<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় বিগত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনগুলোতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও এর যথাযথ বাস্তবায়ন হয়নি। ২০২০ সাল থেকে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রদানের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হার সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ। ফলে বাংলাদেশের মতো সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে দুর্যোগের ঝুঁকি বেড়েছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশ আগামী ২৯তম বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (কপ২৯) প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের প্রতি গুরুত্ব দেবে বলে জানা গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নতুন আশা নিয়ে আগামী ১১-২২ নভেম্বর আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ২৯ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্মেলনে জলবায়ু অর্থায়নের বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব পাবে। বিগত সম্মেলনগুলোতে উন্নত বিশ্বের বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের মতো সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। ২০২০ সাল থেকে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি এবং প্যারিস চুক্তির আওতায় ২০২৫ সাল পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করা হলেও উন্নত দেশগুলো তা রক্ষা করেনি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, জলবায়ু অর্থায়নের অন্যতম উৎস </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড (জিসিএফ)</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ২০১৫ সাল থেকে মাত্র সাড়ে ১৩ বিলিয়ন দিয়েছে। এটি বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতির বিপরীতে মাত্র ২-৩ শতাংশ। ২০২০ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর গড়ে ২০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হলেও বাংলাদেশ ২০২৪ সাল পর্যন্ত মাত্র ৭১০ মিলিয়ন ডলার আন্তর্জাতিক উৎস থেকে পেয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ১৩-এর আওতায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় তহবিল দেওয়ার বিষয়ে শিল্পোন্নত দেশগুলো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অথচ অনুদানের পরিবর্তে অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে জলবায়ু অর্থায়নের নামে তারা লাভজনক বিনিয়োগ বা ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে, দুর্বল দেশগুলোকে যা দারিদ্র্য, বৈষম্য ও বৈদেশিক ঋণের ফাঁদে ঠেলে দিচ্ছে। প্যারিস চুক্তিতে প্রতিশ্রুত জলবায়ু তহবিল প্রদান বাধ্যতামূলক না করে ঐচ্ছিক রাখায় উন্নয়নশীল দেশের জন্য প্রয়োজনীয় জলবায়ু অর্থায়ন পাওয়া ক্রমেই কঠিন ও অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্বব্যাংকের সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় জলবায়ু অভিবাসীর অর্ধেকই বাংলাদেশ থেকে হবে। জরুরি উদ্যোগ ও কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে বন্যা ও ফসলের উৎপাদন নষ্ট হয়ে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ অভিবাসী হবে। ২০০৮ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশের ৪৭ লাখেরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া হয়েছে, যার বেশির ভাগই ঘটেছে উপকূলীয় জেলাগুলোতে। আর জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাংলাদেশে প্রতি সাতজনে একজন বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনকি সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে ২০৮০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলের ১৩ শতাংশ ভূমি তলিয়ে যেতে পারে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাকুতে জলবায়ু সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অংশ নেবেন। সেখানে তিনি নিজেদের দাবি তুলে ধরার পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে কথা বলবেন। এ ছাড়া সম্মেলনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অংশগ্রহণ থাকবে। রিজওয়ানা হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, জলবায়ু অর্থায়নে ন্যায়বিচার ও সমতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। সম্পদ যাতে সবচেয়ে দুর্বল সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছায় এবং তাদের জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা গড়ে তোলার ক্ষমতা দেয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। লাভের চেয়ে দুর্বলদের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিকল্প পন্থা অন্বেষণ করতে হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জলবায়ু সম্মেলনে সরকারি প্রতিনিধিদলের সদস্য ও সিপিআরডির প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলো থেকে দরিদ্র ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে দেওয়া ঋণ, বিনিয়োগসহ সব অর্থই জলবায়ু অর্থায়ন বলে চালিয়ে দেওয়া হয়। আর ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর পাওনা সহায়তার টাকা জাতিসংঘের মাধ্যমে না দিয়ে বিশ্বব্যাংকসহ নানা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেওয়ায় তারা এই টাকা সহায়তার বদলে ঋণ হিসেবে দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসা করছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>