<p>নিত্যপণ্যের অসহনীয় দাম ঠেকাতে অন্তর্বর্তী সরকার নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। বাজার মনিটরিং, অভিযান, জরিমানা, টিসিবির মাধ্যমে পণ্য বিক্রি, সবই করা হচ্ছে। এমনকি চিনির দাম নিয়ন্ত্রণে আমদানি শুল্কও কমানো হয়েছে। তবুও এই পণ্যের দাম কমছে না বা কমানো হচ্ছে না।</p> <p>চিনির বাজার পুরো নিয়ন্ত্রণ করছে কয়েকটি গ্রুপ। এরা শুল্ক কমানোর সুবিধা নিয়ে আরো বেশি মুনাফা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।</p> <p>চিনির দাম কমাতে গত ৯ অক্টোবর অপরিশোধিত ও পরিশোধিত চিনির ওপর বিদ্যমান নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়। এতে আমদানি পর্যায়ে প্রতি কেজি অপরিশোধিত চিনির শুল্ক কর ১১ টাকা ১৮ পয়সায় এবং পরিশোধিত চিনির শুল্ক কর ১৪ টাকা ২৬ পয়সায় কমার কথা। কিন্তু এখনো আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই খাদ্যপণ্যটি।</p> <p>জানা গেছে, মূলত বেসরকারি পাঁচটি গ্রুপ বড় পরিসরে অপরিশোধিত চিনি আমদানি করে। কম্পানিগুলো হলো সিটি গ্রুপ, মেঘনা, এস আলম, আবদুল মোনেম ও দেশবন্ধু গ্রুপ। এ ছাড়া ছোট কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও পণ্যটি আমদানি করে। এসব কম্পানিই মূলত বাজারে চিনির দাম নিয়ন্ত্রণ করে। সরকারি ১৭টি চিনিকলের মধ্যে ৯টি সামান্য কিছু চিনি আখ থেকে উত্পাদন করলেও তা বাজারে কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না।</p> <p>গতকাল সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বনানী কাঁচাবাজারসহ বেশ কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগের দামেই চিনি বিক্রি হচ্ছে, খোলা চিনি ১৩০ টাকা কেজি ও প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, কম্পানির পক্ষ থেকে এখনো দাম কমানো হয়নি। ফলে তাঁদের বেশি দামে কিনে, কিছু মুনাফা করে বিক্রি করতে হচ্ছে।</p> <p>বনানী কাঁচাবাজারের মদিনা জেনারেল স্টোরে বিক্রেতা তুহিন ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, “সিটি গ্রুপের ‘তীর’ চিনি বিক্রি করছি ১৩৫ টাকা কেজি। গায়ের রেট দেওয়া আছে ১৩২ টাকা। আর আমাদের দাম ধরে ১৩০ টাকা। এখন ১৩২ টাকায় বিক্রি করলে মাত্র দুই টাকা লাভ হবে। আমাদের এই দোকানটার ভাড়া ৪০ হাজার</p> <p>টাকা, বিদ্যুত্ বিল ১০ হাজার টাকা, স্টাফ খরচ ১৫ হাজার টাকা, এরপর আমাদের খাবার খরচ আছে। এখন বলেন, ১৩০ টাকা বিনিয়োগ করে দুই টাকা লাভ করা যৌক্তিক?”</p> <p>বিক্রেতা তুহিন ইসলাম আরো বলেন, ‘আগে কম্পানিকে দাম কমাতে হবে, তবেই আমরা দাম কমাতে বাধ্য। আমার কেনা বেশি হলে, কম দামে বিক্রি করতে পারব না। বাড়িয়েই বিক্রি করতে হবে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।’</p> <p>গুলশানের কালাচাঁদপুর এলাকার মুদি দোকান মনির অ্যান্ড ব্রাদার্স। এই দোকানের স্বত্বাধিকারী মনির কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মেঘনা গ্রুপের ফ্রেশ ব্র্যান্ডের খোলা চিনি ১৩০ টাকা কেজি। এটা আগে থেকেই এই দামে বিক্রি করছি। নতুন করে কম্পানির পক্ষ থেকে দাম কমায়নি।’ দাম কেন কমছে না, জানতে মেঘনা ও ফ্রেশ কম্পানির দুজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।</p> <p> </p>