ঢাকা, বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫
৩ বৈশাখ ১৪৩২, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫
৩ বৈশাখ ১৪৩২, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৬

‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে তিস্তাপারে লাখো মানুষের সমাবেশ

  • বন্ধুত্ব চাইলে তিস্তার পানি দেন, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করেন : ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে তিস্তাপারে লাখো মানুষের সমাবেশ
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার তিস্তা রেল সেতু পয়েন্টে গতকাল ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : কালের কণ্ঠ

পানির দাবিতে তিস্তাপারের লাখো মানুষের সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভারতকে পরিষ্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে যদি বন্ধুত্ব করতে চান, আগে তিস্তার পানি দেন। সীমান্তে গুলি করে মানুষ হত্যা বন্ধ করেন। আমাদের সঙ্গে বড় দাদার মতো আচরণ বন্ধ করেন।

গতকাল সোমবার রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার মাঝে তিস্তা রেলওয়ে সেতুসংলগ্ন চরে তিস্তা রক্ষা ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু।

কর্মসূচি বাস্তবায়নে তিস্তার চরে মঞ্চ তৈরি, খাবার ব্যবস্থা, তাঁবু টানিয়ে রাত্রি যাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমাবেশে উপস্থিত হয়েছেন শিক্ষার্থী, কৃষক, মৎস্যজীবী, পরিবেশকর্মী, শিক্ষক, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যরা।

জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই স্লোগানে গতকাল একই সঙ্গে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ১১টি স্থানে সমাবেশ করে বিএনপি।

এ ছাড়া পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খেলার আয়োজন করে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি। দুই দিনের এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ মঙ্গলবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই কর্মসূচিতে সমাপনী বক্তব্য দেবেন।

তিস্তা রেলওয়ে সেতুসংলগ্ন চরের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, আমাদের পানির হিস্যা বুঝে নিতে চাই।

আমরা অবশ্যই ভারতকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই। কিন্তু সেটা হবে সম্মানের সঙ্গে, আমার যে পাওনা সেটা বুঝিয়ে দেওয়ার সঙ্গে।

অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজ যে আন্দোলন শুরু হলো, এটা আমরা শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাব। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ফারাক্কা অভিমুখে মার্চ করেছিলেন গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা পাওয়ার জন্য। জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’—এটা শুধু স্লোগান নয়।

এতে তিস্তাপারের মানুষের বাঁচার আহাজারি বেরিয়ে এসেছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার এলো। সবাই ভাবল, ভারতের বন্ধু আওয়ামী লীগ। সুতরাং তিস্তার পানি মনে হয় এবার পেয়েই যাবে। লবডংকা। ১৫ বছরে বাংলাদেশের অনেক কিছু বেচে দিয়েছে, কিন্তু তিস্তার এক ফোঁটা পানি আনতে পারেনি। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫৪টা নদী, সব নদীর উজানে তারা বাঁধ দিয়েছে। তারা পানি নিয়ে যায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ জীবন-জীবিকা থেকে বঞ্চিত হয়। একদিকে ভারত আমাদের পানি দেয় না, অন্যদিকে আমাদের শত্রুকে (শেখ হাসিনা) তাদের দেশে বসিয়ে রেখেছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখানে নিরপেক্ষ থাকলে চলবে না। মুখ খুলতে হবে। ভারতকে বলতে হবে, পানির ন্যায্য হিস্যা চাই। আর খুব তাড়াতাড়ি নির্বাচন দিয়ে জনগণের প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা দেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, শুকনা মৌসুমে ভারত উজানের পানি আটকে রাখে, আর বর্ষা মৌসুমে ছেড়ে দেয়। ফলে আমাদের এখানে বন্যায় সব ভেসে যায়। এটা কি কোনো বন্ধুর পরিচয় হতে পারে?

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে বলব, এখন সময় এসেছে ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলার। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা পেতে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে বাংলাদেশের সরকারকে যেতে হবে।

জাতীয় পার্টির (জাফর অংশ) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন,   আজকের এই কর্মসূচি ৬০ দিন আগে ঘোষণা করা হয়েছিল, এরপর কয়েক দিন আগে ভারত পানি ছাড়া শুরু করেছে। আমরা বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে ঘোষণা করতে চাই, যদি তিস্তার ন্যায্য হিস্যা না দাও তাহলে আমরা এককভাবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করব।

সভাপতির বক্তব্যে তিস্তা নদী রক্ষা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, এই রংপুর ছিল রঙ্গে রসে ভরপুর। তাকে আজ বিরান ভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। ছিন্নমূল মানুষ বাড়ি-ঘর হারিয়ে দেশান্তরি হয়ে কোথায় চলে গেছে আমরা বলতে পারি না।

তিস্তা নিয়ে অন্যান্য জেলার সমাবেশে ১০টি স্থানে পৃথকভাবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ বীরবিক্রম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকিসহ দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় মহিপুর তিস্তা সেতুর নিচে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি বলেন, এক-তৃতীয়াংশ পানি নদীর জন্য হবে, বাকি পানি কৃষিকাজে ব্যয় করার জন্য যথাযথভাবে বণ্টন করতে হবে। আন্তর্জাতিক আইন আছে। একটা নদীর পারে যেসব দেশ আছে সেই নদীর ওপর সব দেশেরই অধিকার সমান। ফলে ভারত উজানে আছে বলে তিস্তার ওপর তাদের অধিকার বেশি, এটা মোটেও সত্য না।

কুড়িগ্রামের দুটি পয়েন্টে সমাবেশ : তিস্তাপারে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল কুড়িগ্রামের দুটি পয়েন্টে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজারহাটের বুড়িরহাট এলাকায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বেবু, হাসিবুর রহমান হাসিব প্রমুখ।

উলিপুরের থেতরাইয়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি হায়দার আলী। বক্তব্য দেন পৌর বিএনপির সভাপতি আপন আলমগীর, জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাও আন্দোলন উলিপুর উপজেলা শাখার নেতা নজরুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি ওবায়দুল রহমান বুলবুল প্রমুখ।

লাখো মানুষের অবস্থান : কারো হাতে ঢাক-ঢোল, কারো হাতে ঘুড়ি, কারো কারো হাতে পানির দাবিতে তৈরি করা ব্যানার-ফেস্টুন। সবার গন্তব্য তিস্তাতীর। গতকাল সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষ কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে এই আয়োজন। গতকাল দুপুরে তিস্তার কাউনিয়া অংশ পরিদর্শন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর,  আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুসহ শীর্ষ নেতারা।

একই দাবিতে তিস্তার বাংলাদেশ অংশের ১১৫ কিলোমিটারের দুই পাশে ২৩০ কিলোমিটার অংশের ১১টি স্পটে একযোগে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসছে তিস্তা তীরে বসবাসরত মানুষ।

আয়োজকরা বলছেন, রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলা ও ১২টি উপজেলার ৪৪টি ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে তিস্তা নদী প্রবাহিত। শাখা-প্রশাখা ও উপনদী মিলে তিস্তায় সংযুক্ত নদীর সংখ্যা ২২টি। ৩১৫ কিলোমিটার বিস্তৃত তিস্তা অববাহিকাটিকে একটি ইউনিট ধরে সারা বছরের পানির প্রবাহকে হিসাবে এনে অববাহিকাভিত্তিক যৌথ ব্যবস্থাপনা গড়ার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত ছিল। এ লক্ষ্যে ২০১১ সালে ভারত-বাংলাদেশ একটি চুক্তিতে সই করে। এর সঙ্গে খরাকালে তিস্তার পানি চুক্তিটিও চূড়ান্ত হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ পেত ৩৭.০৫ শতাংশ, ভারত পেত ৪২.০৫ শতাংশ পানি। শেষ মুহূর্তে মমতার আপত্তির মুখে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হয়নি।

যৌথ নদী ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজন ছিল তিস্তার উজানে পাহাড়ি অঞ্চলে যৌথভাবে একটি বড় জলাধার নির্মাণ করা। এই জলাধার থেকে নিয়ন্ত্রিত পানি ছেড়ে দিতে হতো, যাতে করে ভাটিতে বর্ষাকালে পানি প্রবাহ কমে এবং শুষ্ক মৌসুমে পানির প্রবাহ বাড়ে। এতে দুই দেশের সেচ সংকটের সমাধান এবং বিপুল পরিমাণ জলবিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। আন্তর্জাতিক নিয়মে আছে- আন্তঃসীমান্ত নদীর উজানে স্থাপনা তৈরি করতে হলে ভাটির দেশকে জানাতে হবে। কিন্তু শক্তিশালী প্রতিবেশী এর সমাধান আটকে রেখেছে। পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিম সরকার বাংলাদেশকে না জানিয়ে একতরফাভাবে তিস্তা নদীতে নির্মাণ করেছে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, ব্যারাজ, বাঁধসহ নানা স্থাপনা।

(প্রতিবেদনটিতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন আমাদের রংপুর অফিস এবং গঙ্গাচড়া ও কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি)

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ঢাকায় মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক

শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন বিশেষ দূত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন বিশেষ দূত

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল চুলিক গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সফর করেছেন। প্রথম দিনই তিনি প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুেফ সিদ্দিকীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকের পর গতরাতে লুেফ সিদ্দিকী ফেসবুকে জানান, আগামী সপ্তাহে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন। লুেফ সিদ্দিকী লিখেছেন, আজ আমার দপ্তরে উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিক এবং তাঁর প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানাই।

তিনি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য এজেন্ডায় দ্রুত ও গঠনমূলক সাড়া দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটন ডিসিতে ইউএসটিআর, বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমার আরো গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সূচি ঠিক করা হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশ ও অঞ্চলের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন। তিনি অনেক দেশের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করেছিলেন।

এর পাশাপাশি ন্যূনতম শুল্ক ছিল ১০ শতাংশ। সে সময় বাংলাদেশের ওপর আরোপ করা হয়েছিল ৩৭ শতাংশ। ট্রাম্প যেসব দেশে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের রপ্তানি কম ও আমদানি বেশি, সেসব দেশের ওপর বেশি শুল্ক আরোপ করেছিলেন। তবে এই শুল্ক কার্যকর হওয়ার দিন অর্থাৎ ৯ এপ্রিল ট্রাম্প ন্যূনতম ১০ শতাংশ রেখে বাকি শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন।
এর আগে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে আলোচনায় আগ্রহ ও মার্কিন পণ্য আমদানি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছিল।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ৭ এপ্রিল  প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে চিঠি পাঠিয়ে পাল্টা শুল্ক তিন মাস স্থগিত রাখার অনুরোধ করেছিলেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিনও সেদিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) জেমিসন গ্রিয়ারের কাছে চিঠি পাঠান।

বাংলাদেশের চিঠি দুটি পাঠানোর দুই দিন পর, অর্থাৎ ৯ এপ্রিল ইউএসটিআরের সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে অনলাইন বৈঠক হয়। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে পণ্য আমদানিতে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূর করা এবং বাণিজ্যঘাটতি কমাতে বাংলাদেশ পরিকল্পনার বিষয়ে ইউএসটিআর জানতে চায়।

ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল চুলিকের সহকর্মী যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যান্ড্রু হেরাপের আজ বুধবার ভোরে ঢাকায় আসার কথা। বাংলাদেশে অ্যান্ড্রু হেরাপের সফরসঙ্গী হিসেবে মায়ানমারে ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুসান স্টিভেনসনও আসছেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর ওই জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তার এটিই প্রথম ঢাকা সফর। এ সফরে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, সংস্কার ও গণতান্ত্রিক উত্তরণ, ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপ, রোহিঙ্গা সংকটে সহায়তা ও মায়ানমার পরিস্থিতিসহ ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের নানা বিষয়ে আলোচনা হবে।

মন্তব্য

লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াত আমিরের সাক্ষাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াত আমিরের সাক্ষাৎ

লন্ডনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। রবিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় তারেক রহমানের লন্ডনের বাসায় এই সাক্ষাৎ হয়েছে বলে জানা গেছে। এ সময় তারেক রহমানও উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে শীতল সম্পর্কের মধ্যে এই বৈঠক খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করে হচ্ছে।

এই বৈঠকের পর দুই দলের সম্পর্ক কোন পর্যায়ে দাঁড়ায়, তা এখন দেখার বিষয়।

প্রায় দুই সপ্তাহের সফর শেষে সোমবার সকালে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান দেশে ফিরেছেন। আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এখনো দেশে ফেরেননি।

লন্ডনে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় আছেন খালেদা জিয়া।

তিনি সেখানে থেকে লন্ডন ক্লিনিকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আগামী সপ্তাহে তাঁর আবার পরীক্ষা হবে। এরপর তিনি দেশে ফেরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াত আমির গণমাধ্যমকে বলেন, বেগম জিয়ার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছে।

তাঁরা একসঙ্গে অনেক দিন কাজ করেছেন। বেগম জিয়া অসুস্থ। তাঁর খোঁজখবর নেওয়া নৈতিক দায়িত্ব। বহুদিন পর দেখা হয়েছে। তাঁর জন্য দোয়া করেছি, তাঁর কাছে দোয়া চেয়েছি।

তারেক রহমানের সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে জামায়াতের আমির বলেন, দুজন মানুষ একসঙ্গে হলে তো অনেক কথাই হয়। অনেক কথাই হয়েছে। তবে তিনি এর বেশি কিছু আর বলতে চাননি।

ধারণা করা হচ্ছে, স্বাভাবিকভাবেই বৈঠকে আগামী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন কবে হবে, তা নিয়ে দুই দলের মধ্যে যে দূরত্ব এই বৈঠকের মাধ্যমে তা নিরসন হতে পারে।

তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটি একাধিক নেতার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলেও তাঁরা কিছু বলতে পারেননি।

জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান গত ৪ এপ্রিল ব্রাসেলস সফরে যান। এই সফরে তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের নায়েবে আমির আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও আমিরের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মাহমুদুল হাসান।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তরে একাধিক বৈঠক ও সাক্ষাৎ কর্মসূচি ছিল জামায়াত আমিরের। সফরকালে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সাউথ এশিয়ান ককাসের এমপিদের সঙ্গে বৈঠক, ইইউয়ের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের সাউথ এশিয়া ডেস্কের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক হয় জামায়াত প্রতিনিধিদলের।

ব্রাসেলস থেকে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের লন্ডনে যান।

এদিকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াত আমির সাক্ষাৎ নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের সাবেক প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান গত রাতে তাঁর ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। পোস্টে তিনি বলেন, বেগম জিয়ার সঙ্গে জামায়াতের দুই শীর্ষ নেতার সাক্ষাতে কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা জানা যায়নি। দুই ডাক্তারের (শফিকুর রহমান ও সৈয়দ আবদুল্লাহ আবু তাহের) এই সাক্ষাৎ রাজনীতির রসায়নে নতুন কোনো ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, নাকি নিছক সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েই থাকবে, তা বুঝতে হলে আমাদের চোখ রাখতে হবে সামনের দিকে।

মারুফ কামাল খান আরো লেখেন, বেগম জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বিলেত যাওয়ার আগে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানও সস্ত্রীক তাঁর বাসায় গিয়ে দেখা করেছিলেন। সেই সাক্ষাৎকার নিয়েও বিশদ কিছু জানা যায়নি।

মন্তব্য

প্রথমবারের মতো ছোট হচ্ছে বাজেট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
প্রথমবারের মতো ছোট হচ্ছে বাজেট

স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম আগের বছরের তুলনায় নতুন বাজেটের আকার কমছে। উচ্চাভিলাষী বাজেটের ধারাবাহিকতা থেকে সরে এই পরিকল্পনা করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী অর্থবছরের বাজেট ব্যয়ের আকার চলতি অর্থবছরের চেয়ে ছোট হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের ব্যয়ের পরিমাণ কমিয়ে ৭.৯০ লাখ কোটি টাকা নির্ধারণ করতে যাচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়, যা চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় সাত হাজার কোটি টাকা কম।

বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য করতেই আকার কমানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা।

গতকাল মঙ্গলবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আর্থিক, মুদ্রা ও বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের সভায় আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৭.৯০ লাখ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৭.৯৭ লাখ কোটি টাকা।

ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সভায় পরিকল্পনা, বাণিজ্য, খাদ্য উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব, এনবিআর চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যোগ দেন।

সভায় আগামী বাজেট বিষয়ে একটি উপস্থাপনা উপস্থাপন করেন অর্থসচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার।

অর্থ মন্ত্রাণলয় সূত্র জানায়, নতুন বাজেটের আকার কমলেও পরিচালন বা অনুন্নয়ন খাতে বরাদ্দ বেড়ে দাঁড়াচ্ছে পাঁচ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ আছে পাঁচ লাখ ছয় হাজার ৯৭১ কোটি টাকা।

অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বাজেটের আকার কমানো হয়েছে মূলত উন্নয়ন খাতে।

নতুন অর্থবছর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ২.৩০ লাখ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছর এ খাতে বরাদ্দ ছিল ২.৬৫ লাখ কোটি টাকা।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নেওয়া বেশির ভাগ মেগাপ্রকল্পের বাস্তবায়ন সম্পন্ন হয়েছে এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার মেগাপ্রকল্প গ্রহণ না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের সময় রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া প্রকল্পগুলো বাতিল করায় আগামী অর্থবছর প্রকল্পের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ফলে নতুন অর্থবছর উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় কমবে।

বাজেটের আকার কমলেও এনবিআরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা না কমে বরং বাড়ছে। আগামী অর্থবছর সংস্থাটির জন্য ৫.১৮ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করছে অর্থ বিভাগ। যদিও এনবিআরের পক্ষ থেকে লক্ষ্যমাত্রা পাঁচ লাখের মধ্যে সীমাদ্ধ রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

চলতি অর্থবছরের বাজেটে এনবিআরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪.৮০ লাখ কোটি টাকা। তবে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আহরণ অনেক কম হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা কমানো হয়েছে।

আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে ২.২৬ লাখ কোটি টাকা। মূলত চড়া সুদে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ গ্রহণ কমাতে ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা সীমিত রাখার চেষ্টা করছে অর্থ বিভাগ। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি বিদেশি উৎস থেকে এবং বাকিটা ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ করবে সরকার।

নতুন অর্থবছরের বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫.৫% এবং মূল্যস্ফীতির হার ৬.৫% প্রাক্কলন করছে অর্থ বিভাগ। চলতি অর্থবছরের বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬.৫% এবং মূল্যস্ফীতি ৬% প্রাক্কলন করা হয়েছিল। অবশ্য সংশোধিত বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫.২৫% ও মূল্যস্ফীতি ৮.৫% প্রাক্কলন করেছে অর্থ বিভাগ।

জানা গেছে, মূলত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংকুচিত মুদ্রানীতির সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারি ব্যয় কমানো এবং বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য করতেই আকার কমানো হচ্ছে। কর্মকর্তারা আরো বলেন, বাজেটের আকার কমানো হলেও সমাজে বৈষম্য কমানোর পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির চাপে নিম্ন আয়ের মানুষদের স্বস্তি দিতে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে উপকারভোগী ও কিছু ক্ষেত্রে ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ থাকছে। একই সঙ্গে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

চলতি বাজেটে ঘাটতি ছিল দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
এনবিআরের প্রজ্ঞাপন

ভারত থেকে সুতা, গুঁড়া দুধসহ একাধিক পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ভারত থেকে সুতা, গুঁড়া দুধসহ একাধিক পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা

ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে সুতাসহ বেশ কয়েকটি পণ্যের ওপর আমদানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ফলে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুবিধা আর থাকছে না। এনবিআরের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সুতা, গুঁড়া দুধ, টোব্যাকো, নিউজপ্রিন্ট, বিভিন্ন ধরনের কাগজ, কাগজের বোর্ডসহ একাধিক পণ্য আমদানিতে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এনবিআরের প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ভারত থেকে ডুপ্লেক্স বোর্ড, নিউজপ্রিন্ট, ক্রাফট পেপার, সিগারেট পেপার, মাছ, সুতা, আলু, গুঁড়া দুধ, টোব্যাকো, রেডিও-টিভির পার্টস, সাইকেল ও মোটর পার্টস, ফরমিকা শিট, সিরামিকওয়্যার, স্যানিটারিওয়্যার, স্টেইনলেস স্টিলওয়্যার, মার্বেল স্ল্যাব ও টাইলস এবং মিক্সড ফ্যাব্রিকসএই পণ্যগুলো আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

তবে নেপাল ও ভুটানে উৎপাদিত এবং প্রক্রিয়াজাত সুতা ও আলু ছাড়া অন্য সব পণ্য আমদানি করা যাবে। ভ্যাট নিবন্ধিত বিড়ি উৎপাদনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো কাঁচামাল হিসেবে তামাক ডাঁটা আমদানি করতে পারবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা এবং অবৈধ রি-এক্সপোর্ট বা রিরাউটিং রোধ করতেই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

বিশেষ করে টেক্সটাইল, কাগজ ও সিরামিক পণ্য খাতে দেশীয় শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা রক্ষা করাই এর মূল উদ্দেশ্য।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বস্ত্র খাতের অন্যতম কাঁচামাল সুতা আমদানি বন্ধের দাবি জানায় বস্ত্রশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। এরপর গত মার্চ মাসে এক চিঠিতে পোশাকশিল্পে দেশে তৈরি সুতার ব্যবহার বাড়াতে স্থলবন্দর দিয়ে পোশাকশিল্পের সুতা আমদানি বন্ধ করার জন্য এনবিআরকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন।

তখন ট্যারিফ কমিশন থেকে এনবিআর চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে দেশীয় টেক্সটাইল শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে সব সীমান্তসংলগ্ন সড়ক ও রেলপথ এবং স্থলবন্দর ও কাস্টম হাউসের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সুতা কাউন্ট নির্ণয়ে যথাযথ অবকাঠামো প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সমুদ্রবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুপারিশ করা হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান এসংক্রান্ত আদেশ জারি করেন। তবে স্থলপথ ছাড়া সমুদ্রপথে বা অন্য কোনো পথে সুতা আমদানি করা যাবে।

জানা গেছে, ভারতের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলে উৎপাদিত সুতা কলকাতায় গুদামজাত করা হয়। এরপর সেখান থেকে সুতা বাংলাদেশে পাঠানো হয়। এসব সুতা তুলনামূলক কম দামে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।

এ কারণে দেশি সুতার পরিবর্তে স্থলবন্দর দিয়ে আসা সুতা বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে। এ কারণে দেশের বস্ত্রশিল্প কারখানাগুলো বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছে বলে দাবি করেছিল বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ)।

এ ছাড়া চীন, তুরস্ক, উজবেকিস্তান এবং দেশে উৎপাদিত সুতার দাম প্রায় একই রকম হলেও স্থলবন্দর দিয়ে আসা ভারতীয় সুতার দাম অনেক কম থাকে। অর্থাৎ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করা সুতা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ঘোষিত দামের চেয়ে অনেক কম দামে আসে। এতে দেশের সুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ