ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৩ মার্চ ২০২৫
২৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ১২ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৩ মার্চ ২০২৫
২৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ১২ রমজান ১৪৪৬

ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে যেসব দাবি রাশিয়ার

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে যেসব দাবি রাশিয়ার
ছবি : এএফপি

রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি আলোচনা নিয়ে সৌদি আরবের জেদ্দায় মধ্যস্থতাকারীদের গত মঙ্গলবার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে রাশিয়ার সঙ্গে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ইউক্রেন। তবে যুদ্ধবিরতি হবে কি না, সেটা নির্ভর করছে রাশিয়ার ওপর। এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধ শেষ করতে একটি চুক্তির জন্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্স্থাপনে নিজেদের দাবিনামার তালিকা পেশ করেছে রাশিয়া; বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত দুই ব্যক্তি রয়টার্সকে এমনটি জানিয়েছেন।

রয়টার্স লিখেছে, প্রকৃতপক্ষে মস্কো তাদের তালিকায় কী অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং তারা ওয়াশিংটনের দেওয়া শান্তি প্রস্তাব মেনে নিয়ে কিয়েভের সঙ্গে আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক কি না, তা পরিষ্কার হয়নি। ওই দুই ব্যক্তি জানিয়েছেন, রুশ ও মার্কিন কর্মকর্তারা গত তিন সপ্তাহ ধরে ব্যক্তিগতভাবে এবং ভার্চুয়ালি কথা বলার সময় ওই শর্তগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। 

তারা জানান, ক্রেমলিনের শর্তের আওতা বিস্তৃত এবং তারা আগেও ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর কাছে যেসব দাবি উত্থাপন করেছিল সেগুলোর সঙ্গে নতুন করে তৈরি করা দাবির তালিকা প্রায় একই।

আগে রাশিয়া যে সব শর্ত দিয়েছিল সেগুলো হলো— কিয়েভকে ন্যাটো সদস্যপদ না দেওয়া, ইউক্রেনে বিদেশি সেনা মোতায়েন করা হবে না মর্মে সমঝোতা এবং প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দাবিকৃত ক্রিমিয়া ও চারটি প্রদেশ রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত এটি মেনে নেওয়া।

গত কয়েক বছর ধরে রাশিয়া আরেকটি দাবি তুলেছে আর সেটি হলো পূর্ব ইউরোপ থেকে মধ্য এশিয়ায় মার্কিন ও ন্যাটোর সামরিক সম্প্রসারণসহ তাদের কথিত ইউক্রেন যুদ্ধের ‘মূল কারণ’ এর সমাধান করা।

কিছু মার্কিন কর্মকর্তা, আইনপ্রণেতা ও বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা সাবেক কেজিবি কর্মকর্তা পুতিন একটি যুদ্ধবিরতিকে যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন ও ইউরোপের মধ্যে বিভেদ আরো তীব্র করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে পারেন।

এ বিষয়ে রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে ওয়াশিংটনের রুশ দূতাবাস এবং হোয়াইট হাউজ তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

এদিকে ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় যাচ্ছেন মধ্যস্থতাকারী মার্কিন প্রতিনিধিরা।

যুদ্ধবিরতি নিয়ে সৌদি আরবের জেদ্দায় গত মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা পর মস্কোয় যাচ্ছেন তারা।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘বল এখন (যুদ্ধবিরতি নিয়ে) পুরোপুরি রাশিয়ার কোর্টে।’ তিনি আরও বলেন, একমাত্র শান্তি আলোচনার মধ্য দিয়েই যুদ্ধ বন্ধ হতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে।

অন্যদিকে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ক্রেমলিন বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবনা যাচাই করে দেখছে। এ নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ফোনালাপ হতে পারে।

আরো পড়ুন
ভারতে ইসরায়েলের পর এবার ব্রিটিশ তরুণীকে ধর্ষণ

ভারতে ইসরায়েলের পর এবার ব্রিটিশ তরুণীকে ধর্ষণ

 

জেদ্দায় আলোচনার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির ‘ইতিবাচক’ প্রস্তাব নিয়ে রাশিয়াকে রাজি করানোর ভার এখন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

হিজাব ছাড়া প্রতিযোগিতা করা ইরানি ক্রীড়াবিদ দেশ ছাড়লেন

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
হিজাব ছাড়া প্রতিযোগিতা করা ইরানি ক্রীড়াবিদ দেশ ছাড়লেন
দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে অনুষ্ঠিত আইএফএসসি এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইরানি পর্বতারোহী এলনাজ রেকাবি। ফাইল ছবি : এএফপি

একজন ইরানি পর্বতারোহী ক্রীড়াবিদ (স্পোর্টস ক্লাইম্বার) ইরান ছেড়েছেন বলে তার ভাই ও এক ইরানি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যিনি ২০২২ সালে দেশব্যাপী বিক্ষোভের সময় হিজাব ছাড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিলেন।

এলনাজ রেকাবি ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত এক চ্যাম্পিয়নশিপে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বাধ্যতামূলক হিজাব বিধি না মেনেই অংশ নেন। এর মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। তবে দেশে ফেরার পর তিনি অনেকটাই জনসম্মুখ থেকে অদৃশ্য হয়ে যান।

ইরানের বাইরে পার্সি ভাষার কিছু গণমাধ্যম তখন জানিয়েছিল, তাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে এবং বিদেশে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।  

২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পুলিশি হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। বাধ্যতামূলক হিজাব আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মাহসাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেই বিক্ষোভ মাসের পর মাস চলেছিল।

তবে কঠোর দমন-পীড়নের মুখে তা ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে যায়।  

রেকাবি ইরান ছেড়ে গেছেন বলে তার ভাই দাউদ রেকাবি ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে জানিয়েছেন। ইরানওয়্যার ওয়েবসাইট ও ইরান ইন্টারন্যাশনাল টেলিভিশন চ্যানেল তার ওই পোস্টের উদ্ধৃতি দিয়ে খবর প্রকাশ করেছে এবং ভবিষ্যতে তার ফিরে আসার সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করেছে।  

ইরান ইন্টারন্যাশনাল আরো জানায়, একজন সহকর্মী পর্বতারোহীর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে রেকাবিকে একটি ইনডোর ওয়ালে প্রশিক্ষণ নিতে দেখা গেছে, যেখানে তিনি ভেস্ট পরে ছিলেন ও হিজাবও পরেননি।

তাদের তথ্য অনুযায়ী, তিনি এখন স্পেনে রয়েছেন। এ ছাড়া ইরানের সংবাদ সংস্থা ইসনাও জানিয়েছে, তিনি স্পেনে চলে গেছেন।

এ ছাড়া দেশটির জাতীয় অলিম্পিক কমিটির প্রধান মাহদি আলিনেজাদ জানিয়েছেন, তিনি দাউদ রেকাবির ইনস্টাগ্রাম পোস্টের বিষয়ে অবগত। তিনি মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘যদি কেউ পেশাদার ক্রীড়াজীবন চালিয়ে যেতে চায়, তাহলে তাদের ইরানে থাকা উচিত। গত দুই বছর ধরে জাতীয় অলিম্পিক কমিটি রেকাবিকে সমর্থন দিয়েছে এবং তিনি নিজেও তা স্বীকার করবেন।

’ তবে সবাই নিজ নিজ বসবাসের স্থান বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা রাখে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে এখনো স্পষ্ট নয় যে এলনাজ রেকাবি ঠিক কবে ও কী পরিস্থিতিতে ইরান ছেড়েছেন। অন্য এক ঘটনায় আন্তর্জাতিক স্পোর্ট ক্লাইম্বিং ফেডারেশন (আইএফসিএস) গত মাসে ঘোষণা করেছিল, ২০২৬ সালে সেনেগালের ডাকারে অনুষ্ঠিতব্য যুব অলিম্পিক গেমসে রেকাবিকে ‘অ্যাথলেট রোল মডেল’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।  

ফেডারেশন জানিয়েছে, সুইজারল্যান্ডের লসান শহরে এক বৈঠকের মাধ্যমে তার এই দায়িত্ব নিশ্চিত করা হয়, যেখানে রেকাবি নিজে উপস্থিত ছিলেন এবং আইএফসিএস প্রেসিডেন্ট মার্কো স্কোলারিস ও আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) প্রেসিডেন্ট টমাস বাখের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।  

এর আগে ইরানওয়্যারসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছিল, আইওসি রেকাবির পরিস্থিতির ওপর গভীর নজর রাখছিল এবং বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ না পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।  

২০২২ সালে প্রতিযোগিতার সময় রেকাবি ইনস্টাগ্রামে এক বিবৃতিতে দুঃখপ্রকাশ করে বলেছিলেন, হিজাব ছাড়া তার অংশগ্রহণ ‘অনিচ্ছাকৃত’ ছিল। কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, দক্ষিণ কোরিয়ায় থাকার সময় ইরানি কর্মকর্তারা তাকে চাপ দিয়েছিলেন। তবে ইরানে অবস্থিত সিউল দূতাবাস এ অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করেছিল।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

দামেস্কে ইসলামিক জিহাদের কমান্ড সেন্টারে ইসরায়েলি হামলা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
দামেস্কে ইসলামিক জিহাদের কমান্ড সেন্টারে ইসরায়েলি হামলা
১৩ মার্চ দামেস্কে একটি ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলার পর সিরীয় উদ্ধারকর্মী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা হামলাস্থল পরিদর্শন করছেন। ছবি : এএফপি

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি বিমানবাহিনী হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েললি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে একটি যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা জানায়, ইসরায়েলি হামলায় সিরিয়ার রাজধানীতে একজন নিহত হয়েছেন।

এ ছাড়া ইসরায়েলি সেনাবাহিনী একটি পৃথক বিবৃতিতে জানায়, তারা দামেস্কে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের একটি ‘সন্ত্রাসী কমান্ড সেন্টার’ লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।

এই গোষ্ঠী গাজায় হামাসের সঙ্গে মিলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। সেনাবাহিনী বলেছে, ‘এই কমান্ড সেন্টারটি ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিকল্পনা ও পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হতো।’  

কাটজ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইসলামী সন্ত্রাসবাদকে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না—তা সেটা দামেস্ক হোক বা অন্য কোথাও। আমরা সিরিয়াকে ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে দেব না।

’ পাশাপাশি সেনাবাহিনী বলেছে, ‘সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সিরিয়ায় আস্তানা গড়ে তোলা ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যক্রম পরিচালনা করার সুযোগ দেওয়া হবে না এবং এমন কোনো প্রচেষ্টার কঠোর জবাব দেওয়া হবে।’

অন্যদিকে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েল দামেস্কে একটি ভবনে হামলা চালিয়েছে। পাশাপাশি ইসলামিক জিহাদের একটি সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় গোষ্ঠীটির একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এতে মানুষ হতাহত হয়েছে। ব্রিটেনভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, ‘ইসরায়েলি বিমান দামেস্কে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে এবং এতে অন্তত একজন নিহত হয়েছেন।

এর আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী মঙ্গলবার জানায়, তারা দক্ষিণ সিরিয়ায় বিমান হামলা চালিয়েছে, যেখানে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও অন্যান্য সামরিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, ‘ভবিষ্যতের হুমকি নির্মূলের’ লক্ষ্যে।  

শত শত বিমান হামলা
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে ইসরায়েল দেশটিতে শত শত বিমান হামলা চালিয়েছে এবং কৌশলগত গোলান মালভূমিতে জাতিসংঘ নিয়ন্ত্রিত বাফার জোনে সেনা মোতায়েন করেছে। ২০১১ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেও ইসরায়েল দেশটিতে শত শত বিমান হামলা চালিয়েছে, মূলত সরকারি বাহিনী ও ইরান সমর্থিত লক্ষ্যবস্তুতে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, দক্ষিণ সিরিয়া অবশ্যই সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ করতে হবে এবং তার সরকার সিরিয়ার নতুন ইসলামপন্থী নেতৃত্বকে নিজেদের সীমান্তের কাছে সহ্য করবে না। পাশপাশি ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সারও বারবার বিশ্বনেতাদের সতর্ক করেছেন, সিরিয়ার নতুন শাসকদের বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত, কারণ সেখানে এখন একটি ‘জিহাদি গোষ্ঠী’ ক্ষমতায় রয়েছে।

আসাদ সরকারের পতনে নেতৃত্ব দেওয়া হায়াত তাহরির আশ-শামের (এইচটিএস) শিকড় রয়েছে সিরিয়ার আল-কায়েদার শাখায়। এটি এখনো যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। তবে এইচটিএস সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের ভাবমূর্তি নমনীয় করার চেষ্টা করেছে।

অন্যদিকে আসাদের শাসনামলে দীর্ঘ কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতার পর পশ্চিমাদেশগুলোর কূটনীতিক ও সিরিয়ার প্রতিবেশীরা নতুন শাসকদের সঙ্গে সংলাপে এগিয়ে এসেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে পুনর্গঠনে সহায়তার লক্ষ্যে কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন আসাদ সরকারের ওপর আরোপিত কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

আমাজনের গাছ কেটে জলবায়ু সম্মেলনের রাস্তা বানাচ্ছে ব্রাজিল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আমাজনের গাছ কেটে জলবায়ু সম্মেলনের রাস্তা বানাচ্ছে ব্রাজিল
ছবিসূত্র : সংগৃহীত

ব্রাজিলে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ৩০-এর জন্য নতুন সড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে আমাজন বনের বিশাল অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। এই জলবায়ু সম্মেলনের জন্য হাজার হাজার একর সুরক্ষিত আমাজন রেইনফরেস্টের মধ্য দিয়ে নতুন মহাসড়ক তৈরি করা হচ্ছে।

উত্তর ব্রাজিলের আমাজন শহর বেলেমে কপ৩০ আয়োজনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আট মাইল দীর্ঘ, চার লেনবিশিষ্ট এই মহাসড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। সম্মেলনে প্রায় ৫০ হাজার প্রতিনিধি আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

শহরের যানজট কমানোর লক্ষ্যে এই সড়ক তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু এই সড়ক তৈরির জন্য কয়েক হাজার একর বন উজাড় হয়ে গেছে।

রাজ্য সরকার মহাসড়কের কথা বললেও, এই কর্মকাণ্ড পরিবেশ সংরক্ষণ, কার্বন নিঃসরণ কমানো ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার লক্ষ্যবিরোধী বলে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছে।

বিশ্বের জন্য কার্বন শোষণ এবং জীববৈচিত্র্য জন্য আমাজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

অনেকেই বলছেন, এই বন উজাড় জলবায়ু সম্মেলনের উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

রেইনফরেস্টের মধ্য দিয়ে বেলেম পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার (৮ মাইল) এরও বেশি বিস্তৃত পরিষ্কার জমিতে কাঠের স্তূপ করা হয়েছে।
মেশিনগুলো বন উজাড় করে জলাভূমির ওপর দিয়ে রাস্তা তৈরি করছে, রাস্তাটির একটি অংশ সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর দিয়ে যাবে, যেখানে প্রায় ৮০০ প্রজাতির উদ্ভিদ ও ছত্রাক রয়েছে। সংরক্ষণবাদীরা বলছেন, এটি বন্য প্রাণীদের জন্য হুমকিস্বরূপ হবে।

রাস্তাটি যেখানে হবে সেখান থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে থাকেন ক্লাউদিও ভেরেকুয়েট। তিনি জানান, এই জায়গাটিতে থাকা বহু গাছ থেকে আকাই বেরি সংগ্রহ করে আয় করতেন। তিনি বলেন, ‘সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। আমাদের ফসল কেটে ফেলা হয়েছে। আমার এখন আয় নেই, আমাদের পরিবারকে সাহায্য করার জন্য কিছু নেই।

তিনি আরো জানান, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে কোনো ক্ষতিপূরণ পাননি তিনি এবং বর্তমানে আগের করা সঞ্চয় দিয়ে চলছেন। তিনি উদ্বিগ্নও বটে। তার মতে, এই রাস্তাটি নির্মাণের ফলে ভবিষ্যতে আরো বন উজাড় হবে। কারণ এই এলাকাটি ব্যবসার জন্য সহজলভ্য।

আতঙ্ক নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ভয় হলো, একদিন কেউ এখানে এসে আমাদের এই এলাকাটিতে একটি পেট্রোল পাম্প তৈরি করতে চাইবে অথবা একটি গুদাম তৈরি করতে চাইবে এবং তারপর আমাদের চলে যেতে হবে। আমরা এখানেই জন্মগ্রহণ করেছি এবং বেড়ে উঠেছি। আমরা কোথায় যাব?’

আরো পড়ুন
চুলের চেয়ে ২ লাখ গুণ সূক্ষ্ম ধাতু বানাল চীন

চুলের চেয়ে ২ লাখ গুণ সূক্ষ্ম ধাতু বানাল চীন

 

রাস্তাটি দুটি বিচ্ছিন্ন সংরক্ষিত বনভূমি ছেড়ে দিয়েছে। তবে বিজ্ঞানীরা উদ্বিগ্ন, এ ঘটনা বাস্তুতন্ত্রকে খণ্ডিত করবে এবং বন্যপ্রাণীদের চলাচল ব্যাহত করবে। 

অধ্যাপক সিলভিয়া সার্দিনহা একজন বন্য প্রাণী পশুচিকিৎসক এবং একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশু হাসপাতালের গবেষক। তিনি এবং তার দল বন্য প্রাণীদের পুনর্বাসন করেন। যে সকল প্রাণী আঘাত পেয়েছে, বিশেষ করে মানুষ বা যানবাহনের কারণে তাদের চিকিৎসা দেন। সুস্থ হয়ে ওঠার পর তারা তাদের আবার বনে ছেড়ে দেয়। অধ্যাপক সিলভিয়া বলেন, ‘তাদের দোরগোড়ায় একটি মহাসড়ক থাকলে বিষয়টি আরো কঠিন হবে। বন উজাড়ের ক্ষতি আছে। আমরা এই প্রাণীদের বনে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি এলাকা হারাতে যাচ্ছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘স্থলজ প্রাণীরা অন্য দিকেও যেতে পারবে না, যার ফলে তারা যেখানে বাস করতে এবং বংশবৃদ্ধি করতে পারত সেই অঞ্চলগুলো হারিয়ে ফেলবে।’

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা বলেছেন, এটি আমাজনে আয়োজিত কপ, আমাজন সম্পর্কে কপ নয়। তিনি বলছেন, এই বৈঠকটি আমাজনের চাহিদার ওপর মনোনিবেশ করার, বিশ্বকে বন দেখানোর এবং ফেডারেল সরকার এটি রক্ষার জন্য কী করেছে তা উপস্থাপন করার সুযোগ দেবে। কিন্তু অধ্যাপক সিলভিয়া সার্দিনহা বলেছেন, যদিও এই কথোপকথনগুলো ব্যবসায়ী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের খুশি করলেও, আমাজনে বসবাসকারীদের কথা শোনা যাচ্ছে না।

সূত্র : বিবিসি

মন্তব্য

যুক্তরাজ্যের ভিসানীতিতে ফের পরিবর্তন

বাসস
বাসস
শেয়ার
যুক্তরাজ্যের ভিসানীতিতে ফের পরিবর্তন
প্রতীকী ছবি : এএফপি

ভিসার নিয়মে ফের পরিবর্তন এনেছে যুক্তরাজ্য সরকার। তবে এই নিয়ম শুধু স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী, কর্মী ও শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য। দেশজুড়ে তীব্র অভিবাসনবিরোধী মনোভাব, অভিবাসনকে ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহারের ডানপন্থী প্রবণতা ও অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে বুধবার নতুন নিয়ম ঘোষণা করা হয়। দ্য গার্ডিয়ান বৃহস্পতিবার এই খবর জানিয়েছে।

নতুন নিয়ম অনুসারে, নিয়োগ কর্তাদের এখন বিদেশ থেকে কর্মী আনার আগে ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যে বসবাস করা বিদেশি স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়োগকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আগামী ৯ এপ্রিল থেকে বিদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ করতে ইচ্ছুক নিয়োগ কর্তাদের প্রথমে প্রমাণ করতে হবে, তারা ইতিমধ্যে দেশে থাকা এমন কাউকে নিয়োগ করার চেষ্টা করেছেন, যার নতুন ভিসা প্রয়োজন।

সরকার আশা করছে, এই পদক্ষেপগুলো ‘বিদেশি কর্মী নিয়োগের ওপর নির্ভরতার অবসানে সাহায্য করবে এবং অভিবাসনের মাত্রা কমিয়ে আনবে’। এ ছাড়া নতুন নিয়মে দক্ষ কর্মী ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম বেতনও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।

এপ্রিল থেকে এটি প্রতিবছর ২৩ হাজার ২০০ ইউরো থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার অথবা প্রতি ঘণ্টায় ১২.৮২ ইউরো করতে হবে।

এদিকে ব্রিটিশ স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী স্টিফেন কিনকের উদ্ধৃতি দিয়ে ফক্স নিউজ বলেছে, ‘আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যকর্মীরা আমাদের সামাজিক স্বাস্থ্য খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তারা প্রতিদিন সারা দেশে দুর্বল মানুষদের যে সেবা ও সহায়তা দেন, আমরা তাদের সেই অবদান ও কাজের মূল্যায়ন করি।’

অন্যদিকে নতুন নিয়মে ব্রিটিশ সরকার শিক্ষার্থী ভিসার জন্য নিয়ম কঠোর করছে।

বিশেষ করে স্বল্পমেয়াদি ইংরেজি ভাষা কোর্সের জন্য। যাতে সিস্টেমের অপব্যবহার সম্পর্কে উদ্বেগ দূর করা যায়।

বিদেশ থেকে এসে যারা ছয় থেকে ১১ মাস ধরে ব্রিটেনে ইংরেজি শিখছেন তারা এই পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যারা আসলে পড়াশোনা করতে চান না বা কোর্স শেষে যুক্তরাজ্য ত্যাগ করতে চান না, তাদের মাধ্যমে এই রুটের অপব্যবহারের বিষয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

এদিকে বারবার অভিবাসন-কর্মসংস্থান আইন ভঙ্গকারী কম্পানিগুলোকে যাতে বিদেশি কর্মী নিয়োগ থেকে নিষিদ্ধ করা যায়—এমন একটি পদক্ষেপকে অনুসরণ করা হবে।

২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সরকার স্বাস্থ্য খাতে ৪৭০টিরও বেশি স্পন্সর লাইসেন্স বাতিল করেছে।

অভিবাসন ও নাগরিকত্বমন্ত্রী সীমা মালহোত্রা বলেন, ‘যারা আমাদের প্রাপ্তবয়স্কদের যত্ন খাতে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাজ্যে এসেছেন তাদের শোষণ থেকে মুক্ত থাকার সুযোগ নিশ্চিত করা উচিত। আমরা ইতিমধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি, যাতে নিয়োগ কর্তারা খুব কম ফলাফল ছাড়াই নিয়ম লঙ্ঘন করতে না পারেন বা আন্তর্জাতিক কর্মীদের শোষণ করতে না পারেন।’

চলতি বছরের শুরুতে প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, কঠোর নতুন অভিবাসন নিয়ম কার্যকর হওয়ার পর থেকে বিদেশ থেকে প্রায় চার লাখ কম ভিসাপ্রত্যাশী যুক্তরাজ্যের কর্ম বা শিক্ষা ভিসার জন্য আবেদন করেছেন। এ ছাড়া ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে পাঁচ লাখ ৪৭ হাজার ভিসা আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে, যা ২০২৩ সালের একই সময়ের ৯ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ থেকে কম।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ