<p>৩২ মাস হাসপাতালে থাকার পর ঘরে ফিরেছে কুড়িগ্রামের শিশু নুহা ও নাবা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আট দফা অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসার পর গত মঙ্গলবার বাড়িতে ফিরে আসে তারা। শিশু দুটির চঞ্চলতায় মুখর হয়ে উঠেছে বাড়ির আঙিনা। তাই দেখে খুশি আলমগীর-নাসরিন দম্পতি। তবে পরবর্তী চিকিৎসা ও কর্মসংস্থান শঙ্কা কাটেনি।</p> <p>কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের শিবরাম গ্রামে বাড়ি রানা-নাসরিন দম্পতির। আলমগীর হোসেন রানা একজন পরিবহনশ্রমিক। স্ত্রী নাসরিন বেগম ২০২১ সালের ২২ মার্চ কুড়িগ্রামের একটি বেসকারি ক্লিনিকে জোড়া লাগানো দুই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। মেরুদণ্ড জোড়া লাগানো জমজ দুই কন্যাকে পেয়ে আনন্দের বদলে বিষাদ ভরে যায় এই দম্পতির মন। অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে শিশু দুটিকে আলাদা করার জন্য যেতে পারছিলেন না কোনো হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কাছে। এ অবস্থায় ওই বছরের ৪ এপ্রিল সিভিল সার্জন অফিসের সহায়তায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয় দুই শিশুকে।</p> <p>সেই সময় এই জোড়া শিশুদের পৃথক করাসহ চিকিৎসার দায়িত্ব নেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। সেখানকার চিকিৎসক ও নিউরোসার্জন ডা. মোহাম্মদ হোসেনের তত্ত্বাবধানে আট দফা অস্ত্রোপচারের পর গত বছর জানুয়ারি মাসে পৃথক করা হয় শিশু দুটিকে। দেশের চিকিৎসাবিজ্ঞানে যা মাইলফলক হয়ে যায়। এরপর থেকে ওই হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাদের।</p> <p>অবশেষে সফল অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা শেষে গত সোমবার রাতে হাসপাতাল ত্যাগ করে জোড়া শিশু নুহা ও নাবা। তাদের এই অকল্পনীয় পৃথক চিকিৎসা নিয়ে স্বস্তি ও আনন্দ এখন আলমগীর-নাসরিন দম্পতির মনে।</p> <p>শিশু দুটির মা নাসরিন বেগম জানান, জন্মের পর মেরুদণ্ডে জোড়া দেখে তাঁরা অনেক দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। ব্যয়বহুল চিকিৎসার ব্যয় মেটানো তাঁদের পক্ষে সম্ভবও ছিল না। ডা. মোহাম্মদ হোসেনের অবদান ভুলে যাওয়ার মতো নয়। তিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চিকিৎসা ও অন্যান্য সহায়তা করে গেছেন।</p> <p>শিশু দুটির বাবা আলমগীর হোসেন চিকিৎসায় সহায়তার জন্য সরকার ও চিকিৎসকদের কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি আরো জানান, সরকারি সহায়তা ছাড়াও চিকিৎসা করে তার একমাত্র জমি বিক্রি ও অন্যান্য সহায়তা মিলে পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে তিনি বেকার। মাসে ১৫ হাজার টাকার চিকিৎসা খরচ লাগবে। সব মিলে চিকিৎসা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তিনি।</p>