ট্রাম্পের পরিকল্পনা মোকাবেলায় আরব নেতাদের বৈঠক শুক্রবার

  • গাজা পুনর্গঠনে মিসরের ৩ ধাপের পরিকল্পনা
  • ক্ষমতা ও অর্থায়ন নিয়ে মতপার্থক্য
  • ‘বিরল আরব ঐক্য প্রয়োজন’
অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ট্রাম্পের পরিকল্পনা মোকাবেলায় আরব নেতাদের বৈঠক শুক্রবার
সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান উপসাগরীয় আরবদেশগুলোর নেতা, মিসর ও জর্দানের রাষ্ট্রপ্রধানদের রাজধানী রিয়াদে গাজা ইস্যুতে বৈঠকে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ফাইল ছবি : এএফপি

আরব নেতারা শুক্রবার সৌদি আরবে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন, যেখানে তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়া ও সেখানকার জনগণকে উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা মোকাবেলা করা নিয়ে আলোচনা করবেন বলে কূটনৈতিক ও সরকারি সূত্র জানিয়েছে। 

সৌদি রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান উপসাগরীয় আরবদেশগুলোর নেতা, মিসর ও জর্দানের রাষ্ট্রপ্রধানদের রাজধানী রিয়াদে এই বৈঠকে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

সৌদি পররাষ্ট্রনীতির বিশেষজ্ঞ উমর করিম এই সম্মেলনকে আরববিশ্ব ও ফিলিস্তিন ইস্যুর জন্য ‘সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে বৈঠকটি অনানুষ্ঠানিকভাবে এবং ‘নেতাদের একত্র করার ঘনিষ্ঠ ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের কাঠামোর’ মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে বলে এসপিএ জানিয়েছে।

ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আরবদেশগুলো ঐক্যবদ্ধ হলেও গাজা উপত্যকার প্রশাসন কার হাতে থাকবে এবং পুনর্গঠনের জন্য অর্থায়ন কিভাবে হবে, সে বিষয়ে মতপার্থক্য রয়ে গেছে।

এদিকে ট্রাম্প বৈশ্বিক সমালোচনার মুখে পড়েন, যখন তিনি প্রস্তাব দেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘গাজা উপত্যকা দখল করবে’ এবং এর ২৪ লাখ বাসিন্দাকে পার্শ্ববর্তী মিসর ও জর্দানে সরিয়ে দেওয়া হবে। এসপিএ জানিয়েছে, ‘যৌথ আরব পদক্ষেপ এবং এ সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত আসন্ন জরুরি আরব সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে থাকবে, যা মিসরে ৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে।’

আরো পড়ুন
ফিলিস্তিনি বন্দির সঙ্গে বর্বরতা, ৫ ইসরায়েলি সেনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

ফিলিস্তিনি বন্দির সঙ্গে বর্বরতা, ৫ ইসরায়েলি সেনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

 

এর আগে ট্রাম্পের সঙ্গে ১১ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটনে বৈঠককালে জর্দানের বাদশাহ আবদুল্লাহ দ্বিতীয় বলেন, মিসর গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করবে।

একজন সৌদি নিরাপত্তা সূত্রর মতে, বৈঠকে ‘মিসরের পরিকল্পনার একটি সংস্করণ’ আলোচনা করা হবে, যার কথা জর্দানের বাদশাহ উল্লেখ করেছিলেন।

নতুন রাজনৈতিক পথ?
অন্যদিকে গাজার পুনর্গঠন হবে আলোচনার অন্যতম মূল বিষয়, যেখানে ট্রাম্প পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তাকে জনগণের স্থানান্তরের পক্ষে একটি যুক্তি হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন।

কায়রো এখনো তার পরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি। তবে মিসরের সাবেক কূটনীতিক মোহাম্মদ হেগাজি তিন থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি ‘তিনটি কারিগরি পর্যায়ের’ একটি পরিকল্পনার রূপরেখা তুলে ধরেছেন।

প্রথম পর্যায়ে ছয় মাস ধরে ‘প্রাথমিক পুনরুদ্ধার’ প্রক্রিয়া চালানো হবে। কায়রোতে নীতি-নির্ধারণী মহলে ঘনিষ্ঠ থিংকট্যাংক মিসরীয় পররাষ্ট্র পরিষদের এই সদস্য জানিয়েছেন, ভারী যন্ত্রপাতি এনে ধ্বংসস্তূপ সরানো হবে এবং গাজায় সাময়িকভাবে নিরাপদ অঞ্চল চিহ্নিত করা হবে, যেখানে বাসিন্দাদের স্থানান্তর করা যেতে পারে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করা হবে, যেখানে পুনর্গঠনের বিস্তারিত পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হবে এবং অবকাঠামো পুনরুদ্ধারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।

আরো পড়ুন
যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল

যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল

 

হেগাজি বলেন, ‘চূড়ান্ত পর্যায়ে গাজার নগর পরিকল্পনা, আবাসন নির্মাণ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ব্যবস্থা থাকবে।’

এদিকে জাতিসংঘ মঙ্গলবার জানিয়েছে, গাজা পুনর্গঠনে ৫৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি লাগবে, যার মধ্যে প্রথম তিন বছরের জন্য ২০ বিলিয়নের বেশি প্রয়োজন।

এ ছাড়া শেষ ধাপে ‘দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নের জন্য একটি রাজনৈতিক পথ উন্মোচন’ এবং ‘একটি টেকসই যুদ্ধবিরতির জন্য প্রণোদনা সৃষ্টি করা’ অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলেও হেগাজি জানিয়েছেন।

করিম বলেছেন, পরিকল্পনার সফলতার জন্য এমন ‘এক ধরনের আরব ঐক্য প্রয়োজন, যা বহু দশক ধরে দেখা যায়নি।’

আরো পড়ুন
নেতানিয়াহুর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা আরববিশ্বের

নেতানিয়াহুর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা আরববিশ্বের

 

আর্থিক চ্যালেঞ্জ
উপসাগরীয় অঞ্চলের বিষয়ে পরিচিত এক আরব কূটনীতিক বলেছেন, ‘মিসরের পরিকল্পনার সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এর অর্থায়ন কিভাবে হবে। কুয়েতের মতো কিছু দেশ হয়তো মানবিক কারণে অর্থায়ন করবে, তবে অন্য উপসাগরীয় দেশগুলো যেকোনো ধরনের অর্থ হস্তান্তরের আগে নির্দিষ্ট শর্ত নির্ধারণ করবে।’

উমর করিম বলেন, ‘সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত কোনো অর্থ ব্যয় করবে না, যদি না কাতার ও মিসর হামাস নিয়ে কিছু নিশ্চয়তা দেয়।’  

মিসরের পরিকল্পনা গাজায় যুদ্ধ-পরবর্তী জটিল তদারকির বিষয়টি মোকাবেলা করতে চায়। ২০০৭ সাল থেকে গাজার নিয়ন্ত্রণে থাকা হামাসের পরিবর্তে সেখানে ‘কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্কহীন এক ফিলিস্তিনি প্রশাসন’ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রশাসন ‘বিশেষজ্ঞদের’ নিয়ে গঠিত হবে এবং এটি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকবে না, বরং এটি রাজনৈতিক ও আইনিভাবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অধীন থাকবে বলে জানিয়েছেন হেগাজি।

আরো পড়ুন
বিশ্বজুড়ে ট্রাম্পের প্রস্তাব নিন্দিত

বিশ্বজুড়ে ট্রাম্পের প্রস্তাব নিন্দিত

 

কায়রোর এই উদ্যোগে একটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট পুলিশ বাহিনীর পরিকল্পনাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা মিসর, আরবদেশসমূহ ও অন্যান্য দেশের নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে পরিপূরক হবে। তবে এখানেও মতপার্থক্য রয়ে গেছে। হেগাজি বলেছেন, ‘আসন্ন সময়ে হামাস রাজনৈতিক দৃশ্যপট থেকে সরে দাঁড়াবে।’ অন্যদিকে এক সৌদি সূত্র বলছে, রিয়াদ গাজার নিয়ন্ত্রণ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে দেখতে চায়। আবার যুদ্ধের অন্যতম মধ্যস্থতাকারী কাতার জোর দিয়ে বলেছে, গাজার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে হবে ফিলিস্তিনিদেরই।

করিম বলেন, ‘আমার মনে হয়, সব আঞ্চলিক পক্ষই বুঝতে পারছে, তাদের প্রস্তাবিত যেকোনো বিকল্প পরিকল্পনায় কোনোভাবেই হামাস থাকতে পারবে না। কারণ হামাসের উপস্থিতি এটিকে মার্কিন প্রশাসন ও ইসরায়েলের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলবে না। অতএব, সামগ্রিকভাবে এই পরিকল্পনার সফলতার কোনো সম্ভাবনা তৈরি করতে হলে গাজার ভেতরে কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনতেই হবে।’

সূত্র : আলজাজিরা, এএফপি

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ওয়াকফ আইন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভে সহিংসতা, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ওয়াকফ আইন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভে সহিংসতা, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ
ছবিসূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

ভারতে সম্প্রতি পাস হওয়া ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে নানা শহরে। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় বুধবার বিক্ষোভ থেকে আবারও সহিংসতার পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবারও ওই জেলার রঘুনাথপুরে সহিংসতা ঘটেছিল। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত চলা ওই সহিংসতায় পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।

এ ছাড়া ভাঙচুর চালানো হয় কিছু আবাসিক ভবন ও দোকানে।

মুর্শিদাবাদ জেলার দুটি থানা এলাকায় পাঁচ জনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ওই এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, সুতির অজগরপাড়া এলাকায় বুধবার সকালে ১২ নম্বর জাতীয় মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ শুরু হয়।

অবরোধের ফলে জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এসময় বিক্ষোকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। তারপরেই জনতার সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় বিক্ষোভ থেকে।
পুলিশ একাধিক কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়।

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে ভারতের পার্লামেন্ট উত্তপ্ত তর্কবিতর্কের পর মুসলিম ওয়াকফ (সংশোধনী) বিলটি পাস হয় এবং ৫ই এপ্রিল শনিবার দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বিলটিতে সম্মতি দেওয়ায় এটি এখন ভারতের একটি আইনে পরিণত হয়েছে। তবে এই বিলটিকে চ্যালেঞ্জ করে অন্তত চারটি পিটিশন সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা হয় যেগুলো করেছেন এআইএমআইএম, কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি বা আরজেডি-র মতো দলের নেতারা এবং অন্তত একটি সিভিল রাইটস গোষ্ঠী। এ ছাড়া মণিপুর, গুজরাত, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক ও কলকাতাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী উসকানিকে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সবাইকে।

স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, কয়েকদিন ধরেই ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে মুর্শিদাবাদের নানা জায়গায় বিক্ষোভ প্রদর্শন চলছিল। মঙ্গলবার বিকেল থেকে ওমরপুর মোড় থেকে ধুলিয়ান বাজার পর্যন্ত ১২ নম্বর জাতীয় মহাসড়কের নানা জায়গায় অবরোধ করেন মুসলিম ছাত্র ও যুব সংগঠনের বিক্ষোভকারীরা।
পুলিশ সেখানে গেলেই সংঘর্ষ শুরু হয়। রাত পর্যন্ত পুলিশ ওই এলাকার নানা রাস্তায় লাঠি নিয়ে বিক্ষোভকারীদের তাড়া করে।

এরপর পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এলাকায় পাঁচজনের বেশি মানুষের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। ভুয়া খবর বা গুজব যাতে না ছড়ায় তার জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১১ই এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিষেবা বন্ধ থাকবে।

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এক বিবৃতিতে মঙ্গলবারের ঘটনার নিন্দা করে জানিয়ে বলেছেন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর যে কোনো প্রচেষ্টাকে কঠোরভাবে দমন করা উচিত। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুসলমান সমাজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি পুলিশের লাঠি চালানোর নিন্দা করেছেন।

সূত্র : বিবিসি বাংলা

মন্তব্য

আমেরিকা না ছাড়লে অবৈধ অভিবাসীদের দৈনিক ৯৯৮ ডলার জরিমানা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আমেরিকা না ছাড়লে অবৈধ অভিবাসীদের দৈনিক ৯৯৮ ডলার জরিমানা
ছবিসূত্র : এএফপি

ট্রাম্প প্রশাসনের নির্বাসন আদেশের পরও অবৈধ অভিবাসীদের কেউ আমেরিকায় থাকলে প্রতিদিন তাকে ৯৯৮ ডলার পর্যন্ত জরিমানা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। জরিমানার অর্থ না দিলে বাজেয়াপ্ত করা হবে সম্পত্তি। নথি বিশ্লেষণের পর বার্তা সংস্থা রয়টার্স বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে বলে এক প্রতিবেদেন জানানো হয়েছে।

১৯৯৬ সালের একটি আইনে এই জরিমানার বিধান আছে।

২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে প্রথমবারের মতো কার্যকর করা হয়েছিল এ আইন। ট্রাম্প প্রশাসন পাঁচ বছর পর্যন্ত জরিমানা প্রয়োগের পরিকল্পনা করছে, যার ফলে ১ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি জরিমানা হতে পারে। যার ফলে ১ মিলিয়ন ডলারের বেশি জরিমানা হতে পারে।

ট্রাম্প প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসন পাঁচ বছর পর্যন্ত জরিমানা প্রয়োগের পরিকল্পনা করছে, যার ফলে ১ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি জরিমানা হতে পারে।

রয়টার্স কর্তৃক পর্যালোচনা করা সরকারি ইমেল অনুসারে, ট্রাম্প প্রশাসন জরিমানা পরিশোধ না করা অভিবাসীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কথাও বিবেচনা করছে।

রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী অভিবাসীদের ‘স্ব-নির্বাসন এবং এখনই দেশ ত্যাগ করতে’ সিবিপি ওয়ান নামে একটি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করা উচিত।’

তিনি আরো বলেন, ‘যদি তারা তা না করে, তাহলে তাদের পরিণতি ভালো হবে না। এর মধ্যে রয়েছে, চূড়ান্ত নির্বাসন আদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবস্থান করা প্রতিটি দিনের জন্য প্রতিদিন ৯৯৮ ডলার জরিমানার মুখোমুখি হবেন।

রয়টার্সের পর্যালোচনা করা ইমেলগুলো থেকে দেখা গেছে, হোয়াইট হাউস মার্কিন কাস্টমস এবং সীমান্ত সুরক্ষাকে জরিমানা, অর্থ প্রদান না করা অভিবাসীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তকরণ এবং তাদের সম্পদ বিক্রির বিষয়টি পরিচালনা করার জন্য চাপ দিয়েছে।
একটি ইমেল আরো বলা হয়েছে, বিচার বিভাগের জন্য আরেকটি বিকল্প হতে পারে নাগরিক সম্পদ বাজেয়াপ্তকরণ। 

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের পর ব্যাপকভাবে অভিবাসন দমন শুরু করেন। প্রায় ১৪ লাখ অভিবাসীকে উদ্দেশ করে পরিকল্পিত জরিমানার প্রস্তাব আনা হয়েছে।

সূত্র : রয়টার্স
 

মন্তব্য

চীনে নার্সিংহোমে অগ্নিকাণ্ড, নিহত ২০

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
চীনে নার্সিংহোমে অগ্নিকাণ্ড, নিহত ২০
ছবিসূত্র : এএফপি

উত্তর চীনের হেবেই প্রদেশের একটি নার্সিংহোমে আগুন লেগে ২০ জন নিহত হয়েছেন। বেইজিংয়ের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া বুধবার জানিয়েছে এ খবর জানিয়েছে।  

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী বেইজিং থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার (১১২ মাইল) উত্তর-পূর্বে লংহুয়া কাউন্টির একটি নার্সিংহোমে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে আগুন লাগে। সিনহুয়া জানিয়েছে, বুধবার ভোর ৩ টা নাগাদ বিশ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ‘নার্সিংহোমে থাকা অন্যান্য বয়স্ক ব্যক্তিদের আরো পর্যবেক্ষণ এবং চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।’ আগুন লাগার কারণ তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।

কাউন্টি সরকার জানিয়েছে, নার্সিংহোমে আগুন লাগার জন্য দায়ি একজন ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে। ভবন নির্মাণের নিয়মে শিথিলতা এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে প্রায়ই আবহেলার কারণে চীনে মারাত্মক অগ্নিকাণ্ড তুলনামূলকভাবে সাধারণ।

গত জানুয়ারিতে বেইজিংয়ের উত্তর-পশ্চিমে ঝাংজিয়াকো শহরের একটি সবজির বাজারে আগুন লেগে আটজন নিহত এবং ১৫ জন আহত হন। এর এক মাস আগে গত বছর পূর্ব চীনের রংচেং শহরে একটি নির্মাণস্থলে আগুন লেগে নয়জন মারা যান।

সূত্র : এএফপি
 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

আফগান শরণার্থীদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করছে পাকিস্তান

ডয়চে ভেলে
ডয়চে ভেলে
শেয়ার
আফগান শরণার্থীদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করছে পাকিস্তান
ছবিসূত্র : এএফপি

৩১ মার্চের মধ্যে অবৈধ আফগান নাগরিকদের দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল পাকিস্তান। বলপ্রোয়গ করে তাদের সীমান্ত পার করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। পাকিস্তানের বক্তব্য, আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর প্রায় ৩০ লাখ আফগান শরণার্থী পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ২০২৩ সাল থেকে ওই শরণার্থীদের আফগানিস্তানে পাঠানোর অভিযান শুরু করেছে পাকিস্তান।

এর আগেও রীতিমতো বলপ্রয়োগ করে বহু আফগানকে দেশে পাঠানো হয়েছিল। অনিচ্ছুকদের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

সম্প্রতি ইসলামাবাদ জানিয়েছিল, ৩১ মার্চের মধ্যে সকল অবৈধ শরণার্থীকে দেশ ছাড়তে হবে। ওই তারিখ পেরিয়ে যাওয়ায় প্রশাসন নতুন করে অভিযান শুরু করেছে।

আফগান সিটিজেন কার্ড

পাকিস্তানে আশ্রয় নেওয়া প্রায় আট লাখ আফগান নাগরিককে একটি কার্ড দিয়েছিল দেশের প্রশাসন। এই কার্ডটিকে বলা হয় আফগান সিটিজেন কার্ড বা এসিসি। এই আট লাখ মানুষকে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তান। তারা স্বেচ্ছায় না গেলে আফগানিস্তানে তাদের জোর করে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, গত নয় দিনে অন্তত আট হাজার ৯০৬ জনকে  করেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের প্রশাসন জানিয়েছে, নতুন করে অভিযান শুরু হয়েছে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের দেশ থেকে তাড়ানোই হলো এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য।

মানবাধিকার লঙ্ঘন

গত ১৮ মাসে পাকিস্তান ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন অন্তত আট লাখ ৪৫ হাজার আফগান। গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার।

পাকিস্তান যেভাবে আফগানদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করছে, তার নিন্দা করেছে তালেবান। বলা হয়েছে, শরণার্থীদের সম্পত্তি, অর্থ নিয়ে আসার সুযোগটুকুও দেওয়া হচ্ছে না।

সংবাদসংস্থার কাছে বহু আফগান অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তানের প্রশাসন তাদের বাড়ি ঘিরে ফেলছে। বাড়ি ছাড়ার সময় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পর্যন্ত নিতে দেওয়া হচ্ছে না। কার্যত এক কাপড়ে তাদের ঘর ছাড়তে হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত কয়েকবছরে কাবুলের সঙ্গে ইসলামাবাদের সম্পর্ক ক্রমশ খারাপ হয়েছে। ইসলামাবাদের অভিযোগ, তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান তৈরির পিছনে আফগানিস্তানের তালেবানদের মদত আছে। এই দলটি পাকিস্তানে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে। আফগানিস্তানের তালেবানদের এই দলটির ওপর আর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই বলে অভিযোগ করেছে পাকিস্তান। অন্যদিকে, আফগান নাগরিকদের সঙ্গে পাকিস্তানের ব্যবহার নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বিরক্ত কাবুল। গত কয়েকদিনে দুই দেশের সম্পর্ক আরো খারাপ হয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ