<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রকৃতি, জনজীবন, চাষাবাদ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রায় সবই নদীনির্ভর। তাই বলা হয়, নদী বাঁচলে দেশ বাঁচবে। কিন্তু বাস্তবে কী হচ্ছে? সারা দেশেই নদী দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। নদীর প্রবাহ বন্ধ করে রাস্তা বানানো হচ্ছে। মাছের ঘের বা পুকুর বানানো হচ্ছে। নদী ভরাট করে স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে। নদীতে বর্জ্য ফেলে ভরাট ও দূষণ করা হচ্ছে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া খরস্রোতা গোমতী নদী দখল ও দূষণে বিপর্যস্ত। নদীর চরের মাটি তুলে নেওয়ায় বেড়িবাঁধ যেমন হুমকিতে, তেমনি নদীর গতিপথ ক্রমাগত হয়েছে পরিবর্তন। নদীপারের বাজার ও বাসাবাড়ির বর্জ্য ফেলার কারণে ভরাট হয়েছে নদীর তলদেশ। এতে নদীটি হারিয়েছে এর পানির ধারণক্ষমতা। ফলে অল্প জোয়ারেই ফুলে-ফেঁপে ওঠে নদী। এতে প্লাবিত হয় আশপাশের এলাকা। গত কয়েক বছরে ৯০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীর ৫৪টি স্থানে দুই পার দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন ৫২২ জনের তালিকাও তৈরি করেছিল জেলা প্রশাসন। এরপর দখলদারদের নদীর জায়গা ছেড়ে দিতে ১০ বারের বেশি নোটিশ দেয় প্রশাসন। তবে তাতে কোনো ফল মেলেনি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ সেতুর উত্তর পাশে বিশাল বালুমহাল আর দক্ষিণের মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে ইটভাটায়। সেতুর পশ্চিম-উত্তরে বেড়িবাঁধের ভেতর কোম্পানীগঞ্জ পানি উন্নয়নের জায়গা দখল করে এক সাবেক এমপির লোকজন। সেখানে ২০০ দোকানঘর নির্মাণ করে বিক্রি করে তারা। এ ছাড়া কোম্পানীগঞ্জ বাজারে থাকা আড়াই হাজার দোকানের বর্জ্য ফেলা হয় গোমতী নদীতে। বাজারের বেড়িবাঁধ ধরে পশ্চিম দিকে ৩০০ গজ এগোলে এক গ্রামেই রয়েছে ১২টি ইটভাটা। গ্রামের পাশে বেড়িবাঁধের ভেতর দিয়ে পাইপ ঢুকিয়ে নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়েছিলেন স্থানীয় এক যুবলীগ নেতা। কয়েক বছর মাটি তোলার পর এক ছাত্রলীগ নেতা নদীর ভেতর থেকে ট্রাক্টর দিয়ে মাটি তোলেন। এ ছাড়া আবাসিকের বর্জ্যও গোমতী নদীর সেতুর ওপর থেকে নদীতে ফেলা হচ্ছে চার দশক ধরে। এতে নদী ভরাট ও সরু হয়ে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে পানিবন্দি থাকে প্রায় চার হাজার পরিবার। আর শুকনা মৌসুমে নদীর কোনো কোনো অংশে ছেলেরা ফুটবল খেলে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উচ্চ আদালত নদীকে জীবন্ত সত্তা ঘোষণা করেছেন। নদী রক্ষায় দফায় দফায় নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, গোমতী নদী যারা দখল করেছে, তাদের অবিলম্বে অপসারণ করা হোক। পাশাপাশি দেশের নদী রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যরা তাদের ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করুক। নদীর প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করার সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হোক।</span></span></span></span></p>