কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে ৬০ ভাগ ধান পেকে গেছে। এরই কিছু কিছু জায়গায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। দল বেঁধে শ্রমিকরা ধান কাটতে হাওরে যাচ্ছে। ধানকাটার যন্ত্রও পাঠানো হচ্ছে সেখানে।
কৃষকরা ধান ঘরে তোলার প্রস্তুতিও নিচ্ছে। ৮০ ভাগ পেকে গেলেই ধান কেটে ফেলতে পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
এ নিয়ে বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ ও নিকলীর বড়হাওরসহ বেশ কয়েকটি হাওর এলাকায় ঘুরে কৃষক সমাবেশ করেছেন। তারা এ সময় যে কোনো উপায়ে দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষকদের।
নিজেরাও কাস্তে নিয়ে কৃষকদের ধান কাটায় সহযোগিতা করে উদ্বুদ্ধ করেছেন।
কৃষি বিভাগ বলছে, বোরো ধানের সঙ্গে বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের বৈরিতা রয়েছে। ১৫ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলের আশঙ্কা রয়েছে। ওই সময় পুরোমাত্রায় ধান কাটার সময়।
কাজেই দেরি না করে দ্রুত ধান কেটে ঘরে তুলতে হবে।
কৃষক সমাবেশে কৃষিবিদ ড. আব্দুল জলিল বলেন, বোরো ধান একটি ঝুঁকিপূর্ণ ফসল। এটি প্রকৃতির ওপরও অনেকটা নির্ভরশীল। কাজেই কম জীবনকালের ধান উদ্ভাবনে কৃষি বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করছে। যেন বৃষ্টি কিংবা উজানের ঢলে ধানের কোনো ক্ষতি না হয়।
তিনি আরো বলেন, এবার বৃষ্টি কম হয়েছে, তাই ফলন কিছুটা কম হতে পারে। তবে এতে লক্ষ্যমাত্রায় বড় প্রভাব ফেলবে না।
তিনি কৃষকদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, ধান বেশি পেকে গেলে ঝরে যায়। এ কারণে ধান যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কেটে ফেলতে হবে। এ জন্য শ্রমিক ও মেশিনসহ যত ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন কৃষি বিভাগ এ সব দিয়ে সহযোগিতা করবে।
এ সময় অন্যান্যের মাঝে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ( সম্প্রসারণ ও কো-অর্ডিনেশন) সরেজমিন উইংয়ের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আব্দুল জলিল, ঢাকা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. জাকির হোসেন, কিশোরগঞ্জ জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার কৃষিবিদ তৌফিক আহমদ, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সাদিকুর রহমান, অতিরিক্ত উপপরিচালক শাহীনুল ইসলাম ও করিমগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মুকশেদুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এতে করিমগঞ্জ ও নিকলীর কয়েকশ কৃষক ওই সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশের পর কৃষক তাদের ক্ষেতের বোরো ধান কাল থেকে কাটা শুরু করবেন বলেও জানান।