<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">করুণা করে হলেও চিঠি দিও, খামে ভরে তুলে দিও...</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মহাদেব সাহার </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চিঠি দিও</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> কবিতার এই লাইনগুলো পড়লেই বোঝা যায় প্রিয়জনের একটি চিঠির জন্য কত অধীর আগ্রহে পথ চেয়ে বসে থাকত মানুষ। প্রিয় মানুষটার একটু খোঁজখবর জানার ব্যাকুলতায় হৃদয় যখন অস্থির হতো, তখন হয়তো ডাকপিয়নের সাইকেলের বেলের আওয়াজ প্রশমিত করতো সেই অস্থিরতা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের প্রাত্যহিক জীবন মোবাইলের দখলে যাওয়ার আগে নিজের মনোভাব, আনন্দ-বেদনা ভাগাভাগি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সব কিছুর একমাত্র মাধ্যম ছিল চিঠি। ব্যক্তিগত সমস্যা কিংবা পারিবারিক জীবনের চাওয়া-পাওয়াগুলোও স্থান পেত সেখানে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চিঠির ইতিহাসটা বেশ পুরনো। ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম ডাক সার্ভিসের মাধ্যমে চিঠিপত্র বিলি শুরু হয় ১৫৪১ সালে। শেরশাহ বাংলা থেকে সিন্ধু পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার মাইল দূরত্বে ঘোড়ার মাধ্যমে ডাকের ব্যবস্থা চালু করেন। পুরো ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়ে পরিপূর্ণভাবে চিঠি প্রেরণ ও গ্রহণের কাজ শুরু হয় ১৭৭৪ সালে, ব্রিটিশ শাসনামলে। প্রথম দিকে বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজের চিঠিপত্র চালাচালির জন্য এই সেবা থাকলেও পরবর্তী সময়ে জনসাধারণের জন্য তা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। নিকট অতীতে পিতার কাছে টাকা চেয়ে, বোনের বিয়েতে দাওয়াত দেওয়ার জন্য বন্ধুর কাছে, অনুজের ভালো ফলাফলের জন্য শুভ কামনা জানিয়ে কত শত ধরনের যে চিঠি দেওয়ার চল ছিল তার ইয়ত্তা নেই। এমন একটি সময় ছিল যখন আপনজনের কাছে চিঠি লিখে তার জবাব আসবে কবে সেই আশায় তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করত সবাই। ছেলেটি শহরে পড়াশোনা করছে, মেয়েটি শ্বশুরবাড়িতে কেমন আছে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসব জানার জন্য চাতক পাখির মতো পথের পানে চেয়ে থাকতে হয়েছে মা-বাবাকে। কখন আসবে তাদের চিঠি! ডাকপিয়ন যখন হাঁক দিয়ে বলে উঠত </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চিঠি এসেছে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">, তখন যেন আকাশের চাঁদ ধরা দিত তাদের হাতে। পিয়নকে বকশিশ দিয়ে বাড়ির সবাই মিলে চিঠি পড়ার মধ্যে যে আনন্দ ছিল, তা বর্ণনাতীত। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পত্র-পত্রিকার পাঠকদের জন্য এখনো রয়েছে চিঠিপত্র কলাম। যদিও আগের চেয়ে কলেবর কমে গেছে। আগে নিজের একটি লেখা দৈনিক, সাপ্তাহিক কিংবা মাসিক পত্রিকায় ছাপানোর জন্য পাঠকরা শত শত চিঠি লিখত। পত্রমিতালী নামে বিভিন্ন পত্রিকা বিশেষ পাতা প্রকাশ করত, যেখানে নিজেদের নাম, বয়স, ঠিকানা দিয়ে পাঠকদের চিঠি আহবান করা হতো। এভাবেই পত্রিকার মাধ্যমে দূর-দূরান্ত থেকেও বন্ধুত্ব গড়ে উঠত শুধু চিঠির মাধ্যমে। করপোরেট অফিসগুলো তাদের চিঠিপত্র আদান-প্রদানের জন্য ডাক বিভাগের জিপিও বক্স কিনে নিত। সেখানে কোনো ঠিকানা দরকার ছিল না, শুধু ওই জিপিও কোড আর স্থান লিখলেই চিঠি পৌঁছে যেত কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায়।</span></span></span></span></p>