নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সুজন রায়, মাধবি রানী, মাধবীর বোন নিন্দ্রা রানী ও মাধবীর ছেলে সমদিপকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের সময় মেখলিগঞ্জের কুচলিবাড়ি সীমান্তে আটক করে ভারতীয় পুলিশ। তাদের বাড়ি উপজেলার জোড়াবাড়ি ইউনিয়নের বেতগাড়া গ্রামে। অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের কারণে তাদের আটক করে ভারতীয় পুলিশ। সেখানে আটকের পর ভারতীয় এসআই নিউজ চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে নিজ এলাকা বেতগাড়ায় তাদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে বলে তারা জানিয়েছেন।
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে এলাকায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ঘটনার সন্ধানে সাংবাদিকরা বেতগাড়া গ্রামে গেলে সনাতন ধর্মালম্বীদের ওপর কোন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি বলে জানায় এলাকাবাসী ও সুজনের পরিবার।
আরো পড়ুন
বাইরের থেকে ভিতরেই ভালো আছি : শাজাহান খান
সুজন রায়ের বাবা সুনীল চন্দ্র বলেন, বুড়িমারীর এক দালালের মাধ্যমে ৭০ হাজার টাকায় অবৈধ উপায়ে তাদের পরিবারের চারজনকে ভারতে পাঠাতে চুক্তি করি। সেই মোতাবেক ১১ এপ্রিল পরিবারের চারজন সদস্যকে তিনি ভারতে পাঠিয়ে দেন।
১২ এপ্রিল ভারতীয় পুলিশ তাদের আটক করে। এ সময় তারা ভয়ে তাদের ওপর নির্যাতন হয়েছে বলে ভারতীয় পুলিশ ও ভারতের সাংবাদিককে জানান। তারা কেন এ রকম মিথ্যা কথা বলেছে সেটা আমি বলতে পারবোনা। তিনি বলেন ছোট থেকে বড় হলাম এখানে আমরা কোন রকমের নির্যাতনের শিকার হইনি। এখানে যদি আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিতো তাহলে আমি এখানে দোকান করছি কিভাবে। তারা যেসব কথা বলেছে ছাড়া পাওয়ার আশায় মিথ্যা কথা বলেছে। যেটা তাদের বলা উচিত হয়নি।
সুনীলের ভাই কোকিল চন্দ্র বলেন, গত কয়েক মাস আগে সুনীল তাদের বাড়ি-ভিটা চুপ করে বিক্রি করে স্থানীয় মিষ্টার নামে এক ব্যক্তির কাছে। বাড়ি বিক্রির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, নীলফামারীতে জমি কিনে বাড়ি করবো তাই বিক্রি করেছি।
তবে স্থানীয়রা বলেন, সুনীলের বাড়িটি সরকার থেকে করে দেওয়া। অথচ তিনি চুপ করে বাড়ি বিক্রি করে দুই ছেলেকে অবৈধভাবে ভারতে পাঠিয়েছেন। হয়তো তিনিও ভারতে চলে যাওয়ার পরিবল্পনা করছেন। স্থানীয়রা আরো বলেন, কেন তারা দেশের ভাবমুর্তি নষ্ট করছেন সেটা তদন্ত করে সরকারের ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিত।
হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা উজ্বল কানজিলাল বলেন, ঘটনা শুনে আমরা এখানে এসে দেখি ঘটনা ভিন্ন। তারা অবৈধ উপায়ে ভারতে প্রবেশ করায় তাদের গ্রেফতার করা হলে তারা দেশের বদনাম করে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছে। এখানে এসে দেখি সুজনের বাবা বাড়ির সামনে দোকান করছেন। তাদের বাড়ি ঠিকই আছে। অথচ তারা ভারতে বলেছে তাদের নির্যাতন করা হয়েছে। সেটা তারা মিথ্যা বলেছে।
আরো পড়ুন
আগামী রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন চায় জামায়াত
একই এলাকার রবিউল আলম ভুট্টু বলেন আমাদের বেতগাড়া শান্তি প্রিয় এলাকা। এখানে হিন্দু মুসলমান সবাই মিলেমিশে বসবাস করে আসছি। আমাদের মধ্যে কোন প্রকার ভেদাভেদ নেই। এখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ভালো আছে। তারা কোন নির্যাতনের শিকার হয়নি। অবৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশ করার সময় আটক হয়ে এখন মিথ্যা কথা রটাচ্ছে। যা দেশের ভামমুর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।
উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান সুমন বলেন, গত ৫আগস্টের পর ডোমার উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কোন প্রকার নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি। তারা শান্তি পুর্ন ভাবে বসবাস করে আসছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের যে কোন বিপদে আপদে আমরা সব সময় তাদের পাশে রয়েছি। যারা দেশের ভাবমুর্তি ক্ষুণ্ন করে মিথ্যাচার করছে তাদের আইনের আত্ততায় নিয়ে আসা উচিত।
স্থানীয়রা বলেন, সুনিলের ছোট ছেলেকে সে আগেই ভারতে পাঠিয়েছে। এবার তার বড় ছেলে ও বৌমাকে পাঠিয়েছিল ভারতে কোন ক্রমে তারা ধরা পরায় তাদের আসল রুপ বেরিয়ে পড়েছে।