সাক্ষাৎকার

ক্ষমতার মজা পেয়ে গেছেন উপদেষ্টা পরিষদের সবাই

  • হাফিজ উদ্দিন আহমদ
অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ক্ষমতার মজা পেয়ে গেছেন উপদেষ্টা পরিষদের সবাই

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম বলেছেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস এখন পর্যন্ত তাঁর ভাবমূর্তি ধরে রেখেছেন। বিদেশি রাষ্ট্র-প্রতিনিধিদের সঙ্গে সমানতালে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের কাছ থেকে যথেষ্ট সম্মানও পাচ্ছেন। এটা বাঙালি হিসেবে সবার জন্যই গৌরবের বিষয়।

কিন্তু তাঁর উপদেষ্টা পরিষদের সবাই এখন একটু মজা পেয়ে গেছেন ক্ষমতার। তাঁদের আর এই গদিটা ছাড়ার ইচ্ছা নাই। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় এজেন্ডা হওয়া উচিত নির্বাচনি প্রস্তুতি গ্রহণের পাশাপাশি গণহত্যাকারী- অপরাধীদের বিচার করা। আর তাদের বিদেশে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা।
গতকাল এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগকে তার কৃত অপরাধের জন্য আগামী কয়েক বছরের জন্য দল হিসেবে নিষিদ্ধ করার বিষয়েও তাঁর ব্যক্তিগত মতামত ব্যক্ত করেন।

প্রশ্ন : বর্তমানে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক অবস্থা কী? অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কেমন?

মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম : বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভালোমন্দ মিলেই চলছে। ভালোটাই আগে বলি।

প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস সারা বিশ্বে সুপরিচিত ব্যক্তি। তিনি এখন পর্যন্ত তাঁর ভাবমূর্তি ধরে রেখেছেন এবং বিদেশি রাষ্ট্র-প্রতিনিধিদের সঙ্গে সমানতালে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের কাছ থেকে যথেষ্ট সম্মানও পাচ্ছেন। এটা বাঙালি হিসেবে সবার জন্যই গৌরবের বিষয়। তিনি কাউকে তোষামোদ করে কোনো বক্তব্য রাখেননি।
বাংলাদেশের স্বার্থের কথা বলিষ্ঠভাবে তুলে ধরেছেন। এটা হলো ভালো দিক। আর খারাপ অংশটা হলো, তাঁর উপদেষ্টা পরিষদের সবাই এখন একটু মজা পেয়ে গেছেন ক্ষমতার। তাঁদের আর এই গদিটা ছাড়ার ইচ্ছা নাই। যদিও তাঁরা মুখে এটা বলেন না। কিন্তু তাঁদের কর্মকাণ্ডে এবং প্রতিদিনের নিত্যনতুন সংস্কারের দাবিতে যেসব কথা বলছেন, যেসব সংস্কার গত ৫০ বছরে হয়নি সেগুলো করতে তো একটু সময় লাগবে। তাদের বক্তৃতা-বক্তব্যে মনে হয় যেনো সেগুলো ছাড়া আর দেশ চলছে না। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি হলো, দেশের যে গণতন্ত্রের জন্য আমরা এতদিন অপেক্ষা করেছি, সেই গণতন্ত্রকেই এখন পেছনে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। কিছু আঁতেলদের দ্বারা জনগণকে এমন একটা ধারণা দেওয়া হচ্ছে, গণতন্ত্র এলে বাংলাদেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। জনগণের ভোটের মাধ্যমে কোনো পরিবর্তন হবে না। অথচ পৃথিবীতে সব গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণের ভোটের মাধ্যমেই পরিবর্তন এসেছে। রাজনীতিবিদরা সময়ে-অসময়ে সময়ের দাবিতেই নিজেদের সংশোধিত করেছেন। জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে দেশকে উন্নততর পরিস্থিতিতে নিয়ে যাচ্ছেন। সুতরাং বাংলাদেশে যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলো নির্বাচিত সরকার ছাড়া এই কয়েকজন অ্যামেচার দিয়ে এসব সমস্যার সমাধান হবে না।

আমরা অনেক আশা করেছিলাম তরুণ যে ছাত্রনেতা বা তরুণ যে যুবক নেতারা রয়েছেন, তাঁরা নতুন এক দিগন্ত উন্মোচন করবেন। তাঁরা নতুন ধারার রাজনীতি শুরু করবেন। কিন্তু দেখা গেল যেই লাউ সেই কদু। তাঁরা যাদেরকে প্রতিদিন নিন্দা-মন্দ করেন, তারা যে রাজনীতি করে, সেটাই তাঁরা অনুসরণ করছেন। নিজের বাড়িতে যেতে যদি ১০০ গাড়ির বহর লাগে, তাহলে ভবিষ্যতে তাঁরা কী দেবে দেশকে। এসব দেখে এবং তাঁদের সম্বন্ধে যেসব কথা শোনা যাচ্ছে, বিশেষ করে তাঁরা কোনো পয়সাকড়ি/খরচ না দিয়ে যেখানে বিনামূল্যে অবস্থান করছেন পাঁচতারকা হোটেলে, তাঁদের দিয়ে কী হবে? তাঁদের কর্মকাণ্ডে আমি অনেকটা আশাহত হয়েছি। অথচ এঁরাই ছিল দেশের ভবিষ্যৎ। এঁদের নিয়েই আমরা অনেক কিছু আশাভরসা করেছিলাম। এঁদেরকে দেখেই রাজনৈতিক দলগুলোও নিজেদের অনেক সংশোধন করে নেবে, অতীতেন মতো এঁরা গড্ডলিকায় গা ভাসিয়ে দেবে না। কিন্তু দেখা গেল যে আমরা আশার যে আলো দেখতে পেয়েছিলাম, সেটিও নির্বাপিত প্রায়। এই অবস্থাতে আমার মনে হয় যে ভোটের মাধ্যমেই একমাত্র একটা সমাধান হতে পারে। বিএনপিকেও অনেক পরিবর্তন আনতে হবে। বিএনপির প্রথম কাজটাই হবে নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে। এবং নিজের দলে যদি কেউ উল্টাপাল্টা কাজ করে, জনগণ যেগুলো পছন্দ করে না, তাদের বিরুদ্ধে প্রথম অ্যাকশন নিতে হবে। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে, বিএনপি জিয়াউর রহমানের দল এবং আওয়ামী লীগ যেসব ভুলভ্রান্তি করেছে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে বিএনপি এগুলো করবে না। এই হলো মোটামুটি ভালোমন্দ মিলিয়ে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি।

প্রশ্ন : নির্বাচন নিয়ে চারদিকে সংশয় দেখা দিয়েছে। ছাত্রনেতারা চাচ্ছেন আগে সংস্কার পরে নির্বাচন। জামায়াতে ইসলামীসহ ইসলামি কয়েকটি দলের ভূমিকাও অস্পষ্ট। এ অবস্থায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে নাগাদ হতে পারে? আপনি কী মনে করেন?

মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম : যাদের দেশের জনগণের মধ্যে কোনো অবস্থান নেই, একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে যাদের জনপ্রিয়তা। একটি ছোট গোষ্ঠীর মধ্যে যাদের বিচরণ, তারা নির্বাচনকে ভয় পাবেই। জনগণের ওপর তাদের আস্থা নেই। তবে নির্বাচন তো এখনো অনেক দেরি আছে। তারা লোকজনের মাঝে নিজেদের ভাবধারা প্রচার করুক। তাদের যে মেনিফেস্টো রয়েছে, তাদের যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, সেগুলো জনগণের কাছে তুলে ধরুক। তারপরে নির্বাচনে তারা ভোট চাইতে পারে। কিন্তু আগে থেকেই তারা ধরে নিয়েছে যে তারা ভোটে পরাজিত হবে। সুতরাং পরাজয়ের ভয়ে নির্বাচন পেছাতে হবে, আমাদের দলের অবস্থান নাই, অবস্থান তৈরি করে তারপর নির্বাচন দেব, এ ধরনের চিন্তাভাবনা জাতি ও দেশের জন্য ক্ষতিকর হবে।

আমি মনে করি প্রফেসর ইউনূস তিনি যদি তাঁর সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে চান, তাহলে এই ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁর নির্বাচন দিয়ে দেওয়া উচিত। নির্বাচন যত বিলম্ব হবে, এমনও হতে পারে যে আর কখনো নির্বাচন দেখবে না এ দেশের জনগণ। যেহেত দেশে কোনো নির্বাচিত সরকার নাই এবং এই সরকারের দেশ পরিচালনার কোনো অভিজ্ঞতা নাই, ফলে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কারণে কিংবা অন্য যেকোনো কারণেই হোক তারা দেশটাকে একটা অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে ঠেলে দিতে পারে। সুতরাং খালি নিজের চেয়ারের কথা চিন্তা করলে তো হবে না। দেশের কথাও চিন্তা করতে হবে। আরেকটা জিনিস হলো, এদের অতীত কী? এরা হয়তো নিজেরা জ্ঞানী-গুণী লোক, কিন্তু দেশের জন্য এদের কী অবদান আছে?

প্রশ্ন : সরকারের সংস্কার কার্যক্রমকে কীভাবে দেখছেন? সংস্কারের নামে নির্বাচন প্রলম্বিত করার কোনো যোগসূত্র আছে কি না?

মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম : বর্তমানে যে নতুন রাজনৈতিক দলটি হয়েছে, এতে শীর্ষ পর্যায়সহ সরকারের প্রত্যেক উপদেষ্টা এর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। এমনকি প্রধান উপদেষ্টাও বলেছেন, তাঁর অনুপ্রেরণাতেই এই দলের সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং এটা তাঁদের পার্টি। দিস ইজ এ কিংস পার্টি। কিন্তু এঁরা এখন পর্যন্ত সফলতা অর্জন করতে পারেনি। সেজন্য বাকি সবাইকে বসে থাকতে হবে, এটা কোনো ভালো কথা না। নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশের উন্নতি হবে না। এই কয়েকজন আঁতেল কিংবা কয়েকজন ইনটেলেকচুয়াল দিয়ে যদি রাষ্ট্র চলত তাহলে আর রাজনৈতিক দলের এতদিন মাঠে কোনো খাওয়া থাকত না।

প্রশ্ন : নির্বাচনের পর বিএনপি ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। এটি কীভাবে সম্ভব?

মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম : বিএনপি যে ঘোষণা দিয়েছে, বিএনপি এখনো সেখানেই আছে। আমরা যদি জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের সুযোগ পাই, তাহলে ফ্যাসিস্ট সরকারবিরোধী আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে যারা আন্দোলন অংশ নিয়েছে তাদের সবাইকে নিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সরকার গঠন করার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রশ্ন : সরকারের একজন উপদেষ্টা বলেছেন, অন্যায় না করলে, মাফ চাইলেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন, আপনি কি মনে করেন? গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা উচিত কিনা?

মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম : এ ব্যাপারে আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে আওয়ামী লীগ বিগত সময়ে দেশটার যে অবস্থা করেছে, সারা দেশে গুম, খুনসহ ধ্বংস করে গেছে, তাতে আমি মনে করি আগামী কয়েক বছরের জন্য এই দলটাকে নিষিদ্ধ করে রাখা উচিত। আর এই সরকারের প্রধান এজেন্ডা হওয়া উচিত সবকিছু বাদ দিয়ে আগে গণহত্যাকারী ও অপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করা। বিদেশে যে টাকা পাঠিয়েছে, সেগুলো ফেরত আনা। এ দুটোকে বাদ দিয়ে তারা নানা রকমের সংস্কার বা অপেক্ষাকৃত কম প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে দেশকে ব্যতিব্যস্ত রাখছে, সেটি আমার কাছে সুখকর বলে মনে হচ্ছে না।

প্রশ্ন : আনুপাতিক হার পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায় জামায়াতে ইসলামী। আপনি বা আপনার দল একমত কি না?

মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম : এটা আমরা মোটেও সমর্থন করি না। বাংলাদেশে এ ধরনের নির্বাচনের সঙ্গে জনগণও পরিচিত নয়। এর ফলে জনগণের সঠিক প্রতিনিধি বেরিয়ে আসবে বলেও আমরা মনে করি না। অনেক অরাজনৈতিক ব্যক্তি যাদের দেশের জন্যে কোনো অবদান নেই, তারাও চলে আসতে পারে এ ধরনের নির্বাচনে দলীয় আনুকূল্যে। সে জন্যে আমাদের দল থেকেও এর বিরোধিতা করা হয়েছে।

প্রশ্ন : বর্তমান সরকারের কাছে আপনার আহ্বান এবং বিএনপির মূল প্রত্যাশা কী?

মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম : সরকারের কাছে আহ্বান হলো, অতি দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। নির্বাচনই গণতন্ত্রে উত্তরণের সর্বোত্তম পন্থা। এবং আঁতেলদের কথা শুনবেন না। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে পদক্ষেপ নেবেন। বিশেষ করে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কারণে আমাদের যে তৈরি পোশাক এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে যেসব বাধার সম্মুখীন হবে বাংলাদেশের অর্থনীতি, সেগুলোকে দূর করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। তা ছাড়া নির্বাচন চাওয়া তো কোনো অপরাধ হতে পারে না। কিছু কিছু আঁতেল মানুষকে এমন ধারণা দিচ্ছেন যে, নির্বাচন চাওয়া মানে একটা অপরাধ। নির্বাচনের ব্যাপারে সরকার যদি সঠিক ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে তার জন্য দেশে আইন আদালতের ব্যবস্থা আছে। আর এটাই তো কোনো শেষ গণ অভ্যুত্থান নয়। ভবিষ্যতে আরও গণ অভ্যুত্থান হতে পারে। সুতরাং সরকারের উচিত জনগণের ওপর আস্থা রেখে কোনো রকমের গুজবে কান না দিয়ে সরকার বলিষ্টভাবে গণতন্ত্রের পথে হাঁটবে, এটাই আমরা আশা করি।

প্রশ্ন : যে মহল ‘মাইনাস টু’ করতে চেয়েছিল, তারা এবার ‘মাইনাস বিএনপি’ এজেন্ডায় তৎপর, বিষয়টি কীভাবে দেখছেন।

মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম : বাংলাদেশে একধরনের লোক আছে, যাদের সুখে থাকতে ভূতে কিলায়। তাদের নিজেদের কোনো অবস্থা নাই। নিজেদের নির্বাচনে যাওয়ার কোনো মুরোদ নাই। নিজেরা জনগণের জন্য অতীতেও কিছু করেনি। ভবিষ্যতেও কিছু করবে না। শুধু নিজেকে নিয়ে যারা ব্যস্ত, তাদের মাথায় নানা ধরনের প্রকল্প ঘুরে বেড়াচ্ছে। সে ধরনের চিন্তাভাবনা কারও মাথায় থাকতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশ এমন একটি রাষ্ট্র- এ দেশের সাধারণ মানুষ খুবই সহজসরল, নিজেদের জীবিকা নিয়ে ব্যস্ত। এ ধরনের চালবাজ লোকেরা নিজেদের আখের গোছানোর জন্য নানা ধরনের ফন্দি-ফিকির করে। যার ফলে মাঝেমধ্যে রাষ্ট্রব্যবস্থাও বিপদের সম্মুখীন হয়। তাই আমি মনে করি, কেউ যদি এ ধরনের চিন্তাভাবনা করেও থাকে, এখন আর সম্ভবপর নয়। জনগণ এখন অনেক সচেতন। সব ধরনের অপতৎপরতাকে দেশের জনগণ বিশেষ করে দেশের ছাত্রসমাজ রুখে দেবে বলে আমার বিশ্বাস।

প্রশ্ন : অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে সময় দেওয়ার জন্য।

মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম : আপনাকেও ধন্যবাদ।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার জরুরি হয়ে পড়তে পারে

শেয়ার
নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার জরুরি হয়ে পড়তে পারে
ফাইল ছবি

শামসুজ্জামান দুদু, আশির দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের রাজনীতি দিয়ে যাত্রা শুরু, এরপর কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক হয়েছিলেন। সেখান থেকে হন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। এখন তিনি দলটির ভাইস চেয়ারম্যান। পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত দুদু দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নিজ দল-দলের বাইরে বিভিন্ন আলোচনা-সমালোচনা ও আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন কালের কণ্ঠের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কালের কণ্ঠের নিজস্ব প্রতিবেদক শিহাবুল ইসলাম

কালের কণ্ঠ : প্রায় ৭ মাস দেশে নতুন সরকার, সামগ্রিক অবস্থা কেমন দেখছেন?

ইদানীং বাজারে কিছু পণ্যের দাম কমেছে। এই না যে সব পণ্যের দাম কমছে।

অর্থাৎ কিছু সম্ভাবনা দেখা দিলেও কিছু কিছু দ্রব্যের দাম আগের মতোই। এই রোজার মধ্যে ভোজ্য তেলে অনিশ্চয়তা ছিল। কিছু পণ্যের দাম কমেছে, কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। কিছু সবজির দামও কমেছে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবনতি হয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে এখনো সবাই স্বাভাবিকভাবে ফিরতে পারেনি। আগে ছাত্রলীগের নামে হলগুলোতে দখলবাজি ছিল। এখন অন্যরা দখলবাজি করছে। যারা করছে তারা আবার সততার ধ্বজাধারী।
শিল্প ক্ষেত্রে দেখবেন ঈদে সব শ্রমিককে সেভাবে বেতন দেওয়া সম্ভব হয়নি। ঈদ উপলক্ষে ত্বরিত ব্যবস্থায় তাদের বেতন-ভাতা দিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। এই সরকারের নিয়ন্ত্রণে সব কিছু নেই। শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিক্ষা বাদেও গণতন্ত্র সংকটে আছে। হাসিনা কেড়ে নিয়েছে ভোটাধিকার, এখন সেই অবস্থায়ই আছে। সামগ্রিক সংকটের মধ্যে দেশ নিমজ্জিত।

কালের কণ্ঠ : আপনারা দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছেন। বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনায় তো ভালো করছে।

বাড়ির কর্তা যেভাবে সংসার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, বাড়ির দারোয়ান সেটা করতে পারবে না। কখনো কখনো বাড়ির কর্তাকে দারোয়ানের ওপর নির্ভর করতে হয়, যখন সে বাইরে যায়। যা অল্প সময়ের জন্য। কিন্তু উপযুক্ত হচ্ছে কর্তা। এটি মনে রাখতে হবে। তারা (সরকার) রাজনীতিবিদ না, রাজনৈতিক সংগঠকও না। এই কাজটি রাজনীতিবিদদের। রাজনীতিবিদদের আসার ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। 

কালের কণ্ঠ : দেশ পরিচালনায় অভিজ্ঞতা আছে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের। এখন আওয়ামী লীগ মাঠে নেই। তাহলে যদি নির্বাচন দ্রুত হয় তাহলে, আপনারা কি কিছুটা সুবিধা পাবেন না?

রাষ্ট্র পরিচালনা করে দৃশ্য একটি রাজনৈতিক দল, কিন্তু অদৃশ্যত জনগণ। নির্বাচিত হয়ে আসার পাঁচ বছর পরে, ওই জনগণের কাছে তাদের ফিরে যেতে হয়। অতীতে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে, জনগণ কর্তৃক রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। এখন যে সরকার আছে সেটি তো জনগণের সরকার নয়। এখন আওয়ামী লীগ তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। তার কৃতকর্মের জন্য ধ্বংস হয়ে গেছে। বিএনপির সঙ্গে যখন জামায়াতে ইসলামী থাকে, তখন তারা ১৮-১৯টি আসন পায়। আর তারা (জামায়াত) বিএনপি ছাড়া নির্বাচন করলে পায় ২-৩টি। এর বাইরে কিছু দলের একটা দুইটা আসল পাওয়ার নজির আছে। তাহলে বিএনপির সঙ্গে রাজনৈতিক ক্ষমতা, দেশ পরিচালনা করা, এগুলোর সম্পর্ক আছে। তাই বিএনপিকে কেউ যদি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে, সেটা ভুল হবে।

কালের কণ্ঠ : এনসিপি ও জামায়াত চাচ্ছে সংস্কারের পরে নির্বাচন। তাদের চাওয়াটা আপনি কিভাবে দেখছেন?

নির্বাচন সম্পর্কে কেউ যদি আস্থাশীল হয়, তাহলে সে যেকোনো সময় নির্বাচনকে স্বাগত জানাবে। আর আস্থাশীল না হয় তাহলে, একটি ভিন্ন পথ খোঁজার চেষ্টা করবে। কিভাবে অন্যভাবে ক্ষমতার ওই জায়গায় পৌঁছানো যায়। সে তো জানে নির্বাচন হলে, তিনটা সিট পাবে। আর না হলে হয়তো একটাও পাবে না। আর যারা নতুন তারাও যদি নির্বাচন না চায় তাহলে তাদেরও ওই দলভুক্ত করা যায়। মানে তারা নির্বাচনের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে পারছে না। এখন জনগণের ডিমান্ড নির্বাচন ও গণতন্ত্র। আমরা যদি সঠিক সময়ে সঠিক কাজটা না করে ফেলে পারি, তাহলে সংকট ঘনীভূত হবে। এই জায়গাটিতে যদি শূন্যতা রাখি, তাহলে মানুষ একসময় ক্ষুব্ধ হবে।

কালের কণ্ঠ : এনসিপি গণপরিষদ নির্বাচন চাচ্ছে, আর বিএনপি নির্বাচিত সংসদে সংবিধান সংশোধন চাচ্ছে। নতুন গঠিত দলসহ অন্যান্যদের সঙ্গে আপনাদের চাওয়ার পার্থক্য হয়ে যাচ্ছে না?

না, এখানে পার্থক্য নাই। আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। ছাত্রদের পড়াতেও পারতাম, কিন্তু আমার মনে হয়েছে যে, রাজনীতি করাটা আমার জন্য ঠিক। এ জন্য রাজনীতিতে এসেছি। আমার বুঝে আসে না সেকেন্ড রিপাবলিক কেন লাগবে। আমাদের স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশ। স্বাধীন-সার্বভৌম দেশে গণপরিষদ নির্বাচন লাগবে কেন। 

কালের কণ্ঠ : তারা তো বর্তমান সংবিধান বাদ দিয়ে নতুন সংবিধান চায়।

সংবিধান বাদ দেয়া যায় না, সংবিধান সংস্কার করা যায়। এমনকি নতুন সংবিধান করতে হলে সংসদে যেতে হবে। পার্লামেন্টে যেতে হলে পার্লামেন্ট বানাতে হবে। আর এটা বানাতে হলে নির্বাচনের দরকার। তো ইলেকশনে না গিয়ে আমি এসব সংবিধানে হাত দেব? আমাদের দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বিবেচনায় এটা এক ধরনের পাগলামি। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেছে, যুদ্ধ করেছে। একটি ক্ষুদ্র অংশ পাকিস্তানের পক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে। তাদের কাছে ৭১ মানে স্বাধীনতা মনে হয় না। তারা স্বাধীনতার বিপক্ষে। তারা এ জন্যই ২৪ কে দ্বিতীয় স্বাধীনতা মনে করে। সে কারণেই সেকেন্ড রিপাবলিক, সে কারণেই গণপরিষদ চায়। যারা স্বাধীনতাকে মানতে না পারবে, তাদেরই আরেকটি স্বাধীনতার কথা তাদের বলতে হয়, হবে। 

কালের কণ্ঠ :  ছাত্র আন্দোলনকারীদের দুজন এখন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে আছেন, অন্যদিকে ছাত্ররা নতুন দল গঠন করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে আপনি কি মনে করেন আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে?

গত সাত আট বছরে মানুষের মধ্যে যে ধারণা সৃষ্টি হয়েছে, সেই প্রেক্ষাপটে সরকারের পক্ষে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা সম্ভব কিনা? কারণ এই বর্তমান সরকার প্রধান শিক্ষার্থীদের দল গঠনে উৎসাহিত করেছে প্রকাশ্যে। সরকারে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের রেখেছে। যে সরকার আলাদা একটি দল গঠনে ও ঐ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাদের প্রতিনিধি সরকারে থাকে, সে স্বাভাবিক কারণে ওই সরকারে ক্ষমতায় আসুক, সেই প্রক্রিয়া, সেই ইঞ্জিনিয়ারিং, সেই ব্যবস্থাপনা করবে না এটা বিশ্বাসযোগ্য না। সরকার প্রধান হিসেবে বড় উদাহরণ গত সাত মাস ধরে তিনি বলে আসছেন, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। হঠাত্ করে কয়দিন আগে তিনি বলেছেন, নির্বাচন জুনে হবে। হয়তো আবার কোনো এক মাসে আমরা শুনব জুনের সম্ভব হচ্ছে না, পরবর্তী বছরের (২০২৬) জুনে হয়তো সম্ভব হবে। তাই আমার মনে হয়, তিনি প্রমাণ করছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার জরুরি হয়ে পড়তে পারে। যেটা সরকারের কার্যক্রমে ওপর নির্ভর করছে।

কালের কণ্ঠ : তাহলে কি আপনারা সন্দেহ করছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না?

সরকার গঠনে দুই উপদেষ্টা ও তাদের সহযোগীরা যে কাজগুলো করছে তাতে সন্দেহ না, বাস্তবতায় মনে হচ্ছে ওই দিকেই সরকার যাচ্ছে।

কালের কণ্ঠ : এনসিপিসহ আরো কিছু দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চায়। গত ১৫-১৬ বছরে আওয়ামী লীগের মাধ্যমে নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন বলে আপনারা দাবি করেন। তাহলে তাদের সঙ্গে আপনারা কেনো একমত হতে পারছেন না?

এগুলো রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজি, যা বাদ দিতে হবে। আমরা ইলেকশন চাইলে, ইলেকশন দেয় না সরকার। অন্যদিকে আমরা কেনো সরাসরি আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ চাচ্ছি না সেটা আবার বলে তারা। এগুলো ফাইজলামি। এসব বাদ দিতে হবে। আগে সরকারকে (আওয়ামী লীগকে) বাতিল করতে হবে। প্রেস নোট দিতে হবে। কিন্তু সরকার প্রধান বলছে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিস্থিতি দেশে নেই। এনসিপি তো কিছু বলে না। না বলার আগে আমাদের প্রশ্ন আসছে কেনো। আমরা চাই, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাক। যারা নির্বাচিত হয়ে আসার সমার্থ রাখে না, কিন্তু এমপি হওয়ার ইচ্ছা জাগে, তারাই নির্বাচন নিয়ে সময়ক্ষেপণ করতে চায়। বাহানা করতে চায়। সে জন্য বলি আগে কারা কী চায় সেটা ঠিক করুক। আর একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে বোঝা যাবে কত ধানে কত চাল।

কালের কণ্ঠ : অনেক ক্ষেত্রে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ আসছে, দল থেকেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তার পরও কেনো নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না?

যারা চাঁদাবাজি করে তারা বিএনপি করে না। ছাত্রদল করে না। স্বেচ্ছাসেবক দল করে না। আমি অন্তত বিশ্বাস করতে চাই না, কোনো ছাত্রদলের নেতাকর্মী চাঁদাবাজি করবে। এটা অসম্ভব হতেই পারে না। যখন কোনো মুসলিম কুরআন-হাদিস অস্বীকার করবে, আল্লাহকে অস্বীকার করবে, সে সময় থেকে সে আর মুসলিম থাকে না। ছাত্রদলের কিছু নির্দিষ্ট নির্দেশনা আছে, রাজনীতি আছে, নেতৃত্ব আছে। ওইটা যে অস্বীকার করবে, অস্বীকার করে চাঁদাবাজি করবে, সে তখন ছাত্রদলের কেউ না। স্পষ্ট করেই দল থেকে বলা হয়েছে। সে একটা দুষ্কৃতকারী। তাকে একটা সাধারণ লোক ধরে পুলিশে দিতে পারে। পুলিশও ধরে নিয়ে আইনসম্মত ব্যবস্থা নিতে পারে। সে তো আমার দলের না। বরঞ্চ এদের কাউকে কাউকে ব্যবহার করে এদের নাম ব্যবহার করে, দলকে কলুষিত করছে একটি বিশেষ একটি মহল। যারা চক্রান্ত করছে। এ ধরনের কাজ যারা করে তারা তার পদে থাকে না। আমি ইসলামের কোনো কিছু মানি না, তাহলে কী মুসলিম দাবি করতে পারি?

কালের কণ্ঠ: জামাতের সঙ্গে বিএনপির কী গভীর দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে?

জামায়াতসহ অন্যান্য ছোট রাজনৈতিক দল আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কমিউনিস্ট পার্টিও আমাদের কাছে আসে, জামায়াতও আমাদের কাছে আসে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সময় জামাতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক হয়েছে। কিন্তু যখন কেউ ফ্যাসিবাদের দোসর হবে; শুধু জামায়াত না, অন্য যেকোনো সংগঠন, তখন সে আর আমার বন্ধু না। এখানে দূরের, কাছের বলে কোনো কিছু নাই। জামাত একটি আলাদা সংগঠন। বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক সংগঠন। জামায়াতের সিদ্ধান্ত অতীত থেকে একদম ২৪ সাল পর্যন্ত ভুলে ভরা। বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ভুল করেনি তা বলবো না, কিছু ভুল থাকতে পারে। কিন্তু জামায়াতের সঙ্গে তুলনীয় নয়। এটা দূরে আর কাছের ব্যাপার নয়।

মন্তব্য

‘অচিরেই জি এম কাদের তার কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্ত করবেন’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
‘অচিরেই জি এম কাদের তার কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্ত করবেন’
জি এম কাদের। সংগৃহীত ছবি

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের অচিরেই তার কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্ত করবেন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির আরেকাংশের মহাসচিব কাজী মো. মামুনুর রশিদ। শনিবার রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

বিবৃতিতে দেশব্যাপী দলীয় সব নেতাকর্মীকে আস্থার সঙ্গে এরশাদের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান কাজী মো. মামুনুর রশিদ। 

আরো পড়ুন
বাংলাদেশ বিশ্বমানচিত্রে ন্যায়ের পক্ষে শক্তিশালী মডেল হতে পারে : শিবির সভাপতি

বাংলাদেশ বিশ্বমানচিত্রে ন্যায়ের পক্ষে শক্তিশালী মডেল হতে পারে : শিবির সভাপতি

 

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণে দলীয় নেতাকর্মীদের মনোবলে চিড় ধরেছে।

স্বঘোষিত চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের স্বজনপ্রীতি, অর্থলিপ্সা, সংগঠন ও দেশবিরোধী সিদ্ধান্তে সবাই বিক্ষুব্ধ। এ অবস্থায় কেন্দ্রীয়সহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলার নেতৃবৃন্দ দল থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘দলের দায়িত্ব গ্রহণের পরবর্তীতে জি এম কাদের নেতৃবৃন্দকে অবমূল্যায়নের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছেন। সবার সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ২৪-এর জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ কেউ মেনে নিতে পারেনি।

বিবৃতিতে সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে কাজী মামুন বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ অচিরেই জি এম কাদের তার কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্ত করবেন। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সারা দেশে দলকে সংগঠিত করে পল্লীবন্ধু এরশাদের নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিলের ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিলের ঘোষণা খেলাফত মজলিসের
সংগৃহীত ছবি

ভারতের সংসদে পাস হওয়া ওয়াকফ সংশোধনী বিল বাতিল ও ভারতজুড়ে অব্যাহত মুসলিম নিধন হচ্ছে দাবি করে—এর প্রতিবাদে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল ও স্মারকলিপি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।

শনিবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর পল্টনে দলের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক বৈঠকে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।

আগামী ২৩ এপ্রিল ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে এ কর্মসূচি পালন করবে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।

বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে দলটির আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার দীর্ঘদিন ভারতজুড়ে মুসলিম নিধন চালিয়ে আসছে।

তারা দলীয় উগ্রবাদী হিন্দু জঙ্গিদের মুসলমানদের ওপর লেলিয়ে দিয়েছে। যখন-তখন মুসলিমদের ভিটামাটি দখল করে নিচ্ছে। মুসলমানদের ব্যক্তিগত ও ওয়াকফ করা সম্পত্তি দখল করে, বা অবৈধ অধিগ্রহণ করে সেখানে মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করছে। তাতেও তাদের লোভী মনের তৃষ্ণা মেটেনি।
এবার এসব দখল ও অধিগ্রহণকে আইনি কাঠামো দিতে ওয়াকফ সংশোধনী বিল-২০২৫ পাস করেছে। আমরা ইতোমধ্যে এসব পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আমাদের ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছি। ভারতজুড়ে মুসলমানরা এই বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। এই বিল মূলত মুসলিমদের ধর্মীয় আইন ও অধিকারে হস্তক্ষেপ।
মুসলিমবিশ্বের উচিত, ভারত রাষ্ট্র কর্তৃক মুসলিম নিধন ও মুসলমানদের ধর্মীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া।’

তিনি বলেন, ‘ভারত সরকার ও তার নিম্নরুচির মিডিয়াগুলো বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের মিথ্যা প্রপাগান্ডা ধারাবাহিকভাবে বিশ্বব্যাপী প্রচার করে আসছে। মূলত ভারতে মুসলিম নির্যাতনের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের নির্লিপ্ততা তাদেরকে অপপ্রচারে আশকারা দিচ্ছে। অবিলম্বে বাংলাদেশ সরকারের উচিত ভারতের মুসলিম নিধনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও উদ্বেগ জানানো, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে এ বিষয়ে সোচ্চার হওয়া।’

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, মাওলানা রেজাউল করীম জালালী, মাওলানা আফজালুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী, মাওলানা কুরবান আলী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন প্রমুখ।

মন্তব্য

বাংলাদেশ বিশ্বমানচিত্রে ন্যায়ের পক্ষে শক্তিশালী মডেল হতে পারে : শিবির সভাপতি

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বাংলাদেশ বিশ্বমানচিত্রে ন্যায়ের পক্ষে শক্তিশালী মডেল হতে পারে : শিবির সভাপতি
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, ‘আগামীতে বাংলাদেশ বিশ্বমানচিত্রে ন্যায়ের পক্ষে একটি শক্তিশালী মডেল হতে পারে। প্রয়োজন অটুট ঐক্য, উদার নেতৃত্ব, ধৈর্য, প্রজ্ঞা ও সাহসিকতা।’ 

শনিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে ‘৩৬ জুলাই থেকে ১২ এপ্রিল’ শিরোনামে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা বলেন তিনি।

আরো পড়ুন
রোটেশনাল পদ্ধতি অনুসরণ না হলে গুচ্ছতে থাকবে না শেকৃবি

রোটেশনাল পদ্ধতি অনুসরণ না হলে গুচ্ছতে থাকবে না শেকৃবি

 

শিবির সভাপতি বলেন, ‘এভাবে ঐক্যের ইতিহাস রচিত হোক বারবার।

প্রিয় মাতৃভূমির জন্য, মুসলিম উম্মাহর জন্য, বিশ্বমানবতার জন্য আমরা এক হয়ে যাই। ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদ, কিংবা সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এই ঐক্য একটি লাল কার্ড।’

তিনি বলেন, ‘মার্চ ফর গাজা’ বাস্তবায়নে যারা প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে, দৃশ্যপটে কিংবা অদৃশ্য থেকেই অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, সবাইকে আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দান করুন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ