ঢাকা, মঙ্গলবার ২৫ মার্চ ২০২৫
১১ চৈত্র ১৪৩১, ২৪ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, মঙ্গলবার ২৫ মার্চ ২০২৫
১১ চৈত্র ১৪৩১, ২৪ রমজান ১৪৪৬

৫ এলাকা বাদে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
৫ এলাকা বাদে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার
বাসিন্দারা লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় আদাইসা গ্রামে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যেখানে লেবানন সেনাবাহিনী কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করেছে। ১৮ ফেব্রুয়ারি ইসরায়েলি সেনাদের সীমান্ত এলাকা থেকে প্রত্যাহারের পর এই দৃশ্য দেখা যায়। ছবি : এএফপি

দক্ষিণ লেবাননের পাঁচটি এলাকা বাদে সব জায়গা থেকে ইসরায়েল মঙ্গলবার সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ফলে বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা সীমান্ত এলাকার গ্রামগুলোতে ফিরতে শুরু করেছে। এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতে এলাকাগুলো ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়েছে।

ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে বিলম্বিত সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমা শেষ হওয়ার পর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে কফার কিলায় ফিরে আলা আল-জাইন জানান, পুরো গ্রাম ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

এটি একটি বিপর্যস্ত এলাকা। ধ্বংসাবশেষ ও সেনাবাহিনীর নিষেধাজ্ঞার কারণে গাড়িতে করে কফার কিলায় পৌঁছনো সম্ভব হয়নি, তাই বাসিন্দারা গ্রামের প্রবেশপথে গাড়ি রেখে হেঁটে ফিরে যান।

দুই মাস ব্যাপক যুদ্ধসহ প্রায় এক বছরের সংঘর্ষ ২৭ নভেম্বর যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে শেষ হয়। তারপর বাসিন্দারা ধ্বংসস্তূপে পরিণত বা ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, কৃষিজমি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ফিরে পায়।

ইসরায়েল সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমা শেষের ঠিক আগে ঘোষণা করেছিল, তারা সীমান্তের কাছে ‘পাঁচটি কৌশলগত পয়েন্টে’ সেনা মোতায়েন রাখবে এবং মঙ্গলবার দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এ মোতায়েন নিশ্চিত করেন ও হিজবুল্লাহর কোনো ‘লঙ্ঘনের’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

এদিকে মঙ্গলবার লেবানন জানায়, তাদের ভূখণ্ডে ইসরায়েলি উপস্থিতির অর্থ ‘দখলদারি’ এবং তারা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করবে, যাতে ইসরায়েল পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করে। দেশটির সশস্ত্র বাহিনী সীমান্তে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানানো হয়।

লেবাননের সেনাবাহিনী জানায়, তারা সোমবার সন্ধ্যা থেকে শুরু করে দক্ষিণ সীমান্তবর্তী ১১টি গ্রামসহ অন্যান্য এলাকায় মোতায়েন হয়েছে, যেখান থেকে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এক যৌথ বিবৃতিতে জাতিসংঘের দূত জেনিন হেনিস-প্লাসচার্ট ও ইউনিফিল শান্তি রক্ষা বাহিনী জানায়, ইসরায়েলের প্রত্যাহার ও লেবাননের সেনাবাহিনীর মোতায়েনের জন্য নির্ধারিত সময়সীমার শেষের পর যেকোনো ‘বিলম্ব আমাদের প্রত্যাশার বাইরে’ এবং এটি ২০০৬ সালের নিরাপত্তা পরিষদের এক প্রস্তাবের লঙ্ঘন, যা ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের থিংকট্যাংক ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অব ডেমোক্রেসিসের জ্যেষ্ঠ ফেলো ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সাবেক মুখপাত্র জোনাথন কনরিকাস বলেন, একবার লেবাননের সেনাবাহিনী দক্ষিণে ‘সম্পূর্ণ মোতায়েন’ হলে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ‘সম্ভবত সম্পূর্ণ প্রত্যাহার সম্পন্ন করবে...যতক্ষণ হিজবুল্লাহ চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকে’।

ভূখণ্ডের প্রতি ভালোবাসা
অন্যদিকে লেবাননে পুনর্গঠনের ব্যয় ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং জাতিসংঘের মতে এখনো এক লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত রয়েছে। ধ্বংসযজ্ঞ সত্ত্বেও গ্রামবাসী ফেরার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে জাইন জানান। দৃঢ়সংকল্প ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘পুরো গ্রাম ফিরছে, আমরা তাঁবু খাটিয়ে বা মাটিতে বসেই থাকব।

অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে স্বজনদের মৃতদেহ খুঁজতে দক্ষিণে গিয়েছেন। তাদের মধ্যে ছিলেন সামিরা জুমা, যিনি ভোরবেলা কফার কিলায় গিয়ে হিজবুল্লাহ যোদ্ধা তার ভাইয়ের মরদেহ খুঁজতে শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো তাদের কোনো খবর পাইনি। আমরা নিশ্চিত তারা শহীদ হয়েছেন। আমি এসেছি আমার ভাইকে দেখতে এবং সেই ভূমি স্পর্শ করতে, যেখানে সে ও তার সহযোদ্ধারা লড়াই করেছে।’

আরো দক্ষিণে লেবাননের সেনাবাহিনীর একটি চেকপয়েন্টে বহু গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল, যাতে তায়বেহ ও ওদাইসেহ গ্রামের দিকে যাওয়ার অনুমতি পাওয়া যায়। সেখানে কিছু নারী তাদের আত্মীয়দের ছবি ধরে রেখেছিলেন, যারা যুদ্ধের সময় হিজবুল্লাহর পক্ষে লড়াই করে নিহত হয়েছেন, অন্যরা ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীটির হলুদ পতাকা উত্তোলন করেন।

লেবাননের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে এবং বৈরুতে অবস্থিত হিজবুল্লাহর শক্ত ঘাঁটিগুলো এই সংঘাতে ব্যাপক ধ্বংসের শিকার হয়েছে। গোষ্ঠীটি গাজা যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় মিত্র হামাসকে সমর্থন দিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা চালায়।

হিজবুল্লাহ নিরস্ত্র হবে?
ওয়াশিংটন ও প্যারিসের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েলি সেনাদের ৬০ দিনের মধ্যে পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করা হবে, যার সময় বাড়িয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করা হয় এবং সেই সঙ্গে লেবাননের সেনাবাহিনী ও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা মোতায়েন হবে। এ ছাড়া হিজবুল্লাহকে লিতানি নদীর উত্তরে প্রায় ৩০ কিলোমিটার সরিয়ে নিতে হবে এবং সেখানে তাদের বাকি সামরিক স্থাপনাগুলো ভেঙে ফেলতে হবে।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া সীমান্ত সংঘাতে লেবাননে চার হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, সীমান্তের ওপারে সেনাসহ দেশটির ৭৮ জন এবং দক্ষিণ লেবাননে স্থল অভিযানের সময় আরো ৫৬ জন সেনা নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া যুদ্ধবিরতির পর থেকে প্রায় ৬০ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ২৪ জানুয়ারিতে দুই ডজনের বেশি নিহত হয়, যখন বাসিন্দারা সীমান্তবর্তী শহরগুলোতে ফেরার চেষ্টা করছিল।

লেবাননের সরকার সোমবার ঘোষণা করে, শুধু রাষ্ট্রের হাতে অস্ত্র থাকা উচিত, যা হিজবুল্লাহর অস্ত্রভাণ্ডারের ব্যাপারে ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দেয়। যুদ্ধের পর থেকে গোষ্ঠীটি দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং তাদের নিরস্ত্রীকরণের দাবি আরো জোরদার হয়েছে।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ইসরায়েলি হামলায় আলজাজিরার ১ গণমাধ্যমকর্মীসহ ২জন নিহত

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ইসরায়েলি হামলায় আলজাজিরার ১ গণমাধ্যমকর্মীসহ ২জন নিহত
নিহত হোসাম শাবাত। ছবি : এক্স থেকে সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় পৃথক ইসরায়েলি হামলায় দুই গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে একজন আলজাজিরার সাংবাদিক হোসাম শাবাত। তারা মৃত্যুর আগ মুহূর্তেও সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত ছিলেন।  হোসাম শাবাতের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক একটি বিবৃতি দিয়েছে।

তাতে বলা হয়েছে, ‘আল জাজিরা মুবাশ্বেরের সংবাদদাতা হোসাম শাবাতকে হত্যার জন্য আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর তীব্র নিন্দা করেছে। জাবালিয়ায় শাবাতের গাড়ি লক্ষ্য করে বিমান হামলায় নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন।’

গতকাল সোমবার গাজার উত্তরাঞ্চলের বেইত লাহিয়ার পূর্ব অংশে আলজাজিরার সাংবাদিক হোসাম শাবাত নিহত হন। তার গাড়ি লক্ষ্য করে ইসরায়েলি সেনারা হামলা চালায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা।

 

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, আল জাজিরা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এই অপরাধের জন্য দোষীদের বিচারের জন্য সকল আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করেতে  প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমরা। গাজার সকল সাংবাদিকের সঙ্গে অটল সংহতি প্রকাশ করে আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক। এ ছাড়া ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ২০০ জনেরও বেশি সাংবাদিকের হত্যাকারীদের বিচার এবং বিচারের জন্য আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি’

হোসামের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক। ইসরায়েলি দখলদারিত্বের মাধ্যমে সাংবাদিকদের পরিকল্পিত হত্যা, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া এবং এই জঘন্য অপরাধের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য সকল মানবাধিকার ও গণমাধ্যম সংস্থাকে আহ্বান জানিয়েছে।

 

মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আযম বলেন, ২৩ বছর বয়সি শাবাত এর আগেও আরেকটি ইসরাইলি হামলায় আহত হয়েছিলেন। আবু আযম বলেন, ‘কোনো পূর্ব সতর্কীকরণ ছাড়াই ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তার গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।’ 

একই দিন দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় প্যালেস্টাইন টুডে সংবাদপত্রের সাংবাদিক মোহাম্মদ মনসুরও নিহত হন। আবু আযজুম বলেন, ‘মনসুর তার পরিবারের সঙ্গে বাড়িতে ছিলেন এবং সেখানে হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। এই হামলাও কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়া ছিল।

সূত্র : আলজাজিরা

মন্তব্য

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ আরো ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ আরো ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত

ফিলিস্তিনের দক্ষিণ ও মধ্য গাজায় ইসরায়েলি হামলা এবং কামানের আঘাতে সাত শিশুসহ কমপক্ষে ২৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো অনেকেই। 

স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার ভোরে এই হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। খবর আল জাজিরার।

এর আগের দিন গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৫ জন নিহত হয়েছেন, এমনটি জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতিতে মিশর ফিলিস্তিনের এই ভূখণ্ডে যুদ্ধবিরতি ফেরাতে নতুন একটি প্রস্তাব দিয়েছে, যা এখনো ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেনি।

আরো পড়ুন
ভোট না দেওয়ায় ভিজিএফের স্লিপ চাইতে যাওয়া বৃদ্ধাকে মারধর

ভোট না দেওয়ায় ভিজিএফের স্লিপ চাইতে যাওয়া বৃদ্ধাকে মারধর

 

গাজার যুদ্ধবিরতি গত ১৯ জানুয়ারি শুরু হলেও, ১৮ মার্চ (মঙ্গলবার) ইসরায়েল হামলা শুরু করে। এতে এ পর্যন্ত প্রায় ৭০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত ৪০০ জন নারী ও শিশু।

হামাস জানিয়েছে, তাদের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা হামলায় নিহত হয়েছেন।

মন্তব্য

হুতিদের ওপর হামলা পরিকল্পনার গোপন চ্যাটে ঢুকে পড়লেন সাংবাদিক!

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
হুতিদের ওপর হামলা পরিকল্পনার গোপন চ্যাটে ঢুকে পড়লেন সাংবাদিক!
ছবিসূত্র : এএফপি

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন সিগন্যালের গ্রুপ চ্যাটে সামরিক অভিযান নিয়ে আলোচনা করেছে। সেই চ্যাটে ছিলেন এক সাংবাদিকও। সেমবার ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, আধিকারিক বা কর্মকর্তারা মার্কিন সামরিক পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করার গ্রুপ চ্যাটে ভুল করে এক সাংবাদিককে রেখেছিলেন।

সিগন্যাল মেসেজিং গ্রুপে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য ছাড়াও ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।

সেই গ্রুপে দ্য অ্যাটলান্টিক পত্রিকার সাংবাদিক জেফরি গোল্ডবার্গকেও রাখা হয়েছিল। তবে তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন, এই গ্রুপ আসল হতেই পারে না।

তিনি লিখেছেন, ‘আমার সন্দেহ ছিল এই টেক্সট গ্রুপটা আসল হতেই পারে না। কারণ, আমি ভাবতে পারিনি, জাতীয় সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে মার্কিন নেতৃত্ব সিগন্যালের মাধ্যমে কথা বলবেন।

পরবর্তী সামরিক পরিকল্পনার কথা জানাবেন।’

এই গ্রুপ চ্যাটে ইয়েমেনে হুতিদের ওপর বিমান হামলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ফলে বিমান হামলার কয়েক ঘণ্টা আগেই গোল্ডবার্গ জেনে গিয়েছিলেন, এই হামলা হতে চলেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপ সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস হওয়া অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়।

এ ধরনের তথ্য যদি শত্রুদের হাতে পড়ে, তাহলে তা কেবল জীবন ঝুঁকিতে ফেলবে না, বরং জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতিতেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

কী হয়েছিল?

গত ১৫ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েমেনে হুতিদের ওপর আক্রমণ চালায়। তার কয়েক ঘণ্টা আগে গোল্ডবার্গ গ্রুপে মেসেজ দেখেন, বিমান হামলা যাচ্ছে। গোল্ডবার্গের তখনো মনে হয়েছিল, এই গ্রুপটা ভুয়া। কিন্তু যখন ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলার খবর আসলো, তখন তিনি বুঝতে পারেন, এই গ্রুপ ভুয়া নয়।

তিনি লিখেছেন, ‘এরপর আমি সেই গ্রুপ থেকে বেরিয়ে আসি।’ সোমবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদের মুখপাত্র ব্রেন হিউজেস বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘গ্রুপের থ্রেড দেখে মনে হচ্ছে, এটা ঠিক গ্রুপ। আমরা দেখছি, কী করে ওই নম্বরটি অনিচ্ছাকৃতভাবে ঢুকে গেছিল।’

ডেমোক্র্যাটদের ক্ষোভ

এই বিষয়ে ডনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ‘আমি কিছুই জানি না।’ পরে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট জানিয়েছেন, ‘জাতীয় সুরক্ষা টিম এবং জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজের উপর ট্রাম্পের পূর্ণ আস্থা আছে।’

হেগসেথ অবশ্য জানিয়েছেন, কোনো সামরিক পরিকল্পনার কথা গ্রুপে শেয়ার করা হয়নি। তিনি হাওয়াইতে বলেছেন, ‘আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি, কেউই গ্রুপে সামরিক পরিকল্পনার কথা শেযার করেননি।’

হাউসের অন্যতম প্রধান ডেমোক্র্যাট সদস্য হাকিম জেফরিস বলেছেন, ‘কংগ্রেসের উচিত বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা এবং এই ধরনের ঘটনা যেন আর না হয়, তা নিশ্চিত করা।’  

সশস্ত্র বাহিনী সংক্রান্ত কমিটির সদস্য ডেমোক্র্যাট প্যাট রায়ান সামাজিক মাধ্যমে বলেছেন, ‘যদি রিপাবলিকানরা হাউসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা না করেন, তাহলে আমি নিজে থেকে এই আলোচনার উদ্যোগ নেব।’

সেনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন বলেছেন, ‘এটা চরম বেআইনি ও ভয়ংকর ঘটনা। এটা বিশ্বাস করা যায় না। যে কোনো মানুষকে গ্রুপে ঢোকানো হয়েছে। সেই গ্রুপে জাতীয় সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, এটা ভাবা যায় না।’

মন্তব্য

নিউজিল্যান্ডে ৬.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
নিউজিল্যান্ডে ৬.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
প্রতিকী ছবি : এএফপি

প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ নিউজিল্যান্ডে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ভূমিকম্পের জেরে কোনো সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়নি। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) প্রথমে ভূমিকম্পটির মাত্রা ৭.০ নির্ধারণ করলেও পরে তা ৬.৭-এ হ্রাস করে এবং গভীরতা প্রায় ১০ কিলোমিটার বলে জানায়।

অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় আবহাওয়া ব্যুরো জানিয়েছে, মূল ভূখণ্ড, দ্বীপপুঞ্জ বা অঞ্চলগুলোর জন্য কোনও সুনামি হুমকি নেই। এনইএমএ জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং জনগণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে।

আরো পড়ুন
সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে তুরস্কে ১০ সাংবাদিক আটক

সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে তুরস্কে ১০ সাংবাদিক আটক

 


 
জাতীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, সাউথল্যান্ড এবং ফিউরল্যান্ড অঞ্চলের বাসিন্দাদের উপকূল থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ ভূমিকম্পের ফলে সমুদ্রের পানির গতিবেগে পরিবর্তন আসতে পারে।

 

সরকারিভাবে ভূমিকম্প পরিমাপ কেন্দ্র জিওনেট জানিয়েছে, ৪ হাজার ৭০০ জনের বেশি মানুষ ভূমিকম্প অনুভব করেছে। নিউজিল্যান্ডের সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে ফলে সৃষ্ট ঝাঁকুনিতে অনেক মালামাল পড়ে গেছে এবং ভবনগুলো দুলছিল।

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কাঁপুনির ফলে বিভিন্ন স্থানে জিনিসপত্র পড়ে গেছে এবং ভবনগুলো দুলতে দেখা গেছে। জিওনেটের তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটি ৩৩ কিলোমিটার গভীরতায় স্নেয়ার্স দ্বীপপুঞ্জের উত্তর-পশ্চিমে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার দূরে সংঘটিত হয়।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ