১৭ বছর বয়সে ভোটার হলে যেসব আইনি সংকট তৈরি হতে পারে

বিবিসি বাংলা
বিবিসি বাংলা
শেয়ার
১৭ বছর বয়সে ভোটার হলে যেসব আইনি সংকট তৈরি হতে পারে
সংগৃহীত ছবি

আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২০শে জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা নিয়ে হালনাগাদ শুরুর কথা থাকলেও সেটি নিয়ে নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কেননা নির্বাচন কমিশন মনে করছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে হালনাগাদ কার্যক্রম শুরুর পর যদি আইনে পরিবর্তন হয়ে ভোটার হওয়ার বয়স কমানো হয়, তখন নতুন করে সংকট তৈরি হতে পারে।

নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, ‘আগামী ২০ তারিখের আগেই যদি আইনে পরির্বতন আসে তাহলে নির্ধারিত সময়ই বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু হবে। না হলে কয়েকদিন দেরিও হতে পারে।

বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী ভোটার হওয়ার বয়স ১৮ বছর হলেও তা কমিয়ে ১৭ বছর করা উচিত বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। এরপরই এটি নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানামুখী আলোচনা চলছে। এ নিয়ে রাজনীতিতেও এক ধরনের আলোচনা তৈরি হয়েছে। 

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের পরদিনই এক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এর মাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে কালক্ষেপণ হতে পারে।

তবে ১৭ বছর করার পক্ষে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজন নিয়ে সংকট

নির্বাচন বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করছেন, ভোটার হওয়ার বয়স কমিয়ে তালিকা হালনাগাদ করা হলে যথা সময়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে সংকট তৈরি হতে পারে। এছাড়াও ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তি, বিবাহ আইন সংশোধনসহ বিভিন্ন আইনে পরিবর্তন আনতে হতে পারে বলেও মনে করছেন তারা।

সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের চেয়ারম্যান ও নির্বাচন বিশ্লেষক মুনিরা খান বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘তখন দেশের অন্যান্য আইনের সাথে ভোটার আইন অসামঞ্জস্যপূর্ণ হবে, সেই সাথে নতুন করে হালনাগাদ করে আগামী বছরের মধ্যে নির্বাচন করা বেশ জটিল হবে।

তবে নির্বাচন কমিশন এখনো মনে করছে এটি খুব জটিল কাজ নয়, এর জন্য নির্বাচন আয়োজনে খুব একটা প্রভাব পড়বে না।

নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি

নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা আইন অনুযায়ী প্রতি বছর ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। পরে দাবি আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে আগামী ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।

এ এম এম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সে অনুযায়ী আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরুর সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের বর্তমান ভোটার তালিকা আইন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি ২০২৫ যে সব ভোটারদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে তাদেরকেই ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। 

কিন্তু ভোটার হওয়ার বয়স নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের পর কিছুটা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে আছে বর্তমান নির্বাচন কমিশন। কেননা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হালনাগাদ শুরুর পর ভোটার হওয়ার বয়স কমানো হলে সেক্ষেত্রে নতুন জটিলতায় পড়েতে হতে পারে নির্বাচন কমিশনকে। যে কারণে প্রধান উপদেষ্টার ওই বক্তব্যের পর ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তাও তৈরি হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘এখন যদি ১৭ বছর হয় তাহলে ১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে যাদের বয়স ১৭ বছর হয়েছে তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এটা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। শুধুমাত্র সংবিধান ও আইনে পরির্বতন আনতে হবে আগে।’

তাহলে কী নির্বাচন কমিশন এই নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এটা একটা আইনের বিষয়। সরকার কিংবা রাষ্ট্র যদি ঠিক করে দেয় অমুক বছরে ভোটার হবে সেটা ইসি করবে।’ 

প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যের পর ২০ জানুয়ারির মধ্যে আইন কিংবা সংবিধানে পরিবর্তন না হলে হালনাগাদ কার্যক্রমে আরো কিছুদিন পরে শুরু হতে পারে বলেও বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

এ নিয়ে রাজনীতিতে পক্ষে বিপক্ষে নানা মতামত উঠে আসার পাশাপাশি কিছু সংকটের বিষয়কেও গুরুত্ব দিচ্ছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন নিজেদের প্রস্তাবনায় ভোটার হওয়ার বয়স কমানোর কোন সুপারিশ এখনো পর্যন্ত করেনি।

তবে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার তরুণদের সুযোগ দেয়ার জন্য বয়স কমিয়ে ভোটার করার পক্ষে একটি ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘সাধারণ জনতাকে সাথে নিয়ে জেন-জি প্রজন্ম চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছে। স্বৈরাচারি সরকারের পতন ঘটিয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন আন্দোলনে তরুণদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তরুণরা তাদের গুরুত্ব প্রমাণ করতে পেরেছে, যে কারণে সেটির স্বীকৃতি হিসেবে ভোটার হওয়ার বয়স কমানোর বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।’

১৭ বছরে ভোটার হলে যেসব সংকট হতে পারে

তবে ভোটার করার বয়স কমানো হলে কিছু সংকটের কথাও বলছিলেন নির্বাচন বিশ্লেষক ও সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের চেয়ারম্যান মুনিরা খান।

বিবিসি বাংলাকে মুনিরা খান বলেন, ‘প্রথমত বাংলাদেশের বিভিন্ন আইনে আঠারো বছরের নিচে যারা তারা অপ্রাপ্ত বয়স্ক। যে কারণে নানা নাগরিক সেবা কিংবা অপরাধ সংক্রান্ত বিষয়েও তাদের শিশু কিশোর হিসেবে গণ্য করা হয়। ভোটার তালিকায় বয়স কমানো হলে সেটি নিয়ে সংকট তৈরি হবে।’

চলতি বছরের শেষ কিংবা পরের বছরের শুরুর দিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
 
মুনিরা খান বলেন, ‘সেক্ষেত্রে বয়স কমিয়ে নতুন হালনাগাদ করে নির্বাচন আয়োজন করতে গেলে সময়ক্ষেপণ হবে অনেক। আমি মনে করি চলতি বছর দ্রুততম সময়ের মধ্যেই নির্বাচন হওয়া উচিত।’ 

একই সাথে উন্নত বিশ্বের ভোটার হওয়ার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই ভোটার হওয়ার বয়স ১৮।’ বাংলাদেশে এই বয়স এক বছর কমানোর পেছনে যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আলোচিত-১০ (২১ মার্চ)

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার

দলগুলো অন্তঃসংঘাত বন্ধ করলে সঠিক সময়ে সংসদ নির্বাচন : উপদেষ্টা মাহফুজ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
দলগুলো অন্তঃসংঘাত বন্ধ করলে সঠিক সময়ে সংসদ নির্বাচন : উপদেষ্টা মাহফুজ
সংগৃহীত ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো অন্তঃসংঘাত বন্ধ করলে সঠিক সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

শুক্রবার (২১ মার্চ) জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে রাজধানীতে নোফেল সোসাইটি আয়োজিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন।

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, নির্বাচনের আগে হত্যাকারীদের বিচার ও সংস্কার দৃশ্যমান হবে। ’৭২ ও ’৭৫-এ দিল্লি থেকে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানো হয় এবং সেখান থেকে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিকে অন্তঃকোন্দলে ব্যস্ত না থেকে সবাইকে এক থাকার আহ্বানও জানান তথ্য উপদেষ্টা।

মন্তব্য

বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ইউনূস-মোদি বৈঠকের সম্ভাবনা ‘ক্ষীণ’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ইউনূস-মোদি বৈঠকের সম্ভাবনা ‘ক্ষীণ’
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী মাসে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। সেখানে দুই দেশের প্রধানের দেখা হওয়ার সুযোগ থাকলেও আনুষ্ঠানিক বৈঠকের সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। গতকাল বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বরাতে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।

ষষ্ঠ বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে দুই নেতার ২ এপ্রিল থেকে ৪ এপ্রিল ব্যাংকক সফর করার কথা রয়েছে।

সম্মেলনের ফাঁকে দুই দেশের সরকারপ্রধানের বৈঠকের জন্য দিল্লিকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করেছে ঢাকা। গতকাল ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে এ তথ্য জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত তিনজন ব্যক্তি হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে বৈঠকের জন্য অনুকূল নয়।

তাদের একজন অবশ্য বলেন, ‘সাক্ষাৎ বা শুভেচ্ছা বিনিময়ের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

কারণ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সকল নেতা বেশ কয়েকবার একে অপরের সঙ্গে থাকবেন। তবে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা যায় না।’

আরেকজন বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক বৈঠক করা কঠিন বলে মনে হচ্ছে। বিশেষ করে যখন ঢাকায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কেউ কেউ প্রায়ই ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলছেন।

এই পরিস্থিতি বৈঠকের জন্য উপযুক্ত নয়।’

বৃহস্পতিবার এএনআইকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে আমরা ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ করেছি।’

এদিকে, আগামী ২৮ মার্চ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের।

এর আগে, ফেব্রুয়ারিতে ওমানের রাজধানী মাস্কাটে ৮ম ভারত মহাসাগর সম্মেলনের সাইডলাইনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে উপদেষ্টা তৌহিদের বৈঠক হয়।

মন্তব্য

ঈদযাত্রায় সড়কপথে শৃঙ্খলায় কঠোর অবস্থানে সরকার

বাসস
বাসস
শেয়ার
ঈদযাত্রায় সড়কপথে শৃঙ্খলায় কঠোর অবস্থানে সরকার
ফাইল ছবি

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সড়ক পথে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ, নির্বিঘ্ন করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার ও বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। ঈদ যাত্রা উপলক্ষে নতুন সেতু ও সড়ক খুলে দিয়েছে সরকার। যানজট নিরসন, যাত্রী নিরাপত্তা, টিকিটের অতিরিক্ত দাম ও টিকিট কালোবাজারি বন্ধসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।

এবারের ঈদ যাত্রায় অন্যান্য বারের মতো যেন বিড়ম্বনা তৈরি না হয়, সে জন্য সারাদেশে একযোগে কাজ করবে বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশ।

৩ হাজার ৯৯১ কিলোমিটার মহাসড়কে ১০১৮টি চেকপোস্ট ও টহলে থাকবে হাইওয়ে পুলিশ ও বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা। ঈদ যাত্রাকে বছরের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান হিসেবে দেখছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।

ঈদ উপলক্ষে আগামী ২৫ মার্চ হতে ‘ঈদ স্পেশাল সার্ভিস’ চালু করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি)। ২০ মার্চ হতে বিআরটিসি’র ডিপো থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে এবং আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদ সার্ভিসের বাস চলাচল করবে।

সঙ্গে বাস রিজার্ভের সুবিধাও রেখেছে বিআরটিসি।

সড়কপথে ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে সারাদেশে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের হাইওয়ে ও ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। সারাদেশে তাদের কাজকে আরো গতিশীল করতে সড়ক-মহাসড়কে কাজ করবে জেলা পুলিশ, যা অন্যান্যবারের চেয়ে ব্যতিক্রম। আর ঈদে যাত্রী পরিবহনের সুবিধার্থে ঢাকার মূল সড়কগুলোয় ট্রাক চলাচল বন্ধ রাখবে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।

সারাদেশের ৩ হাজার ৯৯১ কিলোমিটার মহাসড়কে নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে হাইওয়ে পুলিশ ৩৭৭টি চেকপোস্ট এবং জেলা পুলিশ ১১৪টি চেকপোস্ট ও ৫২৭টি টহল দল পরিচালনা করবে।

যানজট নিরসনে সারাদেশে ৬৪টি ‘ব্লাক স্পট’ চিহ্নিত করেছে হাইওয়ে পুলিশ। এসব এলাকায় পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য কাজ করবে। এছাড়া যেসব এলাকায় সংস্কার কাজ ও বাজারের জন্য যানজট লেগে যায়, সেসব এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়ে কাজ করা কথা জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। এর পাশাপাশি সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও যানচলাচল নির্বিঘ্ন করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, সারাদেশের চেকপোস্টগুলো লাইভ ভিডিও’র মাধ্যমে কেন্দ্র থেকে পর্যবেক্ষণ করা হবে। পুলিশের ৮টি রেঞ্জের ডিআইজিগণ এসব চেকপোস্ট তদারকি করবেন। ইতোমধ্যে এলেঙ্গা, চট্টগ্রাম হাইওয়ে, মহিপাল ও নোয়াখালীসহ সড়কে ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। 

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নাজমুল হাসান বাসস’কে বলেছেন, ঢাকা থেকে যেন বাস সহজে বের হতে পারে সেজন্য আমরা নানা উদ্যোগ নিয়েছি। ঢাকায় প্রবেশ ও বহির্গমনে যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি না হয় সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। যাত্রী পরিবহনের সুবিধার্থে ঈদের তিন দিন আগে থেকে সড়কে ট্রাক-লরি চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। প্রয়োজনে এক টনের পিকআপ ট্রাকগুলোর চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হবে। 

বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিচালক মো. দেলোয়ার মিঞা বাসস’কে বলেছেন, এবারের ঈদে আমরা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে যাবো। একইসাথে যানজট নিরসনে আমরা কাজ করছি। যাত্রীদের মধ্যে নিরাপত্তার কোনো শঙ্কা যেন না থাকে সেজন্য আমরা সারাদেশের মহাসড়কে টহল, চেকপোস্টসহ নিরাপত্তা জোরদার করছি। এবার সুন্দর ঈদ যাত্রা নিশ্চিত করার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ