লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরিব ও দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফ কার্ড রাজনৈতিক দলের মাঝে কোটার ভিত্তিতে বণ্টন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে প্রকৃত দুস্থ মানুষের চেয়ে দলীয় নেতাকর্মীরাই বেশি কার্ড পাচ্ছেন, ফলে অনেক গরিব মানুষ সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
জানা গেছে, উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে ৪৫ হাজার ১৯৯টি ভিজিএফ কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কার্ডে ১০ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা।
তবে ইউনিয়ন পরিষদগুলোর তালিকা প্রস্তুতের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা কোটার ভিত্তিতে কার্ড বণ্টনের দাবি তুলেন। চাপের মুখে ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রশাসকরা দাবি মেনে নিতে বাধ্য হন।
উপজেলার চরলরেন্স ইউনিয়নে ৫ হাজার ৫০০টি কার্ডের মধ্যে বিএনপি এক হাজার, জামায়াত ৫০০ ও গণঅধিকার পরিষদ ২০০টি কার্ড পেয়েছে। তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের সাড়ে ৫ হাজার কার্ডের মধ্যে বিএনপি ৬০০, জামায়াত ১৫০, জেএসডি ১৫০, ইসলামী আন্দোলন ৫০, নাগরিক পার্টি ১৫০ ও খেলাফত মজলিস ১৫০টি কার্ড বরাদ্দ পেয়েছে।
চরমার্টিন ইউনিয়নের ৬ হাজার কার্ডের মধ্যে বিএনপি ৮৫০, জামায়াত ১৫০ ও জেএসডি ১৫০টি কার্ড বণ্টন করা হয়েছে। এছাড়া চরকাদিরা ইউনিয়নের ৭ হাজার ৫০০ কার্ডের মধ্যে বিএনপি ৯০০, জামায়াত ৫০০ ও জেএসডি ৪০০টি কার্ড দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক দলের নেতারা সরকারি সহায়তায় কোটা প্রথা চালু রেখেছেন। এতে প্রকৃত দুস্থরা বঞ্চিত হচ্ছেন।
চরমার্টিন ইউনিয়নের প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, সকলের সাথে সমন্বয় করেই কাজ করতে হয়। তাই রাজনৈতিক দলের জন্য কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
চরকাদিরা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. হারুন বলেন, দলীয়ভাবে কার্ডগুলো ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। তারা তাদের মতো করে বিতরণ করবে।
উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল খায়ের কোটা প্রথা অস্বীকার করে বলেন, জামায়াতে ইসলামী সব সময় কোটার বিরুদ্ধে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম কাদেরও একই কথা বলেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের জেলা সভাপতি মো. কামাল হোসেন বলেন, কোটা প্রথা গরিব মানুষকে বঞ্চিত করে। ভিজিএফের তালিকায় কোটা প্রথা বন্ধ করা উচিত।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাহাত উজ জামান বলেন, সরকারি বরাদ্দে কোটা প্রথা চলবে না। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।