<p>গলাচিপায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে নিহত রাসেল মাহমুদের পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুর ১২টায় উপজেলার চরকাজল ইউনিয়নের ছোট চরশিবা রাসেলের পরিবারকে এ খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়।</p> <p>এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা সমন্বয়কারী সাইমুন রহমান, বসুন্ধরা শুভসংঘের উপজেলা শাখার সদস্য মো. মিজানুর রহমান, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের চরকাজল ইউনিয়নের সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম, চরশিবা আবদুস সালাম আকন আইডিয়াল স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক মো. জামাল হোসেন, বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্য বায়েজিদ হোসেন,  মো. রাহাত খান, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. ইমাম হোসেন, আবু সালেহ পণ্ডিত প্রমুখ।</p> <p>গলাচিপা সদর থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে চরকাজল সোমবাড়িয়া বাজার। বাজার থেকে একটি ফসলের ক্ষেতের মধ্যে চারদিকে পানি আর মাঝখান মাটির ভিটিতে টিনের চৌচালা একটি ঘর। এ ঘরেই বসবাস করতেন গত ৫ আগস্ট পুলিশের গুলিতে শহীদ হন মো. রাসেল মাহমুদ। ঢাকার কেরানীগঞ্জের সোনারগাঁও কলেজের ছাত্র। বাবা ঢাকাতে দিনমজুরের কাজ করতেন। সঙ্গে বড় ভাই মিরাজ এলাকায় কৃষিকাজ করেন। বাবা ও বড় ভাই এ দুজনের আয় দিয়েই সংসারের খরচ চলত। আর রাসেল প্রাইভেট পড়িয়েই নিজের পড়াশোনার খরচ চালাত। পড়াশোনা করে একটা চাকরি করে অভাবের সংসারের হাল ধরার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু নিয়তি রাসেলের সে আশা পূরণ করতে দেয়নি। আগস্টের স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ তারিখ ঢাকার যাত্রাবাড়ী পুলিশের গুলিতে রক্তাক্ত দেহটা  লুটিয়ে পড়ে পিচঢালা রাজপথে। পাশে থাকা সঙ্গীরা দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাসেলকে মৃত ঘোণা করেন। পরের দিন ৬ আগস্ট বাবা আবু সালেহ মর্গ থেকে রাসেলের লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি গলাচিপা চরকাজলের ছোট চর শিবা গ্রামের বাড়িতে স্থানীয় ঈদগাহসংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করেন।</p> <p>রাসেলের মা রাশিদা বেগম বলেন, ‘আমি সবাইকে দেখি কিন্তু আমার রাসেলেরে দেহি না। গত ঈদের পর চাউল ভাজা, মুরারা ( মুরগির) মাংস,  মুড়ি লইয়া গেছে। আমার পোলাডা ওই সময় নিজের ভাত বাইররা খাওয়াছি। যদি জানতাম ওই সময় আমার বাবার লগে শ্যাষ দেহা- হেলে বুকে জড়িয়ে রাখতাম।’ কথাগুলো বলতে বলতে নিস্তেজ হতে যান রাসেলের মা রাশিদা বেগম।</p> <p>রাসেলের বাবা আবুল হোসেন বলেন, ওই দিন (৫ আগস্ট) আমি ঢাকায় দিনমজুরের কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আমার গ্রামের বাড়িতে রাসেলের নানা জাহিদ হোসেনের কাছে ঢাকা থেকে ফোন করলে তিনি আমাকে জানান। তখন ঢাকা মেডিক্যালে অনেক খোঁজাখুঁজি করে মর্গে লাশ পাই।’<br />  <br /> নানা জাহিদ হোসেন বলেন, ‘রাসেল অত্যন্ত বিনয়ী ছিলো ওর খুব ইচ্ছা ছিল পড়াশোনা করে একটা চাকরি করার। বসুন্ধরা শুভসংঘ অসহায় এ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা আশা করব, এভাবেই অসহায়দের পাশে থাকবে বসুন্ধরা শুভসংঘ।’</p>