<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কথা ছিল আগস্ট মাসের ৮ তারিখ গ্রামে এসে বিয়ের জন্য পাত্রী দেখে বাগদান করবেন ভোলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ চরপতা গ্রামের মো. মহিউদ্দিন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> (৩০)। বড় ভাইয়েরা ছোট ভাইয়ের জন্য মেয়েও ঠিক করে রেখেছিলেন। কিন্তু ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলি সব কিছু এলোমেলো করে দিয়েছে। ৮ আগস্ট মহিউদ্দিন বাড়িতে এসেছেন ঠিকই। কিন্তু বাগদানের পরিবর্তে করা হয়েছে তাঁর দাফন। পরিবার সূত্রে জানা যায়, মা-বাবাকে হারিয়ে ঢাকায় বড় বোন লাইজু বেগমের কাছে থাকতেন মহিউদ্দিন। ছয় ভাই তিন বোনের মধ্যে আট নম্বরে ছিলেন তিনি। ১৬-১৭ বছর ধরে ঢাকার মিরপুর রূপনগর আবাসিক এলাকায় বড় বোন লাইজু বেগমের কাছে থাকতেন। সেখানে দুলাভাই আবদুল মালেকের মুদি দোকানে কাজ করতেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নিহত মহিউদ্দিনের বোন লাইজু বেগম জানান, গত ৫ আগস্ট সকালে বাসা থেকে নাশতা করে দোকানে যান মহিউদ্দিন। দুুপুর ১২টার দিকে দোকান থেকে বাসায় আসেন। দুপুর ১টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য বললে তিনি বলেন, পরে এসে খাব। তাঁকে আন্দালনে যেতে নিষেধ করলেও শোনেননি। এরপর লোকজনের সঙ্গে মিরপুর ২ নম্বরে যান।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি আরো জানান, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে লোকজন ফোন করে জানায়, মহিউদ্দিনের বুকে গুলি লেগেছে। তাঁরা হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন, মিরপুর ২ নম্বরে থানার সামনে ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় বুকে গুলি লাগে। লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাঁর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেদিন রাতেই তাঁর খাদ্যনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়। সেখানে আইসিইউ না পেয়ে শ্যামলী সিটি কেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে দুই দিন পর ৮ তারিখ সন্ধ্যা ৬টার দিকে মারা যান মহিউদ্দিন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মহিউদ্দিনের বড় ভাই আলমগীর জানান, ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে মহিউদ্দিনই এসএসসি পাস করেছেন। এরপর ঢাকায় বোন লাইজুর কাছে চলে যান। অভাবের কারণে আর পড়ালেখা করেত পারেননি। বিভিন্ন সময় বাড়িতে এলে বড় ভাইদের টাকা-পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করতেন। ছোট ভাই মনজু বিয়ে করলেও মহিউদ্দিন এখনো বিয়ে করেননি। কথা ছিল আগস্টের ৮ তারিখ বাড়িতে এসে মেয়ে দেখে বাগদান করে যাবেন। ডিসেম্বরে বিয়ে করবেন। মারা যাওয়ার চার-পাঁচ দিন আগেও মোবাইলে কথা হয়েছে। কিন্তু ৫ আগস্ট খবর আসে মহিউদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তিনি ভাই হত্যার বিচার দাবি করেন।</span></span></span></span></span></p>