একনজরে ট্রাম্প-জেলেনস্কির তীব্র বাগবিতণ্ডা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
একনজরে ট্রাম্প-জেলেনস্কির তীব্র বাগবিতণ্ডা
ছবি : এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির শুক্রবারের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তীব্র বাগবিতণ্ডা হয়েছে। বৈঠক চলতে চলতে হঠাৎই তীব্র বাগ্‌যুদ্ধে জড়ান ট্রাম্প ও জেলেনস্কি। সংবাদমাধ্যমের সামনে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের এই বাগ্‌যুদ্ধ বিশ্ব রাজনীতিতে নজিরবিহীন।

দুই দেশের দুই প্রধানের সেই উত্তপ্ত বাক্যালাপ একনজরে—

ট্রাম্প: আপনার কৃতজ্ঞ থাকা উচিত! আমরা আপনাদের অনেক কিছুই দিয়েছি।

জেলেনেস্কি: কৃতজ্ঞ? আমাদের মানুষ মারা যাচ্ছেন। শহর জ্বলছে। আর আপনি আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে বলছেন? আর আপনি আমাদের আপসের কথা বলছেন?

ট্রাম্প: এই মুহূর্তে আপনার কোনো কিছুই করার নেই।

জেলেনেস্কি: কারণ, আপনি আটকে রেখেছেন।

সাহায্যে দেরি করছেন। আপনি পুতিনের মিথ্যারই পুনরাবৃত্তি করছেন। রাশিয়াকে সুযোগ করে দিচ্ছেন।

জেডি ভ্যান্স (আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট): ইউক্রেনকে বাস্তববাদী হতে হবে।

জেলেনেস্কি: বাস্তববাদী? রাশিয়া আমাদের জায়গা চুরি করছে, সাধারণ নাগরিকদের হত্যা করছে, শিশুদেরকে অপহরণ পর্যন্ত করছে। এত সবের পরে কী করে বলেন বাস্তববাদী হতে?

ট্রাম্প: এভাবে চললে তো ব্যবসা চালানো কঠিন হয়ে পড়বে।

জেলেনেস্কি: এটা কোনো আবাসন প্রকল্পের চুক্তি নয়। আপনারা ওই পথে চললেও আমরা এভাবে করতে অপারগ।

ট্রাম্প: আমি আপনার জায়গায় থাকলে, এই পরিস্থিতিরই সৃষ্টি হত না।

জেলেনেস্কি: তার কারণ আপনি ইউক্রেনকে ওদের হাতে তুলে দিতেন।

(এমনই কথোপকথন হওয়ার পরে চুক্তি বাতিল করে হোয়াইট হাউস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন জ়েলেনেস্কি।)

উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে বৈঠকের মাঝে ‘অনড়’ জেলেনেস্কিকে নিশানা করে ট্রাম্প বলেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। শান্তি চুক্তির জন্য রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনকে চুক্তি করতেই হবে। তার জন্য কিছু ‘আপস’ও করতে হবে, তবে তা খুব বেশি নয়। 

তার পরেই যোগ করেন, ‘চুক্তিবদ্ধ না হলে আপনার সঙ্গে থাকবে না আমেরিকা। আপনাকে একাই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নাম করে পাল্টা জ়েলেনেস্কি বলেন, ‘খুনির সঙ্গে কোনো সমঝোতা নয়।’ সেই সঙ্গে তিনি যুদ্ধের নৃশংসতার কিছু ছবিও দেখাতে শুরু করেন।

উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের মাঝে ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, ‘আপনি আমেরিকার প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছেন না।’ তার উত্তরে জেলেনেস্কি বলেন, ‘‘অনেক বার বলেছি আমেরিকার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’ তবে শেষ পর্যন্ত বৈঠক থেকে কোনো রফাসূত্র বের হয়নি। বাতিল হয়ে যায় যৌথ সাংবাদিক বৈঠকও। এর পরেই হোয়াইট হাউস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন জেলেনেস্কি।

এই প্রসঙ্গে এক্স হ্যান্ডলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ‘ওভাল অফিসকে অপমান করেছেন জেলেনেস্কি। তবে শান্তির জন্য সত্যিই কখনও প্রস্তুত থাকলে তিনি আবার হোয়াইট হাউসে আসতে পারেন।’ 

আরো পড়ুন
ইসরায়েলের কাছে ৩ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ও বুলডোজার বিক্রি করবে যুক্তরাষ্ট্র

ইসরায়েলের কাছে ৩ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ও বুলডোজার বিক্রি করবে যুক্তরাষ্ট্র

 

এক্স হ্যান্ডলে জেলেনেস্কি প্রতিক্রিয়া জানান, ‘ধন্যবাদ আমেরিকা। ইউক্রেন ন্যায্য অধিকার ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তির পক্ষে। তার জন্য যা করণীয়, তা-ই করছে।’

সূত্র : বিবিসি।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

গাজায় নিহত সহায়তাকর্মীদের শেষ মুহূর্তের ভিডিও প্রকাশ

    ইসরায়েলের দাবি খণ্ডন
এএফপি, বিবিসি
এএফপি, বিবিসি
শেয়ার
গাজায় নিহত সহায়তাকর্মীদের শেষ মুহূর্তের ভিডিও প্রকাশ
ছবি : ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি প্রকাশিত ভিডিও থেকে নেওয়া

গাজায় নিহত এক সহায়তাকর্মীর মোবাইল থেকে উদ্ধার করা একটি ভিডিওতে তাদের শেষ মুহূর্তের চিত্র দেখা গেছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস)। ভিডিওতে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত অ্যাম্বুল্যান্স ও জ্বলজ্বল করা জরুরি আলোর মধ্যে তীব্র গুলির শব্দ শোনা যায়। 

জাতিসংঘ ও পিআরসিএস জানিয়েছে, ২৩ মার্চ ইসরায়েলি বাহিনীর এক হামলায় ১৫ জন মানবিক সহায়তা কর্মী নিহত হন। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা কোনো অ্যাম্বুল্যান্সে ‘এলোপাতাড়ি হামলা’ চালায়নি; বরং ‘সন্দেহজনক যানবাহনে’ আসা ‘সন্ত্রাসীদের’ লক্ষ্য করেই গুলি চালানো হয়।

ওই ঘটনায় এখনো এক প্যারামেডিক নিখোঁজ রয়েছেন। 

সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাদাভ শোশানি জানান, যে গাড়িগুলোর ওপর গুলি চালানো হয়েছে, সেগুলোর জন্য আগে থেকে অনুমোদন ছিল না এবং সেগুলোর আলোও বন্ধ ছিল। অন্যদিকে পিআরসিএস শনিবার যে ভিডিও প্রকাশ করেছে, তা সেনাবাহিনীর এসব দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ভিডিওতে দেখা যায়, হেডলাইট ও জরুরি বাতি চালু অবস্থায় অ্যাম্বুল্যান্সগুলো চলছিল।

 

সম্ভবত একটি চলমান গাড়ি থেকে ধারণ করা ওই ভিডিওতে আরো দেখা যায়, একটি লাল ফায়ার ট্রাক ও একাধিক অ্যাম্বুল্যান্স রাতে চলাচল করছে। এগুলো রাস্তায় থেমে একটি অন্য গাড়ির পাশে দাঁড়ালে দুজন ইউনিফর্মধারী ব্যক্তি গাড়ি থেকে নামেন। এর পরই তীব্র গুলির শব্দ শোনা যায়।  

ভিডিওতে দুইজন চিকিৎসাকর্মীর কণ্ঠও শোনা যায়।

একজন বলেন, ‘গাড়িটা, গাড়িটা’, অন্যজন উত্তর দেন, ‘মনে হয় একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে।’ এর কয়েক সেকেন্ড পরই তীব্র গুলির শব্দ শুরু হয় এবং স্ক্রিন কালো হয়ে যায়।

পিআরসিএস জানায়, নিহত সহায়তাকর্মী রিফাত রাদওয়ানের মোবাইল ফোন থেকে এই ভিডিওটি উদ্ধার করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, ‘এই ভিডিও নির্ভেজালভাবে প্রমাণ করে, অ্যাম্বুল্যান্সে ইসরায়েলি বাহিনীর এলোপাতাড়ি হামলা না চালানোর দাবি মিথ্যা। কিছু গাড়ি আলো বা জরুরি চিহ্ন ছাড়া এগিয়ে এসেছিল—সেই কথাও অসত্য।

এই ফুটেজ সত্যকে উন্মোচিত করে এবং মিথ্যা বর্ণনাকে ভেঙে দেয়।’

নিহতদের মধ্যে ছিলেন পিআরসিএসের আট কর্মী, গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থার ছয় সদস্য ও জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর এক কর্মী। তাদের মরদেহ রাফার কাছে একটি গণকবরে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ)। অন্যদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, মরদেহগুলো ‘বালু ও কাপড়ে ঢাকা ছিল, যাতে সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত না হয়’ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের পর সেগুলো উদ্ধার করা যায়। এই হামলার তদন্ত চলছে বলে সেনাবাহিনী জানিয়েছে।

ভয় ও প্রার্থনায় শেষ মুহূর্ত
ওসিএইচএ জানিয়েছে, ওই দিন ভোরে প্রথম দলটিকে ইসরায়েলি বাহিনী লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এরপর ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে সহকর্মীদের খোঁজে এগিয়ে যাওয়া আরো কয়েকটি উদ্ধার ও সহায়তা দলের ওপর ধারাবাহিক হামলা চালানো হয়।  

পিআরসিএস বলেছে, রাফায় গোলাবর্ষণের মধ্যে আটকে পড়া বেসামরিক লোকদের ডাকে সাড়া দিয়েই এই বহরটি পাঠানো হয়েছিল।  

ভিডিওতে যে চিকিৎসাকর্মী দৃশ্য ধারণ করছিলেন, তাকে বারবার কালেমা শাহাদাত পাঠ করতে শোনা যায়—‘আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, মুহাম্মদ (স.) আল্লাহর রাসূল’—কম্পিত কণ্ঠে তিনি এটি বারবার উচ্চারণ করেন, গুলির শব্দের মধ্যে। তাকে আরো বলতে শোনা যায়, ‘মা, ক্ষমা করো, কারণ আমি এই পথ বেছে নিয়েছি—মানুষের সেবা করার পথ।’ এরপর তিনি বলেন, ‘আমার শাহাদাত (মৃত্যু) কবুল করো হে আল্লাহ, আমাকে ক্ষমা করো।’

ভিডিও শেষ হওয়ার আগে ইসরায়েলি সেনাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘ইহুদিরা আসছে, ইহুদিরা আসছে।’

এই হামলায় সহায়তাকর্মীদের মৃত্যুর ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে। ফিলিস্তিন অঞ্চলে ওসিএইচএর প্রধান জোনাথন হুইটল বলেন, নিহতদের মরদেহ ‘ইউনিফর্ম ও হাতে গ্লাভস পরা’ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক এ হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, এতে ইসরায়েলি বাহিনীর ‘যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের সম্ভাবনা’ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘আমি ১৫ জন চিকিৎসা ও সহায়তাকর্মীর হত্যাকাণ্ডে স্তম্ভিত। এতে ইসরায়েলি সেনাদের যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের বিষয়টি আরো পরিষ্কার হয়ে উঠছে।’ এ ছাড়া তুর্ক একটি ‘স্বাধীন, দ্রুত ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের’ আহ্বান জানান।

‘আমাদের সব কর্মীই সাধারণ নাগরিক’
এদিকে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্যারামেডিক মুনথের আবেদ বলেন, ‘দিনে হোক বা রাতে—সব সময়ই একইভাবে গাড়ির বাইরের ও ভেতরের আলো জ্বলে। গাড়ির গায়ে স্পষ্ট করে লেখা থাকে যে এটি ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্টের অ্যাম্বুল্যান্স। গাড়ির সব আলো জ্বলছিল, যতক্ষণ না তা সরাসরি গুলির শিকার হয়।’

তিনি ও তার দলের সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আবেদ বলেন, ‘আমাদের সব কর্মীই সাধারণ নাগরিক। আমরা কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য নই। আমাদের একমাত্র কাজ অ্যাম্বুল্যান্স সেবা দেওয়া ও মানুষের জীবন রক্ষা করা—এর বাইরে কিছু নয়।’

এ ছাড়া জাতিসংঘে গতকাল দেওয়া এক ভাষণে পিআরসিএস প্রেসিডেন্ট ড. ইউনিস আল-খাতিব সেই ভিডিওর প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “আমি নিহত হওয়া এক সহকর্মীর কণ্ঠস্বর শুনেছি। গুলি খাওয়ার ঠিক আগেই তার শেষ কথা ছিল…‘আমাকে মাফ করে দিও মা, আমি শুধু মানুষকে সাহায্য করতে চেয়েছিলাম। আমি জীবন বাঁচাতে চেয়েছিলাম।’ এটি হৃদয়বিদারক।” তিনি এ ঘটনাকে ‘নৃশংস অপরাধ’ আখ্যা দিয়ে ‘জবাবদিহি’ ও ‘একটি স্বাধীন ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত’ দাবি করেন।

মন্তব্য

জনগণের দুঃসময়ে বিলাসিতা, ইরানে এবার ডেপুটি প্রেসিডেন্ট বরখাস্ত

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
জনগণের দুঃসময়ে বিলাসিতা, ইরানে এবার ডেপুটি প্রেসিডেন্ট বরখাস্ত
সদ্য বরখাস্ত হওয়া ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহরাম দাবিরি। ছবি : প্রেসিডেন্টের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট

অর্থনৈতিক সংকটে ধুঁকতে থাকা ইরানে প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান তার ডেপুটিকে বরখাস্ত করেছেন, যিনি সম্প্রতি ব্যয়বহুল অ্যান্টার্কটিকা সফরে গিয়েছিলেন।

সদ্য বরখাস্ত হওয়া ডেপুটি প্রেসিডেন্ট শাহরাম দাবিরিকে নিয়ে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবিতে দেখা যায়, তিনি ও তার স্ত্রী বলে ধারণা করা এক নারী নেদারল্যান্ডসের পতাকাবাহী বিলাসবহুল জাহাজ প্ল্যানসিয়াসের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। ২০০৯ সাল থেকে জাহাজটি অ্যান্টার্কটিকায় বিলাসবহুল ভ্রমণ করিয়ে থাকে। এক এজেন্সির তথ্যানুসারে, আট দিনের এ ধরনের একটি ট্রিপের খরচ জনপ্রতি তিন হাজার ৮৮৫ ইউরো।

সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনায় শনিবার প্রকাশিত এক চিঠিতে দাবিরিকে বরখাস্তের কথা উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান লেখেন, ‘এমন একটি প্রেক্ষাপটে, যেখানে জনগণের ওপর অর্থনৈতিক চাপ চরমে...সেখানে সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যয়বহুল বিনোদনমূলক সফর, তা ব্যক্তিগত খরচেই হোক না কেন, কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য বা সমর্থনযোগ্য নয়।’

৬৪ বছর বয়সী দাবিরি পেশায় একজন চিকিৎসক এবং পেজেশকিয়ানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। গত আগস্টে তিনি ডেপুটি প্রেসিডেন্ট (সংসদবিষয়ক) হিসেবে নিযুক্ত হন।

ছবিটি ছড়িয়ে পড়ার পর প্রেসিডেন্টের অনুগত অনেকেই দাবিরিকে বরখাস্তের দাবি জানান।

পরে দাবিরির দপ্তরের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ইরনা জানায়, তিনি ওই সফরে গিয়েছিলেন সরকারি দায়িত্ব গ্রহণের আগেই। তবে বিতর্কটিকে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের জন্য বড় এক ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত বছর নির্বাচনের সময় তিনি দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করা ও জনগণের জীবনমান উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

এর আগে মার্চের শুরুতে মার্কিন ডলারের বিপরীতে রিয়ালের দরপতন ও মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে অর্থমন্ত্রী আবদুল নাসের হেম্মাতিকে পার্লামেন্ট বরখাস্ত করে।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ : মেক্সিকো ও আর্জেন্টিনার শেয়ারের পতন

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ : মেক্সিকো ও আর্জেন্টিনার শেয়ারের পতন
ছবিসূত্র : এএফপি

বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্ববাজারে আতঙ্কের মধ্যে মেক্সিকান শেয়ারবাজার শুক্রবার ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ কমেছে। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক তালিকা থেকে দেশটি বাদ পড়েছে।

ট্রাম্প আর্জেন্টিনাসহ বহু দেশের ওপর ব্যাপক আমদানি শুল্ক আরোপের দুই দিন পর, শুক্রবার লেনদেনে আর্জেন্টিনার শেয়ারবাজারেও ৭ শতাংশেরও বেশি পতন হয়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারেও ০.৫৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও মেক্সিকান শেয়ারবাজার পতন ঘটেছে।

আর্জেন্টিনার প্রধান মেরভাল সূচক ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ কমেছে এবং ব্রাজিলের বোভেস্পা সূচক ২ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমেছে।উভয় দেশই ল্যাটিন আমেরিকার বেশিরভাগ দেশের মতো ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের শিকার হয়েছিল। যার নিম্নতম স্তর ছিল ৫০ শতাংশ থেকে শুরু করে।

সূত্র : বাসস, এএফপি

মন্তব্য

ফিলিস্তিনপন্থী কর্মচারীদের তোপের মুখে মাইক্রোসফটের এআই সিইও

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ফিলিস্তিনপন্থী কর্মচারীদের তোপের মুখে মাইক্রোসফটের এআই সিইও

প্রযুক্তি কম্পানির ৫০তম বার্ষিকী উদযাপনের সময় ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে মাইক্রোসফটের এআই (কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা) সিইও মুস্তাফা সুলেমান ফিলিস্তিনি-পন্থী তাদেরই দুই কর্মচারীর প্রতিবাদের মুখে পড়েন। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার এই ঘটনা ঘটে। 

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি সরবরাহের জন্য প্রযুক্তি শিল্পের কাজের বিরুদ্ধে মাইক্রোসফটের ওই দুই কর্মচারী প্রতিবাদ জানান। অনুষ্ঠানে মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এবং সাবেক সিইও স্টিভ বলমারও উপস্থিত ছিলেন।

মাইক্রোসফটের এআই সিইও মুস্তাফা সুলেমান পণ্যের আপডেট এবং কম্পানির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহকারী পণ্য সম্পর্কে কথা বলছিলেন। এ সময় ওয়াশিংটনের রেডমন্ডে ওই অনুষ্ঠানে মুস্তাফা সুলেমানের বক্তব্যে বাধা দিয়ে মাইক্রোসফটের কর্মচারী ইবতিহাল আবুসাদ বলেন, ‘আপনি যুদ্ধের মুনাফাখোর। গণহত্যার জন্য এআই ব্যবহার বন্ধ করুন।’ 

d

এআই (কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা) সিইও মুস্তাফা সুলেমান

মঞ্চের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় মাইক্রোসফটের কর্মচারী ইবতিহাল আবৌসাদ চিৎকার করে বলেন, ‘মুস্তফা, তোমার লজ্জা হোক।

’  আবৌসাদ আরো বলেন, ‘তুমি দাবি করো যে, তুমি ভালোর জন্য এআই ব্যবহার করতে আগ্রহী কিন্তু মাইক্রোসফট ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কাছে এআই অস্ত্র বিক্রি করে। সেখানে পঞ্চাশ হাজার মানুষ মারা গেছে এবং মাইক্রোসফট আমাদের অঞ্চলে এই গণহত্যার ক্ষমতা দিয়েছে।’ 

মাইক্রোসফটের এআই সিইও মুস্তাফা সুলেমান বক্তৃতা থামিয়ে জবাবে বলেন, ‘আমি আপনার প্রতিবাদ শুনছি, ধন্যবাদ।’ 

তবুও আবৌসসাদ চিৎকার করে বলতে থাকেন, তার এবং সকল মাইক্রোসফটের সদস্যদের হাতে রক্ত লেগে আছে।

এরপর তিনি মঞ্চে একটি কেফিয়া স্কার্ফ ছুঁড়ে মারেন, যা ফিলিস্তিনি জনগণের সমর্থনের প্রতীক হয়ে উঠেছে। এ ঘটনার পর আবৌসসাদকে অনুষ্ঠার থেকে বের করে দেওয়া হয়। 

দ্বিতীয় আরো একজন প্রতিবাদকারী এবং মাইক্রোসফটের কর্মচারী ভানিয়া আগরওয়াল অনুষ্ঠানের আরেকটি অংশে প্রতিবাদ জানান। যেখানে বিল গেটস, বলমার এবং বর্তমান সিইও সত্য নাদেলা মঞ্চে ছিলেন।

এর আগে এই বছরের শুরুতে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের একটি তদন্তে  প্রকাশিত হয়েছিল যে, ইসরায়েলি সামরিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে তাদের মাইক্রোসফট এবং ওপেনএআই-এর এআই মডেলগুলো ব্যবহার করা হয়েছিল।

যা ব্যবহার করে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা এবং লেবাননে সাম্প্রতিক যুদ্ধের সময় বোমা হামলার লক্ষ্যবস্তু নির্বাচন করেছে। 

ওই তদন্তে ২০২৩ সালে একটি ভুল ইসরায়েলি বিমান হামলার বিবরণও ছিল। যে হামলায় লেবানিজ পরিবারের সদস্যদের বহনকারী একটি গাড়িতে আঘাত করা হয়েছিল। ওই হামলায় তিন তরুণী এবং তাদের দাদী নিহত হয়েছিল।

a

গত ফেব্রুয়ারিতেও চুক্তির প্রতিবাদ করার জন্য সিইও সত্য নাদেলার সঙ্গে এক বৈঠক থেকে পাঁচজন মাইক্রোসফট কর্মচারীকে বের করে দেওয়া হয়। ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠানটি একটি অভ্যন্তরীণ সভা হলেও, গতকাল শুক্রবারের অনুষ্ঠানটি জনসমক্ষে হয়েছিল।  

মাইক্রোসফট বলেছে, তারা সকলের অভিযোগ শোনার জন্য অনেক পন্থার কথা জানিয়েছে, যাতে ব্যবসায়িক ব্যাঘাত না ঘটে। 

গতকাল শুক্রবার কম্পানির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা অনুরোধ করছি এমন কর্মকাণ্ড না ঘটানোর জন্য, যাতে ব্যবসায়িক ব্যাঘাত ঘটে। যদি তা ঘটে, তাহলে আমরা তাদের (প্রতিবাদকারী) অন্য জায়গায় সরে যেতে বলি। আমাদের ব্যবসায়িক অনুশীলনগুলো সর্বোচ্চ মান বজায় রাখার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

মাইক্রোসফ্ট কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আরো কোনো পদক্ষেপ নিবে কি না, তা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে মাইক্রোসফট। তবে এপি আবৌসাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, প্রতিবাদের পর তিনি এবং অন্য একজন প্রতিবাদী কর্মচারী তাদের কর্মক্ষেত্রের অ্যাকাউন্টে প্রবেশের অধিকার হারিয়ে ফেলেছে। 

সূত্র : রয়টার্স, এপি

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ