<p>রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শ্যামাসুন্দরী খালকে গিলে রাখা ১১৭ জন দখলবাজের কব্জা থেকে মুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে পুলিশ ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে এই কার্যক্রম শুরু করেছে। তিন দখলদারের কাছ থেকে জমি উদ্ধার করে লাল পতাকা টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে, অসংখ্যবার উচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েও নানা কারণে তা পারেনি প্রশাসন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="এবার অস্কারে সংগীতের লড়াইয়ে ৫ বাঙালি শিল্পী" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/04/1733304084-efe197d6429740e4c48169c211ce0e73.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>এবার অস্কারে সংগীতের লড়াইয়ে ৫ বাঙালি শিল্পী</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/entertainment/2024/12/04/1453768" target="_blank"> </a></div> </div> <p>উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদ হাসান মৃধা জানান, শ্যামাসুন্দরী খালের উৎস, অবস্থান, দখলদার চিহ্নিত এবং সার্ভে কমির্টির রিপোর্ট পাওয়ার পর অবৈধভাবে দখলে রাখা ১১৭ জন দখলদারের চূড়ান্ত তালিকা করেছে জেলা প্রশাসন। নগরভবন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন যৌথ উদ্যোগে এই উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। </p> <p>তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="অসংখ্য রোগের ওষুধ যে পাতা" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/04/1733304792-107fb81a427d79735f65ea3aa6126b58.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>অসংখ্য রোগের ওষুধ যে পাতা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/lifestyle/2024/12/04/1453773" target="_blank"> </a></div> </div> <p>সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় ১৬ কিলোমিটার এই খালের স্থান ভেদে ১২০ ফিট চওড়া থাকলেও দখলদারদের কারণে খালের অবস্থা ৮ থেকে ১৬ ফিট নেমেছে। এই খাল  ঘাঘট নদী থেকে শুরু করে ধাপ পাশারীপাড়া, কেরানীপাড়া, মুন্সিপাড়া, ইঞ্জিনিয়ারপাড়া, গোমস্তাপাড়া, সেনপাড়া, মুলাটোল, তেঁতুলতলা, নূরপুর, বৈরাগীপাড়া হয়ে মাহিগঞ্জের মরা ঘাঘটের সঙ্গে যুক্ত হয়। এখন অধিকাংশ এলাকায় দখল করে রেখেছেন খালের পাড়ের বাসিন্দারা। বাসা বাড়ির পয়ঃনিষ্কাশন, স্যুয়ারেজের লাইন এই খালে দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার না করায় খালটি নাব্যতা হারিয়ে ফেলেছে। বহুবার দখলদার উচ্ছেদ আর সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হলেও অদৃশ্য কারণে থমকে যেতো সেই কাজ। <br /> ফলে দুপাড়ে অবৈধভাবে দখল হয়ে যাওয়ায় সংকীর্ণ হয়ে পড়ে খালটি। সামান্য বৃষ্টিতেই গোটা শহরে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।</p> <p>সুজন রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, খাল উদ্ধারে বহুবার উদ্যোগ নিলেও নিজের সম্পত্তি দাবি করে দেওয়া হয়েছে মামলা। গতিহীন হয়ে পড়েছে উচ্ছেদ কার্যক্রম। ভোট-জোট আর স্থানীয় রাজনীতির প্রভাবে পিছু হাঁটতে হয়েছে প্রশাসনকে। এবার আইন প্রয়োগ, কঠোরতা এবং স্বদিচ্ছাকে সামনে এনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে এই উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ফিরতে শুরু করেছেন সাজেকে আটকে পড়া পর্যটকরা" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/04/1733305656-1aa55138d78c0d4710d039467ed451ef.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ফিরতে শুরু করেছেন সাজেকে আটকে পড়া পর্যটকরা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/12/04/1453775" target="_blank"> </a></div> </div> <p>জানা গেছে, ২০০৭ সালে তৎকালীন পৌরসভার অধীন ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে খালটির সংস্কারকাজ শুরু করা হয়। এতে খাল পুর্নখনন, গাইড ওয়াল স্থাপন, জজকোর্ট ও কেরামিয়াত জামে মসজিদের কাছে পার্ক স্থাপন অন্তর্ভুক্ত ছিল। কেরামতিয়া মসজিদসংলগ্ন খালের এক কিলোমিটার জায়গা পুনর্খনন ও পার্কের ফুটপাতের বেজমেন্ট নির্মাণ করা হয়। এর পর ২০১১ সালের শুরুতে দ্বিতীয় দফায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হয় শ্যামাসুন্দরী খালের সংস্কার কাজ। আংশিক বাস্তবায়নের পর রংপুর পৌরসভা সিটি করপোরেশনে রূপান্তর হয়। সে সময় এটি সিটি করপোরেশন থেকে এলজিইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়। </p> <p>তখন নবনির্বাচিত মেয়র (প্রয়াত) শরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু সংবাদ সম্মেলন করে শ্যামাসুন্দরীর সংস্কার কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি তুলে ধরেন। এর পর থেকে শ্যামাসুন্দরীর উন্নয়নকাজ থমকে যায়। খালটির প্রাণ ফেরাতে নগরবাসী বিভিন্ন সময় আন্দোলন ও দাবি-দাওয়া তুলে ধরে। এর পরিপ্রেক্ষিতে খালটির ১০ কিলোমিটার পুর্নখননের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।</p> <p>সদ্য বিদায় মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, নগর বাঁচাতে এই কার্যক্রম জনগুরুত্বপূর্ণ। দখল মুক্ত করতে  আমি সব প্রক্রিয়া শেষ করে এসেছি। বর্তমান প্রশাসন সহজেই তা উদ্ধার করতে পারবে।</p> <p>ম্যালেরিয়া রোগে মায়ের মৃত্যুর পর রংপুরবাসীকে মশা-মাছি থেকে রক্ষায় এই খাল খনন করেছিলেন রাজা জানকী বল্লভ। বলেছিলেন, ‘পীড়ার আঁকর ভূমি এই রংপুর, প্রণালি কাটিয়া তাহা করিবারে দূর’ কিন্তু রাজার সেই স্বপ্ন যেন মৃত না হয়, নগরবাসী যেন মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পায় সেই দাবী নগরবাসীর।</p>