<p>গত ২৭শে নভেম্বর যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছিল, সেটির মাধ্যমে দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাতের অবসান ঘটতে যাচ্ছে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু এক সপ্তাহ না যেতেই আবারও লেবাননে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।</p> <p>স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার সন্ধ্যার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের দুটি গ্রামে চালানো এই হামলায় অন্তত নয় জন নিহত হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তবে চুক্তি লঙ্ঘন করে হিজবুল্লাহই প্রথম ইসরায়েলি সেনা চৌকি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।</p> <p>প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই হামলার জবাব হিসেবেই সশস্ত্র গোষ্ঠীটির কিছু অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ। যুদ্ধবিরতির চুক্তি কার্যকর রাখতেই এটি করতে হয়েছে বলে দাবি করেছেন আইডিএফ কর্মকর্তারা। হিজবুল্লাহও ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযোগ অস্বীকার করেছে।</p> <p>হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, লেবাননে হামলা চালানোর মাধ্যমেই ইসরায়েলই প্রথম যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। হামলায় প্রাণহানি ও ক্ষয়-ক্ষতির জবাবে ‘প্রতিরক্ষামূলক সতর্কতা’ হিসেবে ইসরায়েলি একটি সেনা চৌকি লক্ষ্য করে মর্টার হামলা চালানো হয়েছিল।</p> <p>যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে বলা হয়েছিল, লেবাননে বেসামরিক, সামরিক বা অন্যান্য রাষ্ট্রীয় লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে ইসরায়েল আক্রমণাত্মক কোনো সামরিক অভিযান চালাবে না। হিজবুল্লাহও ইসরায়েলে কোনো হামলা চালাতে পারবে না। এমনকি লেবাননের অন্য কোনো সশস্ত্রগোষ্ঠীও যদি ইসরায়েলে হামলা চালাতে চায়, সেখানেও বাধা সৃষ্টি করবে হিজবুল্লাহ।</p> <p>চুক্তিতে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে নিজেদের সশস্ত্র উপস্থিতি তুলে নিতে হিজবুল্লাহকে ৬০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। একই সময়ের মধ্যে ইসরায়েলও লেবানন থেকে তাদের সেনা সদস্যদের প্রত্যাহার করবে বলে চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়েছিল।</p> <p>চুক্তি কার্যকরের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্স বিদ্যমান ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থায় যোগ দেবে বলে শুরু থেকেই জানা যাচ্ছিল। এ ব্যবস্থায় বর্তমানে লেবাননের সামরিক বাহিনী, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এবং লেবাননে জাতিসংঘের অন্তর্বর্তীকালীন বাহিনী (ইউনিফিল) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ ছাড়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের কোনো অভিযোগ উঠলে পক্ষগুলো সেটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পাঠাবে। </p> <p>গত সপ্তাহে যখন যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণা করা হয়েছিল। তখন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, হিজবুল্লাহ চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করলে সেটার জবাবে পাল্টা হামলা চালাতে দ্বিধা করবে না তার দেশ। এরপর সোমবার পাল্টা-পাল্টি হামলার যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে আবারও সংঘাতমত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।</p> <p>সূত্র : বিবিসি</p>