কোরবানির ঈদে সিনেমা হলে ‘তুফান’ উঠেছিল। সেই তুফান নেমে এলো রাজপথেও। বহু বছরের চর্চিত রাজনৈতিক দাবি ‘ঈদের পর আন্দোলন’, অবশেষে এ বছর জুলাইয়ে সেটার সফল মঞ্চায়ন হলো। জুলাই-আগস্টের উত্তাল দিনগুলোর সঙ্গে যোগ হলো বন্যা, মানুষ আর বিনোদনমুখী হয়নি।
‘সালতামামি ২০২৪’
বদলে যাওয়া দেশের চিত্রে যেমন ছিল শোবিজ অঙ্গন
বিনোদন প্রতিবেদক

না গান, না নাটক, না চলচ্চিত্র—কোনো কিছুরই খবর রাখেনি সাধারণদের কেউ। ভিউ খরায় কেটেছে শোবিজের সব অঙ্গন। শুটিং, রেকর্ডিং, কনসার্ট—সব বন্ধ। পর্দার মানুষরাও মাথায় লাল-সবুজের পতাকা বেঁধে নেমে এসেছে রাজপথে।
মজার ব্যাপার হলো, এই ভাঙা বছরেও ছবি মুক্তি পেয়েছে ৫০টি! আগের বছর যেখানে ছিল ৫১। তুলনা করলে সংখ্যাটা বেশিই।
এ বছর তেমনটা হয়নি। বছরটা শুধুই ‘তুফান’ময়। শুরুতে আশা জাগিয়েও আগের বছরের ‘প্রিয়তমা’ হতে পারেনি ‘রাজকুমার’। এ দুটি ছাড়াও বেশ কিছু ভালো ছবি এসেছে এ বছর, দর্শক সেগুলোকে পর্যাপ্ত ভালোবাসা দেয়নি। ‘তুফান’ নিয়ে দু-চারটা কথা বলতেই হয়। বেশ কয়েক বছর ধরেই এ ধরনের ‘নৃশংস দৃশ্যসংবলিত’ ছবির কদর হলিউড-বলিউডে লক্ষ্য করা গেছে। ‘এনিম্যাল’, ‘পুষ্পা’, ‘জন উইক’-এর মতো ছবি তো ম্যালা পুরস্কারও জিতে নিয়েছে। সেই ঘরানার রায়হান রাফীয় সংস্করণ ‘তুফান’। বিগত কয়েক বছরে ভারতের সঙ্গে জোট বেঁধে ঢাকাই ছবির একটা ভিন্ন চেহারা দেওয়ার চেষ্টা চলেছে।
যৌথপ্রযোজনায় বড় বাজেটের বেশির ভাগ ছবিই হয়েছে ভারতীয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ও নির্মাতার তত্ত্বাবধানে। ব্যতিক্রম ‘তুফান’। এই ছবির নাটাই রায়হান রাফীর হাতেই ছিল। শাকিব খান, মিমি চক্রবর্তী, চঞ্চল চৌধুরীর মিশেলে ভালো আওয়াজ উঠেছে। বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ছবির আলাদা চেহারা দেখেছে বিশ্ব। এই চেহারা কতটা যুক্তিযুক্ত সেটা নিয়ে তর্কবিতর্ক থাকতে পারে। তবে ‘দুষ্টু কোকিল’টা ঠিকই ডেকেছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা সে কোকিলটাকে আপাতত দূরে সরিয়ে দিয়েছে। দুই বাংলার চলচ্চিত্রের একজোট হয়ে হাঁটার যে দাবি, সেটা কারো কারো রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ‘দুষ্টু ডাক’ই। ওপার বাংলায় ‘তুফান’ সেভাবে চলেনি এটা ঠিক; তবে চর্চায় ছিল, একটা ছাপ রাখতে পেরেছে। যার প্রভাবও পড়তে শুরু করেছিল দুই বাংলার সিনেপরিকল্পনায়। এ রকম বেশ কিছু পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। দেবের ডাকে ওপারে যেতে পারেননি তাসনিয়া ফারিণ। রাফীকে নিয়ে জিতের ছবি হচ্ছে-হবে করছে, ক্লিয়ারকাট ঘোষণা আসছে না। এপার-ওপারের বেশ কয়েকজন অভিনয়শিল্পী ভিসা জটিলতায় বর্ডার ক্রস করেননি, রাজিও হননি। সেপ্টেম্বরে সুনেরাহ বিনতে কামাল যেমন কালের কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘ভারতে একটি কাজের কথা হয়েছিল। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমি সেটা ছেড়ে দিয়েছি। কারণ আমি এখন ভারতে গিয়ে কাজ করলে দেশের মানুষ পছন্দ করবে না।’ এদিকে ওপারে জয়া-চঞ্চলদের বয়কটের ডাকও দিয়েছে সেখানকার বিজেপি নেতারা।
জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সহায়ক হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল গান। আন্দোলনের বিভিন্ন ভিডিওচিত্রে পুরনো গান ‘শোনো মহাজন’ কাঁপন ধরিয়েছিল অনেকের মনে। র্যাপ ‘কথা ক’, ‘আওয়াজ উডা’য় উদ্বুদ্ধ হয়েছে বহু তরুণ। ‘চলো ভুলে যাই’, ‘ভয় বাংলা’, ‘ও প্রধান’ গানগুলোও প্রেরণা দিয়েছে বিপ্লবীদের। আন্দোলন-পূর্ব বছরের প্রথমার্ধ্বে চলচ্চিত্রের বেশ কয়েকটি গান বাজিমাত করেছে এবার। কোক স্টুডিও বাংলা তৃতীয় মৌসুমে এসে ঝিমিয়ে পড়েছে। বছরের প্রথমার্ধ্বে ‘মা লো মা’, ‘তাঁতী’ আর ‘অবাক ভালোবাসা’ নিয়ে এলেও দ্বিতীয়ার্ধ্বে একেবারে নীরব তারা।
ওটিটিতে এ বছরটা একেবারে গড়পড়তা। ভালো কিছু কাজ হয়েছে, তবে আলোড়ন তোলার মতো ছবি-সিরিজ কমই। থ্রিলার আর যৌনতা এই মাধ্যমে বেশ বিকোয়, এ বছর এর বাইরের কিছু কনটেন্ট পাওয়া গেছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে বেশ।
টিভি নাটকের অবস্থা ভয়াবহ রকমের খারাপ। ‘টিভি নাটক’-এর বদলে এখন ‘ইউটিউব নাটক’ বললেই বরং সুবিচার হয়। কারণ নাটক এখন ইউটিউব চ্যানেলওয়ালারাই বেশি নির্মাণ করেন। ভালোবাসা দিবস আর দুই ঈদ ছাড়া বিশেষ দিনগুলোকে টার্গেট করে এখন আর নাটক নির্মিত হয় না। বছরের সেরা পাঁচ নাটক খুঁজতে রীতিমতো গলদঘর্ম হতে হয়েছে। নাম দেখেই মনে হয়, ভিউ টার্গেট করে বানানো। অভিনয়শৈলী, গল্প, শিল্পমান—এসবের বালাই নেই। হাস্যরস ভালো, অহেতুক হাস্যরক ভালো লাগে কাঁহাতক।
আলোচিত জন
‘আলো আসবেই’, এটি হোয়াটসঅ্যাপের একটি গ্রুপের নাম। ছাত্র-জনতার বিজয়ের ঠিক এক মাস পর অন্তর্জালে ফাঁস হলো এর স্ক্রিনশট। আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে গ্রুপটিতে ছিলেন শোবিজের বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী। আন্দোলন চলাকালে সেখানে বিভিন্ন রকম আলাপ করেছেন তাঁরা। অরুণা বিশ্বাস, সোহানা সাবা, রিয়াজ, ফেরদৌস, জ্যোতিকা জ্যোতি, শামীমা তুষ্টিসহ অনেকেই দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে ছাত্রদের আন্দোলনের বিপক্ষে বলেছেন। বিশেষ করে অরুণা বিশ্বাসের সংলাপ ‘গরম জল ঢেলে দাও’ তো বেশ সমালোচিত হয়েছে। সাবেক সরকারের নেতাদের তখন হদিস নেই, ঠিক সেই সময়ে আওয়ামী সমর্থক শিল্পীদের এসব স্ক্রিনশট নিয়েই তামাশা আর বিদ্রুপে মেতে উঠল অনেকেই।
অসময়ে ওপারে
টিভি নাটক ও ওটিটির কল্যাণে বাংলাদেশের অভিনয়শিল্পীদের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও। কয়েক বছর ধরেই ওপারের চলচ্চিত্রে অভিনয়ের ডাক পড়েছে তাঁদের। জয়া আহসানের পর মোশাররফ করিম, তাসনিয়া ফারিণরা অভিনয় করেছেন সেখানকার চলচ্চিত্রে। এ বছর সেখানে অভিষেক হয়েছে চঞ্চল চৌধুরী ও জিয়াউল ফারুক অপূর্বর। সৃজিত মুখার্জির ‘পদাতিক’-এ চঞ্চল হয়েছেন মৃণাল সেন, আর প্রতিম ডি গুপ্তর ‘চালচিত্র’তে অপূর্ব মন্দলোক। মুক্তির পর এবার আর এপারে খুব বেশি আলোচনা হয়নি তাঁদের নিয়ে। কারণ সময়। রাজনৈতিক টানাপড়েনে দুই দেশের সম্পর্কের বলি হয়েছে তাঁদের এই সাফল্য।
পাকিস্তানি শিল্পীর কণ্ঠে শুনি হিন্দি গান
আতিফ আসলামরা আগেও এসেছেন। তবে ৫ আগস্টের পর হঠাৎ করেই দেশে পাকিস্তানি কণ্ঠশিল্পীর কনসার্ট বেড়ে গেল। গত চার মাসে আতিফ ছাড়াও এসেছেন আব্দুল হান্নান ও রাহাত ফতেহ আলী খান। এসেছে ব্যান্ড জাল, সামনে আসবে কাবিশ। এ মাসে রাহাত গাইলেন দুই আয়োজনে। সাধারণত কনসার্টের মৌসুমে ভারতের জনপ্রিয় শিল্পীরা আসেন ঢাকায়। এবার তাদের জায়গা নিল পাকিস্তানি শিল্পীরা। মজার বিষয়, মঞ্চে তাঁরা বেশির ভাগই গেয়েছেন হিন্দি গান। রাহাত-আতিফরা অবশ্য বলিউডে গেয়েই জগজ্জোড়া খ্যাতি পেয়েছেন। শ্রোতাদের আবদার তাই সেসব গানেই। দর্শকসারিতে বসে সেসব গানে দোল খেয়েছেন রাজনীতির অনেক চেনা মুখও।
২০২৪ সালের সালতামামি তৈরি ও তথ্য সংগ্রহ করেছেন দাউদ হোসাইন রনি, সুদীপ কুমার দীপ, কামরুল ইসলাম ও হৃদয় সাহা।
সম্পর্কিত খবর

যিনি অতিথি তিনিই উপস্থাপিকা
বিনোদন প্রতিবেদক

স্টুডেন্ট থাকাবস্থাতে স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা শিক্ষামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। কবিতা আবৃত্তি করা, উপস্থাপনা করা, রচনা লেখা পাশাপাশি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বরাবরই ছিলেন এগিয়ে। বছর কয়েক আগে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে অতিথি হিসেবে ডাক পান তিনি। এর পর অতিথি হয়ে আসা এই তরুণী পরবর্তীতে সেই অনুষ্ঠানেরই উপস্থাপিকা হিসেবে ডাক পান।
এক্সট্রা কারিকুলামে পারদর্শী এই তরুণী বাংলা, ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি আয়ত্তে নিয়ে আসেন চীনা ভাষা।
সূচনার ভাষ্যে, যখন আমি স্টুডেন্ট ছিলাম তখন থেকেই আমি এই বিষয়গুলোর সঙ্গে জড়িত ছিলাম। আমার কাছে খুব ভালো লাগতো। ২০১৬ সালে চ্যানেল আইয়ে বাংলা একাডেমির একটি বিশেষ আয়োজন উপস্থাপনা করেছিলাম।
তাকে বিভিন্ন করপোরেট শোতেই বেশি দেখা যায়। পাশাপাশি বিভিন্ন রান্নার অনুষ্ঠান এবং মাঝেমাঝে শোবিজ সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠানে পাওয়া যায়। তার অফিশিয়ালি টেলিভিশনে উপস্থাপিকা হিসেবে যাত্রা শুরু হয় ২০২১ সালের মার্চে।
অতিথি থেকে উপস্থাপিকা, এমন প্রসঙ্গে সাদিয়া রশ্নি সূচনা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চীনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাই, পাশাপাশি ওই সময়ে আমার আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নেবার অভিজ্ঞতাগুলো বলার জন্য বাংলা ভিশন চ্যানেল থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেখানে অতিথি হিসেবে গিয়ে আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। এর পর একটা সময়ে তাদের কাছে মনে হলো আমাকে দিয়ে উপস্থাপনা করানো যেতে পারে, এরপর তারা আমাকে উপস্থাপনার প্রস্তাব দেন। যেহেতু ওইসময় করোনা মহামারী ছিল ২০২০ সালে, আমি তখন আর যাইনি। পরের বছর মার্চে আমি যাই এবং উপস্থাপনা শুরু করি। তখন থেকে এখনো পর্যন্ত গত চার বছর ধরে আমি সেই ‘দিন প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করছি।’
ইচ্ছে থাকলেও কথিত কমিউনিকেশন গ্যাপের কারণে টেলিভিশনে শোবিজ অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতে পারছেন না বলেই জানালেন তিনি। তার মতে, অনেকেই বিভিন্ন সময়ে জানিয়েছেন আমার নাকি কমিউনিকেশন গ্যাপ রয়েছে। অথচ আমি জাতিসংঘের ইউএনডিপির সঙ্গে যে কাজ করছি সেটা কমিউনিকেশন নিয়েই। সেদিক থেকে বলতেই পারি যে, যোগাযোগের বিষয়ে আমি বিশেষ ভূমিকা রাখি বলেই ইউএনডিপির এমন একটা ডিপার্টমেন্টে কাজ করতে পারছি। এখন অন্যরা কমিউনিকেশন বলতে কী বুঝান, সেটা হয়তো আমি বুঝিনা। তাদের দিক থেকে হয়তো আমার যোগাযোগ দক্ষতা এতটা ভালো না। ভালো হলে তো এখানে অনেকগুলো প্রোগ্রাম পেতাম।
সেইসঙ্গে যোগ করে সূচনা আরো বলেন, ‘এখন আমি টেলিভিশনে যে কয়েকটা শো করছি সেগুলো আমার কাছে এসেছে তখন যখন আমি করপোরেটে প্রচুর শো করছি। নিজেকে উপস্থাপিকা হিসেবে প্রমাণ করার পর টেলিভিশন শোগুলো পেয়েছি। শুরুর দিকে পাইনি। একমাত্র ‘দিন প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানটাই ছিল। মানুষ টেলিভিশনে কাজ করতে করতে করপোরেটে যায়, আমার ক্ষেত্রে উলটো হয়েছে। করপোরেট থেকে আমি টেলিভিশনে এসেছি।’
নিজের কাজটাই তার কাছে অনুপ্রেরণা বলে মনে করেন। এর জন্য কাজের বাইরে যতটুকু সময় পান সেটা নিজেকে দিতেই পছন্দ করেন। তিনি বলেন, আমার কাছে আমার কাজটাই অনুপ্রেরণা। যখন কাজ থেকে বাড়ি ফিরি সেটা আমাকে যে প্রশান্তি দেয়, সারাদিন ঘুমিয়েও আমি সেটা পাই না। এ কারণে সবকিছুর চেয়ে আমি কাজটাকেই বেশি গুরুত্ব দেই।
মডেলিংয়ে স্বাচ্ছন্দ্য সূচনার অভিনয় খুব একটা টানে না, তারপরেও নাটক এবং সিনেমার একাধিক প্রস্তাব তিনি পেয়েছেন। বিনয়ের সঙ্গে তা ফিরিয়েও দিয়েছেন। তার ভাষ্যে, বেশ অনেক নাটকের অফার পেয়েছি, সামহাউ কাজ করা হয়নি। সিনেমারও পেয়েছি কিন্তু মনে হয়েছে, অভিনয় এতটাও ভালো জানি না। তবে ইচ্ছে আছে সিনেমাতে কাজ করার। যদি ব্যাটে-বলে মিলে তাহলে হয়তো করতে পারি।
উপস্থাপনায় কাউকে অনুসরণ করেন না মিষ্টিভাষী এই তরুণী। তবে এই সময়ে যারা উপস্থাপনা করছেন তাদের সবার উপস্থাপনাই দেখেন সূচনা। তবে উপস্থাপনায় তার প্রিয় দুজন মানুষ হলেন অপি করিম এবং রুমানা মালিক মুনমুন। এর বাইরে অপরা উইনফ্রের উপস্থাপনা তার কাছে অসাধারণ লাগে। তার মতো উপস্থাপনা করতে পারলে উপস্থাপনায় নিজেকে ধন্য মনে করতেন সূচনা।
আসন্ন ঈদ উপলক্ষে বেশ কিছু ফ্যাশন হাউজের মডেল হিসেবে কাজ করা হয়েছে সূচনার। এ ছাড়াও দুটি বিজ্ঞাপন করা হয়েছে সম্প্রতি। এংকর পুষ্টি মিল্ক এবং ভিশন রেফ্রিজারেটরের। পাশাপাশি চলছে দুটি রান্নার শো এবং একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক শো।

প্রেমের দায়ে কারাগারে ইয়াশ, পাগলা গারদে নিহা!
বিনোদন প্রতিবেদক

কলেজ জীবনের প্রেম সাধারণত তীব্র হয়। যে প্রেম পৃথিবীর সকল বাধা টপকানোর ক্ষমতা রাখে। তেমনই এক দুর্বার প্রেমের গল্পে নির্মিত হলো ঈদের বিশেষ নাটক ‘অবুঝ প্রেম’।
এতে প্রেমিক-প্রেমিকার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইয়াশ রোহান ও নাজনীন নিহা।
ফুয়াদ বিন আলমগীরের সিনেমাটোগ্রাফিতে এই নাটকে দুটি ভিন্ন লুক ও চরিত্রে হাজির হবেন ইয়াশ রোহান ও নাজনীন নিহা।
এ প্রসঙ্গে নির্মাতা জানান, ‘অবুঝ প্রেম’ নাটকের চ্যালেঞ্জিং অংশ ছিলো দুটি।
এদিকে গল্পের বিষয়ে আগাম একেবারেই মুখ কুলতে চাইছেন না সংশ্লিষ্ট কেউ।
‘অবুঝ প্রেম’ ছাড়াও এবারের ঈদ আয়োজনে সিএমভি’র ব্যানারে মুক্তি পাচ্ছি ২০টি নাটক। প্রযোজক-পরিবেশক এসকে সাহেদ আলী পাপ্পু জানান, চাঁদরাত থেকে বিশেষ নাটকগুলো ধারাবাহিকভাবে উন্মুক্ত হতে থাকবে সিএমভি’র ইউটিউব চ্যানেলে।

জমজমাট ট্রেলার, এ মাসেই আসছে ‘লুসিফার ২’
বিনোদন ডেস্ক

মালায়ালাম চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম সেরা হিট ছবি ‘লুসিফার’। অবশেষে জানা গেল, আসছে এর সিক্যুয়েল। জমজমাট ট্রেলার উন্মোচন করে সুখবরটি দেন এর নির্মাতা পৃথ্বীরাজ সুকুমারান। সিক্যুয়েলের নাম রাখা হয়েছে ‘লুসিফার ২: এমপুরান’।
প্রায় চার মিনিটের ট্রেলারটি ছিল বেশ উত্তেজনাপূর্ণ। দলের অভ্যন্তরে এবং কেরালা রাজ্যে ক্ষমতার লড়াইকে ঘিরে আবর্তিত হয় ট্রেলারটি। দুর্দান্ত অ্যাকশনের ঝলকের পাওয়া গেছে এতে।
কেউ কেউ বলছেন, পৃথ্বীরাজ অভিজ্ঞ পরিচালক না হলেও ট্রেলার কাট দুর্দান্ত করেছেন। প্রতিটি ফ্রেমেই অসাধারণ পরিশ্রম এবং প্রচেষ্টা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। অসাধারণ দৃশ্যায়ন এবং নিখুঁত ব্যাকগ্রাউন্ড।
লাইকা প্রোডাকশনস, আশীর্বাদ সিনেমাস এবং শ্রী গোকুলাম মুভিজ প্রযোজিত ‘লুসিফার ২: এমপুরান’ আগামী ২৭ শে মার্চ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে।

রেকর্ড ভাঙবে কি না জানি না, চাই সবাই বরবাদ দেখুক : মেহেদী হাসান হৃদয়

ইমরুল নূর

২০১২ সালে শোবিজে পদচারণ। সহকারী হিসেবে এক-দুই বছর কাজ করার পর পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এর পর নির্মাণ করেন আড়াইশরও বেশি নাটক। ছোট পর্দার লম্বা সফর শেষে এবার বড় পর্দায় অভিষেক ঘটছে মেহেদী হাসান হৃদয়ের।
সিনেমায় আসতে এতটা সময় কেন নিলেন?
নিজেকে প্রস্তুত করতেই সময়টা নিয়েছি। আরো কয়েক বছর আগেই মনে হয়েছিল যে, এখন সিনেমা করা উচিত।
আপনার প্রথম সিনেমাতেই দেশের শীর্ষ তারকা শাকিব খান। লক্ষ্যই কি এটা ছিল যে প্রথম সিনেমাটা তাকে নিয়ে করবেন?
না, বিষয়টা এ রকম না। সব নির্মাতাই স্বপ্ন দেখে সিনেমা বানানোর।
গল্পের প্রয়োজনে শাকিব খান এসেছেন, নাকি শাকিব খানের জন্য গল্প?
একেবারেই গল্পের প্রয়োজনে। এটা কয়েক বছর আগের ঘটনা, ২০২০ কিংবা ২০২১ সালের দিকে। একদিন গ্লোরিয়া জিনসে বসে কফি খাচ্ছিলাম। কফি খেতে খেতে হুট করে গল্পটা মাথায় এলো। প্লট পেয়ে গেলাম আর তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই গল্পে সিনেমা বানাব। এরপর যখন গল্পে প্রোটাগনিস্ট চরিত্রটাকে খুঁজে পেলাম, তখন ওই চরিত্রটার জন্য আমার চোখের সামনে শুধু শাকিব খানই ভেসে উঠেছে। এটা ওনাকে ছাড়া আর কাউকে দিয়ে হবে না। যেহেতু প্রোটাগনিস্ট চরিত্রকে ভেবেই একটা গল্প লেখার কাজটা এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়, তখন আমি ওনাকে মাথায় রেখেই গল্পটা প্রস্তুত করি। এরপর শাকিব ভাইয়ের সঙ্গে গল্পটা শেয়ার করলে উনি খুব পছন্দ করেন এবং কাজটা করতে রাজি হন।
গেল বছরে শাকিব খানের সংখ্যা রেকর্ডসংখক ব্যবসা করেছে। তার টার্গেট তো একশত কোটি, আপনার টার্গেট কী?
এখন সিনেমাটাই করতে চাই। বরবাদ বানিয়েছি, এটা সবাই দেখুক, সবার কাছে ভালো লাগুক, আপাতত এটাই আমার চাওয়া। পাশাপাশি চাইব ব্যবসাটাও যেন ভালো হয়। আগের রেকর্ড ভাঙবে কি না আমি জানি না, তবে এটা চাই ছবিটা সবাই দেখুক। দেখেন প্রিয়তমা, তুফানের পর বরবাদ যদি ভালো যায় তাহলে কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির জন্য ভালো। প্রযোজক বাড়বে, তারা লগ্নি করতে সাহস পাবে। যেটা এখন ইন্ডাস্ট্রির জন্য খুব দরকার।
যারা শাকিবভক্ত না, তারা ‘বরবাদ’ কেন দেখবে?
দেখুন, তুফান কিন্তু সব শ্রেণির দর্শকই দেখেছে। গল্প, নির্মাণ ভালো হলে সেটা সব দর্শকই দেখে। বরবাদ একেবারে বিনোদনধর্মী সিনেমা, যেখানে রোমান্স, অ্যাকশন, ড্রামা, ইমোশন, নাচ-গান সব কিছুই আছে। ছবিটা সব দর্শককে বিনোদন দেবে। সবার কাছেই ভালো লাগবে।
এখনো সিনেমাটি সার্টিফিকেশন বোর্ডে জমা পড়েনি কেন?
সিনেমার কাজ সম্পন্ন। প্রিভিউ করার পর মনে হলো, কিছু জায়গায় কারেকশন করলে হয়তো আরো বেশি ভালো লাগবে। আপাতত সেই কাজটাই করছি, এ জন্য একটু দেরি হচ্ছে। সপ্তাহান্তেই জমা দিয়ে দেব।
‘বরবাদ’-এর পর কী আসবে?
কী আসবে সেটা এখনো জানি না। দুই-তিনটা সিনেমার প্রস্তাব এসেছে। আপাতত বরবাদ মুক্তি পাক, এক মাস পর নতুন সিনেমা নিয়ে বসব। যেহেতু আমি নির্মাতা, সব প্ল্যাটফরমেই কাজ করব। সেটা নাটক হতে পারে, ওটিটিও হতে পারে। আমার যেহেতু গল্পের ক্ষুধা আছে, সেটা তো আমি মেটাতে চাইবই, সেটা যে মাধ্যমেই হোক।
নাটক থেকে যারা অভিনয়ে কিংবা পরিচালনায় আসে, তাদের একটা কটূক্তি সব সময়ই শুনতে হয় যে অভিনয় পারে না, নির্মাণ জানে না, নাটক থেকে আসছে এ রকম। আপনিও তো নাটক থেকেই এসেছেন। এসব কটূক্তিগুলো নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?
এ ক্ষেত্রে আমি বলব, যে পারে সে সব জায়গাতেই পারে। তার জন্য হয়তো শুধু মাধ্যমটাই চেঞ্জ হয়, আর কিছু না। আমি নাটক নির্মাণ করে এখন সিনেমা বানিয়েছি। এখন পর্যন্ত টিজার বা গান যা-ই প্রকাশ্যে এসেছে, সেগুলো দেখে কিন্তু কেউ বলেনি যে এটা নাটক হয়েছে। আমি কিন্তু সিনেমার ধুন রেখেছি। যা বলেছি, দর্শকরা হলে গিয়েও তা-ই দেখতে পাবে। যদি কথার সঙ্গে কাজে মিল না পায় তখন আমাকে জানাবেন।
এটা শুধু আমার জন্য না, সবার কথা মাথায় রেখেই বলব। যারা এ ধরনের মন্তব্য করেন, তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারা মন্তব্য করার আগে কাজটা দেখুন, তারপর মন্তব্য করুন।
ঈদে তো আরো বেশ কয়েকটা সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। নিজের সিনেমা ছাড়া আর কোন ছবিটা দেখতে হলে যাবেন?
এখন পর্যন্ত জংলি আর চক্কর সিনেমার টিজার আমার কাছে ভালো লেগেছে। দুটিই অসাধারণ হয়েছে। ইচ্ছা আছে সবগুলো সিনেমা হলে গিয়ে দেখব।