<p>ওড়িশায় তাণ্ডব চালানোর পর ভারতের ছত্তিশগড় ও মধ্যপ্রদেশের দিকে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় দানা। তবে ছত্তিশগড় ও মধ্যপ্রদেশে প্রবেশের সময় এটি সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ১২ মিনিটে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে শুরু করে। সময় এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ধামারায় দানার শক্তি বাড়তে থাকে। </p> <p>ওড়িশার ভিতরকণিকা থেকে ধামারার মধ্যবর্তী স্থানে স্থলভাগ অতিক্রম করে ঘূর্ণিঝড়টি। এই সময় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ গতি রয়েছে ১২০ কিলোমিটার </p> <p>আবহাওয়া অফিসের অনুমান, শুক্রবার দুপুরের মধ্যে তীব্র ঘূর্ণিঝড় দানা পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে উত্তর ওড়িশা অতিক্রম করবে। তখন এটি দুর্বল হয়ে সিভিয়ার সাইক্লোন থেকে শুধু সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। সেই ঘূর্ণিঝড় তখন ছত্তিশগড় ও মধ্যপ্রদেশ অভিমুখে এগোবে।</p> <p>দানার তাণ্ডবে ওড়িশার ভদ্রকে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জলোচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। নিচু এলাকা পানিতে ভেসে গেছে। প্রবল ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টিও হচ্ছে। আর পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রবল ঝড় ও বৃষ্টি হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি খুব বেশি গুরুতর নয়।</p> <p><strong>পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা</strong></p> <p>পশ্চিমবঙ্গে ঝড়ের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে। ডয়চে ভেলের চিত্র সাংবাদিক সত্যজিৎ সাউ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দিঘায় বৃষ্টি শুরু হয়। সারা দিন ও সারা রাত ধরে বৃষ্টি হয়। সঙ্গে ছিল জোরে হাওয়া। যত রাত বেড়েছে ততই ঝড়-বৃষ্টির দাপট বেড়েছে। ভোরে ঝড়ের দাপট বেড়েছে এবং সমুদ্র উত্তাল হয়েছে।</p> <p>সত্যজিৎ জানিয়েছেন, দিঘার মেরিন ড্রাইভ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সমুদ্রে বিশাল ঢেউ উঠছে। সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি পড়ছে। দিঘার পাশেই মন্দারমণিতে নিচু এলাকায় সমুদ্রের নোনা জল ভেতরে ঢুকে গেছে। সেখানেও প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। পূর্ব মেদিনীপুরে প্রচুর গাছ পড়েছে। বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে।</p> <p>দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দানার প্রভাবে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। বকখালীতে সমুদ্রে বড় ঢেউ উঠছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর গাছ পড়ে যায়। তবে সেখানে পরিস্থিতি ভয়ংকর খারাপ হয়নি বলে প্রশাসন জানিয়েছে। ডায়মন্ডবারবারে ৬৭ মিলিমিটার, দিঘায় ৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে আলিপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টির দাপট বাড়বে। </p> <p><strong>কলকাতার অবস্থা</strong></p> <p>শুক্রবার সকাল থেকে কলকাতায় বৃষ্টি হচ্ছে। ডয়চে ভেলের প্রতিনিধি স্যমন্তক ঘোষ জানিয়েছেন, রাত থেকেই কলকাতায় বৃষ্টি শুরু হয়। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে। মাঝেমধ্যে দমকা হাওয়া আছে। তবে তাকে ঝড় বলা যায় না। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বিমান চলাচল বন্ধ আছে। গঙ্গার ফেরিঘাটও বন্ধ। শিয়ালদহের দক্ষিণেও ট্রেন চলাচল সকালেও শুরু হয়নি। ফলে প্রচুর যাত্রী, যারা দূরপাল্লার ট্রেনে শিয়ালদহে এসে পৌঁছেছেন, তারা আটকে পড়েছেন।</p> <p>স্যমন্তক জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারা রাত নবান্নে থেকে পরিস্থিতির ওপর নজর রেখেছেন। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম পুরসভায় সারা রাত ছিলেন। বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও তার দপ্তরে ছিলেন এবং প্রয়োজনাীয় নির্দেশ দিয়েছেন। কলকাতার মানিকতলা ও মোমিনপুরে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। আরো কয়েক ঘণ্টা ধরে বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।</p> <p>সূত্র : আনন্দবাজার, ডয়চে ভেলে </p>