ভয়েস অব আমেরিকার ১ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি কর্মীকে শনিবার থেকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এর মাধ্যমে বন্ধ হওয়ার পথে মার্কিন অর্থায়নে চলা প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের আরো দুটি সংবাদমাধ্যমের তহবিলও বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। খবর রয়টার্সের।
ভয়েস অব আমেরিকার ১ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি কর্মীকে শনিবার থেকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এর মাধ্যমে বন্ধ হওয়ার পথে মার্কিন অর্থায়নে চলা প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের আরো দুটি সংবাদমাধ্যমের তহবিলও বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। খবর রয়টার্সের।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত শুক্রবার সরকারি তহবিলে পরিচালিত সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার মূল প্রতিষ্ঠান এবং আরো ছয়টি ফেডারেল সংস্থাকে কর্মী হ্রাস করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, ইমইেলের মাধ্যমে ভয়েস অব আমেরিকা, রেডিও ফ্রি এশিয়া এবং অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের শত শত সাংবাদিকদের বরখাস্তের খবর জানানো হয়েছে। ওই ইমেইলে অফিসে তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার কথা জানানো হয়েছে। এছাড়া তাদের আইডি কার্ড, হাউসের দেওয়া মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য সরঞ্জামাদি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ক্ষমতায় এসে মার্কিন উন্নয়ন সংস্থা এবং শিক্ষা বিভাগের কয়েক হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করার পর গণমাধ্যম কর্মীদের ছাঁটাই করলেন ট্রাম্প। শুক্রবার এক নির্বাহী আদেশে ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়াকে (ইউএসএজিএম) অপ্রয়োজনীয় ফেডারেল আমলাতন্ত্রের অংশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছেন তিনি। যার ফলে কয়েক দশক ধরে চলা গণমাধ্যমগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার হুমকিতে পড়েছে।
ভয়েস অব আমেরিকার পরিচালক মাইকেল আব্রামোভিচস বলেন, তার প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১ হাজার ৩০০ সাংবাদিক, প্রযোজক ও সহযোগীদের প্রায় সবাইকে প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে এক পোস্টে আব্রামোভিচ লেখেন, ‘৮৩ বছরের মধ্যে প্রথমবার বহু ভাষাভাষীর ভয়েস অব আমেরিকা নীরব হয়ে যাচ্ছে, এ জন্য আমি গভীরভাবে ব্যথিত। বিশ্বজুড়ে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াইয়ে এটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছিল।’
নাৎসি প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে প্রচার চালাতে ১৯৪২ সালে ভয়েস অব আমেরিকা প্রতিষ্ঠা করা হয়। এখনো এক সপ্তাহে ভয়েস অব আমেরিকার গ্রাহক বিশ্বের ৩৬ কোটি মানুষ।
একটি গ্রুপ হিসেবে ইউএসএজিএমের কর্মীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার। কংগ্রেসের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে তাদের বাজেট বরাদ্দ ছিল ৮৮ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার।
ভয়েস অব আমেরিকার সাবেক উপস্থাপক ক্যারি লেককে প্রতিষ্ঠানটির নতুন পরিচালক হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তিনি ট্রাম্পের অনুগত হিসেবে পরিচিত।
ট্রাম্প প্রশাসন দাবি, এই কাটছাঁট নিশ্চিত করবে যে করদাতারা আর উগ্রবাদী প্রচারণার শিকার হবেন না।
সম্পর্কিত খবর
জার্মানিতে রবিবার এক ব্যক্তি ট্রামে তার স্ত্রীর ওপর দাহ্য পদার্থ ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে ওই নারী গুরুতরভাবে আহত হন। স্থানীয় পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে।
থুরিঞ্জিয়া রাজ্যের পুলিশ জানিয়েছে, ৪৬ বছর বয়সী ওই নারী যখন জার্মানির গেরা শহরের ট্রামে ছিলেন, তখন তাকে লক্ষ্য করে এই হামলা করা হয়।
ট্রামের চালক অগ্নিনির্বাপক ব্যবহার করে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তবে ওই নারী মারাত্মকভাবে আহত হওয়ায় তাকে হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পুলিশ জানায়, তারা এখন হামলাকারীকে চিহ্নিত করতে ও তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্রিয়ভাবে অনুসন্ধান চালাচ্ছে। হামলাকারী এখনো শনাক্ত হয়নি। তবে তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে খোঁজা হচ্ছে। তারা ৪৬ বছর বয়সী জর্জিয়ান বংশোদ্ভূত ওই হামলাকারীর ছবি প্রকাশ করেছে এবং তিনি হামলার সময় যে পোশাক পরে ছিলেন তার বর্ণনা দিয়েছে।
সূত্র : এএফপি
ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় হুতি বিদ্রোহীদের একাধিক নেতা নিহত হয়েছেন বলে হোয়াইট হাউস রবিবার জানিয়েছে। একই সঙ্গে ইরানকে সতর্ক করা হয়েছে, যাতে তারা এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে সমর্থন দেওয়া ও লোহিত সাগরে চলাচলকারী জাহাজে গোষ্ঠীটির হামলা বন্ধ করে।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজ শনিবারের বিমান হামলা নিয়ে এবিসি নিউজকে বলেন, ‘হামলায় একাধিক হুতি নেতাকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছিল এবং তারা নিহত হয়েছেন।’
এ ছাড়া ফক্স নিউজকে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক শক্তি প্রয়োগ করেছি এবং ইরানকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছি, এবার যথেষ্ট হয়েছে।
ওয়াল্টজ আরো জানান, ‘ইরান যাতে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপের সম্ভাবনা খোলা রয়েছে।’
শনিবারের মার্কিন হামলা ছিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে ক্ষমতায় আসার পর হুতির ওপর প্রথম আঘাত। এতে অন্তত ৩১ জন নিহত ও ১০১ জন আহত হয়েছে বলে হুতির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রবিবার জানিয়েছে। তেহরান সমর্থিত এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী এক দশকের বেশি সময় ধরে ইয়েমেনের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে হুতি লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে অসংখ্য ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। পেন্টাগনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৭৪ বার মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও ১৪৫ বার বাণিজ্যিক জাহাজ আক্রান্ত হয়েছে, যা বিশ্ববাণিজ্যের প্রায় ১২ শতাংশ পরিবহনকারী এই গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক রুটে বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করেছে।
ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফরমে এক পোস্টে শনিবার এই হামলার ঘোষণা দিয়ে হুতি নেতাদের উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
গত মাসে ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে এক চিঠিতে পারমাণবিক আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দেন। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, চুক্তি না হলে বিষয়টি ‘সামরিকভাবে’ সমাধান করা হবে। তেহরান সেই প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে জানায়, ‘হুমকির’ মধ্যে তারা কোনো আলোচনা করবে না।
ওয়াল্টজ এবিসিকে স্পষ্টভাবে বলেন, ‘ইরান কখনো পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে পারবে না।
তিনি আরো বলেন, ‘তারা হয় স্বেচ্ছায় এটি পরিত্যাগ করবে এবং স্বচ্ছভাবে তা প্রমাণ করবে, অথবা অন্য যেকোনো পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে। তবে যেকোনো পরিস্থিতিতেই আমরা এমন এক বিশ্ব চাই না, যেখানে আয়াতুল্লাহদের হাতে পারমাণবিক অস্ত্রের বোতাম থাকবে।’
সূত্র : এএফপি
ভারত সব সময় শান্তি চেয়েছে, কিন্তু পাকিস্তান তার পরিবর্তে ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে গেছে—মার্কিন পডকাস্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ সম্পর্ক নিয়ে এমনটাই বললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একই সঙ্গে সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়ার অভিযোগও তোলেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা রবিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় এই সাক্ষাৎকারটি নেন লেক্স ফ্রিডম্যান।
তবে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাস, পাকিস্তানের জনগণও শান্তির পক্ষে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আশা করি তাদের (পাকিস্তানের) শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং তারা শান্তির পথ বেছে নেবে। আমি বিশ্বাস করি, পাকিস্তানের সাধারণ মানুষও শান্তি চায়।
মোদি আরো জানান, ইসলামাবাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক মসৃণ করতে তার প্রথম উদ্যোগ ছিল শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের সময়। ওই সময় তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তার কথায়, ‘এটি ছিল (সম্পর্ক মসৃণ করার) সদিচ্ছার একটি ইঙ্গিত।
ফ্রিডম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার সময়ে উঠে আসে ১৯৪৭ সালের দেশভাগের প্রসঙ্গও। মোদির বক্তব্য, দেশভাগ একটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক পর্ব ছিল। তবে ভারত দেশভাগকে মেনে নিয়ে এগোতে শুরু করে। কিন্তু পাকিস্তান শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পথ বেছে নেয়নি বলে অভিযোগ তার।
নরেন্দ্র মোদি আরো বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, তারা (পাকিস্তান) নিজেদের মতো থাকবে এবং আমাদেরও নিজেদের মতো থাকতে দেবে। কিন্তু তারা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পথে এগোয়নি। বারবার তারা ভারতের বিরুদ্ধে গিয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধ শুরু করেছে।’
বিশ্বের বেশ কিছু বড় শহর খুব বেশি পানি অথবা পানির অভাবের সঙ্গে লড়াই করছে। তবে পানির কারণে সৃষ্ট সংকট নিরসনে নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ ধীরে ধীরে সুফল বয়ে আনছে।
৮০০ কোটি মানুষের পৃথিবীতে প্রায় অর্ধেক মানুষ বসবাসের জন্য বেছে নেয় শহরকে। এ কারণে গ্রামীণ অঞ্চলের তুলনায় নগরাঞ্চল দ্রুত ‘উত্তপ্ত’ হচ্ছে।
গবেষণায় ১০০টিরও বেশি প্রধান শহর পরীক্ষা করা হয়েছে, যেখানে চার দশক ধরে জলবায়ুর ধরন নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। কায়রো, মাদ্রিদ, হংকং, রিয়াদ ও জেদ্দার মতো অনেক শহর একসময় বন্যার ঝুঁকিতে ছিল। এখন তারাই খরার সঙ্গে লড়াই করছে।
ওয়াটারএইডের বৈশ্বিক আন্তর্জাতিক বিষয়ক পরিচালক ক্যাথেরিন নাইটিঙ্গেল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘এখনকার অবকাঠামো এমন এক সময়ে নকশা ও নির্মাণ করা হয়েছিল, যখন এই শহরগুলো শুষ্ক ছিল। কিন্তু এখন এগুলো বন্যাপ্রবণ শহর।’
ক্রমবর্ধমান বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ২০টি শহরের মধ্যে দুটি ছাড়া বাকি সবই এশিয়ায়।
নাইটিঙ্গেল বলেন, ‘খরা পানির উৎস শুকিয়ে দেয়, অন্যদিকে বন্যা শৌচাগার ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা ধ্বংস করে এবং সুপেয় পানিকে দূষিত করে।’
পাকিস্তানের বৃহত্তম শহর করাচিকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ১০টি শহরের মধ্যে রেখেছে ওয়াটারএইড।