‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’

তিস্তায় ভারতের আচরণ অন্যায্য

  • বিএনপি ক্ষমতায় এলে পানির ন্যায্য হিস্যার জন্য জাতিসংঘ যাবে : তারেক রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
তিস্তায় ভারতের আচরণ অন্যায্য
তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ভারতের অপ্রতিবেশীসুলভ আচরণের কারণে আজ তিস্তাপারের লাখো মানুষ বন্যা ও খরায় দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। পানির অভাবে এখন তিস্তার বুকে ধু ধু বালুচর। বিএনপি ক্ষমতায় এলে পানির ন্যায্য হিস্যার জন্য জাতিসংঘ যাবে। একই সঙ্গে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে অসম, অন্যায্য ও একতরফা সব চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন বা পুনর্বিবেচনা করা হবে।

গতকাল মঙ্গলবার রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার মাঝে তিস্তা রেলওয়ে সেতুসংলগ্ন চরে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিএনপি আয়োজিত দুই দিনব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশের সমাপনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশের দ্বিতীয় দিনের সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তিস্তা নদী রক্ষা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু।

জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই স্লোগান সামনে রেখে গাইবান্ধা, রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও কুড়িগ্রামের ১১টি স্থানে সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। গত সোমবার তিস্তা নিয়ে এই কর্মসূচি উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সমাপনী বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, সারা বিশ্ব আজকে দেখে রাখুক, তিস্তাপারের লাখো মানুষ ন্যায্য পানির হিস্যা থেকে বঞ্চিত। উত্তরাঞ্চলের মানুষ আজ সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চায়, ভারতের সঙ্গে যে অভিন্ন ৫৪টি নদী, এই নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা প্রাপ্তি কারো কোনো করুণার বিষয় নয়। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এটা বাংলাদেশের প্রাপ্য। অথচ তিস্তা নদীর পানির জন্য আজকে আমাদের আন্দোলন করতে হচ্ছে।

বাংলাদেশের মানুষ তথা উত্তরাঞ্চলের মানুষকে এই আন্দোলন করতে হচ্ছে। এই পানিবণ্টন নিয়ে আমাদের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে অপ্রতিবেশীসুলভ আচরণ করেই চলছে। আজকে ৫০ বছর হলো, ফারাক্কার অভিশাপ থেকে বাংলাদেশ মুক্তি পায়নি। এখন আবার তিস্তা বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অভিশাপ হিসেবে দেখা দিয়েছে। সব আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে প্রতিবেশী দেশ আমাদের উজানে গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণ করেছে।
তারা ওই বাঁধের মাধ্যমে তিস্তার পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করছে। এক দিকে পানির অভাবে ক্ষতি হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার ফসল, আবার অন্যদিকে হঠাৎ করে পানি ছেড়ে দিচ্ছে, এতে ভেসে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি, ফসলের মাঠ। কৃষকের আবাদি ফসল ভাসিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে নদীভাঙন তো আছেই, প্রতিবছর লাখ কোটি টাকার ফসলের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।

ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, গত ৫ আগস্ট একটি খুনি স্বৈরাচারী এই দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। এই স্বৈরাচার একটি কথা বলেছিল, ভারতকে যা দিয়েছি তা তারা সারা জীবন মনে রাখবে। এই ভারত শুধু স্বৈরাচার ও পলাতককেই মনে রেখেছে। বাংলাদেশের জনগণকে তারা মনে রাখেনি। সে জন্য তিস্তাপারের বিক্ষুব্ধ মানুষের প্রশ্ন, পলাতক স্বৈরাচারকে আশ্রয় দেওয়া ছাড়া ভারত কি বাংলাদেশকে কিছু দিয়েছে? ৫ আগস্ট যে স্বৈরাচার পালিয়ে গেছে, জোর করে ক্ষমতায় থাকতে গিয়ে সে নিজেকে ভারতের সেবা দাসে পরিণত করেছিল। বাংলাদেশ ভারত যৌথ নদী কমিশন সম্পূর্ণ অকার্যকর করে রেখেছিল। এখনো ফারাক্কা সমস্যার সমাধান হয়নি, তিস্তার চুক্তিও হয়নি। অথচ আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে ওই পলাতক স্বৈরাচার আমাদের বন্দরগুলো ভারতকে ব্যবহারের একতরফা সুবিধা দিয়ে গেছে। ওই সব চুক্তিতে মিনিমাম ন্যায্যতা রক্ষা করা হয়নি। বাংলাদেশের জনগণ মনে করে, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে প্রয়োজনে অসম, অন্যায্য ও একতরফা যেসব চুক্তি করা হয়েছে, সেগুলো পুনর্মূল্যায়ন বা পুনর্বিবেচনা করা দরকার। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়, আমাদের পররাষ্ট্রনীতির এটি মূলনীতি। কিন্তু সময়ের প্রয়োজনে এই নীতি পুনর্বিবেচনা করা দরকার। বর্তমান বিশ্বে স্থায়ী শত্রু, স্থায়ী মিত্র বলে কিছু নেই। বরং একটি দেশের সঙ্গে আরেকটি দেশের সম্পর্ক হবে পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা, হবে ন্যায্যতা ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে। সুতরাং সম্পর্ক রক্ষা করার ক্ষেত্রে নিজ দেশের ও জনগণের স্বার্থ রক্ষাই হতে হবে প্রথম এবং প্রধান অগ্রাধিকার।

তিনি বলেন, বন্ধুত্বের দোহাই দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ সীমান্তে ফেলানীর ঝুলন্ত লাশ আর দেখতে চায় না। সীমান্তে নিরীহ বাংলাদেশিদের রক্তাক্ত মরদেহ মানুষ আর দেখতে চায় না। প্রতিবেশী দেশ ভারত যদি তিস্তার ন্যায্য হিস্যা না দেয় বা দিতে যদি দেরি করে, অনীহা দেখায় তাহলে দেশ ও জনগণের স্বার্থে, কৃষককে বাঁচাতে, নদী বাঁচাতে আমাদেরই বাঁচার পথ খুঁজে নিতে হবে। দেশি ও অন্তর্জাতিকভাবে সব সম্ভাব্য বিকল্পকে কাজে লাগাতে হবে। পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে জাতিসংঘসহ সব আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের এই দাবি তুলে ধরতে হবে। একই ভাবে প্রতিবেশীদের সঙ্গেও কূটনৈতিকভাবে আলোচনা শুরু করতে হবে আবার। আর সময়ক্ষেপণ না করে ১৯৯২ সালের ওয়াটার কনভেনশন এবং ১৯৯৭ সালের জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশনে স্বাক্ষর করা জরুরি হয়ে পড়েছে। উত্তরাঞ্চলকে মরুকরণের হাত থেকে বাঁচাতে তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই। বিএনপি জনগণের ভোটে রাষ্ট্রক্ষমতার দায়িত্ব পেলে তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করব।

পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, দেশের মানুষের সব ধরনের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নিয়ে পলাতক স্বৈরাচার দেশে মাফিয়া সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল। এই পলাতক স্বৈরাচার সরকারের আমলে জাতীয় নির্বাচনকে খেল-তামাশায় পরিণত করা হয়েছিল। ভোট দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করার কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি। ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে এই মাফিয়া পালিয়া যাওয়ার পর আবার জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ ও সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু সরকারের হঠকারী কোনো সিদ্ধান্তে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার ও তার দোসররা যেন পুনর্বাসনের সুযোগ না পায়, সে ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে নির্বাচনের কথা শুনলেই অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা বিচলিত হয়ে পড়েন। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একেক উপদেষ্টার একেক বক্তব্য মাফিয়া পলাতকদের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পথ সুগম করে দেয়। এ জন্যই বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নির্বাচনের রোডম্যাপ বারবার জানতে চেয়েছে।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ স্থানীয় লাখো মানুষ।

এর আগে দিনভর তিস্তা নদীর পানিতে নেমে সাধারণ মানুষ জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাও, সিকিম না তিস্তা, তিস্তা তিস্তা, তিস্তা মেগাপ্রকল্প অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে। এ ছাড়া গতকাল সন্ধ্যায় ভারতের কাছ থেকে তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় এবং তিস্তা মহা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে মশাল প্রজ্বালন করা হয়। এরপর আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিল্পী দেশীয় গান পরিবেশন করেন।

https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/02.February/19-02-2025/kalerkantho-ft-1b.jpg

এর পরও ভারত পানি না দিলে কঠোর আন্দোলন : তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে লাগাতার ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও নীলফামারীর নদীভাঙন এলাকার মানুষজন।

গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তিস্তার লালমনিরহাট অংশ থেকে পদযাত্রায় অংশ নেয় অন্তত অর্ধলাখ মানুষ। তাতে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। প্রায় চার কিলোমিটার পথ হেঁটে দুপুরে ভারতের পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লালমনিরহাটের তিস্তা রেল সেতুসংলগ্ন নদীতে নেমে প্ল্যাকার্ড উঁচিয়ে প্রতিবাদ জানায় ৫৩ বছরের ক্ষোভে দুঃখে থাকা বাস্তুহারা মানুষ।

রংপুর বিভাগ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, তিস্তায় দুই কোটি মানুষ সর্বস্ব হারিয়েছে। বহমান তিস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়েছি, কিন্তু পানি নেই। তিস্তা মরুভূমি হয়ে গেছে। সোমবার বিভিন্ন কর্মসূচি এবং আজ (গতকাল) সকালের পদযাত্রায় আমরা তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা দাবি করেছি। এখন আমরা তিস্তার পানিতে নেমে বিশ্ববাসীকে দেখাতে চাই, আসলে তিস্তায় কোনো পানি নেই। আমরা তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা চাই। আন্তর্জাতিক নদী আইন অনুযায়ী পানির ন্যায্য হিস্যা দেওয়া হোক।

বিএনপি জনগণের সমর্থন গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেআমির খসরু : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে সবার বাংলাদেশ, একটি দল বা গোষ্ঠীর বাংলাদেশ নয়। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার থেতরাই পাকার মাথায় তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজকের এই দাবি আমাদের প্রাণের দাবি। আন্তর্জাতিকভাবে ন্যায়নীতির ন্যায্য দাবি। প্রতিটি দেশে এই ধরনের নদী যখন বিভিন্ন দেশ দিয়ে প্রবাহিত হয়, সেখানে এগুলো পরিচালনার জন্য সব কটি দেশের সমন্বয় হয় ও ব্যবস্থাপনা থাকে। তিস্তার সেই ব্যবস্থাপনা ব্যর্থ হয়েছে। আজ আমাদের দাবি হচ্ছে সব ব্যবস্থাপনা ফিরিয়ে আনার দাবি। তিস্তা নদীর পানি বাংলাদেশের মানুষের ন্যায্য দাবি। এই দাবি পূরণ করতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার আজীবন চলতে পারে নাগয়েশ্বর চন্দ্র রায় : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার আজীবন চলতে পারে না। অন্তর্বর্তী সরকারকে জনগণের  আকাঙ্ক্ষা, চোখের ভাষা ও মনের ভাষা বুঝতে হবে। তাদের কত দিন থাকতে দেবে কি দেবে না, তাদের ডিসাইড করতে হবে মানুষের ধৈর্যচ্যুতি ঘটার আগে একটা নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করার।

গতকাল বিকেলে লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজের ভাটিতে নদীর চরে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পরে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় নীলফামারী জেলা বিএনপি আয়োজিত ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ হেলিপ্যাডের সমাবেশে বক্তব্য দেন। বিএনপির সভাপতি আলমগীর সরকারের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম, সহসভাপতি মীর সেলিম ফারুক, মোস্তফা হক প্রধান, আহমেদ সাঈদ চৌধুরী, ডোমার উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেয়াজুল ইসলাম, ডোমার পৌর বিএনপির সভাপতি মো. আনিছুর রহমানসহ জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী।

তিস্তার পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে ভারতমেজর হাফিজ : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন বীরবিক্রম বলেছেন, তিস্তা নদীর পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে ভারত। এই পানি আমাদের ন্যায্য অধিকার। এই কথাটি অতীতের ফ্যাসিস্ট সরকার বলিষ্ঠভাবে তুলে ধরতে পারেনি। পানির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একমাত্র সঠিক ভূমিকা নিয়েছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। ১৯৭৭ সালে গঙ্গা নদীর পানি যখন তারা একতরফাভাবে প্রত্যাহার করেছিল, তখন তিনি জাতিসংঘে গঙ্গার পানি বাংলাদেশের দাবির কথা বলিষ্ঠভাবে উত্থাপন করেছিলেন। এ কারণে ভারত বাধ্য হয়েছে ১৯৭৭ সালে গঙ্গা নদীর পানিবণ্টনে একটি চুক্তি করার জন্য।

গতকাল মঙ্গলবার তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়সহ তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির দুই দিনের কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় মহিপুর তিস্তা সেতুর নিচে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গাইবান্ধায় মশাল প্রজ্বালন করে তিস্তা বাঁচানোর দাবি : তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে উত্তরের পাঁচ জেলায় চলমান লাগাতার আন্দোলনের অংশ হিসেবে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে  মশাল প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্যে উজ্জীবিত হয়ে দলের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্লোগানমুখর হয়ে ওঠে।

গতকাল মঙ্গলবার অবস্থান কর্মসূচির দিন সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর তিস্তা ব্রিজ পয়েন্টে রংপুরের তিস্তাপারের ১১টি পয়েন্টের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একযোগে মশাল প্রজ্বালন করা হয়। এ সময় জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বাবুল আহমেদ বলেন, তিস্তা রক্ষা করা আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। আজকের এই মশাল প্রজ্বালন কর্মসূচি সরকারের কাছে স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে যে তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ছাড়া উত্তরবঙ্গের মানুষ চুপ করে থাকবে না। সরকার যদি দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ না নেয়, তাহলে আমরা আরো কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।

(প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য দিয়েছে রংপুর অফিস, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও লালমনিরহাট প্রতিনিধি, গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি ও গাইবান্ধা প্রতিনিধি)

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

রাজধানীজুড়ে বিশেষ নিরাপত্তা চৌকি, সতর্ক অবস্থান যৌথ বাহিনীর

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
রাজধানীজুড়ে বিশেষ নিরাপত্তা চৌকি, সতর্ক অবস্থান যৌথ বাহিনীর

সাম্প্রতিক নানা ইসু্য সামনে রেখে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গতকাল শুক্রবার রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়। সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্তক অবস্থানে ছিল যৌথ বাহিনী। প্রস্তুত ছিল পুলিশের রায়টকারসহ বিশেষ সরঞ্জাম।

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মুখপাত্র তালেবুর রহমান বলেন, চলমান মিছিল ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারেএমন আশঙ্কায় সামগ্রিক পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রস্তুতি হিসেবে রাজধানীর নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

বায়তুল মোকাররম ঘিরে সর্তকতা : গতকাল সকাল থেকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনের এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী মোতায়েন করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জলকামান, এপিসি মোতায়েন ছিল আশপাশের এলাকায়।

এ সময় পল্টনে তোপখানা রোডের আশপাশের বিভিন্ন মোড়ে যৌথ বাহিনীকে সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলাসহ বিভিন্ন দেশে মুসলিমদের নিপীড়নের প্রতিবাদে বিভিন্ন ইসলামী দল ও সংগঠন ঢাকায় বিক্ষোভের ডাক দিয়ে সড়ক অবরোধ করলে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

এরই মধ্যে জুমার নামাজের পর মসজিদটির বাইরে লোকজনকে কালো পতাকা হাতে মিছিলসহ ফিলিস্তিনে হামলার বিচার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। কারো কারো হাতে ফিলিস্তিনসহ বিভিন্ন পতাকা ছিল।

খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলার বিচার দাবি করেছে। দলটির নেতারা বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামাজের পর মসজিদের উত্তর গেটে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর স্লোগান দেন। পরে তাঁরা বিভিন্ন স্লোগানসহ মিছিল নিয়ে পল্টন মোড়ের দিকে চলে যান।

অন্যদিকে নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররম মসজিদের পূর্ব পাশে সমাবেশ শুরু করে হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের ঢাকা মহানগর শাখা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পল্টন মোড়ে রাখা হয়েছে ডিএমপির জলকামান, এপিসি কার ও দুটি প্রিজন ভ্যান। বায়তুল মোকাররম মসজিদের প্রবেশমুখে অবস্থান নিয়েছেন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

আর নাইটিঙ্গেল মোড়ে অবস্থান করছেন বিজিবি সদস্যরা।

প্রসঙ্গত, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে জুমার নামাজের পর হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ও খেলাফত মজলিস বিক্ষোভ মিছিল করবে; এ ছাড়া ছাত্রশিবির ও জামায়াতের সদস্যরা মসজিদ এলাকায় উপস্থিত আছেন- এই খবরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়।

বায়তুল মোকাররম মসজিদে প্রবেশের সময় মুসল্লিদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করেন পুলিশ সদস্যরা। এ ছাড়া সাদা পোশাকে ও ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) বিপুলসংখ্যক সদস্যকে জ্যাকেট পরে অবস্থান করতে দেখা গেছে।

এ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের কোনো পুলিশ সদস্য মন্তব্য করতে রাজি হননি।

অন্যান্য এলাকায় সতকর্তা : গতকাল বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট, প্রেস ক্লাব, পল্টন, হাইকোর্ট, সার্ক ফোয়ারার সামনে সর্তক অবস্থানে থাকতে দেখা যায় যৌথ বাহিনীর সদস্যদের। এ সময় মুসল্লি ও পথচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছিল। কাউকে সন্দেহজনক মনে হলে তল্লাশি করতেও দেখা গেছে। এ ছাড়া নাইটিঙ্গেল মোড়ে বিজিবি সদস্যরা অবস্থান করছিলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাব ও শাহবাগ মোড়ে ছিল পুলিশের অবস্থান।

এর বাইরে গুলশান, উত্তরা, মিরপুর, রমনা, পুরান ঢাকা ও মতিঝিলের বিভিন্ন এলাকা এবং রামপুরা টিভি স্টেশনসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সামনের নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি দেখা গেছে সকাল থেকেই।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ডিএমপির ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডিএমপির ৫০টি থানা এলাকায় জননিরাপত্তা বিধানে দুই পালায় ডিএমপির ৬৬৭টি টহল টিম দায়িত্ব পালন করে। এর মধ্যে রাতে ৩৪০টি ও দিনে ৩২৭টি টিম দায়িত্ব পালন করে। টহল টিমগুলোর মধ্যে ছিল মোবাইল পেট্রোল টিম ৪৭৯টি, ফুট পেট্রোল টিম ৭৩টি ও হোন্ডা পেট্রোল টিম ১১৫টি। এ ছাড়া মহানগর এলাকার নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত স্থানে ডিএমপি ৭১টি পুলিশি চেকপোস্ট পরিচালনা করে।

 

 

মন্তব্য

গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলার প্রতিবাদে গতকাল জুমার নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে বিক্ষোভ করে হেফাজতে ইসলাম। ছবি : কালের কণ্ঠ

গাজায় নির্যাতিত মুসলমানদের ওপর ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলা ও ভারতে মুসলিমদের ওপর আগ্রাসনের প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার রাজধানীসহ সারা দেশে সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম, খেলাফতে মজলিস, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন, ধর্মপ্রাণ মুসল্লি, সিপিবি ও বাসদ।

গতকাল দুপুরে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম। সমাবেশে সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেন, পৃথিবীর মানচিত্র মুসলমানদের রক্তে রঞ্জিত করা হচ্ছে। ভারত ও ইসরায়েল যৌথভাবে মুসলিম নিধন করছে।

এই যৌথ শক্তিকে রুখতে বিশ্বের মুসলমান ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

মামুনুল হক বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায় ও জাতিসংঘের প্রতি আমাদের আহ্বান, দ্রুত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হোক। ফিলিস্তিন মুক্ত করতে বিশ্বে মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হতে আরব লিগ ও ওআইসিসহ মুসলমানদের সব সংগঠনকে আমরা আহ্বান জানাই।

তিনি বলেন, ফিলিস্তিন ইস্যুর পাশাপাশি ভারতের মুসলমানদের রক্ত দিয়ে হোলি খেলার পাঁয়তারা চলছে।

মুসলমানদের তিন শ বছরের ঐতিহ্যকে মুছে ফেলতে তারা আওরাঙ্গজেব আলমগীর (রহ.)-এর সমাধি উত্খাতের ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ভারতকে বলতে চাই, তারা ওই সমাধিতে আঘাত করলে ভারতকে খান খান করে দেব।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সভাপতি জুনায়েদ আল হাবিব। এ ছাড়া বক্তব্য দেন যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, নায়েবে আমির আহমাদুল কাসেমী প্রমুখ।

গণহত্যার বিচার দাবি করেছে সিপিবি ও বাসদ

যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করে সম্প্রতি ফিলিস্তিনের গাজা, খান ইউনিসসহ বিভিন্ন স্থানে জায়নবাদী ইসরায়েলি বাহিনীর দ্বারা পরিচালিত নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ।

গতকাল সকালে সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাব হয়ে রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এর আগে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন সিপিবির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সসহ নেতারা।

বক্তারা বলেন, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত এই গণহত্যার জন্য মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও তার আরব সহযোগীদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

এদিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাসদ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ।

সমাবেশে বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতনসহ নেতারা।

নেতারা ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ, দেশে দেশে পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ সৃষ্ট সব যুদ্ধ এবং যুদ্ধ উন্মাদনার বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে প্রতিবাদ প্রতিরোধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে গাজায় মানবিক সংকট মোকাবেলায় জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবি জানান তাঁরা।

এ ছাড়া চট্টগ্রামে হেফাজতে ইসলাম, সিলেটে বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় হেফাজতে ইসলাম, গাইবান্ধায় ইসলামী ছাত্রশিবির, ঝালকাঠির নলছিটিতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সর্বদলীয় ইসলামী ছাত্রঐক্য পরিষদ, টাঙ্গাইলে ছাত্রশিবির, পঞ্চগড়ে ঈমান আকিদা রক্ষা কমিটি, চাঁদপুরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, গোপালগঞ্জে ওলামা পরিষদ, কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে তৌহিদী মুসলিম জনতা, চুয়াডাঙ্গার দামুরহুদায় দর্শনা প্রেস ক্লাব, বগুড়ার ধুনটে সর্বস্তরের তৌহিদী জনতা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা, দিনাজপুরের হিলিতে তৌহিদী জনতা, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন, কুমিল্লার মুরাদনগরে হেফাজতে ইসলাম, জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে তৌহিদী জনতা, মাদারীপুরের শিবচরে পৃথকভাবে ইসলামী ছাত্রশিবির ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ,  রাজবাড়ীতে সাধারণ মুসলিম সমাজ ও শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয় বলে কালের কণ্ঠর সংশ্লিষ্ট নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।

 

মন্তব্য
রুহুল কবীর রিজভী

জনগণ আ. লীগকে ক্ষমা করলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
জনগণ আ. লীগকে ক্ষমা করলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই
রুহুল কবীর রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, কিন্তু বিচার নিয়ে কোনো কথা হচ্ছে না। ছাত্র-জনতার গণহত্যায় দোষীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিচারপ্রক্রিয়া শেষে আওয়ামী লীগকে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। যদি জনগণ তাদের ক্ষমা করে তাহলে আমাদের (আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া) কোনো আপত্তি নেই।

গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর উত্তরার দক্ষিণখানে ফায়দাবাদ মধ্যপাড়া হাজী শুকুর আলী মাদরাসাসংলগ্ন মাঠে দুস্থদের মধ্যে ঈদ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

জুলাই আন্দোলনে গণহত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচার দাবি করে রুহুল কবীর রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এখন যে নেতৃত্বে আসবে, সে যদি ছাত্র হত্যা, অপরাধ, অর্থ লোপাট ও টাকা পাচার না করে থাকে তাহলে সেই আওয়ামী লীগ কেন রাজনীতি করতে পারবে না?

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে কি না এমন প্রশ্ন উঠছে। অথচ এই প্রশ্ন উঠছে না, যারা গণহত্যা চালিয়েছে, তাদের বিচার হবে কি না? কারা এই কাজ করেছে, এটা কি মানুষ দেখেনি? যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচার হতেই হবে। আর কোনো ফ্যাসিবাদের উত্থান যেন না হয়, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি শাখার আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের একটি গোষ্ঠী ৫ আগস্টের পর সংস্কারের কথা বলছে। কিন্তু গত ছয় মাসে দৃশ্যমান কোনো সংস্কার দেখা যায়নি। দেশের কোথাও স্থিতিশীলতা নেই। এখনো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

এর জন্য দরকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার গঠন করলে তবেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে।

অনুষ্ঠানে মহানগর উত্তর বিএনপি নেতা এস এম জাহাঙ্গীর, কফিল উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

 

মন্তব্য
আসিফ মাহমুদ

আ. লীগকে ফেরানোর খায়েশ বিপজ্জনক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আ. লীগকে ফেরানোর খায়েশ বিপজ্জনক
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া

আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে ফেরানোর ইচ্ছা বা পরিকল্পনা বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। গতকাল শুক্রবার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।

আসিফ মাহমুদ বলেন, আমরা কবে থেকে জার্মানি, ইতালির চেয়ে বেশি ইনক্লুসিভ ডেমোক্রেটিক হয়ে গেলাম? গণহত্যার বছর না ঘুরতেই আওয়ামী লীগকে ফেরানোর খায়েশ বিপজ্জনক।

ফেসবুকে আরেক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, নির্বাচন পিছিয়ে যাবে, অনিশ্চয়তা তৈরি হবেএসব শঙ্কার কথা বলে কেউ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে জনতার ঐক্যে ফাটল ধরাতে আসবেন না।

আসিফ লিখেছেন, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্পষ্টভাবে বারবার বলছেন ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে ইলেকশন হবে। আমি নিশ্চয়তা দিতে চাই সরকার এই কথা রাখবে। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই।

তিনি লিখেন, গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ শুধু জাতীয়ভাবে নয়, আন্তর্জাতিকভাবে ইউএন (জাতিসংঘের) রিপোর্টের মাধ্যমে স্বীকৃত।

জনতার ঐক্য জিন্দাবাদ।

 

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ