খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাসুদের পদত্যাগের জন্য ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ। এর মধ্যে পদত্যাগ না করলে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাবলে তাকে পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর ২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি জানায় সংগঠনটি। সংবাদ সম্মলনে উপস্থিত ছিলেন বাগছাসের সদস্য সচিব জাহিদ আহসান, মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদাসসিরসহ বাগছাসের অন্যান্য নেতাকর্মীবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন জাহিদ আহসান।
দাবিগুলো হলো- কুয়েট ছাত্রদল-যুবদলের হামলা, মামলা এবং শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের বিষয়ে পূর্ণ নিরপেক্ষ ভদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের নামে মামলা এবং বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা। কুয়েটের ভিসি ড. মোহাম্মদ মাসুদকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করা, পদত্যাগ না করলে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাবলে অপসারণ করা।
আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কুয়েটের সব হল খুলে দেওয়া। মাহিন আহম্মেদের ওপর হামলাকারীদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করা।
লিখিত বক্তব্যে জাহিদ আহসান বলেন, ‘গত ১৮ ফেব্রুয়ারি খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল এবং বহিরাগত বিএনপি-যুবদল ক্যাডাররা সাধারণ ছাত্রদের ওপর নির্মম হামলা চালায়। খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও ছাত্রদলের জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জের ধরেই উক্ত হামলার ঘটনা ঘটে।
দলীয় ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও কুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর ড. মোহাম্মদ মানুদের পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্রদল কার্যক্রম পরিচালনা করে এমনকি ছাত্রদল-যুবদল-বিএনপির যৌথ হামলার সময়েও ভিসিকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
আরও বলা হয়, শিক্ষার্থীরা যখন বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার দাবিতে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে, সেই সময়েই গত ১০ এপ্রিল ২২ জন শিক্ষার্থীর নামে মিথ্যা মামলা করা হয়। যদিও এখন পর্যন্ত হামলাকারী কারো বিরুদ্ধেই কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ সাথে সাথেই শিক্ষার্থীদের নামে মামলার প্রতিবাদ জানায় এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবি তোলে। মামলার পরপরই গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আমরা এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বাগছাসের কেন্দ্রীয় সদস্য মাহিন আহমদের ওপর হামলার ঘটনা ব্যক্ত করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কুয়েটের এই বিভীষিকাময় অবস্থায় গতকাল রাতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় সদস্য মাহিন আহমদের ওপর মিরপুরে বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা নির্মম হামলা চালিয়েছে। হামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক সদস্য আহত হয়েছেন বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম আকাঙ্ক্ষা ছিলো সহিংস রাজনীতির বদলে সমাজে সৌহার্দ্যপূর্ণ রাজনৈতিক অবস্থান বজায় রাখা। কিন্তু, অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিএনপি পূর্বের মতই সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে। দলীয় হাইকমান্ড থেকে বারবার আমরা আশার কথা শুনলেও তৃণমূলের আচরণ পুরাপুরি বিপরীত। চাঁদাবাজি, দখলদারি, হামলা, মামলা বাণিজ্য কোনোকিছুই বন্ধ থাকছে না’।