নরসিংদীর পলাশে পূর্ববিরোধের জেরে নৃশংসভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা মামলায় আত্মগোপনে থাকা পলাতক ৩ আসামিকে রাজবাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শনিবার দিবাগত রাতে র্যাব-১১ এর সিপিএসসি নরসিংদী ক্যাম্প এবং র্যাব-১০ এর ফরিদপুর ইউনিটের যৌথ অভিযানে রাজবাড়ী সদর থানার শানদিআরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
রবিবার দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-১১ নরসিংদী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার উপপরিচালক মেজর সাদমান ইবনে আলম।
গ্রেপ্তারা হলেন, এজাহারনামীয় ৬ নম্বর আসামি পলাশ উপজেলার ভাগদী এলাকার লাল মিয়ার ছেলে বাদল মিয়া (৪৫), ৭ নম্বর আসামি একই এলাকার লাল মিয়ার ছেলে সিফাত (২০) ও অজ্ঞাতনামা আসামি আমীর আলীর ছেলে ওয়াহেদ আলী (৬০)।
র্যাব জানায়, এজাহারনামীয় আসামিদের সঙ্গে মামলার বাদীর দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। গত ৩১ মার্চ ভোর ৫ টায় পলাশের ঘোড়াশাল পৌরসভার ভাগদী এলাকার নিয়াজুর বাড়ির সামনে চোর সন্দেহে আসামি অজ্ঞাত একজন ব্যক্তিকে মারধর করছিল। তখন বাদীর ছেলে হাসিবুল ইসলাম রাকিব (২৫) ঘটনাস্থলে গিয়ে বলে-ওকে মারছেন কেন? অপরাধ করলে পুলিশে খবর দেন। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আসামিরা বাদীর ছেলেকে এলোপাতাড়ি মারধর করে জখম করে এবং হত্যার হুমকি দিলে রাকিব ভয়ে বাড়িতে চলে যায়।
র্যাব জানায়, একইদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাকিব তার বাবা মো. আসাব উদ্দিন ও ছোট ভাই শাকিবসহ (২০) স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজন নিয়ে তাকে মারধর করার কারণ জিজ্ঞাসাবাদ করতে ভাগদী এলাকায় নিয়াজুর বাড়ির সামনে পৌঁছালে এজাহারনামীয় আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন আসামি পূর্বপরিকল্পিতভাবে চাপাতি, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, হকিস্টিক, লোহার রড, ছেনিসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এতে রাকিব, শাকিব ও তাদের বাবা আসাব উদ্দিনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে রক্তাক্ত গুরুতর জখম করে।
এ সময় তাদের ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজনসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাকিবকে মৃত ঘোষণা করেন এবং রাকিবকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়। এ ঘটনায় পলাশ থানায় একটি হত্যা মামলার পর থেকে আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়।
এ ঘটনায় গত শনিবার দিবাগত রাতে রাজবাড়ী সদর থানার শানদিআরা এলাকায় কামালের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-১১ নরসিংদী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার উপপরিচালক মেজর সাদমান ইবনে আলম বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের পলাশ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।