ইউরিক এসিড আমাদের শরীরের এমন একটি বর্জ্য পদার্থ, যা পিউরিন নামক জৈব যৌগ থেকে তৈরি হয়। সাধারণত এই এসিড কিডনির মাধ্যমে প্রস্রাবের সঙ্গে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু যখন শরীরে ইউরিক এসিডের উৎপাদন বেশি হয় অথবা কিডনি এটি পর্যাপ্ত পরিমাণে বের করতে পারে না, তখন রক্তে এর মাত্রা বেড়ে যায়। এই অবস্থাকে ‘হাইপারইউরিসেমিয়া’ বলা হয়।
ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। বাত থেকে কিডনির পাথর, বিভিন্ন রোগের আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই ইউরিক এসিড নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি। চলুন, দেখে নিন কোন কোন খাবার খেলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে ইউরিক এসিড।
ফল ও সবজি
আপেল, কমলা, নাশপাতি, স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি ইত্যাদি ফল ইউরিক এসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এগুলোতে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা ইউরিক এসিডের উৎপাদন কমাতে সহায়ক।
আরো পড়ুন
ওজন বাড়াতে গিয়ে যে ভুল করবেন না
ব্রোকলি, পালং শাক, গাজর, শসা, টমেটো, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি সবজি ইউরিক এসিড কমাতে উপকারী। ফাইবার ও ভিটামিন সমৃদ্ধ এসব খাবার শরীর থেকে ইউরিক এসিড বের করে দিতে সাহায্য করে।
দানাশস্য ও শস্যজাত খাবার
ওটস, বার্লি, ব্রাউন রাইস ও অন্যান্য দানাশস্যজাত খাবার ইউরিক এসিড কমাতে সহায়ক। এতে প্রচুর ফাইবার থাকে, যা ইউরিক এসিড শোষণ করে শরীর থেকে বের করে দেয়।
বাদাম ও বীজ
কাঠবাদাম, আখরোট, চীনাবাদাম ও ফ্ল্যাক্সসিডের মতো বাদাম ও বীজ ইউরিক এসিড কমাতে সাহায্য করে। এতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও ফাইবার থাকে, যা ইউরিক এসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
আরো পড়ুন
যেভাবে সুজি খেলে কমবে ওজন
পানি
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা ইউরিক এসিডের মাত্রা কমাতে খুবই জরুরি।
এটি কিডনিকে ইউরিক এসিড বের করতে সাহায্য করে এবং শরীরকে ডিহাইড্রেশন থেকে রক্ষা করে। খেতে পারেন গ্রিন টিও।
কম ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার
কম ফ্যাটযুক্ত দুধ, দই ও পনির ইউরিক এসিড কমাতে সহায়ক। শরীরে ইউরিক এসিডের উৎপাদন কমাতে পারে এই ধরনের খাবার।
কিছু সতর্কতা
- ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা থাকলে অতিরিক্ত চিনি যুক্ত খাবার ও পানীয় ত্যাগ করা উচিত।
- রেড মিট ও অ্যালকোহল পরিহার করা উচিত। এই ধরনের খাবার ইউরিক এসিডের মাত্রা বাড়াতে পারে।
- কিছু খাবার, যেমন- পালং শাক, মাশরুম ও শুকনো বিন বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়। কারণ এগুলোতে পিউরিন বেশি থাকে।
আরো পড়ুন
যে সবজি নিয়মিত খেলে কমবে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি
ইউরিক এসিডের সমস্যা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং তাদের দেওয়া ডায়েট চার্ট অনুসরণ করা উচিত।
সূত্র : আজকাল