<p>ঐতিহাসিক গণভোটে সংবিধানে আদিবাসীদের বৃহত্তর অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়ার বিপক্ষে একচেটিয়া রায় দিল অস্ট্রেলিয়ার মানুষ। গতকাল অনুষ্ঠিত আলোচিত ভোটে ছয়টি রাজ্যেই ‘না’ পক্ষ বিজয়ী হয়েছে।</p> <p>অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় বাম সরকারের জোরদার সমর্থন সত্ত্বেও আদিবাসীদের পক্ষের প্রচারণা কয়েক মাস ধরেই জনমত জরিপে পিছিয়ে ছিল। ভোটের ফল নেতিবাচক হওয়ার বিষয়টি আগে থেকেই ধারণা করা যাচ্ছিল।</p> <p>‘ভয়েস’ নামে পরিচিত হওয়া প্রস্তাবটিতে আদিবাসীদের দেশের অধিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি তাদের জনগোষ্ঠীর বিষয়গুলোতে সরকারকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য একটি আদিবাসী পরিষদ গঠন করার কথা ছিল। তবে কোনো কোনো আন্দোলনকারী এই ভোটকে ‘বিভেদ সৃষ্টিকারী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। অন্যদিকে ‘হ্যাঁ’ পক্ষের সমর্থকরা দাবি করেন, এটি পরিবর্তন আনার জন্য এক ঐতিহাসিক সুযোগ।</p> <p>প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ নাগরিক ভোট দেওয়ার জন্য নাম নথিভুক্ত করেন। তাঁদের মধ্যে ৬০ লাখের বেশি আগাম ভোট দিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলে ভোট বন্ধ হওয়ার দেড় ঘণ্টারও কম সময়ে ফলাফল চূড়ান্ত হয়ে যায়। তখনো দেশের অন্যত্র ভোটগণনা অব্যাহত ছিল। চূড়ান্ত ফলাফলে দেখা যায়, প্রতিটি রাজ্যে ‘না’ জিতেছে। মোট ভোটসংখ্যাও ঢালাওভাবে ‘না’-এর পক্ষে।</p> <p>অস্ট্রেলিয়ার ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত শ্বেতাঙ্গ নাগরিকদের সঙ্গে তাদের অনেক আগে থেকে সেখানে বসবাস করা আদিবাসীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য নিরসন ছিল গণভোটের আদিবাসী পরিষদ গঠনের লক্ষ্য। অস্ট্রেলিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী রিচার্ড মার্লেস গতকাল স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় বলেন, ‘অস্ট্রেলীয়রা সংবিধান পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দেননি।’</p> <p>মনঃক্ষুণ্ন আদিবাসীরা বলছে, সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্বেতাঙ্গরা উপনিবেশিক আমলের চিন্তাধারা থেকে বের হতে পারেননি। তাঁরা আদিবাসীদের ন্যায্য অধিকার দিতে চান না।</p> <p>ইয়েস২৩ প্রচারণার প্রধান ডিন পার্কিন বলেন, ‘এটা খুবই বাজে ফলাফল। সত্যিই খুবই কঠিন ফলাফল। আমরা আমাদের সাধ্যের মধ্যে সব ধরনের চেষ্টা করেছি। তবে আমরা এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ করব।’</p> <p>অস্ট্রেলিয়ার শ্বেতাঙ্গ ও আদিবাসীদের মধ্যে বৈষম্য প্রকট। দেশটির জনসংখ্যার মাত্র ৩.৮ শতাংশ আদিবাসী। প্রায় সব ধরনের আর্থ-সামাজিক হিসাবে তারা দেশের সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী।</p> <p>সূত্র : এএফপি, বিবিসি</p>