<p>যেন আটঘাট বেঁধে নির্মাণে এসেছেন রায়হান রাফী। শুরু থেকেই অটুট তাঁর সাফল্যের ধারা—বড় পর্দায় যেমন সফল, তেমনি ওটিটিতেও। গত সপ্তাহে এসেছে তাঁর ওয়েব ছবি ‘মায়া’। এরই মধ্যে ওপারের ম্যাজিক নিয়ে ঘোষণা দিলেন বড় আয়োজনের ছবি ‘লায়ন’-এর। বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন কামরুল ইসলাম।</p> <p><strong>প্রসঙ্গ মায়া</strong></p> <p>বিঞ্জ-এ ৩০ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেয়েছে ‘মায়া’। অভিনয়ে ইমন ও সারিকা সাবরিন। মুক্তির পর থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছে ছবিটি। অনেকে বলছে, এখানে ক্যারিয়ারের সেরা অভিনয় করেছেন ইমন।</p> <p>ছবিটি নিয়ে রাফী বলেন, ‘এটা গতানুগতিক গল্পের চেয়ে আলাদা। এমন একটি গল্প বলার চেষ্টা করেছি, যেটা সমাজের কাজে লাগবে। কোনো পরিবারে যদি কেউ মাদক নেয়, সে পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়। সে বিষয়ে সচেতন করার চেষ্টা করেছি। এ ছাড়া মব জাস্টিস বা গণধোলাইয়ের মতো বিষয়ও আছে এখানে। কোনো বাড়াবাড়ি নেই, একেবারে নিরেট অভিনয় আছে এই ছবিতে। ছবিটি দেখলে এর চরিত্রগুলোর প্রতি মায়া অনুভব করবেন। এই ছবি দেখার পর যদি একজনও মাদকমুক্ত হয়, তাতেই আমাদের সার্থকতা।’ </p> <p><strong>চমকে দেবে ব্ল্যাক মানি</strong></p> <p>‘মায়া’ রেশ কাটতে না-কাটতেই আজ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন ওয়েব সিরিজ ‘ব্ল্যাক মানি’র। এটি আসবে বঙ্গতে। রাফীর ভাষ্য, ‘এই সিরিজে এমন কাস্টিং থাকবে, মানুষ চমকে যাবে। যাদের নিয়ে সিরিজটা হচ্ছে, কেউ ভাবেনি আগে। ‘ব্ল্যাক মানি’ শব্দটা এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে কালো টাকা। বিষয়টাকে পর্দায় তুলে আনছি আমরা। আবারও বলছি, কাস্টিং দেখে সবাই চমকে যাবেন। আশা করছি নভেম্বরে সিরিজটি মুক্তি পাবে।’</p> <p><strong>লক্ষ্য পুরো পৃথিবী</strong></p> <p>দেশে নিজেকে প্রমাণ করেছেন রাফী। এখন দেশের ছবিকেই পৌঁছে দিতে চান আন্তর্জাতিক বাজারে। সে লক্ষ্যেই কাজ করছেন ‘তুফান’ নির্মাতা। যেটার প্রথম অধ্যায় ‘লায়ন’। এতে ঢাকার শরিফুল রাজের সঙ্গে থাকছেন টালিগঞ্জের সুপারস্টার জিৎ। বড় পরিসরের এ ছবি নিয়ে রাফী বলেন, “বাংলা ছবি নিয়ে আমার স্বপ্নটা অনেক বড়। ‘তুফান’-এর সময় কয়েকটা দেশ ঘুরেছি, বাজারটা বোঝার চেষ্টা করেছি। এখন শুধু দেশ নয়, পুরো পৃথিবীকে মাথায় রেখে সিনেমা বানাতে হবে। রাজ-সিয়ামদের মতো তরুণদের নিয়ে বড় ছবি বানাতে হবে। তবে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা যেহেতু খুব একটা ভালো নয়, শুধু তাঁদের নিয়ে বড় ছবি বানানো মুশকিল। তো জিতের সঙ্গে যখন রাজকে নিয়ে বড় স্কেলে ছবি করছি, তখন বাজেট, অ্যারেঞ্জমেন্ট সব বেড়ে যাচ্ছে। ‘লায়ন’-এর ৭৫ শতাংশ শুটিং হবে সমুদ্রে। অনেক ব্যয়বহুল। দক্ষিণ আফ্রিকায়ও কিছু দৃশ্যের শুটিংয়ের পরিকল্পনা আছে। আমরা যদি আন্তর্জাতিক বাজারকে মাথায় রেখে কাজ করি, তাহলে বড় পরিসরে ছবি বানাতে পারব।”</p> <p><strong>লায়নের জিৎ-রাজ</strong></p> <p>শরিফুল রাজ ঢাকাই ছবির সম্ভাবনাময় অভিনেতা, অন্যদিকে জিৎ পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠিত তারকা। দুজনের ক্যারিয়ার, স্টারডম সবেতেই বিস্তর ফারাক। সমন্বয়টা কিভাবে করবেন? ‘এখানে দুজনই হিরো। দুজনের কেউ-ই খলনায়ক নন। তবে হ্যাঁ, কাস্টিংয়ে বাংলাদেশ অবশ্যই প্রাধান্য পাবে। জিৎদা অনেক বড় সুপারস্টার। তাঁর চরিত্রের অনেক গুরুত্ব থাকবে। এমনভাবে দুজনের চরিত্র উপস্থাপন করব, যা আগে কখনো দেখা যায়নি। আর নায়িকার ঘোষণাও শিগগিরই দেব। আমার প্ল্যান, বাংলাদেশ থেকেই দুজন নায়িকা নেব’—বললেন রাফী।</p> <p><strong>ভাবনায় ইন্ডাস্ট্রি</strong></p> <p>রাফীর কথায় আঁচ করা যায়, তিনি পুরো ইন্ডাস্ট্রির জন্য ভাবেন। কথা প্রসঙ্গে টেনে আনলেন জুনিয়র আর্টিস্টদের কথা। কয়েক মাস ধরে শুটিং বন্ধ থাকায় চলচ্চিত্রের জুনিয়র আর্টিস্ট ও টেকনিশিয়ানরা অসহায় পরিস্থিতিতে আছেন। এ নিয়ে রাফী বলেন, ‘বিশ্বাস করতে পারবেন না, জুনিয়র আর্টিস্টদের অবস্থা কতটা খারাপ। তাঁদের বাসায় বাজার নেই। টেকনিশিয়ানদের অবস্থাও খারাপ। সংগঠনগুলোও নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে। আগে তো বিভিন্ন সংগঠনের সুবাদে কিছু সহযোগিতা পেত। এখন সেটাও হচ্ছে না। যত দ্রুত সম্ভব ইন্ডাস্ট্রি সচল হওয়া জরুরি।’ </p> <p><strong>নো কাউন্টার অ্যাটাক</strong></p> <p>পশ্চিমবঙ্গে ‘তুফান’ মুক্তির সুবাদে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে কলকাতায় গিয়েছিলেন রায়হান রাফী। এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, সেখানকার প্রথম সারির দুই তারকার সঙ্গে ছবির ব্যাপারে কথা চলছে তাঁর। সে সময় রাফীর মন্তব্যের বিপরীতে অভিনেতা দেব জানান, বিষয়টি সত্য না। কিন্তু দুই মাস পর দেখা গেল, রাফীর কথা মিথ্যা ছিল না। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ‘পরাণ’ নির্মাতা বলেন, “আমি কাউন্টার অ্যাটাক করতে চাই না। তখন আমি কারো নাম উল্লেখ করিনি। অনেকে হয়তো ভেবেছিল, এমনিই বলেছি। কিন্তু ছবিটা তখন থেকেই চূড়ান্ত। প্রাসঙ্গিক কারণে ঘোষণা দিতে দেরি হয়েছে। দেখুন, আমি কাজ দিয়েই নিজেকে প্রমাণ করতে চাই। ‘লায়ন’ তিন পর্বে বানাব। কোনো ছবি একেবারে তিন পর্বের ঘোষণা দিয়ে ফ্লোরে গড়াচ্ছে, এটাও বাংলাদেশে প্রথম। সিনেমা নিয়েই পড়ে থাকি আমি। ব্যাক টু ব্যাক তিন ঈদে তিনটা ব্লকবাস্টার দিয়েছি—পরাণ, সুড়ঙ্গ ও তুফান। ইন্ডাস্ট্রির জন্যই কাজ করে যাচ্ছি।”</p>