গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগের অনেক নেতা। তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রকাশ্যে এলেও বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের অবস্থান এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
শনিবার (১২) এপ্রিল একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ওবায়দুল কাদের বর্তমানে ভারতের কলকাতার অভিজাত রাজারহাট নিউটাউন এলাকায় অবস্থান করছেন।
এদিকে শুক্রবার (১১ মার্চ) গাজী নাসির উদ্দীন ফেসবুকে একটি পোস্টে দাবি করেন, তার এক বন্ধু কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে ওবায়দুল কাদেরকে দেখেছেন। এই পোস্টের পর থেকে কাদেরের অবস্থান নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
আরো পড়ুন
ঢাকার রাস্তায় দেখা মিলল ফিলিস্তিনের আহত শিশুদের
এর মধ্যেই ওবায়দুল কাদেরকে কলকাতার রাস্তায় দেখা গেছে দাবি করে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবিতে তাকে ‘নর্থ সিটি’ নামে একটি হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ওয়াবদুল কাদেরের আলোচিত ছবিটি বাস্তব নয় বরং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে এটি তৈরি করা হয়েছে।
‘নর্থ সিটি’ নামের একটি হাসপাতাল নিয়ে অনুসন্ধানে জানা গেছে, কলকাতার বাগমারী রোডে এমন একটি হাসপাতাল রয়েছে। গুগলে পাওয়া ওই হাসপাতালের একাধিক ছবির (১, ২) সঙ্গে আলোচিত ছবির তুলনা করলে, গঠনগত দিক থেকে বেশ কিছু পার্থক্য চোখে পড়ে।
প্রথমত, বাগমারী রোডে অবস্থিত ‘নর্থ সিটি’ হাসপাতালের সামনের অংশে পাঁচটি জানালা রয়েছে।
কিন্তু আলোচিত ছবিতে শুধু চারটি জানালা দেখা যায়।
দ্বিতীয়ত, বাগমারী রোডের ওই হাসপাতালের প্রবেশপথের ডান পাশে থাকা নীল রঙের সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ‘নর্থ সিটি ডায়গনস্টিক সেন্টার’। সাইনবোর্ডটির এক পাশে কয়েকজন মানুষের ছবিও দেখা যায়। কিন্তু আলোচিত ছবিতে শুধু ‘নর্থ সিটি ইমেজিং সেন্টার’ লেখা রয়েছে, সেখানে মানুষের কোনো ছবিও নেই।
তৃতীয়ত, ওই হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালের নামের পাশাপাশি ঠিকানা ও জরুরি ফোন নম্বর উল্লেখ আছে।
কিন্তু আলোচিত ছবির অ্যাম্বুল্যান্সে কেবল হাসপাতালের নাম লেখা রয়েছে।
এসব অসামঞ্জস্যতার পাশাপাশি ছবিটিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি হওয়ার আরো কিছু লক্ষণও চোখে পড়ে। যেমন, ছবিতে ওবায়দুল কাদেরকে কটির কলার টেনে মুখ ঢাকতে দেখা যায়। তবে সাধারণত কটির কাপড় মুখ ঢাকার মতো যথেষ্ট বড় বা নমনীয় হয় না। পেছনের ভবনের রং ও গঠন অস্বাভাবিকভাবে মসৃণ ও নিখুঁত। জানালাগুলোর মধ্যেও অতিরিক্ত প্রতিসাম্য লক্ষ করা যায়। এমনকি ছবিতে দেখা রাস্তাটিও অস্বাভাবিকভাবে মসৃণ, দেখতে অনেকটা কার্টুন চিত্রের মতো।
বিষয়টি আরো নিশ্চিত হতে ছবিটি এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফরম সাইট ইঞ্জিনে পরীক্ষা করে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশ।