ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১০ এপ্রিল ২০২৫
২৭ চৈত্র ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১০ এপ্রিল ২০২৫
২৭ চৈত্র ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৬
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত গৌরীপুরের ইয়াসিন

‘বাবারে কই গিয়া তুমি মরলা, অহন আমি তোমারে কিবায় পাইয়াম’

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
শেয়ার
‘বাবারে কই গিয়া তুমি মরলা, অহন আমি তোমারে কিবায় পাইয়াম’
ছবি: কালের কণ্ঠ

‘আমি কিবায় ঘর লইয়াম। আমার তো সবই শেষ। তা অইলে আমার বাইচ্যা থাইক্যা লাভ নাই। আমার ইয়াসিনরে তোমরা আইন্যা দেও’ এভাবেই আহাজারি করতে করতে মুর্চা যান মা ফিরোজা খাতুন।

ফের বলে উঠেন,‘বাবারে কই গিয়া তুমি মরলা, সাত সমুদ্র ১৩ নদী পাড় অইয়া আমি কিবায় যাইয়াম, আর কিবায় তোমারে আমি পাইয়ম? 

এভাবেই কান্না করছিলেন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধে নিহত ইয়াসিন মিয়া শেখের (২২) মা ফিরোজা খাতুন। গত দুই দিন ধরে ছেলের শোকে কাঁদতে কাঁদতে প্রায় পাগল তিনি। যারাই তাদের বাড়িতে যাচ্ছেন তাদের ছেলের লাশটা ফেরত আনার ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেন।

ইয়াসিন মিয়ার বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের মরিচালি গ্রামে।

তিনি ওই গ্রামের মৃত আবদুস সাত্তার শেখের ছেলে। গত ২৭ মার্চ ইয়াসিন নিহত হলেও স্বজনেরা জানতে পারেন ঈদের পরদিন মঙ্গলবার। রাশিয়ায় থাকা ইয়াসিনের বন্ধু মেহেদী হাসান মুঠোফোনে ইয়াসিনের বড় ভাই রুহুল আমিনকে মৃত্যুর খবর দেন। ইয়াসিনের মৃত্যুর খরব পাওয়ার পর থেকে পরিবারে মাতম চলছে।

জানা যায়, ছোট বেলা থেকেই ইয়াসিনের স্বপ্ন ছিল ছেলে সেনাবাহিনীতে চাকরি করার। কিন্তু বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এ অবস্থায় জেদ কাজ করে তার। পরে ১৫ লাখ টাকা খরচ করে রাশিয়ায় একটি কম্পানিতে চাকরি নেন তিনি। কয়েক মাস পর চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।

রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়ার ছবি ও ভিডিও নিয়মিত নিজের ফেসবুকে প্রকাশ করতেন। কিন্তু ঈদের পরদিন গত মঙ্গলবার তার মৃত্যুর খবর পেয়েছে পরিবার। যুদ্ধ চলাকালে মিসাইল হামলায় তিনি প্রাণ হারান বলে জানিয়েছেন রাশিয়ায় থাকা পরিচিতজনেরা।

দ্বিতীয়বারের মতো আজ শুক্রবার সকালে ইয়াসিনের বাড়িতে গেলে দেখা যায় নম্রভদ্র ও সুপরিচিত ইয়াসিনের মৃত্যুর খবর শুনে আত্মীয়-স্বজন ছাড়াও দুর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসছেন। ভেতরে প্রবেশ করেই কান্নার আওয়াজ পেয়ে অনেকেই স্তব্ধ হয়ে যান। ঘরের ভেতর সারাক্ষণ থেমে থেমে কান্না করছেন মা ফিরোজা ও পরিবারের লোকজন। কোনো সান্ত্বনাই কাজে আসছে না। 

ইয়াসিনের স্বজনেরা জানায়, ২০১৬ সালে ইয়াসিনের বাবা মারা গেছেন। তার বড় ভাই পড়াশোনা ও বিদেশযাত্রার খরচ দিয়েছেন। ৪০ শতক জমি বিক্রি করে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে গত বছরের ২২ আগস্ট রাশিয়ায় যান ইয়াসিন। সেখানে রাশিয়ার একটি কম্পানিতে চাকরি করতে যান। পরে অনলাইনে আবেদন করে গত ২২ ডিসেম্বর চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। প্রশক্ষণের পর ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেন।

সেখান থেকে ছবি ও ভিডিও নিয়মিত নিজের ফেসবুকে প্রকাশ করতে থাকেন। গত ১ মার্চ ফেসবুকে বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে একটি ভিডিও আপলোড করেন ইয়াসিন। ভিডিওতে তার অনেক আক্ষেপ, অভিযোগ ছাড়াও নিজের চ্যালেঞ্জে রাশিয়ায় যাওয়া, সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া ও তার স্বপ্নপূরণ নিয়ে কথা বলেন তিনি।

ইয়াসিনের প্রতিবেশী ও বন্ধু আরিফ বলেন, রাশিয়ায় যাওয়ার জন্য ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে রাশিয়ার ভাষা শেখেন ইয়াসিন। পরে সেখানে এক বন্ধুর সহায়তায় রাশিয়ায় একটি কম্পানিতে ভালো চাকরি পান। সবই ঠিকঠাক চলছিল। পরে রাশিয়ার সেনাবাহিনী যোগ দিয়ে সব উলটপালট হয়ে যায়। 

তিনি বলেন, রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার সময় ইয়াসিনের মা ও বড় ভাইকে ঢাকায় নিয়ে অনাপত্তিপত্রে স্বাক্ষর নেয় রাশিয়া পাঠানো এজেন্সির লোকজন।

জানা যায়, গত ২৬ মার্চ মা ফিরোজা খাতুনের সঙ্গে শেষবারের মতো কথা হয় ইয়াসিনের। এখন ছেলের ছবি বুকে নিয়ে আহাজারি করছেন তিনি। ফিরোজা খাতুন বলেন,‘অনেক টেহা দিয়া পাডাইছি। তার অর্ধেক ঋন। বাজান (ছেলে) খালি কইতো এই তো পাডাইতিাছি। কম দিনের মধ্যেই সব টেহা পরিশোধ কইর‌্যা দিবো। অহন আমার টেহার দরহার নাই, খালি আমার বুকের ধনরে আইন্যা দেও।’

এদিকে ইয়াসিনের মৃত্যুর খবর পেয়ে ছুটে আসেন গৌরীপুর উপজেলা বিএনপির নেতা ও ময়মনসিংহ (উত্তর) বিএনপির সিনিয়র সদস্য হাফেজ আজিজুল হকসহ দলীয় নেতাকর্মীরা। এ সময় তিনি নিহত পরিবারের প্রতি সহনুভুতি প্রকাশ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যার তারেক রহমানের পক্ষে নিহত ইয়সিনের মায়ের হাতে নগদ অর্থ তুলে দেন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের সংঘর্ষে নিহত ২

দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
শেয়ার
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের সংঘর্ষে নিহত ২
প্রতীকী ছবি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দির পুটিয়া নামকস্থানে ঢাকাগামী লেনে চাউল বোঝাই ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের সংঘর্ষে দুজন নিহত ও দুজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) তার সাড়ে ৩টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- কাভার্ড ভ্যানের চালক টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী উপজেলার দুদু মিয়ার ছেলে বেলাল হোসেন (৩০) ও অপরজন ট্রাকের হেলপার নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার মোস্তফার ছেলে ইয়াকুব (৩৫)।

জানা যায়, মরদেহ দুটি পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি দুটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। আহতদের গৌরীপুর হাসপাতাল চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন

বসুন্ধরা শুভসংঘের আয়োজনে পলিথিন-প্লাস্টিক বর্জন ও পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা

বসুন্ধরা শুভসংঘের আয়োজনে পলিথিন-প্লাস্টিক বর্জন ও পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা

 

ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি দেওয়ান কাওসিক আহাম্মেদ ও এসআই মনিরুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গভীর রাতে মহাসড়কের পুটিয়া নামক স্থানে চাল বোঝাই ট্রাক ও প্লাস্টিকের ড্রাম বোঝাই কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষে কাভার্ড ভ্যানের চালক ও ট্রাকের হেলপার নিহত হন এবং আরো দুজন আহত হন। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

মন্তব্য

উখিয়ায় প্রবেশপত্র না পেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
উখিয়ায় প্রবেশপত্র না পেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
সংগৃহীত ছবি

কক্সবাজারের উখিয়ায় এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র না পেয়ে পরীক্ষা দিতে পারেনি ১৩ জন শিক্ষার্থী। পরীক্ষা দিতে না পেরে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে।

জানা গেছে, উখিয়া মরিচ্যা হলদিয়া পালং আদর্শ বিদ্যানিকেতন নামে এক স্কুলে ১৩ জন পরীক্ষার্থীর কাউকে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়নি, ফলে তারা কেউই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি।

আরো পড়ুন
পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টার সঙ্গে গুইন লুইসের বৈঠক

পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টার সঙ্গে গুইন লুইসের বৈঠক

 

আজ বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকালে প্রবেশপত্র দেওয়ার কথা ছিল ওই শিক্ষার্থীদের।

তারা বিদ্যালয়ে এসে দেখে গেটে তালা, তখন কান্নায় ভেঙে পড়ে তারা। ফলে এসএসসি পরীক্ষা দিতে না পেরে অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে তারা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে উখিয়া নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘উখিয়া মরিচ্যা হলদিয়া পালং আদর্শ বিদ্যানিকেতন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ১৩ জন শিক্ষার্থী প্রবেশপত্র না পেয়ে পরীক্ষা দিতে পারছে না এমন অভিযোগ পেয়েছি। বিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে।

পরে আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারি যে তারা বোর্ডে ফরমও পূরণ করেনি।’

তিনি আরো বলেন, ‘মূলত ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে এসব প্রতিষ্ঠানের কারণে শিক্ষার্থীদের জীবন নষ্ট হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা আমাদের লিখিত অভিযোগ দিলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

আরো পড়ুন
সালথায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত অন্তত ৫০

সালথায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত অন্তত ৫০

 

পরিক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে না পারা এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নুর আলম বলেন, ‘আমার মেয়ের ফরম পূরণের টাকাও দিয়েছি।

সকালে প্রবেশপত্র দেওয়ার কথা ছিল। এখানে এসে দেখি বিদ্যালয় তালাবদ্ধ। প্রধান শিক্ষকসহ সবাই পলাতক রয়েছেন।’

মন্তব্য

চাঁদপুরে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পাশে ছাত্রদল

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর প্রতিনিধি
শেয়ার
চাঁদপুরে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পাশে ছাত্রদল
ছবি: কালের কণ্ঠ

সারাদেশে আজ থেকে একযোগে শুরু হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিনে চাঁদপুরে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে ছাত্রদল। পরীক্ষার্থীদের দ্রুত কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া; পরীক্ষা সহায়ক শিক্ষাসামগ্রী যেমন-প্লাস্টিক ফাইল, স্কেল, কলম  বিতরণ করেছে সংগঠনটি। 

আজ বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকালে শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পাশে থেকে এমন ভূমিকা পালন করেছে জেলা ছাত্রদল ও চাঁদপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদল।

এ সময় পরীক্ষার্থীদের হাতে বোতলজাত খাবার পানিও তুলে দেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা।এতে নেতৃত্ব দেন জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান সোহাগ।

এদিকে পরীক্ষা শুরু হলে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মহসীন উদ্দিন জেলা শহরসহ বেশকিছু কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ সময় পরীক্ষার কেন্দ্র ও তার আশপাশের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখার আহ্বান জানান তিনি।

 

চাঁদপুরে এবার এসএসসি, দাখিল এবং ভোকেশনাল মিলিয়ে মোট ৩৩ হাজার ৯৬৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। তাদের মধ্যে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের এসএসসির ৪৬টি কেন্দ্রে ২৪ হাজার ৭২৬ জন, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ১৯টি কেন্দ্রে ৭ হাজার ৪৫৫ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ভোকেশনালের ১২টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৭ ৮৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

মন্তব্য

সালথায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত অন্তত ৫০

সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
শেয়ার
সালথায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত অন্তত ৫০
ছবি: কালের কণ্ঠ

ফরিদপুরের সালথায় দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে হামলা-পাল্টা হামলা চালিয়ে স্থানীয় একটি বাজারের অন্তত ১২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।

গতকাল বুধবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭ থেকে ১০টা পর্যন্ত উপজেলা গট্টি ইউনিয়নের বালিয়া বাজারে সালাথা-ফরিদপুর আঞ্চলিক সড়কে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ সময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্র পরিণত হয়। প্রায় ৬ ঘণ্টা ওই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ চেষ্টায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

আরো পড়ুন
মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলায় অভিযুক্ত রানাকে নেওয়া হচ্ছে ভারতে

মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলায় অভিযুক্ত রানাকে নেওয়া হচ্ছে ভারতে

 

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বেশিরভাগ সময় গট্টি ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রণ করেছেন সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ মাতুব্বর।

তবে ৫ আগস্টের পর তিনি কয়েকমাস কারাভোগ করেন। পরে ওয়াদুদ মাতুব্বরের গ্রাম্যদলের লোকজন প্রতিপক্ষের সঙ্গে মিলে যান। ওই লোকজনকে দলে মেশানো নিয়ে স্থানীয় নুরু মাতুব্বরের সঙ্গে জাহিদ মাতুব্বরের বিরোধ সৃষ্টি হয়। সেই বিরোধের জেরে এলাকায় উত্তেজনা চলছিল।

নুরু মাতুব্বর বর্তমানে কারাগারে আছেন। তার অনুপস্থিতিতে বর্তমানে গ্রাম্যদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তার ভাই উপজেলা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনছুর মাতুব্বর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মহিনউদ্দীন। এই বিরোধের জেরে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বালিয়া বাজারে সালথা-ফরিদপুর সড়কের উপর দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে এই সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া। সংঘর্ষ চলাকালে উভয়পক্ষের অন্তত ১২টি দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।

এ সময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্র পরিণত হয়। প্রায় ৬ ঘণ্টা সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।

আরো পড়ুন
চাকরিজীবীদের টানা চার দিনের ছুটির সুযোগ

চাকরিজীবীদের টানা চার দিনের ছুটির সুযোগ

 

সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হন। তাদের মধ্যে ৩০ জনকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে বক্তব্য দিয়েছেন উভয়পক্ষের নেতারা।

জাহিদ মাতুব্বর বলেন, ‘২০১৮ সালে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকুর গাড়িতে হামলা করে আওয়ামী লীগের লোকজন। এখন তারাই এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টা করছে। কোনো কারণ ছাড়াই বুধবার বিকেলে বালিয়া গট্টি ও ভাবুকদিয়া গ্রামের মাঝে থেকে প্রথমে আমার দুই কর্মীকে মারধর করে। পরে আবার বালিয়া বাজার থেকে ব্যবসায়ী মামুন শেখকে কুপিয়ে জখম করে। এরপরেই সংঘর্ষ শুরু হয়। নুরু মাতুব্বর, তার ভাই মুনছুর মাতুব্বর ও মহিনউদ্দীন তারা আওয়ামী লীগের দোসর। তাদের প্রত্যেকের দলীয় পদ আছে। এরা চাচ্ছে এলাকায় আওয়ামী লীগের আধিপত্য ধরে রাখতে।’

আরো পড়ুন
বিনা মূল্যে পাটবীজ ও সার পেলেন ৮০০ কৃষক

বিনা মূল্যে পাটবীজ ও সার পেলেন ৮০০ কৃষক

 

মুনছুর নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করে বলেন, ‘আমরা বিএনপি করি। জাহিদ মাতুব্বর আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি লাবু চৌধুরীর লোক। বিগত দিনে তার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ ছিলাম। গতকাল বুধবার বিকেলে বড় বালিয়ার গ্রামের সবুর খান খামখা মারধর করে জাহিদের লোকজন। পরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।’

সালথা থানার ওসি মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকার পুলিশ শান্ত রাখতে বালিয়া বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ