<p>উন্নয়ন কর্মসূচিকে গতিশীল করতে বিভিন্ন সেক্টরে দক্ষ ও বিশেষজ্ঞ জনশক্তি গড়ে তুলতে কর্মভিত্তিক ক্যাডার সার্ভিস চালু করা হলেও তা আজ বিপন্ন। সমন্বিত ক্যাডার সার্ভিসের আওতায় সব ক্যাডারকে অভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা নেই। কর্মক্ষেত্রে কোনো কোনো ক্যাডার অতিরিক্ত সুবিধা পাচ্ছে, আবার কিছু ক্যাডারে ন্যূনতম সুবিধাটুকুও নেই। এ কারণে নিজ ক্যাডার ছেড়ে সরকারের বিশেষ পদ উপসচিব পদে পদোন্নতি পাওয়ার জন্য কর্মকর্তাদের মধ্যে হিড়িক পড়েছে। নিজ ক্যাডারে দুই দশক বা তার বেশি সময় চাকরি করার পর উপসচিব হিসেবে পদোন্নতির জেরে সংশ্লিষ্ট ক্যাডারে দক্ষ জনবলের সংকট প্রকট আকার নিয়েছে। একই সঙ্গে সরকারের বিশেষ পদগুলোতে অতিরিক্ত কর্মকর্তা থাকায় তাদের পদায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় গতকাল রবিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় উপসচিব, যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিব—এ তিন স্তরে আরো ৫৩৬ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়েছে। এতে সংকট আরো বাড়বে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।</p> <p>উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি দেওয়ার ক্ষেত্রে পদশূন্যতাকে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না। শূন্য পদের অতিরিক্ত সংখ্যক কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। এ পদ থেকে পরবর্তী সময়ে যুগ্ম সচিব বা অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রেও একই প্রক্রিয়া চলছে। উপসচিব, যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদে বিদ্যমান পদেও অতিরিক্ত কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়ায় তাঁদের পদায়ন বা বদলি নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। আবার যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতি দেওয়ার পর একজন কর্মকর্তা যেসব সুবিধা পাচ্ছেন অন্য কোনো ক্যাডারের কর্মকর্তাদের তা দেওয়া হচ্ছে না। অন্যান্য ক্যাডারে পদ শূন্য না থাকলে পদোন্নতিও দেওয়া হচ্ছে না। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে কর্মকর্তারা বছরের পর বছর একই পদে চাকরি করছেন। বিভিন্ন ক্যাডারের সংশ্লিষ্ট পদ যুগ্ম সচিব পদমর্যাদায় উন্নীত হলেও সেই কর্মকর্তাদের যুগ্ম সচিবের মতো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না।</p> <p>বর্তমানে যে ২৭টি ক্যাডার রয়েছে তার মধ্যে পররাষ্ট্র ছাড়া অন্য সব ক্যাডার থেকে কর্মকর্তারা উপসচিব পদে পদোন্নতি নিচ্ছেন। পররাষ্ট্র ক্যাডারে নিয়মিত পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় এই ক্যাডার থেকে বর্তমানে আর কোনো কর্মকর্তা উপসচিব পদে পদোন্নতি নিচ্ছেন না। গতকাল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০৫ জন কর্মকর্তাকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৭৪ জন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। আর অন্যান্য ক্যাডার থেকে ৩১ জন কর্মকর্তা তাঁদের ক্যাডার ত্যাগ করে উপসচিব পদে পদোন্নতি পেয়ে চলে আসেন। তাঁদের মধ্যে কৃষি ক্যাডার থেকে ছয়জন, নিরীক্ষা, ইকোনমিক, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, গণপূর্ত, কর, সড়ক ও খাদ্য থেকে দুজন করে এবং তথ্য সাধারণ, তথ্য বেতার, পুলিশ, রেল, সমবায়, পরিসংখ্যান, কাস্টম, আনসার ও বন ক্যাডার থেকে একজন করে কর্মকর্তা রয়েছেন।</p> <p>গতকাল উপসচিব থেকে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ১৮৬ জন। যুগ্মসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব হয়েছেন ১৪৫ জন। অতিরিক্ত সচিবের স্থায়ী পদের সংখ্যা এক শর কিছু বেশি। যুগ্ম সচিবের স্থায়ী পদ সাড়ে চার শ। আর উপসচিবের স্থায়ী পদ ৮৩৩টি। নতুন করে পদোন্নতি দেওয়ায় অতিরিক্ত সচিবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৫০ জনে। আর যুগ্ম সচিব ৬১৩ জন এবং উপসচিবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪৭৯ জন।</p> <p>জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৩১ জনকে অন্যান্য ক্যাডার থেকে পদোন্নতি দিয়ে উপসচিব পদে নিয়ে আসা হলেও চাহিদা ছিল আরো অনেক বেশি। তথ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল সর্বোচ্চ ১০ জন কর্মকর্তার নাম পাঠানোর জন্য। কিন্তু তথ্য মন্ত্রণালয় ২০ কর্মকর্তার নাম পাঠায়। একই অবস্থা অন্য ক্যাডারের ক্ষেত্রেও ঘটেছে।</p> <p>জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব (গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব হিসেবে বদলীকৃত) ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী গত ৩ নভেম্বর কালের কণ্ঠকে বলেছিলেন, ‘বিভিন্ন ক্যাডার থেকে উপসচিব পদে চলে আসার প্রবণতা এখন অনেক বেশি। দীর্ঘদিন একটি ক্যাডারে চাকরি করে সেই ক্যাডার ছেড়ে দেওয়ায় নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। যে ক্যাডার ছেড়ে আসা হচ্ছে সেখানে কমর্ককর্তার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। সেসব ক্যাডারে দায়িত্ব দেওয়ার মতো কর্মকর্তা পাওয়া যাচ্ছে না। আর যাঁরা সরকারের বিশেষ পদে যোগ দিতে চাচ্ছেন, তাঁরা তুলনামূলকভাবে মেধাবী কর্মকর্তা। এসব মেধাবী কর্মকর্তা চলে আসায় সংশ্লিষ্ট ক্যাডারে শূন্যতা সৃষ্টি হচ্ছে। এটা বর্তমান ক্যাডার সার্ভিসের একটি বড় সমস্যা।’</p> <p>প্রশাসন ছাড়া বিভিন্ন ক্যাডার কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে ক্যাডার ছেড়ে ভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রাধীন সরকারের বিশেষ পদে যোগ দেওয়ার পেছনে যেসব কারণ জানা গেছে, তার মধ্যে পদোন্নতির সুযোগ না থাকাই মূল। গাড়ি সেবা নগদায়ন সুবিধাও বড় একটি কারণ হিসেবে দেখাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ ছাড়া বিভিন্ন ক্যাডারে পদ সৃজন বা আপগ্রেডেশন জটিলতা কর্মকর্তাদের বিশেষ পদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন বা মর্যাদাও এ ক্ষেত্রে বিবেচনায় থাকে। প্রশাসন ক্যাডারে ১২-১৩ বছর চাকরি করার পর উপসচিব পদে পদোন্নতি মেলে। কিন্তু অন্যান্য ক্যাডারে এ পদোন্নতি মিলছে না ২০ বছরেও। তথ্য ও কৃষি ক্যাডারের কর্মকর্তারা একই পদে চাকরি করছেন ২০ বছর ধরে। প্রশাসন ছাড়া বিভিন্ন ক্যাডারের পদোন্নতি দেয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠিত বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি বা ডিপিসি। নিয়মিত ডিপিসির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় না। বেশির ভাগ মন্ত্রণালয়ের সচিব হচ্ছেন প্রশাসন ক্যাডারের। এ ছাড়া ডিপিসির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের মধ্যেও থাকে প্রশাসন ক্যাডারের প্রাধান্য। কাজেই ভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি হলেও তা প্রশাসন ক্যাডারের প্রভাবের বাইরে হয় না। এ কারণে নানা ছুতায় বিভিন্ন ক্যাডারের পদোন্নতি আটকে যায়।</p> <p>সরকারের গাড়িসেবা নগদায়ন নামের একটি নীতিমালা আছে। তার অধীনে শুধু প্রশাসন ও ইকোনমিক ক্যাডার কর্মকর্তারা গাড়ির মালিক হতে পারেন। এ দুই ক্যাডারের যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা সরকারের কাছ থেকে বিনা সুদে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পান। এ গাড়ি পরিচালনা ব্যয় বাবদ তাঁরা প্রতি মাসে ৪৫ হাজার টাকা পান।</p> <p>নিজের পছন্দের ক্যাডার ছেড়ে উপসচিব পদে পদোন্নতি পাওয়া এক কর্মকর্তা বলেন, ‘একই প্রশ্নে বিসিএস দিয়েছি। আমার মেধা তালিকার পেছনে থেকে অনেকে প্রশাসন ক্যাডারে গেছেন। তাঁরা আজ যুগ্ম সচিব হয়ে সরকারি ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনেছেন। সেটা পরিচালনার জন্য মাসে ৪৫ হাজার টাকাও পান। আমি যুগ্ম সচিব হতে পারিনি। আমার মূল ক্যাডারে থাকলে হয়তো আমি চাকরির শেষ সময়ে যুগ্ম সচিব হতে পারতাম। কিন্তু একটা গাড়ির মালিক হতে পারব না। একটা ব্যক্তিগত গাড়ি খুব প্রয়োজন। অথচ এই গাড়ি কেবল পাবেন প্রশাসন ও ইকোনমিক ক্যাডার কর্মকর্তারা। শুধু এ কারণেই আমি আমার মূল ক্যাডার ছেড়ে সরকারের বিশেষ পদে পদোন্নতি নিয়েছি। সরকারি চাকরি করে ব্যক্তিগত গাড়ি কেনায় নানা সমস্যা। টাকা কোথায় পেলাম তা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে দুর্নীতি দমন কমিশন। গাড়ির খরচ চালানোও চাট্টিখানি কথা নয়। সেই গাড়ি পরিচালনার জন্যও পাব ৪৫ হাজার টাকা। সব কিছু মিলেই আমি সরকারের বিশেষ পদ উপসচিব পদে পদোন্নতি নিয়েছি।’</p> <p>কৃষি ক্যাডারের এক কর্মকর্তা জানান, প্রায় তিন বছর আগে সরকার সিদ্ধান্ত নেয় বিভিন্ন ক্যাডারে সচিব পদমর্যাদায় একটি করে ‘এ গ্রেড’ পদ সৃষ্টি করার। এর ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন অধিদপ্তরে ‘এ গ্রেডের’ পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। ‘বি গ্রেডের’ও কিছু পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু সৃষ্টি পর্যন্তই, আজও সরকারের সেই আদেশ কার্যকর হয়নি বিভিন্ন ক্যাডারে। সরকার বিভিন্ন সময় সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিভিন্ন ক্যাডারের পদ আপগ্রেড করার। তথ্য ক্যাডারের বিভিন্ন পদ আপগ্রেড করার কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালে। দুই বছর পরিশ্রম করে তথ্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা যখন তাঁদের প্রস্তাব তুলে ধরেন তখন তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা জানান আপগ্রেডেশনের প্রস্তাবটি পরিপূর্ণ নয়।</p> <p>বছরের পর বছর চাকরি করার পর ক্যাডার ছেড়ে দেওয়ার ফলে সংশ্লিষ্ট ক্যাডারে শূন্যতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ শূন্যতা পূরণে অনেক সংস্থায় আবার প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদেরই পাঠানো হচ্ছে। আবার বিশেষ পদে পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের পদায়ন বা বদলি নিয়েও জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। যুগ্ম সচিব হয়েও দায়িত্ব পালন করেন সিনিয়র সহকারী সচিবের। অনেক কর্মকর্তাকে পদায়নই করতে পারে না জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।</p> <p>বিভিন্ন সেক্টরে বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৮০ সালে ক্যাডার কম্পোজিশন রুলের আওতায় ৩০ ক্যাডার সৃষ্টি করা হয়। এর মধ্যে ১৯৯২ সালে সচিবালয় ক্যাডারকে প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে এক করা হয়। মাজদার হোসেন মামলার মাধ্যমে বিচারব্যবস্থা পৃথক করায় বিচার ক্যাডার আর ক্যাডার সার্ভিস হিসেবে নেই। বর্তমানে ২৭টি ক্যাডার রয়েছে। ক্যাডার সার্ভিস গঠনকালে বিভিন্ন ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকে বাছাই করে মেধাবী ও দক্ষ কর্মকর্তাদের উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি দেওয়ার কথা ছিল। তাঁরা সরকারের মাঠ প্রশাসন ও নীতিনির্ধারকদের মধ্যে সেতুবন্ধ হিসেবে সাচিবিক সহায়তা দেবেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে নীতি প্রণয়নে সহায়তা করবেন। ১৯৯৮ সালে সরকার উপসচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতির নীতিমালা প্রণয়ন করে। এ নীতিমালায় উপসচিব পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত ৭৫ শতাংশ প্রশাসন ক্যাডার এবং অবশিষ্ট ক্যাডারের জন্য ২৫ শতাংশ কোটাব্যবস্থা চালু করা হয়। কোটার ক্ষেত্রে বৈষম্য হলে তা আদালতে গড়ায়। আদালতের রায় পাওয়ার আগ পর্যন্ত উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে অন্য ক্যাডারগুলোর কোটার ২৫ শতাংশ দেওয়া হতো না। এসব ক্যাডারেও যোগ্য প্রার্থী নেই বলে বঞ্চিত করা হতো।</p> <p>উচ্ছ্বাস-দীর্ঘশ্বাসে ভরা পদোন্নতি : এতসংখ্যক পদোন্নতির পরও সবাইকে খুশি করা যায়নি। গতকাল সকালে আদেশ জারির পর কারো চেহারায় ফুটে ওঠে উচ্ছ্বাস, কারো চোখেমুখে নামে হতাশা। পাশাপাশি কক্ষে বসে থাকা দুই কর্মকর্তার একই সঙ্গে দুই রকম খবরে কোথাও আনন্দ, কোথাও দীর্ঘশ্বাসের চিত্র ফুটে ওঠে। অতীতে কয়েক দফায় বঞ্চিত হওয়া অনেক কর্মকর্তা এবারও যেমন পদোন্নতি পাননি, তেমনি কয়েক ব্যাচ আগের কর্মকর্তাদের টপকিয়ে পদোন্নতি পেয়েছেন অনেকে। আগে যোগদান করা যেসব কর্মকর্তা পদোন্নতি পাননি, পরে যোগদান করে পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের এখন থেকে ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করতে হবে, যা ব্যক্তিগতভাবে অনেক কর্মকর্তার জন্যই কষ্টকর।</p> <p>সচিবালয় ও তার বাইরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং দপ্তরে পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের আনন্দ ছিল চোখে পড়ার মতো। অন্য ব্যাচমেট, পরিবার-আত্মীয়, সাবেক ও বর্তমান সহকর্মীদের কাছ থেকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছাবাণীতে সিক্ত ছিলেন তাঁরা। আদেশ জারির পরই পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তারা জনপ্রশাসনে যোগদান করতে আসতে থাকেন। তাঁদের কেউ কেউ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জন্য মিষ্টিও নিয়ে আসেন।</p> <p>দুপুর দেড়টার দিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যোগ দিতে আসেন বিআরটিএতে কর্মরত উপসচিব থেকে যুগ্ম সচিব হওয়া নাজমুল আহসান মজুমদার। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘শরীরটা খুব একটা ভালো না। তবুও পদোন্নতির পর যোগদান করতে এসেছি।’</p> <p>পরিবেশ অধিদপ্তরের তিনজন পরিচালক আশায় ছিলেন যুগ্ম সচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব হবেন। আশা পূরণ হয়নি, ফলে দিনভর অফিসে বিমর্ষ চেহারায় বসে ছিলেন। এর আগে তিনবার পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) একজন যুগ্ম সচিব। এবারও বঞ্চিতই রয়ে গেলেন তিনি। একই চিত্র অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগেও (ইআরডি)। সেখানকার পরিকল্পনা বিভাগ এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের চিত্রও একই রকম। ইআরডির বেশ কয়েকজন উপসচিব আশায় ছিলেন, তবে এবারও হয়নি। পরিকল্পনা বিভাগের উপসচিব ও যুগ্ম সচিবের পদোন্নতি পাওয়ার কথা থাকলেও হয়নি।</p>