<p>ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নসহ কয়েকটি ইউনিয়নের প্রায় এক লাখ পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। গত কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে পাহাড়ি ঢল বন্যার শঙ্কা ক্রমাগত বাড়ছে। তা ছাড়া ভাইটকান্দি, রামভদ্রপুর, রূপসি, ছনধরা ইউনিয়নের কয়েকহাজার পরিবার বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রবিবার (৬ অক্টোবর) রাতে হাটপাগলা গ্রামে স্রোতে ভেসে যাওয়া এক যুবকের মৃত দেহ উদ্ধার করছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।</p> <p>উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রত্যন্ত জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলার অধিকাংশ রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা হুমকির মাঝে রয়েছে। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির ফলে খরিয়া ও কংশ নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। </p> <p>সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শাশুড়ি নিখোঁজ হওয়ার খবর জানার পর প্রবল স্রোতের মাঝে হেঁটে যাওয়ার সময়  তৌহিদুল ইসলাম (৩৫) নিজেই  নিখোঁজ হন। রবিবার সন্ধ্যায় তার মরদেহ উদ্ধার করেন ময়মনসিংহ ডুবুরি দল। নকলা উপজেলার জালালপুর গ্রামের মানিক শেখের ছেলে তিনি। </p> <p>স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রতিটি ইউনিয়নের পাঁকা-কাঁচা রাস্তার মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার রূপসি, বালিয়া, বওলা, ভাইটকান্দি, ছনধরা, রামভদ্রপুরসহ নিম্নাঞ্চলের এসব এলাকার সড়কে পানি ওঠে সড়কে বড় বড় গর্ত হয়ে মানুষের চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। </p> <p>নীচু এলাকার সবজির ইউনিয়ন হিসাবে পরিচিতি ভাইটকান্দি, রামভদ্রপুর ও নগরবেড়া, বাশতলা গ্রামের সবজিক্ষেত ও আমন ধানের ফসল ডুবে গেছে। অঝোরে বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল থামছেই না।</p> <p>ডেপুলিয়া বাশতলা কংশ নদীর বাসিন্দারা জানান, শতশত পরিবার নিয়ে তারা কষ্টে আছেন। সরকারিভাবে কোনো সহায়তাও দেওয়া হয়নি। গতকাল সকাল থেকে বৃষ্টিপাত কম হলেও আকাশে কালো মেঘের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। </p> <p>ফুলপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, ফুলপুর উপজেলায় মোট আমন ধান চাষ করা হয়েছে প্রায় ২২ হাজার <br /> হেক্টর জমিতে। প্রায় এক হাজার ৫০০ হেক্টর জমির আমন ফসল পরিপূর্ণভাবে ডুবে গেছে। তা ছড়া প্রায় তিন হাজার হেক্টর ফসলের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। </p> <p>তারা আরো জানায়, ৬৫০ হেক্টর সবজি চাষ করা হয়েছে এ উপজেলায়। বন্যায় ২০০ হেক্টর সবজির পরিপূর্ণ ক্ষতি হয়েছে।</p> <p>ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে ফুলপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফারুক আহাম্মেদ বলেন, আংশিক মিলে প্রায় চার হাজার হেক্টর জমির আমন ধানের ক্ষতির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জানানো হবে।</p> <p>ফুলপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ বি এম আরিফুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, বন্যা প্লাবিত এলাকায় সরেজমিনে পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের সাথে কথা বলা হয়েছে। তাদেরকে সরকারিভাবে সহায়তা করার চেষ্টা চলছে। তা ছাড়া সরকারিভাবে তিনটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।</p>