আরেকটি ম্যাচের মতোই টস হেরে সতীর্থদের নিয়ে ফিল্ডিংয়ে নেমেছিলেন তামিম ইকবাল। জয়-পরাজয় যাই হোক না কেন ম্যাচ শেষ করেই মাঠ ছাড়বেন তিনি। তবে নিয়তি হয়তো অন্য কিছুই ভেবে রেখেছিলেন। তা না হলে ম্যাচ চলাকালীন সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মাঠ ছাড়তে না তামিম।
দ্রুত সাভারের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতালে নেওয়ার পর তামিমের হার্টে রিং পরানো হলে বর্তমানে সুস্থ আছেন তিনি। পরিবার তো অবশ্যই ভক্ত-সমর্থকদের মুখে হাসি ফেরানো তামিম এবার মাঠে ছেড়ে আসা সতীর্থদের কাছ থেকেও সুসংবাদ শুনেছেন। তার অবর্তমানে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে মোহামেডান স্পোটিং ক্লাব।
বড় জয়ে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
ঢাকা লিগের ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকানো মিরাজের সঙ্গে দলের জয়ে অবদান রেখেছেন রনি তালুকদার। ২২৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে ওপেনিং জুটিতে ১৬৪ রান তুলে কার্যত ম্যাচই শেষ করে দেন দুজনে।
প্রথম ব্যাটার হিসেবে মিরাজ আউট হওয়ার সময় করেন ১০৩ রান। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটের তৃতীয় সেঞ্চুরিটি সাজিয়েছেন ৩ ছক্কা ও ১০ চারে।
অলরাউন্ডারের আউটের ১১ রানের ব্যবধানে ফেরেন আরেক ওপেনার রনিও। তার নামের পাশে রান ৬১। পরে অপরাজিত থেকে জয়ের বাকি কাজটুকু সারেন সাইফউদ্দিন (১৮) ও নাসুম আহমেদ (১৩)। মাঝে ২৭ রানে আউট হয়েছেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন।
টস জিতে বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে ২২৩ রান করে শাইনপুকুর।
অধিনায়ক রায়ান রাফসান রহমান করেছেন সর্বোচ্চ ৭৭ রান। তার ফিফটির বিপরীতে ৯ নম্বরে নেমে ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন বাঁহাতি স্পিনার শরীফুল ইসলাম। অন্যথা, অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিনের (২) সঙ্গে চার স্পিনার যে ঘূর্ণি শুরু করেছিলেন তাতে দুই শর আগেই অলআউট হতো শাইনপুকুর। সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেওয়া তাইজুল ইসলামের বিপরীতে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন নাসুম ও মিরাজ। আর বাকি ১ উইকেট নিয়েছে মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ।
ইমনের সেঞ্চুরিতে জয়রথ ছুটছেই আবাহনীর
ডিপিএলের শুরুতেই শুধু ধাক্কা খেয়েছিল আবাহনী লিমিটেড। প্রথম ম্যাচে অগ্রণী ব্যাংকের কাছে ৬ উইকেটে হেরে। তবে এরপর থেকেই জয়রথ ছুটছে আবাহনীর। সেই ধারাবাহিকতায় আজ টানা ৭ম জয় পেয়েছে তারা।
ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাবকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে আবাহনী। সহজ লক্ষ্যের ম্যাচে ওপেনিংয়ে নেমে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন পারভেজ হোসেন ইমন। প্রতিপক্ষের দেওয়া ২০২ রানের টার্গেটের অর্ধেকের বেশি রান ইমনই করেছেন। এবারের ডিপিএলের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির ইনিংসটি খেলেছেন ১২৪ রানের।
অপরাজিত ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৫ ছক্কা ও ১৩ চারে।
শেষ দিকে ৫৪ রানের ইনিংস খেলে জয়ে অবদান রেখেছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও। আবাহনীর জয়ের আগে প্রথমে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ওভার শেষে ২০১ রানের বেশি করতে পারেনি ধানমন্ডি। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৭ রান করেছেন ফজলে মাহমুদ রাব্বি। তার মতো ফিফটি করেছেন জিয়াউর রহমান (৫৭)। আবাহনীর হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি করে উইকেট নিয়েছেন নাহিদ রানা ও রাকিুবল হাসান।
সাব্বির-ইরফানের বিপরীতে সেঞ্চুরি করেও দলকে জেতাতে পারেননি ইমরুল
দুই সেঞ্চুরিতে ৩২১ রান রানের বিশাল লক্ষ্য দাঁড় করায় প্রাইম ব্যাংক। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ইমরুল কায়েস সেঞ্চুরি করলেন বটে, তবে অগ্রণী ব্যাংককে জেতাতে পারলেন না অধিনায়ক।
ইমরুলের নেতৃত্বাধীন দল অগ্রণী ব্যাংক ৩৪ রানের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো না হলেও দ্বিতীয় উইকেটে ১৭১ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের স্বপ্নই দেখাচ্ছিলেন সাদমান ইসলাম ও ইমরুল। তবে দুজনই দ্রুত ফিরে যাওয়ার পরেই জয়ের আশা ক্ষীণ হয় তাদের। শেষ পর্যন্ত ২৮৭ রানে অলআউট হয়ে হারই সঙ্গী হয়েছে তাদের।
বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে আজ লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের ১৮তম সেঞ্চুরি করেছেন ইমরুল। ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১১ চার ও ৪ ছক্কায়। তার সেঞ্চুরির বিপরীতে ৬৮ রান করেন সাদমান। প্রতিপক্ষের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন দুই স্পিনার রিশাদ হোসেন ও আরাফাত সানি।
প্রাইম ব্যাংকের হ্যাটট্রিক জয়ে জোড়া সেঞ্চুরি করেছেন সাব্বির হোসেন ও ইরফান শুক্কুর। ওপেনার সাব্বিরের ১০২ রানের বিপরীতে ১০৭ রান করেছেন শুক্কুর। সাব্বির ইনিংসটি সাজান ৫ ছক্কা ও ৭ চারে। অন্যদিকে উইকেটরক্ষক শুক্কুর অপরাজিত ইনিংসটি সাজান ৮ চার ও ৪ ছক্কায়। শেষ দিকে ৪৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলের ৩২১ রানের সংগ্রহে অবদান রাখেন শাহাদাত হোসেন দিপুও।