দীর্ঘ দেড় মাস ধরে সবজির বাজার মধ্যবিত্তেরও নাগালের বাইরে। ভোক্তারা অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে রবি (শীত) মৌসুমের সবজির দিকে। বন্যা দীর্ঘায়িত হওয়ায় এখনো প্রায় সব ধরনের সবজির দাম প্রতি কেজি ৬০ টাকার ওপরে। শাকের আঁটি ২৫-৪০ টাকা পর্যন্ত।
দীর্ঘ দেড় মাস ধরে সবজির বাজার মধ্যবিত্তেরও নাগালের বাইরে। ভোক্তারা অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে রবি (শীত) মৌসুমের সবজির দিকে। বন্যা দীর্ঘায়িত হওয়ায় এখনো প্রায় সব ধরনের সবজির দাম প্রতি কেজি ৬০ টাকার ওপরে। শাকের আঁটি ২৫-৪০ টাকা পর্যন্ত।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মুগদা, মানিকনগর, কমলাপুর ও মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনি কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া যায়।
বিক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টি আর বন্যার কারণেই বাড়ছে বেশির ভাগ পণ্যের দাম।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে সবজি ছাড়াও ১২টি নিত্যপণ্যের দামে পরিবর্তন হয়েছে। তার মধ্যে ১০টির দামই বেড়েছে।
ঈদুল আজহার আগে থেকেই পেঁয়াজ, রসুন ও আদা—এসব পণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে কম ছিল। এ সময় আমদানি করা ও দেশি আদা পাওয়া যেত ১৪০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে। ঈদুল আজহার পর তা আরো কমে ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকায় নামে। তবে গত বৃহস্পতিবার থেকে হঠাৎ আদার দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা। খুচরা বাজারে আদা প্রতি কেজি এখন ১৪০-২০০ টাকা।
পেঁয়াজের দামও কেজিতে বেড়েছে পাঁচ টাকা করে। খোসা ছাড়া ভারতীয় পেঁয়াজের দাম এখন ৩৫ টাকা কেজি। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা কেজি দরে। তবে চাহিদার তুলনায় বেশি আমদানি হওয়ায় আগের ৭০-৮০ টাকা কেজি দরেই বিক্রি হচ্ছে রসুন।
মুগদা বাজারের খুচরা বিক্রেতা ওয়ালি উল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, জোয়ারের পানিতে খাতুনগঞ্জ বাজার তলিয়ে গেছে। এতে সেখান থেকে রাজধানীতে মাল আসছে না, প্রচুর আদা পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে পাইকারি বাজারে আদার বাড়তি দাম রাখা হচ্ছে। তাই খুচরায়ও দাম বেড়েছে। গত মৌসুমের পেঁয়াজ একেবারেই শেষের দিকে। তাই পেঁয়াজেও দাম কিছুটা বাড়তির দিকে।
অস্বস্তি রয়েছে শাকসবজি ও কাঁচা মরিচের বাজারে। আমদানি করলেও দাম কমছে না কাঁচা মরিচের। গতকাল ভারত থেকে আমদানি করা কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ১৮০-১৯০ টাকা কেজি দরে। আর দেশি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা কেজি দরে। বিভিন্ন খুচরা বাজারে টমেটো বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১২০-১৪০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, করলা, বেগুন ও বরবটি ৭০-৯০ টাকা। চিচিঙ্গা, পটোল, ঢেঁড়স বিক্রি হয়েছে ৬০-৮০ টাকা কেজি দরে। আগের সপ্তাহের মতো কচুর লতি ও কাঁকরোল বিক্রি হয়েছে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে। কচুরমুখী প্রতি কেজি ৫০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০-৪৫ টাকা। একটি লাউ ৬০-৭০ টাকা, চালকুমড়া ৪০-৫০ টাকা এবং কাঁচা কলার হালি ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে আলুর দামও চড়া, ৩৫-৩৭ টাকা কেজি।
মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কলোনি কাঁচাবাজারে সবজি কিনতে আসা আব্দুল্লাহ নামের একজন ক্রেতা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের আয় কমে গেছে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। বিপরীতে পণ্যের দাম বেড়েছে ৫০-১০০ শতাংশ পর্যন্ত। জীবনযাত্রার ব্যয় সমন্বয় করা যাচ্ছে না। কিন্তু আমরা ঢাকায় যখন ৮০ টাকা কেজি সবজি খাই তখনো পত্রিকায় দেখি কৃষক ২০-২৫ টাকায় বিক্রি করছেন। তাহলে দাম এত কেন বাড়ছে, সরকারের এটি দেখা উচিত, শক্তভাবে তদারকি করা উচিত।’
কমেনি ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকা ডজন দরে। মুরগির দাম কিছুটা কম। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকা কেজি দরে। মাছের দাম আগের মতোই আছে। এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ কিনতে হচ্ছে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে। আধাকেজি ওজনের আশপাশের ইলিশের দাম প্রতি কেজি ৫০০-৬০০ টাকা। রুই মাছ ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি।
সম্পর্কিত খবর
যুক্তরাষ্ট্রের কৃত্রিম উপগ্রহভিত্তিক ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান স্টারলিংককে বাংলাদেশে ব্যবসা করার জন্য অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা)।
রবিবার (৬ এপ্রিল) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এ কথা জানান।
বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশে কাজ করতে হলে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) থেকে নিবন্ধন নিতে হয়।
তিনি বলেন, ‘গত মাসের ২৯ তারিখ আমরা অনুমোদন দিয়েছি।
সব রেকর্ড ভেঙে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এক মাসে রেমিট্যান্স এসেছে। গত মার্চ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে তিন বিলিয়ন (৩০০ কোটি) ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকার বেশি।
রবিবার (৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে ২.৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে।
চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছিল ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার।
একই অর্থবছরে গত জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে সন্তোষ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি জানান, আইএমএফ প্রতিনিধিদল মনে করছে যে দেশের অর্থনীতি বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে ও সঠিক পথেই এগোচ্ছে।
রবিবার (৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ সচিবালয়ে আইএমএফ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
আইএমএফের মিশনপ্রধান ক্রিস পাপাজর্জিওর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করছে এবং তারা ৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের আগে হালনাগাদ আর্থিক তথ্য পর্যালোচনার জন্য আলোচনা শুরু করেছে।
প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন ঢাকায় আইএমএফের আবাসিক প্রতিনিধি জয়েন্দু দে ও জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ সিওকহিউন ইউন।
ড. সালেহউদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ শিগগিরই আইএমএফের ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে পাবে।
উল্লেখ্য, মোট ৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় ইতোমধ্যে তিনটি কিস্তি ছাড় হয়েছে।
আইএমএফ দল কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি, খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধার ও ব্যাংকিং খাতে সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
আইএমএফ প্রতিনিধিদল অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ কমিশন এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগসহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করবেন।
পরিদর্শন শেষে ১৭ এপ্রিল অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে একটি চূড়ান্ত বৈঠক ও সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আইএমএফ মিশন শেষ হবে।
দেশে ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) এপ্রিল মাসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
রবিবার (৬ এপ্রিল) ১২ কেজি এলপিজির দাম ১ হাজার ৪৫০ টাকায় অপরিবর্তিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সন্ধ্যা ৬টা থেকে নতুন এই দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বিইআরসি চেয়ারম্যান জানায়, এপ্রিল মাসের জন্য ১২ কেজি এলপিজির দাম ১ হাজার ৪৫০ টাকায় অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
এর আগে, গত ৩ মার্চ সেই মাসের জন্য ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ২৮ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৪৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া ফেব্রুয়ারিতে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১৯ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ৪৭৮ টাকা।
আর জানুয়ারি মাসের শুরুতে সেই মাসের জন্য অপরিবর্তিত রাখা হয়েছিল এলপিজির দাম। তবে গত ১৪ জানুয়ারি এই মাসের জন্য ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৪ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৫৯ টাকা পুনঃনির্ধারণ করা হয়।
এদিকে, রোববার এপ্রিল মাসের জন্য ভোক্তা পর্যায়ে ২ পয়সা কমিয়ে অটোগ্যাসের মূসকসহ দাম প্রতি লিটার ৬৬ টাকা ৪১ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিইআরসি জানিয়েছে, এপ্রিল মাসের জন্য সৌদি আরামকোর প্রোপেন এবং বিউটেনের ঘোষিত সৌদি সিপি প্রতি মেট্রিক টন যথাক্রমে ৬১৫ মার্কিন ডলার ও ৬০৫ মার্কিন ডলার এবং প্রোপেন ও বিউটেনের অনুপাত ৩৫:৬৫ অনুযায়ী প্রোপেন ও বিউটেনের গড় সৌদি সিপি প্রতি মেট্রিক টন ৬০৮.৫০ মার্কিন ডলার বিবেচনায় এপ্রিল মাসের জন্য বেসরকারি এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম ভোক্তা পর্যায়ে সমন্বয় করা হলো।