জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের একটি পুকুর থেকে উদ্ধারকৃত বৃদ্ধের মরদেহ নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। তদন্তে জানা গেছে, এটি কোনো দুর্ঘটনা নয় বরং ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মো. শাহীন মণ্ডলকে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত মো. রজ্জব আলী (৬০) ছিলেন একজন ভ্যানচালক ও নাইটগার্ড।
প্রতিদিনের মতো গত বছরের ২১ ডিসেম্বর রাতে তিনি রাতের খাবার শেষে পুকুর পাহারা দিতে যান। পরদিন সকালে পুকুরের পানিতে তার মরদেহ ভাসতে দেখা যায়। প্রথমে পরিবার ও স্থানীয়রা ধারণা করে, এটি পানিতে পড়ে যাওয়ার কারণে স্বাভাবিক মৃত্যু। সেই সন্দেহে কালাই থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা (নং-১৩, তারিখ-২২/১২/২০২৪) দায়ের করা হয়।
পুলিশের তদন্তে সন্দেহ তৈরি হলে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে জানা যায়, রজ্জব আলীর মৃত্যু স্বাভাবিক নয় বরং এটি একটি হত্যাকাণ্ড। এরপর নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি কালাই থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
আরো পড়ুন
আট মাসে ২৬.৭৯ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি
জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেন।
আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্ত পরিচালনার এক পর্যায়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়, হত্যার পেছনে নিহতের বড় ছেলে মো. শাহীন মণ্ডলের হাত রয়েছে।
পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব জানান, বাবার প্রতি দীর্ঘদিনের ক্ষোভ থেকেই শাহীন মণ্ডল পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে মরদেহ পুকুরে ফেলে দেন তিনি। পুলিশ শাহীন মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেন। পরবর্তীতে আদালতে হাজির করা হলে তিনি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন। দ্রুতই তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে।