<p> কতিপয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট ব্যবসা এবং ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মচারীর দুর্নীতির প্রমাণ দেবে টিআইবি। একটি প্রতিবেদন নিয়ে চ্যালেঞ্জের জবাবে এ কথা বলেছেন টিআইবি'র নির্বাহী পরিচালক।<br /> টিআইবি বাংলাদেশের ৭৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ৩০শে এপ্রিল। প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫০ হাজার থেকে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষার সনদপত্র কেনা যায়। আর শিক্ষার্থীদের পাস করিয়ে দেওয়া এবং নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য উপহার ছাড়াও নগদ অর্থের লেনদেন হয়।<br /> বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মঞ্জুরি কমিশন থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বিভাগ, বিষয় এবং শিক্ষক নিয়োগসহ নানা বিষয় অনুমোদন করাতে অর্থের লেনদেন হয়।<br /> টিআইবি'র প্রতিবেদন অনুযায়ী উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ অনুমোদনের জন্য ৫০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিদর্শন বাবদ ৫০ হাজার থেকে এক লাখ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য ১০ থেকে ৫০ হাজার, অনুষদ অনুমোদনের জন্য ১০ থেকে ৩০ হাজার, বিভাগ অনুমোদনের জন্য ১০ থেকে ২০ হাজার, পাঠ্যক্রম অনুমোদন ও দ্রুত অনুমোদনের জন্য ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা লেনদেন হয় এবং নিরীক্ষা করানোর জন্য ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা লেনদেন করতে হয়।<br /> প্রতিবেদনে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ করা হয়নি।<br /> তবে টিআইবি'র এই প্রতিবেদনকে চ্যালেঞ্জ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, টিআইবি তথ্য প্রমাণ ছাড়া কথা বলেছে। তাদের তথ্য প্রমাণ দিতে হবে অথবা প্রতিবেদন প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে হবে। আর ইউজিসি'র চেয়ারম্যান বলেছেন টিআইবি'র প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। এটা মানহানিকর।<br /> এ নিয়ে টিআইবি'র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জার্মান রেডিও ডয়চে ভেলেকে জানান, তাঁরা তাঁদের প্রতিবেদনের সপক্ষে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ দিতে প্রস্তুত আছেন। এরই মধ্যে ইউজিসি-কে তথ্য প্রমাণ দেয়া হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাইলেও দেয়া হবে।<br /> তিনি আরও জানান, নীতিমালার কারণেই তাঁরা প্রকাশ্য প্রতিবেদনে অভিযুক্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির দায়ী কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশ করেননি। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে তাঁরা এ সব তথ্য দেবেন।<br /> ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এখন ৬১ ভাগ শিক্ষার্থী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছেন। বাংলাদেশে যেমন আন্তর্জাতিক মানের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে, তেমনি টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট বিক্রির বিশ্ববিদ্যালয়ও আছে। টিআইবি'র গবেষণার উদ্দেশ্য হল উচ্চশিক্ষাকে কেউ যেন ব্যবসার পণ্য হিসেবে ব্যবহার না করতে পারে৷ উচ্চশিক্ষার মান যেন নিশ্চিত হয়। তিনি বলেন, গবেষণা প্রতিবেদন কোনো পুলিশি তদন্ত নয়। এখন সরকারের কাজ হল আরো গভীর তদন্ত করে উচ্চশিক্ষার নামে সার্টিফিকেট ব্যবসার অসাধু চক্রকে চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিশ্চিত করা। তা না করে সরকার যদি ভিন্ন কথা বলে, তাহলে টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট বিক্রি চক্র এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি'র অসৎ কর্মকর্তারাই উৎসাহিত হবেন। সূত্র : ডয়েচে ভেলে</p>