<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পঞ্চদশ শতকে বর্তমান বাংলাদেশের দক্ষিণের বেশ কিছু অঞ্চল জয় করেছিলেন খানজাহান আলী। তার পুরো নাম খান আল-আজম উলুগ খানজাহান। তিনি বিজিত অঞ্চলের নাম দেন খলিফাবাদ। মধ্যযুগীয় বাংলার একটি সমৃদ্ধ নগরী ছিল এটি। ধারণা করা হয়, খানজাহান আলীই ষাটগম্বুজ মসজিদের নির্মাতা। শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান মসজিদটির। মসজিদ হলেও এটি শুধু নামাজের স্থান ছিল না; প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবেও বেশ নামডাক ছিল এর।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ষাটগম্বুজ মসজিদটি উত্তর-দক্ষিণে বাইরের দিকে ১৬০ ফুট এবং ভেতরের দিকে ১৪৩ ফুট লম্বা। পূর্ব-পশ্চিমে বাইরের দিকে ১০৪ ফুট এবং ভেতরের দিকে ৮৮ ফুট চওড়া। দেয়ালগুলো ৮.৫ ফুট পুরু এবং এখানে গম্বুজ আছে মোট ৮১টি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৭ লাইনে ১১টি করে ৭৭টি এবং চার কোনায় চারটি। মসজিদের ভেতরে রয়েছে ৬০টি পাথরের স্তম্ভ, যা ছাদের গম্বুজগুলো ধারণ করেছে। সম্ভবত স্তম্ভের সংখ্যা থেকেই মসজিদের নামকরণ হয়েছে ষাটগম্বুজ। মসজিদের অভ্যন্তরের ফুল, লতাপাতা ও জ্যামিতিক নকশা নজর কাড়ে। মধ্যযুগীয় সুলতানি স্থাপত্যশৈলী মসজিদের প্রতিটি স্তম্ভ, দেয়াল ও গম্বুজে ফুটে উঠেছে। ষাটগম্বুজ মসজিদ নির্মাণে ইট, চুন-সুরকি ও পাথরের ব্যবহার লক্ষ করা যায়। নির্মাণকাজে ব্যবহৃত হয়েছে লাল পোড়া ইট। মসজিদের স্থাপত্যকলার সঙ্গে মধ্য এশিয়ার তুর্কি স্থাপত্যশৈলীর মিল রয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুলতানি আমলে বাংলার মুসলিম সংস্কৃতি ও সমাজব্যবস্থার প্রতীক ষাটগম্বুজ মসজিদ। এটি ছিল স্থানীয় জনগণের ধর্মীয় ও সামাজিক মিলনকেন্দ্র। মসজিদের পাশে খানজাহান আলী একটি বিশাল দিঘি খনন করেন, যা </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গায়েবি মাছের দিঘি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নামে পরিচিত। ৯০ বছর বয়সে ষাটগম্বুজ মসজিদের দরবার হলে নামাজরত অবস্থায় মারা যান খানজাহান আলী। ১৯৮৫ সালে ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ষাটগম্বুজ মসজিদকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০ টাকার নোটে মসজিদটির ছবি রয়েছে। ১৯০৪ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ, ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এবং ১৯৭১ সাল থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ মসজিদটির দেখভাল করে আসছে। তবে বৃষ্টি ও মাটির লবণাক্ততার কারণে মসজিদটির দেয়ালে ক্ষয় দেখা দিয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আল সানি</span></span></span></span></p>