তখন বিকেল ৪টা। বসুন্ধরা শপিং মলের আড়ংয়ের শোরুম। ভেতরে পা দিয়ে চোখ ছানাবড়া। ‘ও মাই গড!’ বলে থমকে গেলেন ইকবাল হোসেন নামের এক তরুণ।
তখন বিকেল ৪টা। বসুন্ধরা শপিং মলের আড়ংয়ের শোরুম। ভেতরে পা দিয়ে চোখ ছানাবড়া। ‘ও মাই গড!’ বলে থমকে গেলেন ইকবাল হোসেন নামের এক তরুণ।
সারা বছর কেনাকাটায় রাজধানীবাসীর আগ্রহের কেন্দ্রে থাকে পান্থপথের বসুন্ধরা শপিং মল।
গতকাল জুমার নামাজের পর বসুন্ধরা শপিং মলে প্রবেশ করে দেখা যায়, প্রতিটি চলন্ত সিঁড়ি আর লিফটের সামনে ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড়। পুরো পরিবার নিয়ে এসেছেন অনেকে। অনেকে কেনাকাটা সেরে দুই হাত ভরা ব্যাগ নিয়ে নেমে যাচ্ছেন। বিভিন্ন ফ্লোরে বসার স্থানে কেউ কেউ কেনাকাটার মাঝে বিরতি দিয়ে জিরিয়ে নিচ্ছেন। এমনই একজন আফসার আহমেদ। কালের কণ্ঠকে বললেন, সপরিবারে কেনাকাটা করতে এসেছেন। এরই মধ্যে অনেক জামাকাপড় কিনেছেন। ছোট ছেলেকে নিয়ে এখন তিনি বসে অপেক্ষা করছেন। স্ত্রী আর ছোট বোন গেছেন বাকি কেনাকাটা শেষ করতে।
নিচতলায় ইয়েলোর শোরুমে দেখা গেল বেশ ভিড়। নতুন আসা পোশাক দেখছেন ক্রেতারা। নিরাপত্তাকর্মী কাদের জানালেন, ‘কয়েক দিন ধরেই ক্রেতা বেড়েছে। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এই ভিড় থাকবেই। আজ শুক্রবার যে ভিড় দেখছেন, তা অন্য দিনেও থাকবে এখন থেকে।’ বসুন্ধরার দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় রয়েছে ইজি ফ্যাশন, আর্টিসান, টুয়েলভ, জেন্টল পার্ক, ইনফিনিটি, রিচম্যান, লুবনান, দর্জিবাড়ি, ইল্লিয়্যিন, ক্যাটস আই, এমব্রেলা, ফিট এলিগ্যান্স, রাইজ, র’নেশন, প্লাস পয়েন্ট প্রভৃতি ফ্যাশন ব্র্যান্ডের একাধিক শোরুম। সবগুলোতেই ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড়। তবে এদিন লেভেল টুতে সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিল আড়ংয়ে। লেবেল থ্রির স্টাইল ইকোতে দেখা গেল নারীদের ভিড়। সেলাইহীন পোশাক কিনে দর্জির কাছে দিতে হবে, তাই আগেই কিনতে এসেছেন বলে জানালেন এখানকার একজন ক্রেতা।
প্রতি ঈদেই শৌখিন নারীদের শাড়ির দোকানগুলোতে ভিড় করতে দেখা যায়। এবারও লেভেল ফোরে শাড়ির দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। এখানে রয়েছে জ্যোতি, জামদানি হাউস, নীল আঁচল শাড়িজ, কালাঞ্জলি শাড়িজ, ঢাকা জামদানি কুটির, শাড়িবাজার, শালিমার, অর্চিসহ অনেক অভিজাত শাড়ির দোকান। এই ফ্লোরে থাকা ইরানি বোরকা বাজারেও ভিড় ছিল গতকাল। শাড়ি বিক্রেতারা বললেন, এই ভিড় দু-এক দিনের ভেতর আরো বাড়বে। এখনো অনেকে শাড়ি দেখছেন। কেউ কেউ পছন্দ করে রেখে যাচ্ছেন, পরে এসে কিনে নেবেন বলে।
লেভেল ফাইভের লা রিভ, রেড এবং লেভেল সিক্সে বাটা, এপেক্স, ওরিয়ন, বে ইত্যাদির শোরুমে গতকাল বিক্রেতারা ব্যস্ত সময় পার করেছেন। বাটার একজন বিক্রয়কর্মী জানালেন, ক্রেতাদের কারণে শোরুম বন্ধ করতে করতে রাত প্রায় সাড়ে ৯টা-১০টা বেজে যায়। কদিন পর আরো ক্রেতা বাড়বে। তখন ডিউটি করে মধ্যরাতে বাড়ি ফিরতে হবে।
সম্পর্কিত খবর
প্রায় এক যুগ আগে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরসহ সারা দেশে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের হত্যা-নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
প্রসিকিউশনের আবেদনে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বুধবার এই পরোয়ানা জারি করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন—বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। অন্য যে তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, তাঁরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ।
২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে রাজধানীর শাপলা চত্বরসহ সারা দেশে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের ওপর নির্বিচার গুলি চালিয়ে হেফাজতের শতাধিক কর্মী হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে গত বছর ২৬ নভেম্বর সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৯ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। আসামি ৯ জনের মধ্যে চারজন অন্য মামলায় গ্রেপ্তার আছেন। তাঁদের আগামী ১২ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ।
অন্য মামলায় গ্রেপ্তার চার আসামি হলেন—সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক, মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান ও পুলিশের সাবেক উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোল্যা নজরুল ইসলাম।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম ও বি এম সুলতান মাহমুদ।
পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে ট্রেনে জিম্মি তিন শতাধিক যাত্রীকে উদ্ধার করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এ সময় অভিযানে সশস্ত্র গোষ্ঠীর অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছে। গত মঙ্গলবার বেলুচিস্তানের বোলান জেলার কাছে একটি টানেলে প্রবেশের সময় সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা জাফর এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটি ছিনতাই করে। চলন্ত ট্রেনে বোমা হামলা ও গুলি চালিয়ে নিয়ন্ত্রণ নেয় সশস্ত্র বিদ্রোহীরা।
নিরাপত্তা বাহিনীর তথ্য মতে, প্রায় ৪৫০ জন যাত্রী নিয়ে ৯টি বগিতে ট্রেনটি কোয়েটা থেকে খাইবারপাখতুনখাওয়ার রাজধানী পেশোয়ার যাওয়ার পথে হামলার শিকার হয়। নিরাপত্তা বাহিনী এখন পর্যন্ত ৩৪৬ জন জিম্মিকে সফলভাবে মুক্ত করেছে এবং ৩৩ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে।
ট্রেনটিতে কতজন সশস্ত্র সদস্য অবস্থান করছিল তা এখনো জানা যায়নি। নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান শুরু করার পর সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে চলে যায় বলে জানা গেছে। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার রাতে সব জিম্মিকে উদ্ধারের পর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের অভিযান শেষ হয়েছে।
এদিকে ট্রেনে হামলা ও যাত্রীদের জিম্মির ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)।
এর আগে রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, ট্রেনটি থেকে উদ্ধার করা ৫৭ যাত্রীকে বুধবার দিনের শুরুর দিকে কোয়েটায় আনা হয়েছে। বাকিরা স্থানীয় মাচ শহরে আছেন। ১৭ জন আহত যাত্রীকে জরুরি চিকিৎসা দেওয়ার জন্য পার্শ্ববর্তী একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সশস্ত্র ব্যক্তিরা রেললাইনে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ট্রেনটি থামায়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ অন্য আসামিদের দুই হাত পেছনে নিয়ে হাতকড়া পরিয়ে আদালতে তোলা হয়। গতকাল বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এমন চিত্র দেখা গেছে। পেছনে হাতকড়া পরানোর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী শুনানিতে আদালতকে বলেন, ‘ইদানীং সালমান, আনিসুলসহ বেশ কয়েকজন আসামিকে দুই হাত পেছনে নিয়ে হাতকড়া পরিয়ে আদালতে তোলার বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। মূলত বেশ কয়েকজন আসামি হাজতখানা থেকে আদালতে তোলার সময় হাত উঁচু করে চিৎকার করে সরকারবিরোধী বক্তব্য দিতে চান।
এদিন সকালে পলকসহ অন্যদের আদালতে আনা হয়। এরপর পুলিশ প্রহরায় ৯টা ৪০ মিনিটে তাঁদের কাঠগড়ায় তোলা হয়। এ সময় পলক তাঁর আইনজীবীকে নানা পরামর্শ দেন।
কাঠগড়ায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ছেলে জ্যোতির সঙ্গে সাবেক এমপি সোলায়মান সেলিমকে গল্প করতে দেখা গেছে। তবে শুনানি চলাকালে সাবেক সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হক ও ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম চুপচাপ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
রিমান্ডে যাওয়া অন্যরা হলেন ঢাকা-৭ আসনের সাবেক এমপি সোলায়মান সেলিম, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ছেলে শাফি মুদ্দাসির খান জ্যোতি, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সিয়াম রহমান ও আনোয়ার হোসেন নাঈম। এর মধ্যে ধানমণ্ডি থানার মামলায় পলক তিন দিন এবং সিয়াম ও নাঈমের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এ ছাড়া লালবাগ থানায় মাদরাসাছাত্র শাহেনুর রহমান হত্যা মামলায় সোলায়মান সেলিম ও রামপুরা থানার মেডিক্যাল কর্মচারী তনিম আব্দুল্লাহ নাহিনকে হত্যাচেষ্টা মামলায় জ্যোতির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
দেশে প্রতিবছর অন্তত ১০ হাজার মানুষের কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন পড়ে, কিন্তু প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে গড়ে সর্বোচ্চ ৩৬৫ জনের, যা প্রয়োজনের মাত্র ৩.৬৫ শতাংশ। প্রতিস্থাপন-পরবর্তী ওষুধ ও চিকিৎসা না পেয়ে অর্ধেকের মৃত্যু হয় পাঁচ বছরের আগে।
দেশের কিডনি প্রতিস্থাপনসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা এই তথ্য জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা এখন প্রায় তিন কোটি ৮০ লাখ।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, কিডনি প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে আইনগত নানা জটিলতার কারণে একদিকে সচ্ছল রোগীরা কাছের দেশগুলোতে চলে যাচ্ছে, অন্যদিকে দরিদ্র রোগীরা ডায়ালিসিস পর্যন্ত চালিয়ে যেতে পারছে না। তারা শরীরে যন্ত্রণা নিয়ে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
এমন পরিস্থিতিতে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব কিডনি দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে প্রতিবছর ১৩ মার্চ দিবসটি পালিত হয়। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘আপনার কিডনি কি ভালো আছে?’
বাংলাদেশে কিডনি প্রতিস্থাপন শুরু হয় আশির দশকে। এরপর চার দশকের বেশি সময় কেটে গেলেও সরকারি পর্যায়ে এর চিকিৎসাসেবা তেমন এগোয়নি।
এনআইকেডিইউ হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. শওকত আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের এখানে ২০০৫ সালে অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম প্রথম কিডনি প্রতিস্থান শুরু করেন। তখন প্রতিবছর তিন-চারটা প্রতিস্থাপন হতো। মাঝে আবার একবারে কমে যায়। এরপর আমি প্রশিক্ষণ শেষে কিডনি প্রতিস্থাপন শুরু করি।
তিনি বলেন, ‘সরকারি পর্যায়ে কিডনি প্রতিস্থাপন ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। আমাদের এখানে লোকবল থাকলেও রক্তের টাইপিং, টিস্যু টাইপিং-ক্রসম্যাচ যন্ত্রপাতি নেই। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে কোনো একটা গ্যাপ থাকলে সেটি আর সম্ভব হয় না। যেমন—ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চেষ্টা করেও পিছিয়ে যেতে হয়েছে।’
দেশের দু-একটি হাসপাতালে শল্যচিকিৎসকরা আড়াই লাখ টাকায় কিডনি প্রতিস্থাপন করে দিলেও এর সঙ্গে ওষুধ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ডায়ালিসিস মিলিয়ে একজন রোগীর ১০ লাখ টাকারও বেশি খরচ হয়। বেসরকারি উন্নত হাসপাতালগুলোতে এই খরচ কয়েক গুণ বেশি।
ডা. মো. শওকত আলম বলেন, ‘আমাদের এখানে অপারেশন বা কিডনি প্রতিস্থাপন খরচ একদম ফ্রি। প্রতিস্থাপন-পরবর্তী তিন মাস রোগীরা বিনামূল্যে কেবিনে বা ওয়ার্ডে থাকে। এই সময়ে তারা ফ্রি ডায়ালিসিস পায়। রোগীর খরচ হয় শুধু কিডনি দাতা ও গ্রহীতার টিস্যু টাইপিং-ক্রসম্যাচ, এসব পরীক্ষা বাইরের হাসপাতাল থেকে করতে হয়। পরীক্ষাগুলো করতে হয় একাধিকবার।’
কিডনিবিষয়ক বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কিডনি অ্যাওয়্যারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটির (ক্যাম্পস) প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ বলেন, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি প্রদাহ (নেফ্রাইটিস) ও স্থূলতা কিডনি রোগের প্রধান কারণ। এ ছাড়া অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, ব্যথানাশক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার, জন্মগত ও বংশগত কিডনি রোগ, মূত্রতন্ত্রের প্রদাহ ও পাথুরে রোগীরাও কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। শহর ও গ্রামাঞ্চলে সমানভাবে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।
একাই ১,৮০০ কিডনি প্রতিস্থাপনের রেকর্ড
দেশে সবচেয়ে বেশি কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম। আগামী শুক্রবার এক হাজার ৮০০ কিডনি প্রতিস্থাপনের রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন তিনি।
স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত এই চিকিৎসক কালের কণ্ঠকে বলেন, দেশে কিডনি প্রতিস্থাপন প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এর কারণ অঙ্গ প্রতিস্থাপনে দক্ষ জনবল তৈরি করা যায়নি, ওষুধের খরচ অনেক বেশি, আইনি জটিলতা, সরকারের অর্থ বরাদ্দ নেই এবং ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্টের দিকে মানুষের আগ্রহ তৈরি করা যায়নি। এ ক্ষেত্রে ক্যাডাভেরিক অঙ্গদান ও প্রতিস্থাপন কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে ধর্মীয়, আইনি ও সমাজের বিশিষ্টজনদের এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে কিডনি প্রতিস্থাপনে সফলতা অন্যান্য দেশের কাছাকাছি রয়েছে। কিন্তু সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও নিয়মিত ওষুধ না পেয়ে রোগীরা মারা যায়।’
গবেষণায় দেখা যায়, কিডনি প্রতিস্থাপনের এক বছরে ৯৬ শতাংশ রোগী ভালো থাকছে, তিন বছরে পর সুস্থ থাকছে ৮৫ শতাংশ, পাঁচ বছরে ৭৫ এবং ১০ বছরে অর্ধেক রোগী মারা যায় বিভিন্ন সংক্রমণের কারণে। অথচ তাদের কিডনি ঠিকমতো কাজ করছিল।
ডা. কামরুল ইসলাম বলেন, কিডনি প্রতিস্থাপনের পর রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এতটাই কমে যায় যে একটা শিশুর মতো তাঁকে যত্ন করতে হয়। সামান্য ইনফেকশন হলেও ক্ষতি হয়।