<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এ লক্ষ্যে চলতি বছরের শেষ নাগাদ ব্যাংক রেজল্যুশন অ্যাক্ট কার্যকর করার পরিকল্পনা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ ছাড়া আগামী এপ্রিল থেকে খেলাপি ঋণকে অননুমোদিত ঋণ (নন-পারফর্মিং লোন, এনপিএল) হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করার সময়সীমা বর্তমান ছয় মাস থেকে কমিয়ে তিন মাসে আনা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং মানদণ্ড বেসেল-৩-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ব্যাসেল-৩ হলো ব্যাংকগুলোর জন্য একটি আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক কাঠামো, যা ব্যাসেল কমিটি অন ব্যাংকিং সুপারভিশন (বিসিবিএস) দ্বারা তৈরি। বিশেষ করে ২০০৭-০৮ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের প্রতিক্রিয়ায় ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রণ, তত্ত্বাবধান এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করার জন্য এই মানদণ্ড প্রণয়ন করা হয়। বাংলাদেশ বর্তমানে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪.৭ বিলিয়ন বা ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় রয়েছে। এই কর্মসূচির শর্তানুযায়ী, ব্যাংকগুলোর আর্থিক স্বাস্থ্য সুরক্ষিত করতে এবং দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল করতে খেলাপি ঋণ উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত বছর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক এনপিএল শ্রেণিবদ্ধ করার সময়সীমা ৯ মাস থেকে কমিয়ে ছয় মাস করেছিল, যার ফলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যায়। গত ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩.৪৫ ট্রিলিয়ন টাকা (২৮.৪ বিলিয়ন বা দুই হাজার ৮৪০ ডলার), যা সেপ্টেম্বরের ২.৮৪ ট্রিলিয়ন টাকার তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি। এটি বাংলাদেশের মোট বকেয়া ঋণ ১৭.১১ ট্রিলিয়ন টাকার প্রায় ২০ শতাংশ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকার ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কে. মুজেরি দেশের ব্যাংকিং খাতের অবস্থাকে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভয়াবহ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাত এখন খাদের কিনারায়। সরকারের উচিত ছিল অনেক আগেই জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া, যেমন দুর্বল কিছু ব্যাংক বন্ধ করে দেওয়া, যাদের টিকে থাকার কোনো সম্ভাবনা নেই।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি আরো বলেন, সরকারকে প্রথমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা সংগ্রামরত ব্যাংকগুলোর অস্তিত্ব বজায় রাখতে চায় নাকি সেগুলো অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করতে চায়। মুজেরি বলেন, এখন গুরুত্বপূর্ণ হলো অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া। মনে হয় আমরা তা করতে ব্যর্থ হচ্ছি এবং অনেক সময় নষ্ট করছি। ফলে ব্যাংকিং খাত আরো দুর্বল হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সমপ্রতি বলেছেন, এপ্রিলে মানদণ্ড কঠোর হওয়ার পর আগামী কোয়ার্টারে এনপিএল দ্রুত বাড়তে দেখা যাবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, অতীতে বড় ও প্রভাবশালী ঋণগ্রহীতাদের সাহায্য করতে বিভিন্নভাবে খেলাপি ঋণ গোপন করা হতো। এখন সেই </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খারাপ প্রথা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বন্ধ হওয়ায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে গেছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর মনসুর বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা দুর্বল ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণের চেষ্টা করব, তাদের জন্য নতুন বিনিয়োগকারী আনব এবং তাদের পুনর্গঠন করব। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশে এখনো ব্যাংক বন্ধ করার জন্য কোনো আইন নেই।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> মনসুর বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কেন্দ্রীয় ব্যাংক ছয়টি ব্যাংকের সম্পদ গুণগত মান পর্যালোচনা করছে এবং শিগগিরই অন্যান্য ব্যাংকের জন্য একই প্রক্রিয়া শুরু করবে। এরপর আমরা ব্যাংক রেজল্যুশন অ্যাক্ট অনুযায়ী ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠনের পদক্ষেপ নেব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>
