ঢাকা, শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫
৭ চৈত্র ১৪৩১, ২০ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫
৭ চৈত্র ১৪৩১, ২০ রমজান ১৪৪৬

ভোটের কথা বললে অনেকে অসন্তুষ্ট হন : মির্জা ফখরুল

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
শেয়ার
ভোটের কথা বললে অনেকে অসন্তুষ্ট হন : মির্জা ফখরুল
ফাইল ছবি : সংগৃহীত

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা ছাত্রদের ধন্যবাদ দিতে চাই, তারা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে আবার সুযোগ তৈরি করেছেন, যেন আমরা দেশকে গণতান্ত্রিকভাবে গড়ে তুলতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘ভোটের কথা বললে অনেকে অসন্তুষ্ট হন। আমরা ভোট চাই এই কারণে যাতে আমরা সঠিক লোক নির্বাচন করতে পারি; যিনি সংসদে গিয়ে আমাদের জন্য কাজ করবেন। আমরাও সংস্কার চাই।

২০২২ সালে আমাদের নেতা ৩১ দফা দিয়েছেন।’

আজ রবিবার বিকেলে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার সাকোয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘হাসিনা মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। এই দেশে নাকি হিন্দুদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে, এই অঞ্চলের মানুষ শান্তিপ্রিয়।

এখানে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই একসঙ্গে বাস করি। পূজায় এখানে মন্দির পাহারা দিয়েছে আমাদের লোকজন। তারা আমাদের মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে বিপদে ফেলতে চাচ্ছে। আমাদের তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

 
তিনি বলেন, ‘যারা লুটপাট করে, তাদের সরিয়ে দিতে হবে। কেউ যেন আমাদের দেশের ওপর অন্যায়ভাবে হাত না দেয়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। আওয়ামী লীগ আমাদের ওপর যে অত্যাচার করেছে তা আর কেউ করেনি। আলেম-ওলামাদের ফাঁসি দিয়েছে, আমাদের রাজনীতিবিদদের ধরে নিয়ে গেছে, জেলে দিয়েছে। এভাবে কেউ যেন আর অন্যায় করতে না পারে সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখন যেন কেউ দেশকে বিভক্ত করতে না পারে। আমরা সবাই এক। আমরা সবাই বাংলাদেশি। আমরা সবাই বাংলাদেশের উন্নয়ন চাই। এভাবেই আমাদের কাজ করতে হবে। আমি আহ্বান জানাতে চাই সরকারি কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবিসহ সকলকে, আসুন আমরা একটা সুযোগ পেয়েছি, এই সুযোগটা কাজে লাগাই। আবার আমরা সব বিভেদ ভুলে বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধভাবে গড়ে তুলি। একটা শান্তির দেশ, প্রেমের দেশ, উন্নতির দেশ হিসেবে গড়ে তুলি। আমাদের মাথায় যেন কেউ কাঁঠাল ভাঙতে না পারে সেজন্য সজাগ থাকি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই ঘুষ চাচ্ছে, ঘুষ আমরা আর দেব না। আপনারা সবাই রুখে দাঁড়াবেন। যে ঘুষ চাইবে তাকে ধরে পুলিশে দিবেন। আবার পুলিশ ঘুষ খায়, কিন্তু আমরা এই পুলিশ পরিবর্তন করছি। পুলিশ এখন জনগণের পুলিশ হবে। এই রকম একটা বাংলাদেশ আমরা চাচ্ছি। কেউ কেউ বলেন, একাত্তর ভুলে যাবে। একাত্তর আমরা ভুলতে পারি না। একাত্তরে আমাদের একটা স্বাধীন দেশের জন্ম হয়েছে। আমি আমার নিজেকে চিনতে পেরেছি একাত্তর সালে। আমরা আমাদের জন্য একটা ভূখণ্ড তৈরি করতে পেরেছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রায় ১৫ বছর আমরা একটি ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট দানব সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আমরা বারবার জেলে গেছি। এখানেও অনেক মানুষ আছে যারা জেলে গেছে, পালিয়ে ছিলেন, ঘরে থাকতে পারেননি। সারা দেশে একটা ভয়ের রাজত্ব গড়ে তোলা হয়েছিল। ফ্যাসিবাদ হলো যখন একটা সরকার নির্বাচনের নাম করে ক্ষমতায় গিয়ে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে, খুন, গুম করে যেভাবেই হোক সে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। হাসিনা তাই করেছে। মানুষ চায়নি, কিন্তু সে জনগণকে বোকা বানিয়ে জোর করে তিনটি নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় থেকেছে।

তিনি আরো বলেন, ‘সে (হাসিনা) ভেবেছিল কোনদিন ক্ষমতা ছেড়ে যাবে না। তাকে সেনাবাহিনী দুটি অপশন দিয়েছিল। একটি হলো উত্তাল জনগণের দ্বারা পিষ্ট হবেন, না বাঁচার জন্য পালিয়ে যাবেন? যে নেত্রী বলেছিল আমি মুজিবের বেটি, আমি পালাই না, সে জীবন নিয়ে তার নেতাকর্মীদের ছেড়ে দিয়ে বিপদে ফেলে পালিয়ে গেছে। এই হলো ফ্যাসিবাদের পরিনতি।’

বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের আয়োজনে জনসভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, আব্দুল খালেক, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বেবী নাজনীন, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন, পঞ্চগড় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু, কেন্দ্রীয় বিএনপির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমিরসহ দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে বিএনপি মহাসচিব আগস্ট বিপ্লবে নিহত ৬টি পরিবারের স্বজনদের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নাম, মার্কা ও আদর্শ অপ্রাসঙ্গিক : হাসনাত

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নাম, মার্কা ও আদর্শ অপ্রাসঙ্গিক : হাসনাত

৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নাম, মার্কা ও আদর্শ অপ্রাসঙ্গিক বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পর্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ। 

শুক্রবার (২১ মার্চ) রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক পার্টির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে আপনারা কি কোথাও দেখছেন দলটা কোনো রিগ্রেট (অনুশোচনা) করেছে, ওই যে একটা গণহত্যা চালিয়েছে। ওরা তো অপরাধই স্বীকার করতে চায় না।

আমরা আমাদের জায়গা থেকে স্পট করতে চাই দল হিসেবে আওয়ামী লীগের আগে বিচার নিশ্চিত করতে হবে, তাদের অপরাধ স্বীকার করতে হবে। তার পর অন্য কোনো আলোচনা হলেও হতে পারে। এর আগে অন্য কোনো আলোচনা হইতে পারে না।

তিনি আরো বলেন, আমরা বলেছি যে ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নাম, মার্কা এবং আদর্শ এই তিনটাই হচ্ছে অপ্রাসঙ্গিক।

মন্তব্য

বিচারের আগে আ. লীগের রাজনীতি করার অধিকার নেই : রেজাউল করিম

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
শেয়ার
বিচারের আগে আ. লীগের রাজনীতি করার অধিকার নেই : রেজাউল করিম
সংগৃহীত ছবি

আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম বলেছেন, ‘অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলন আমরা ব্যর্থ হতে দিতে চাই না। বিগত দিনে রাজপথে যেভাবে ছাত্রজনতাকে হত্যা করা হয়েছে; যারা হত্যা করেছে, খুনীদের এ সংস্কৃতি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত, বিগত দিনে যারা রাজনৈতিক পরিচয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে মানুষের পকেটের টাকায় নাগরিকদের ওপর গুলি চালিয়েছে, তাদের বিচার হওয়ার আগে বাংলাদেশে তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই।’

শুক্রবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের ঐতিহ্য কনভেনশন সেন্টারে সাংবাদিকদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াতে ইসলামী জেলা শাখার ব্যানারে এ আয়োজন করা হয়।

 

আরো পড়ুন
বিচার চলাকালীন আ. লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে : নাহিদ ইসলাম

বিচার চলাকালীন আ. লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে : নাহিদ ইসলাম

 

রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি, সেই স্বপ্ন যেন ভুলণ্ঠিত না হয়। সেজন্য রাজনীতিবিদ-সাংবাদিকসহ সকলকে সজাগ-সতর্ক থাকতে হবে। এক সাগর রক্ত পাড়ি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ, ২৪ এর আন্দোলনে গণতান্ত্রিক ধারায় ফেরার জন্য আমরা যে আয়োজন করেছি, তখন লক্ষ্য করছি অনেক ধরণের সমস্যা এখনো জাতির সামনে আছে। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য জাতির দুটি গার্ডার যদি যথাযথভাবে কাজ করে তাহলে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক ধারায় পৌঁছানো সম্ভব।

এরমধ্যে একটি হচ্ছে রাজনীতিবিদ, অপরটি হচ্ছে যারা মানুষের সমস্যাকে জাতির সামনে তুলে নিয়ে আসার চেষ্টা করেন আমাদের সাংবাদিক বন্ধুগণ।’  

জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যডভোকেট নজির আহমেদের সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির এআর হাফিজ উল্যাহ, সেক্রেটারি ফারুক হোসাইন নুরনবী, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মহসিন কবির মুরাদ, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা শাখার সভাপতি মমিন উল্যাহ পাটওয়ারী, লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম পাবেলসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকগণ। 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

হাসিনার রাজনীতি করার কোনো অধিকার থাকতে পারে না : ইশরাক হোসেন

ভোলা প্রতিনিধি
ভোলা প্রতিনিধি
শেয়ার
হাসিনার রাজনীতি করার কোনো অধিকার থাকতে পারে না : ইশরাক হোসেন

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন বলেছেন, ‘কেউ যদি বলার চেষ্টা করে আওয়ামী লীগের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান কী? আমরা সেইটা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, যে খুনি স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট হাসিনার নির্দেশে আট বছরের শিশুকে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে মেরে ফেলাসহ অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হয়েছে সেই ফ্যাসিস্ট হাসিনার বাংলাদেশ কোনো দিনও রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারে না। আমরা এটা কোনো দিনও হতে দেব না। তাদের যদি পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হয় তাহলে আমরা সর্বশক্তি দিয়ে রুখে দেব।’

শুক্রবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় ভোলা শহরের মহাজনপট্টি জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সদর উপজেলা বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইশরাক হোসেন বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জোড়াল দাবি থাকবে, আওয়ামী লীগের বিচারের যে প্রক্রিয়া সেটিকে ত্বরান্বিত করা হোক এবং অবিলম্বে তাদের নিবন্ধন বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’

সংস্কারের নাম করে নির্বাচন বিলম্বিত করা হচ্ছে দাবি করে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আমরা জানি সরকারের ভিতরে এবং বাইরে থেকে একটি কুচক্রী মহল বিএনপির সুনাম ও জনসমর্থন কমাতে নির্বাচন বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র লিপ্ত রয়েছে। সেই কারণেই আমরা বারবার নির্বাচনের কথা বলি। আমরা যখন নির্বাচনের কথা বলি তার মানে এই না আমরা সংস্কার চাই না।

হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার দেড় বছর আগেই বিএনপি সংস্কারের বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সংস্কারকে দীর্ঘস্থায়ী করতে হলে একটি সংসদ নির্বাচন ছাড়া সম্ভব না। সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ ছাড়া এটি স্থায়িত্ব পাবে না। বর্তমানে অন্যান্য রাজনৈতিক দল জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে যে, বিএনপি সংস্কার চায় না।

আমরাই তো ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে মাসের পর মাস প্রগ্রাম করেছি। তাহলে সংস্কার আমরা চাই না এ কথা কে বলল। আমরা চাচ্ছি সংস্কার এমনভাবে করা হোক যেটা দীর্ঘস্থায়ী হয়। সংস্কারের নামে নির্বাচনকে পিছিয়ে তৃতীয় পক্ষ যাতে ঢুকে যেতে না পারে। তাহলে আরো ১০-১৫ বছরের জন্য বাংলাদেশ পিছিয়ে যাবে।

তিনি আরো বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও সে ভারতে বসে চক্রান্ত করছে। লুট করে নিয়ে যাওয়া হাজার হাজার কোটি টাকা তারা বিনিয়োগ করেছে কিভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করা যায় এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করে ফেলা যায়। তাই কোনো ভাবেই যাতে নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরের একদিন পর না যায় সেই চক্রান্তকে আমাদের রুখে দিতে হবে।’

সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসিফ আলতাফের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মো. হেলাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. রাইসুল আলম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শফিউর রহমান কিরণ, যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ ট্রুম্যান, মো. ফজলুর রহমান বাচ্চু মোল্লা, মো. হুমায়ুন কবির সোপান ও মো. এনামুল হক।

মন্তব্য
সারা দেশে বিক্ষোভের ডাক

বিচার চলাকালীন আ. লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে : নাহিদ ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বিচার চলাকালীন আ. লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে : নাহিদ ইসলাম
সংগৃহীত ছবি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক দল নয়, ফ্যাসিবাদী দল। জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার চলাকালীন সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।’ 

শুক্রবার (২১ মার্চ) রাতে বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক পার্টির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের হত্যাকাণ্ডের বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চাই।

খুনিদের বিচারের কার্যক্রম দৃশ্যমান হতে হবে। এছাড়া আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।’

আরো পড়ুন

স্বৈরাচার পুনর্বাসিত হওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না : তারেক রহমান

স্বৈরাচার পুনর্বাসিত হওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না : তারেক রহমান

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত উদ্বেগ ও ক্ষোভের সাথে লক্ষ করছি যে, ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের সাত মাস অতিবাহিত হলেও গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের খুনিদের বিচারে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক কমিশনের প্রতিবেদনে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, জুলাই মাসে বাংলাদেশে সংঘটিত অপরাধ আন্তর্জাতিক অপরাধের শামিল।

আওয়ামী লীগের মানবতাবিরোধী অপরাধের ব্যাপারে এত সুস্পষ্ট আন্তর্জাতিক বক্তব্য থাকার পরও বিচারিক প্রক্রিয়ার ধীরগতি অত্যন্ত নিন্দনীয়। জাতীয় নাগরিক পার্টি - এনসিপি অবিলম্বে জুলাই গণহত্যাসহ বিগত ফ্যাসিবাদি রেজিমে সংঘটিত গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচারে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মন্তব্য করেছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। আমরা তাঁর এ বক্তব্যের নিন্দা জানাই।

আওয়ামী লীগ কর্তৃক সংঘটিত পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা হত্যাকাণ্ড, আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড, গুম-ক্রসফায়ার, ভোট ডাকাতিসহ জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রশ্নে কার্যকর অগ্রগতি দৃশ্যমান হওয়ার আগে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পদ থেকে এ ধরনের বক্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত।’

তিনি আরো বলেন, ‘এনসিপি মনে করে, বিচারিক কার্যক্রমের পরিণতি দৃশ্যমান হতে হবে। আত্মপ্রকাশের পর থেকে আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছি- কৃত অপরাধের বিচার, দায় স্বীকার, অনুশোচনা, পাপমোচন ব্যতীত আওয়ামী লীগের দল হিসেবে ক্রিয়াশীল থাকার পক্ষে যেকোনো ধরনের তৎপরতা ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের শামিল।’

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এনসিপি জুলাই গণহত্যাসহ বিগত ফ্যাসিবাদী রেজিমে সংঘটিত অপরাপর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের নিশ্চয়তা চায়। বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে এবং এই মাফিয়াগোষ্ঠীর রাজনীতিতে ফেরার যেকোনো প্রচেষ্টাকে এনসিপি প্রতিহত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে।

সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগ কোনো গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক দল নয়; বরং এটি একটি ফ্যাসিবাদী দল। নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পরাজয় ঘটেনি। দল হিসাবে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী রেজিম বাংলাদেশ থেকে উৎখাত হয়েছে। ফলত, আওয়ামী লীগ এ মুহূর্তে গণতান্ত্রিক ফ্রেমওয়ার্কের বাইরে অবস্থান করছে।’ 

তিনি বলেন, ‘বিচার অনিষ্পন্ন রেখে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়ার যেকোনো ধরনের আলোচনা ও প্রস্তাব এনসিপি দৃঢ়তার সাথে প্রত্যাখ্যান করে। আওয়ামী মতাদর্শ, দল এবং মার্কার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণ ৩৬ শে জুলাইয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। ফলে দল ও মতাদর্শ হিসাবে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করার সকল অধিকার হারিয়েছে। গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার চলাকালীন সময়ে আওয়ামী লীগ এবং ফ্যাসিবাদের সকল সহযোগী ব্যক্তি ও সংগঠনের রাজনৈতিক কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। জাতীয় নাগরিক পার্টি– এনসিপি রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে ঘোষিতব্য জুলাই সনদের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ব্যাপারে ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল রাজনৈতিক দল ও পক্ষকে ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানায়।’

সংবাদ সম্মেলনে দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিচার ও নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে সারা দেশে বিক্ষোভ করবে এনসিপি।’  

এসময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদীব, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিদ আলম, সিনিয়র সদস্য সচিব ডা. তাসনিন জারা প্রমুখ।

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ