দেশের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে সব বয়সের ক্রেতারা আসতে শুরু করেছে। ধানমণ্ডি, নিউমার্কেট, ফার্মগেট, পান্থপথ, গ্রিন রোডসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকার মানুষ এ শপিং মলে পোশাক কিনতে আসছে।
গতকাল সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বর্ণিল পোশাকের পসরা সাজিয়েছেন ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতারা। তবে এখনো অনেক ক্রেতা কেনাকাটা শুরু করেনি বলেও মনে করছেন তাঁরা।
পাঁচ-ছয় রোজা থেকে কেনাকাটা জমবে বলে আশা বিক্রয়কর্মীদের।
এবারের আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে ফ্যাশন হাউসগুলো সুতি কাপড়ের ওপর জোর দিয়েছে। ছোটদের জন্য বাজারে এনেছে আরামদায়ক অনেক পোশাক। আরামের পাশাপাশি স্টাইল আর ঈদের আমেজ ফুটিয়ে তুলতেও জোর দিয়েছে তারা।
আড়ং, দেশি দশের মতো দেশীয় পণ্যের শোরুমগুলোতে ক্রেতাদের বেশ আগ্রহ দেখা গেছে। কোনো কোনো পণ্যে বিশেষ ছাড়ও দিচ্ছে কিছু প্রতিষ্ঠান।
পোশাকের ব্র্যান্ড রাইসের শাখা ব্যবস্থাপক তাজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে নতুন পোশাক আনা হয়েছে, দামও বেশ নাগালের মধ্যে। আশা করি আগামী বৃহস্পতি বা শুক্রবার থেকে ঈদের কেনাকাটা পুরোদমে শুরু হবে।
’
তিনি জানান, এবারের ঈদের কেনাকাটায় রাইস বাংলালিংক অরেঞ্জ ক্লাব ও রবির এলিট সদস্যেদের ১২ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাবিব হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঢাকার কয়েকটি শপিং মলে নীল-সাদা পাঞ্জাবি খুঁজছি। কিন্তু পছন্দমতো পাইনি। বসুন্ধরা সিটির লা রিভের বেশ কয়েকটি পাঞ্জাবি পছন্দ হয়েছে। দামও বেশ কম।
যদি পছন্দের রঙের পাঞ্জাবি পাই, তাহলে আজই কিনব।’
হাসান জানান, পরিবারের সদস্যদের জন্যও পোশাক কেনার পরিকল্পনা আছে তাঁর।
বেসরকারি চাকরিজীবী তুষার কান্তি ঘোষ তাঁর মায়ের জন্য শাড়ি ও নিজের জন্য প্যান্ট কিনেছেন। এখন বাবার জন্য পাঞ্জাবি কেনার কথা ভাবছেন বলে জানান তিনি।
তবে কাঙ্ক্ষিত বিক্রি নিয়ে সংশয় জানিয়েছেন জেন্টেল পার্কের বিক্রয়কর্মী রাফি হোসেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের একটা ধাক্কা যাবে এবার। অনেক নেতাকর্মী উপহার হিসেবে দেওয়ার জন্য পোশাক কিনতেন। এবার সেই বাজার পাওয়া যাবে না বললেই চলে। এর পরও বিশেষ পাঞ্জাবিতে ৫০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
আর্ট বি স্মার্টের ব্যবস্থাপক মামুন আহমেদ বলেন, ‘এখন স্বল্পপরিসরে বিক্রি হলেও আশা করছি রোজার মাঝামাঝি পুরোদমে বিক্রি শুরু হবে।’ তারা কোনো পণ্যে ছাড় না দিলেও সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে পোশাক। এক হাজার ৬০০ থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে আকর্ষণীয় সব পাঞ্জাবি।
রিচম্যানের শাখার ইনচার্জ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘রোজা মাত্র শুরু হয়েছে। রমজানের মাঝামাঝি বিক্রি বাড়বে বলে আশা করছি।’
সাধারণত শুক্রবার ক্রেতার সংখ্যা বেশি থাকে উল্লেখ করে একটেসি শোরুমের ব্যবস্থাপক জুবায়ের মিয়া জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষে যেসব ক্রেতা আসার কথা, তারা সাধারণত রমজানের মাঝামাঝি আসতে শুরু করে। দর্জিবাড়ির জাহিদুল ইসলাম জাহিদও একই কথা বলেন।
তবে আগের বছরের চেয়ে এ বছর আরো ভালো বিক্রি হবে বলে আশা করেন হস্তশিল্প ও তাঁত পণ্যের খুচরা বিক্রেতা কে ক্রাফটের বিক্রয়কর্মী প্রবাল চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এখনো ঈদের বেতন-বোনাস হয়নি। আগামী দিনগুলোতে আশানুরূপ বিক্রি বাড়বে।’