<p>কক্সবাজার সিএসও এনজিও ফোরাম (সিসিএনএফ) আয়োজিত ওয়েবিনারে বক্তারা বলেছেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের চূড়ান্ত সমাধান হলো মর্যাদাপূর্ণ ও স্থায়িত্বশীল প্রত্যাবাসন এবং তা নিশ্চিত করতে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর তৎপরতা জোরদার করতে হবে। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যাবাসনের আগ পর্যন্ত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবিক মর্যাদা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সামাজিক সংহতি নিশ্চিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবেশ পুনরুদ্ধার করতে হবে।</p> <p>রবিবার বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে ‘ওয়ার্ল্ড রিফিউজি ডে: টুগেদার উই হিল, লার্ন অ্যান্ড শাইন’ শীর্ষক এই ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন সিসিএনএফের দুই কো-চেয়ার কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী ও পালসের নির্বাহী পরিচালক আবু মোর্শেদ চৌধুরী। বক্তৃতা করেন আইওএমের প্রতিনিধি মানুয়েল মনিজ পেরেইরা, এনজিও প্ল্যাটফর্মের সমন্বয়কারী পিয়াস মুলোনজ্যা, বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআর-এর উপ-প্রতিনিধি সু চিন রে, ইপসার প্রধান নির্বাহী আরিফুর রহমান, মুক্তি কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী বিমল চন্দ্র দে সরকার, হেল্প কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম, কোস্ট ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, নারীপক্ষের শিরীন হক, দুর্যোগ ফোরামের গওহর নঈম ওয়াহরা প্রমূখ।</p> <p>আলোচনায় রেজাউল করিম চৌধুরী, রোহিঙ্গা প্রতিক্রিয়ার জন্য যেহেতু তহবিল হ্রাস পাচ্ছে, তাই আমাদের ন্যূনতম খরচেই সর্বাধিক পরিষেবা নিশ্চিত করার কৌশল নিয়ে ভাবতে হবে। সহায়তার স্বচ্ছতা এবং সহায়তার স্থানীয়করণের পাশাপাশি আমাদের তৃতীয় দেশ প্রত্যাবাসন নিয়েই উদ্যোগ নিতে হবে। প্রতিবেশি দেশগুলির সমর্থন নিশ্চিত করতে কূটনৈতিক যোগাযোগ প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।</p> <p>আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর টেকসই প্রর্ত্যাবাসন নিশ্চিত করার মূল দায়িত্ব মিয়ানমারের। শুধু মানবিক সহায়তাতেই সীমাবদ্ধ না থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মায়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করা উচিত। জাতিসংঘের উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারী কূটনীতি, বিকল্প কূটনীতি তথা ’ট্র্যাক টু’ কূটনীতি এবং সুশীল সমাজেরও কূটনৈতিক উদ্যোগ প্রয়োজন।</p> <p>ম্যানুয়েল মনিজ পেরেইরা বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার উপর সম্পূর্ণ নির্ভরতা টেকসই সমাধান নয়। রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে চাহিদা ভিত্তিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। বনায়নের উপর যথাসম্ভব জোর দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।</p> <p>পিয়াস মুলোনজ্যা বলেন, কার্যকরভাবে রোহিঙ্গা প্রতিক্রিয়া পরিচালনার জন্য স্থানীয়-জাতীয় এনজিও এবং আইএনজিওগুলির একে অপরের সাথে সুসম্পর্ক এবং আস্থা থাকতে হবে।</p> <p>সু জিন রে বলেন, গত দশ বছরে শরণার্থীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। বাংলাদেশ এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গার জন্য দরজা উন্মুক্ত করেছে, যা সত্যই প্রশংসিত। স্থানীয় জনগণের ত্যাগ প্রশংসনীয়, এখন আমাদের প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গা জনগণের মর্যাদা নিশ্চিত করা দরকার।</p> <p>আরিফুর রহমান বলেন, পাচার একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ। প্রভাবশালীসহ অনেক মানুষ রোহিঙ্গা মানুষকে পাচারের শিকার হতে নানা প্রলোভন দেখাচ্ছে। এ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো দরকার।</p>