিপাট ছোঁয়া। সাধারণত প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রেহাই পেতে এসব বাড়ি তৈরি করা হলেও মূল লক্ষ থাকে বিলাসী জীবনযাপন।

হালে বিশ্বে বেশ কিছু আন্ডারগ্রাউন্ড বাংকার কম্পানি গঠন করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটি সেরা কম্পানি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াভিত্তিক স্ট্র্যাটেজিকেলি আর্মার্ড অ্যান্ড ফর্টিফায়েড এনভায়রনমেন্টস (এসএএফই)। এই জাতীয় বাংকার বাড়ি তৈরি করতে সর্বনিম্ন খরচ ১০ লাখ মার্কিন ডলার (১২ কোটি ১৩ লাখ টাকার ওপরে)।

কোনো কোনো বাংকার বাড়ি তৈরিতে লাগে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (এক হাজার ২১৪ কোটি ১২ লাখ টাকা)। আগ্রহীরা নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী এসব বাংকার বাড়িতে ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য যোগ করতে পারে। এসব বাংকার বাড়ির দরজা বোমা মেরেও ওড়ানো যাবে না। জানালাও ভাঙা সম্ভব নয়। বায়োমেট্রিক ডোর এন্ট্রি সিস্টেমে এসব বাংকারে ঢুকতে হবে। প্রতিটি বাংকারের নিচে ৩০ ফুট গভীর একটি পরিখা থাকবে। বাংকারের ওপরে বা আশপাশে হেলিকপ্টার বা ড্রোন উড়তে দেখলে এই পরিখার পানি দিয়ে জলকামান ছোড়া যাবে। 

সূত্র : আরব নিউজ।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

চীনের মহাকাশ স্টেশন প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছে পাকিস্তান

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
চীনের মহাকাশ স্টেশন প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছে পাকিস্তান
সংগৃহীত ছবি

প্রথম বিদেশি দেশ হিসেবে চীনের মহাকাশ স্টেশন প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যোগদান করতে যাচ্ছে পাকিস্তান। গতকাল শুক্রবার পাকিস্তান স্পেস অ্যান্ড আপার অ্যাটমোস্ফিয়ার রিসার্চ কমিশনের (সুপারকো) পরিচালক শাফাত আলী এ তথ্য জানান। খবর ডনের।

শাফাত আলী বলেন, চীনে প্রশিক্ষণের জন্য দুটি যোগ্যতার ভিত্তিতে দুজন মহাকাশচারী পাঠাবে পাকিস্তান।

এটিকে একটি মাইলফলক পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে পাকিস্তানি মহাকাশচারীদের প্রশিক্ষণের জন্য চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি সই হয়েছে। এর মধ্যে পিএইচডিধারী, অভিজ্ঞ পাইলট, শারীরিকভাবে সবলসহ বিভিন্ন যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচিত প্রার্থীরা এতে অংশ নেবেন। 

আরো পড়ুন
ইরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করলেই ভালো হবে : ট্রাম্প

ইরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করলেই ভালো হবে : ট্রাম্প

 

শাফাত আলী আরো বলেন, চীন প্রাথমিকভাবে মহাকাশচারী প্রশিক্ষণকে শুধু তার নাগরিকদের জন্য সংরক্ষিত করেছিল।

কিন্তু এখন এই সুযোগটি পাকিস্তানের কাছে প্রসারিত হয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যে বৃহত্তর বন্ধন এবং বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ