বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে ভারতকে তিস্তার ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে ভারতকে তিস্তার ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে : মির্জা ফখরুল
ছবি : বিএনপি মিডিয়া সেলের সৌজন্যে

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভারতকে পরিষ্কার করে বলতে চাই। আগেও বলেছি, এখনো বলছি, বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে যদি বন্ধুত্ব করতে চান, আগে তিস্তার পানি দেন। সীমান্তে গুলি করে হত্যা বন্ধ করেন। আর আমাদের সঙ্গে বড় দাদার মতো আচরণ বন্ধ করেন।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার মাঝে তিস্তা রেলওয়ে সেতু সংলগ্ন চরে তিস্তা রক্ষা ও মহাপরিকল্পনা বাস্তাবায়নের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশের সভাপতিত্বে করেন 'তিস্তা নদী রক্ষা কমিটি'র প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আমাদের পায়ে দাঁড়াতে চাই। আমরা পানির ন্যায্য হিস্যা বুঝে নিতে চাই।

অবশ্যই আমরা ভারতকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই। কিন্তু সেটা হবে সম্মানের সঙ্গে, আমাদের যে পাওনা সেটা বুঝিয়ে দেওয়ার সঙ্গে।’

'জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে এদিন একই সঙ্গে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ১১টি স্থানে সমাবেশ করেছে বিএনপি। এছাড়া পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খেলার প্রতিযোগিতার আয়োজন করে 'তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি।

' দুই দিনের এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সমাপনী বক্তব্য দিবেন।

কর্মসূচি বাস্তবায়নে তিস্তার চরে মঞ্চ তৈরি, খাবারের ব্যবস্থা, তাবু টানিয়ে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমাবেশে শিক্ষার্থী, কৃষক, মৎস্যজীবী, পরিবেশকর্মী, শিক্ষক, চিকিৎসক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত হয়েছেন। যারা ভারতের কাছ থেকে শুকিয়ে যাওয়া তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছেন।

অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে যে আন্দোলন শুরু হলো, এটা আমরা শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাব। মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ফারাক্কা অভিমুখে মার্চ করেছিলেন। গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা পাওয়ার জন্য। আজকে আমাদের আসাদুল হাবিব দুলুভাই হাজারো মানুষকে একত্রিত করে ডাক দিয়েছেন ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচা ‘। এটা শুধু স্লোগান নয়। তিস্তা পারের মানুষের বাঁচার আহাজারি বেড়িয়ে এসেছে। আজকে এখানের মানুষের করুণ অবস্থা। একদিকে যখন তারা বাধের গেট খুলে দেয়, পানির তোরে আমাদের ঘর, বাড়ি, গ্রাম, ফসলের মাঠ ডুবে যায়। আবার যখন গেট বন্ধ করে দেয়, তখন খরায় খট-খট হয়ে যায়। তিস্তা পাড়ের মানুষের দুঃখ আর যায় না। আজ থেকে বহুদিন আগে থেকে এই তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার জন্য কথা বলছি আমরা। পাকিস্তান আমল, বাংলাদেশ সময়ে আমরা বলেছি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের সরকার আসলো। সবাই ভাবলো, ভারতের বন্ধু আওয়ামী লীগ। সুতরাং তিস্তার পানি মনে হয় এবার পেয়েই যাবে। লবডঙ্কা। ১৫ বছরে বাংলাদেশকে বেঁচে দিছে, কিন্তু তিস্তার একফোঁটা পানি আনতে পারে নাই। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫৪টা নদী আছে, সবগুলো নদীর উজানে তারা বাধ দিয়ে দিয়েছে। তারা পানি নিয়ে যায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ ফসল ফলাতে পারে না, জীবন-জীবিকা থেকে বঞ্চিত হয়। প্রত্যেক মানুষকে কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়েছে। একদিকে ভারত আমাদেরকে পানি দেয় না, অন্যদিকে আমাদের শত্রুকে (শেখ হাসিনা) তারা তাদের দেশে বসিয়ে রেখেছে। দিল্লিতে রাজার হালে বসিয়ে রেখেছে। 

তিনি বলেন, আজকের এই সংগ্রাম এই এলাকার মানুষের বাঁচা-মরার সংগ্রাম। এই সংগ্রামকে আমরা কখনো বন্ধ হতে দেবো না। আজকে এই অন্তর্বর্তী সরকার নিজেদেরকে নিরপেক্ষ সরকার বলে, কিন্তু এখানে নিরপেক্ষ থাকলে চলবে না। মুখ খুলতে হবে। ভারতকে বলতে হবে, যে পানির ন্যায্য হিস্যা চাই। আর খুব তাড়াতাড়ি নির্বাচন দিয়ে জনগণের প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা দেন।

উপস্থিত মানুষদের উদ্দেশ্য করে বলেন মির্জা ফখরুল বলেন, লড়াই না করে কিছু পাওয়া যায় না, সেই লড়াই করেই আমরা তিস্তার পানি আনবো। অধিকার আদায় করে নেবো। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই।

একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, শুকনো মৌসুমে ভারত উজানের পানি আটকে রাখে, আর বর্ষার মৌসুমে ছেড়ে দেয়। যার ফলে আমাদের এখানে বন্যায় সব ভেসে যায়। এটা কি কোনো বন্ধুর পরিচয় হতে পারে? কোনোভবেই না। তাই ভারত আমাদের বন্ধু না। 

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলবো এখন সময় এসেছে ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলার। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা পেতে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে বাংলাদেশের সরকারকে যেতে হবে। মাওলানা ভাষানীর মত প্রয়োজন হলে আবারো আমরা লং মার্চের আয়োজন করব। এবার তিস্তার লড়াইয়ে আমাদের জিততেই হবে, যদি এই জনপদের লোকদের বাঁচাতে চাই।

জাতীয় পার্টির (জাফর অংশ) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, বাংলায় কথা আছে ঠেলার নাম বাবাজি। আজকের এই কর্মসূচি যখন ৬০ দিন আগে ঘোষণা করা হয়েছিল, এরপর গত কয়েক দিন আগে ভারত পানি ছাড়া শুরু করেছে। আমরা বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে ঘোষণা করতে চাই, যদি তিস্তার ন্যায্য হিস্যা না দাও তাহলে আমরা এককভাবে 'তিস্তা মহাপরিকল্পনা' বাস্তবায়ন করব। স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের অধিকার আছে যে কোন সিদ্ধান্ত নেবার। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে তিস্তার এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করব।

সভাপতির বক্তব্য 'তিস্তা নদী রক্ষা কমিটি'র প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, বহু পথ বহু সময় আমরা অতিক্রম করেছি। দীর্ঘ সময় স্বৈরশাসকের যাতাকলে আমরা পরে ছিলাম। কথা বলতে পারি নাই, শুভাযাত্রা তো দূরের কথা, মিছিল তো দূরের কথা। এখন মুক্ত বাংলাদেশ, স্বাধীন বাংলাদেশ। জুলাই বিপ্লবের মধ্যদিয়ে আমাদের কথা বলার অধিকার সৃষ্টি হয়েছে। এই রংপুর ছিল রঙ্গে রসে ভরপুর। তাকে আজ বিরান ভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। ছিন্নমূল মানুষ বাড়ি ঘর হারিয়ে দেশান্তরী হয়ে কোথায় চলে গেছে আমরা বলতে পারি না। 

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সঙ্গীতশিল্পী বেবী নাজনীন, বিএনপির রংপুর বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, লালমনিরহাটের জেলা শাখার ওলামা দলের সভাপতি মাওলানা কাজী গোলাম মোস্তফা। তিস্তা নিয়ে অন্যান্য জেলার সমাবেশের অন্য ১০টি স্থানে পৃথক পৃথকভাবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, গণসংহতি আন্দোলন প্রধান সমন্নয়ক জোনায়েদ সাকিসহ দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শেখ মুজিবই প্রথম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রকে হত্যা করেন : স্বপন

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
শেখ মুজিবই প্রথম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রকে হত্যা করেন : স্বপন

শেখ মুজিবুর রহমানই প্রথম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রকে হত্যা করেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন। তিনি বলেন, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের পর জনগণের ক্ষমতায়ন যতটুকু অর্জিত হয়েছিল তাকে নির্মমভাবে ধ্বংস করেছে তৎকালীন আওয়ামী সরকার। ১৯৭৩ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকেই আওয়ামী লীগের মুখোশ উন্মোচিত হয়ে অগণতান্ত্রিক চরিত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে।

স্বপন বলেন, ১৯৭৪ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল কর্তৃক ঘোষিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচিতে অতর্কিতে রক্ষীবাহিনী নির্বিচারে নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটায় এবং আহত অবস্থায় মেজর এম এ জলিল, আ স ম আবদুর রবসহ বহু কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করে এবং গণকণ্ঠ পত্রিকা অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয়।

৭২-৭৫ শাসনামলে ক্ষমতাসীন সরকার ক্রমশ হিংস্র রূপ ধারণ করতে থাকে। এ সময়ে আওয়ামী সরকার হাজার হাজার জাসদ কর্মীকে হত্যা ও গুম করে এবং সিরাজ শিকদারের মতো রাজনৈতিক নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ক্ষমতায় টিকে থাকার লক্ষ্যে দেশে অপশাসন ও একদলীয় বাকশালের মধ্য দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানই প্রথম ‘গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র’কে হত্যা করেন।  

শুক্রবার (২১ মার্চ) জেএসডি ১৯৭৪ সালের ১৭ মার্চ ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক দিবস’ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে।

আলোচনা সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভার সভাপতি দলের সিনিয়র সহসভাপতি তানিয়া রব বলেন, আওয়ামী লীগের ডিএনএতে ফ্যাসিবাদ। সুযোগ পেলেই আওয়ামী লীগ তার হিংস্র স্বরূপে প্রকাশিত হয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগ এখন প্রতিষ্ঠিত গণহত্যাকারী দল।

সুতরাং এই আওয়ামী লীগ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ রূপান্তরের যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে তার একমাত্র হুমকি আওয়ামী লীগ।

আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন জেএসডির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট কে এম জাবির, সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আনোয়ার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাইনুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ বেলায়েত হোসেন বেলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মান্নান মুন্সি, উপদেষ্টা এম এ আউয়াল, দপ্তর সম্পাদক কামরুল আহসান অপু, প্রচার সম্পাদক বোরহান উদ্দিন চৌধুরী রোমান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফারজানা দিবা, সুমন খান, আবদুল বাতেন বিপ্লব, এস এম মনিরুজ্জামান মনির, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোসলেহ উদ্দিন বিজয় প্রমুখ।

মন্তব্য

হাসিনা পালিয়ে গেলেও এখনো গণতন্ত্র পাইনি : শামা ওবায়েদ

সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
শেয়ার
হাসিনা পালিয়ে গেলেও এখনো গণতন্ত্র পাইনি : শামা ওবায়েদ
ছবি: কালের কণ্ঠ

স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও দেশে এখনো গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরে আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু।

বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক কে এম ওবায়দুর রহমানের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিকেলে নিজ নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুরের নগরকান্দায় সরকারি মহেন্দ্র নারায়ন একাডেমি মাঠে উপজেলা বিএনপি আয়োজিত স্বরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শামা ওবায়েদ বলেন, ‘বিএনপির এমন কোনো নেতা নেই যে, তার নামে মিথ্যা মামলা নেই। নেতাকর্মীরা বছরের পর বছর জেল খেটেছেন।

জুলুম-অত্যাচার সহ্য করেছেন। আজকে সেই ভয়ঙ্কর সময় আমরা পার করে এসেছি। গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালায় গেছেন। কিন্তু আমরা এখনো গণতন্ত্র ও ভোটারাধিকার ফিরে পাইনি।

তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আরো বেশি আন্তরিক হতে হবে। সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া, সেটা চলতে থাকবে। বিএনপি প্রথমেই সংস্কারের কথা বলছিল। সরকারের উচিৎ সর্বপ্রথম নির্বাচনের জায়গা সংস্কার করে নির্বাচন নিশ্চিত করা।

আপনারা তখনই সফল হবেন, যখন একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন।’

নিজের বাবা মরহুম কে এম ওবায়দুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে শামা ওবায়েদ বলেন, ‘আমার বাবা কে এম ওবায়দুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠন ছিলেন। তিনি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছেন। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সালথা-নগরকান্দার মানুষের জন্য কাজ করেছেন।

যে কারণে আমার বাবা জেলে থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। হাসিনা আমার বাবাকে জেল হত্যার মতো একটি জঘন্য মামলা দিয়ে কারাগারে নির্যাতন করেছে। আমার বাবাকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয় শেখ হাসিনা।’

নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাবিবুর রহমান বাবুল তালুকদারের সভাপতিত্বে স্বরণসভায় বক্তব্য রাখেন ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোদারেস আলী ঈসা, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ জুলফিকার হোসেন জুয়েল প্রমুখ।

এ ছাড়া জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা মরহুম কে এম ওবায়দুর রহমানের বর্ণীল রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস তুলে ধরেন।

এর আগে, মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মরহুম কে এম ওবায়দুর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জেলা-উপজেলা বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

মন্তব্য

৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নাম, মার্কা ও আদর্শ অপ্রাসঙ্গিক : হাসনাত

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নাম, মার্কা ও আদর্শ অপ্রাসঙ্গিক : হাসনাত

৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নাম, মার্কা ও আদর্শ অপ্রাসঙ্গিক বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পর্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ। 

শুক্রবার (২১ মার্চ) রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক পার্টির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে আপনারা কি কোথাও দেখছেন দলটা কোনো রিগ্রেট (অনুশোচনা) করেছে, ওই যে একটা গণহত্যা চালিয়েছে। ওরা তো অপরাধই স্বীকার করতে চায় না।

আমরা আমাদের জায়গা থেকে স্পট করতে চাই দল হিসেবে আওয়ামী লীগের আগে বিচার নিশ্চিত করতে হবে, তাদের অপরাধ স্বীকার করতে হবে। তার পর অন্য কোনো আলোচনা হলেও হতে পারে। এর আগে অন্য কোনো আলোচনা হইতে পারে না।

তিনি আরো বলেন, আমরা বলেছি যে ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নাম, মার্কা এবং আদর্শ এই তিনটাই হচ্ছে অপ্রাসঙ্গিক।

মন্তব্য

বিচারের আগে আ. লীগের রাজনীতি করার অধিকার নেই : রেজাউল করিম

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
শেয়ার
বিচারের আগে আ. লীগের রাজনীতি করার অধিকার নেই : রেজাউল করিম
সংগৃহীত ছবি

আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম বলেছেন, ‘অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলন আমরা ব্যর্থ হতে দিতে চাই না। বিগত দিনে রাজপথে যেভাবে ছাত্রজনতাকে হত্যা করা হয়েছে; যারা হত্যা করেছে, খুনীদের এ সংস্কৃতি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত, বিগত দিনে যারা রাজনৈতিক পরিচয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে মানুষের পকেটের টাকায় নাগরিকদের ওপর গুলি চালিয়েছে, তাদের বিচার হওয়ার আগে বাংলাদেশে তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই।’

শুক্রবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের ঐতিহ্য কনভেনশন সেন্টারে সাংবাদিকদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াতে ইসলামী জেলা শাখার ব্যানারে এ আয়োজন করা হয়।

 

আরো পড়ুন
বিচার চলাকালীন আ. লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে : নাহিদ ইসলাম

বিচার চলাকালীন আ. লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে : নাহিদ ইসলাম

 

রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি, সেই স্বপ্ন যেন ভুলণ্ঠিত না হয়। সেজন্য রাজনীতিবিদ-সাংবাদিকসহ সকলকে সজাগ-সতর্ক থাকতে হবে। এক সাগর রক্ত পাড়ি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ, ২৪ এর আন্দোলনে গণতান্ত্রিক ধারায় ফেরার জন্য আমরা যে আয়োজন করেছি, তখন লক্ষ্য করছি অনেক ধরণের সমস্যা এখনো জাতির সামনে আছে। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য জাতির দুটি গার্ডার যদি যথাযথভাবে কাজ করে তাহলে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক ধারায় পৌঁছানো সম্ভব।

এরমধ্যে একটি হচ্ছে রাজনীতিবিদ, অপরটি হচ্ছে যারা মানুষের সমস্যাকে জাতির সামনে তুলে নিয়ে আসার চেষ্টা করেন আমাদের সাংবাদিক বন্ধুগণ।’  

জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যডভোকেট নজির আহমেদের সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির এআর হাফিজ উল্যাহ, সেক্রেটারি ফারুক হোসাইন নুরনবী, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মহসিন কবির মুরাদ, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা শাখার সভাপতি মমিন উল্যাহ পাটওয়ারী, লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম পাবেলসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকগণ। 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ