আরো বাড়ল মায়ানমারে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আরো বাড়ল মায়ানমারে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা
ছবিসূত্র : এএফপি

মায়ানমারের ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩ হাজার ৩৫৪ জনে দাঁড়িয়েছে এবং আহত হয়েছে ৪ হাজার ৮৫০ জন। এখনও ২২০ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে আজ শনিবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

বিমসটেক সম্মেলন শেষে সামরিক সরকারের নেতা সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং রাজধানী নেপিদোতে ফিরে এসেছেন। তিনি থাইল্যান্ড, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা এবং ভারতের নেতাদের সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাত করেছেন সেখানে।

মায়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মিন অং হ্লাইং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ডিসেম্বরে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জান্তা সরকারের পরিকল্পনা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। মোদি মায়ানমারের গৃহযুদ্ধের সময় ভূমিকম্প-পরবর্তী যুদ্ধবিরতি স্থায়ী করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন, নির্বাচনগুলো বিশ্বাসযোগ্য হওয়া দরকার। গতকাল শুক্রবার ভারতের একজন পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্রেএ কথা জানান।

২০২১ সালে নোবেল বিজয়ী অং সান সু চির নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে, সামরিক বাহিনী মায়ানমার পরিচালনা করতে লড়াই করছে।

অর্থনীতি এবং স্বাস্থ্যসেবাসহ মৌলিক পরিষেবাগুলো ভেঙে পড়েছে এবং ২৮ মার্চের ভূমিকম্পের ফলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে।

জাতিসংঘ বলছে, অভ্যুত্থানের পর সৃষ্ট গৃহযুদ্ধ ৩০ লাখের বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে। ব্যাপক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে এবং জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন।

জাতিসংঘের সাহায্য প্রধান টম ফ্লেচার শুক্রবার রাতটি ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছে মান্দালয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালেতে কাটিয়েছেন।

তিনি এক্স-এ পোস্ট করে জানিয়েছেন, ‘মানবিক ও সম্প্রদায়গত গোষ্ঠীগুলো সাহস, দক্ষতা এবং দৃঢ়তার সঙ্গে ভূমিকম্পের প্রতিক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিয়েছে।’

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয় শুক্রবার জানিয়েছে, জান্তা ভূমিকম্প-কবলিত এলাকায় সাহায্য সরবরাহ সীমিত করছে, যেখানে সম্প্রদায়গুলো সেনা শাসনকে সমর্থন করেনি।

সূত্র : রয়টার্স

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ধসে পড়ল নাইটক্লাবের ছাদ, নিহত ৯৮

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ধসে পড়ল নাইটক্লাবের ছাদ, নিহত ৯৮
ছবিসূত্র : এএফপি

ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দেশ ডোমিনিকান রিপাবলিকে একটি নাইট ক্লাবের ছাদ ধসে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৯৮ জনের। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার এই দুর্ঘটনা ঘটে। বুধবার ভোরে উদ্ধার অভিযানের প্রধান এই তথ্য জানিয়েছেন।

জরুরি অপারেশন সেন্টারের পরিচালক জুয়ান ম্যানুয়েল মেন্ডেজ বলেছেন, ‘প্রাথমিকভাবে মৃতের সংখ্যা ৯৮ জনে পৌঁছেছে।

এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।’ ঘটনার পরে উদ্ধারকারীরা জীবিতদের খুঁজে বের করার জন্য ছুটে যান। ৩৭০ জনেরও বেশি উদ্ধারকর্মী জীবিতদের উদ্ধারের জন্য কাজ করছেন। কয়েক ডজন অ্যাম্বুলেন্স আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যায়।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৪৪ মিনিটে দুর্ঘটনা যখন ঘটে তখন ক্লাবে ৫০০ থেকে ১ হাজার জন লোক ছিল। ক্লাবটিতে ৭০০ জন বসার এবং প্রায় ১ হাজার জন দাঁড়িয়ে থাকার ক্ষমতা রয়েছে।  নাইট ক্লাবটির ছাদ কীভাবে ধসে পড়ল সেটি এখনো জানা যায়নি।

একটি ভিডিওতে দেখা গেছে একটি ব্যান্ড গান পরিবেশন করছে।

এ সময় স্টেজের কাছ থেকে একজনকে আঙুল দিয়ে দেখান যে ক্লাবের পেছনে কিছু একটা পড়েছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে ছাদে থাকা লাইটগুলো ধসে পড়তে থাকে। এর কয়েক মুহূর্ত পরই পুরো ছাদটি ধসে পড়ে।

দেশটির রাষ্ট্রপতি লুইস আবিনাদারের মতে, মৃতদের মধ্যে মন্টে ক্রিস্টি পৌরসভার গভর্নর নেলসি ক্রুজও ছিলেন। মৃতের সংখ্যা ১৫ জন থেকে শুরু হয়েছিল এবং এরপর তা বাড়তে থাকে।

সন্ধ্যা নাগাদ ৭৯ জনে পৌঁছায় এবং আজ সকালে ৯৮ জনে দাঁড়িয়েছে।

ক্লাবের ছাদের একসময় একটি বড় গর্ত দেখা গেছে বলে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। একটি ক্রেন দিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরানো হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ ডোমিনিকানদের রক্তদানের জন্য আহ্বান জানিয়েছে।

জরুরি অপারেশন সেন্টারের পরিচালক জুয়ান ম্যানুয়েল মেন্ডেজ বলেছেন, ‘যতক্ষণ জীবনের আশা থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সকল কর্তৃপক্ষ এই লোকদের উদ্ধারের জন্য কাজ করবে।’ রাষ্ট্রপতি আবিনাদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন।

সূত্র : এএফপি


 

মন্তব্য

ইসরায়েলি হামলায় জীবন্ত পুড়ে মারা গেলেন ফিলিস্তিনের সাংবাদিক

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ইসরায়েলি হামলায় জীবন্ত পুড়ে মারা গেলেন ফিলিস্তিনের সাংবাদিক
ছবিসূত্র : এক্স থেকে নেওয়া

খান ইউনিসে বসবাসকারী সাংবাদিকদের একটি তাঁবুতে ইসরায়েলি হামলার পর জীবন্ত দগ্ধ হয়ে ফিলিস্তিনি সাংবাদিক আহমেদ মনসুর মারা গেছেন। এ ঘটনায় গাজাবাসী শোক প্রকাশ করেছে।

দুই সন্তানের জনক মনসুর ইসরায়েলি হামলায় নিহত তিনজনের মধ্যে একজন। যাদের মধ্যে সাংবাদিক হিলমি আল-ফাকাওয়ি এবং নাগরিক ইউসুফ আল-খাজিন্দারও ছিলেন।

তাঁবুতে থাকা আরো বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হন। যাদের মধ্যে হাসান ইসলায়েহ, আহমেদ আল-আগা, মোহাম্মদ ফায়েক, আবদুল্লাহ আল-আত্তার, ইহাব আল-বারদিনি, মাহমুদ আওয়াদ, মাজেদ কুদাইহ এবং আলী ইসলায়হ রয়েছেন। তাদের মধ্যেও কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

জীবন্এত পুড়ে যাওয়ার একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

ভিডিওতে স্থানীয় প্যালেস্টাইন টুডে সংবাদ সংস্থার সংবাদদাতাকে গত সোমবার আগুনে পুড়ে যেতে দেখা যায়। তার সহকর্মীরা তাকে বাঁচানোর জন্য মরিয়া চেষ্টা করছে। প্রথমে মনসুরকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তবে ফিলিস্তিনি সংবাদ ওয়েবসাইট আরব৪৮ অনুসারে, গতকাল মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি নাগরিক প্রতিরক্ষা মনসুরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
 

সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফাও জানিয়েছে, মানসুর গতকাল মঙ্গলবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।  মিডল ইস্ট আইয়ের সংবাদদাতা আহমেদ আজিজ হামলার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘তাঁবুতে থাকা মানুষ আহমেদ মনসুরকে আগুন থেকে উদ্ধার করার জন্য মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পারছিলেন না। কারণ তাঁবুতে থাকা স্পঞ্জ, কাঠ এবং নাইলন দ্রুত আগুন ধরে যায়।’

শাত নামে তার একজন সহকর্মী জানান, হঠাৎ প্রচণ্ড বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে চারপাশ।

তাঁবুতে থাকা সকল সাংবাদিকদের ঘুম ভেঙে যায়। তারা ভীত ও বিভ্রান্ত হয়ে তাঁবু ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। শাত মোবাইল হাতে তুলে ধরেন—অভ্যস্তভাবে ভিডিও ধারণের জন্য প্রস্তুত হন। 

হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া সাংবাদিক আবেদ শাত বলেন, ভোর ৩টার দিকে কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই সাংবাদিকরা যেখানে অবস্থান করছিলেন, সেই তাঁবুতে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালায়। শাত বলেন, ‘সাংবাদিকদের জন্য তাঁবুটি সকলের কাছে পরিচিত ছিল। এটা থেকে নিশ্চিত হওয়া যেতে পারে, সাংবাদিকদের ওপর ইচ্ছা করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।’

যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই সাংবাদিকরা হাসপাতাল চত্বরে আশ্রয় নিচ্ছেন, যেখানে অপেক্ষাকৃত ভালো ইন্টারনেট, বিদ্যুৎ ও নিরাপত্তা থাকে। আবেদ শাত বলেন, আমরা এখানেই থাকি, এখানেই ঘুমাই, এখানেই কাজ করি। পরিবারকে এতটা দেখি না, যতটা একে-অপরকে দেখি। আমাদের বন্ধন এখন শুধু কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটা তার চেয়েও গভীর।

হামলা চালানো হয় টিভি চ্যানেল ‘প্যালেস্টাইন টুডে’-র সাংবাদিকদের তাঁবুতে। দূর থেকে শাত ছবি তুলছিলেন, কিন্তু জ্বলন্ত তাঁবুর কাছাকাছি গিয়েই তিনি দেখেন, তার এক সহকর্মী আগুনের মধ্যে পুড়ছেন। ক্যামেরা নামিয়ে রেখে ছুটে যান তাকে বাঁচাতে। শাত বলেন, আগুন ভয়াবহ ছিল। আমি তার পা ধরে টান দিতে চেষ্টা করি, কিন্তু প্যান্ট ছিঁড়ে যায়। এরপর অন্যভাবে চেষ্টা করি, কিন্তু কিছুতেই পারছিলাম না। শেষমেশ আমাকে সরে যেতে হয়। এরপর কিছু মানুষ পানি এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। শাত বলেন, আমি হঠাৎ দুর্বল হয়ে পড়ি, তারপর আর কিছু মনে নেই। জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে ইসরায়েল ২১১ জন ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে হত্যা করেছে। ওয়াটসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, গাজার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ সাংবাদিকদের জন্য ‘সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি।’

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দাবি করেছে, তারা এই হামলা চালিয়েছে হাসান আবদেল ফাত্তাহ মুহাম্মদ ইসলাইহকে লক্ষ্য করে। ইসরায়েলের অভিযোগ, তিনি হামাসের সদস্য, সাংবাদিকের ছদ্মবেশে ছিলেন। কিন্তু সেই দাবি প্রমাণে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

সাংবাদিক ইসলাইহর সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপুল অনুসারী রয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে দক্ষিণ ইসরায়েলের ওপর চালানো হামলার সময় তিনি ঘটনাস্থল থেকে রিপোর্ট করেছিলেন, যার জেরে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাকে বারবার হুমকি দিয়েছ ঘুমন্ত সাংবাদিকদের তাঁবুতে বোমা হামলা চালিয়ে একজনকে ধরার সিদ্ধান্তের পেছনে যুক্তির ব্যাখ্যা দেয়নি ইসরায়েলি বাহিনী।

সূত্র : মিডিল ইষ্ট আই, আলজাজিরা, আরব নিউজ

মন্তব্য

প্রথমবারের মতো ভারত সফরে দুবাইয়ের যুবরাজ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
প্রথমবারের মতো ভারত সফরে দুবাইয়ের যুবরাজ
সংগৃহীত ছবি

প্রথমবারের মতো ভারতে রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়েছেন দুবাইয়ের যুবরাজ শেখ হামদান। আজ মঙ্গলবার তিনি ভারতের দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছেন। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই দিনের এই সফর শেষ হবে ৯ এপ্রিল।

প্রথমদিনই ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন যুবরাজ হামদান। 

এর আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের সঙ্গে দেখা করেন যুবরাজ। এ ছাড়া আজ প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গেও দেখা করার কথা রয়েছে তার। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক কিভাবে জোরদার করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হবে দুই দেশের।

 

খালিজ টাইমস জানায়, দুবাইয়ের যুবরাজ শেখ হামদান বিন মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম ভারতে পৌঁছানোর পর দিল্লি বিমানবন্দরে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। তাকে স্বাগত জানান ভারতের প্রতিমন্ত্রী সুরেশ গোপী। তার সম্মানে বিমানবন্দরে একটি সাংস্কৃতিক পরিবেশনাও করা হয়।

মন্তব্য

জাতিসংঘের শরণার্থী পুনর্বাসন স্থগিত করেছে জার্মানি

ডয়চে ভেলে
ডয়চে ভেলে
শেয়ার
জাতিসংঘের শরণার্থী পুনর্বাসন স্থগিত করেছে জার্মানি
সংগৃহীত ছবি

জাতিসংঘের শরণার্থী পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় নতুন করে কোনো শরণার্থীকে আপাতত গ্রহণ করবে না ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ জার্মানি।

জাতিসংঘের পুনর্বাসন কর্মসূচিটি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে জার্মান সরকার। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এ তথ্য জানিয়েছে জার্মান বার্তাসংস্থা ডিপিএ।

স্থগিতাদেশের কারণ জানতে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে ইউএনএইচসিআরের প্রতিক্রিয়াও জানার চেষ্টা করছে রয়টার্স।

চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি জার্মানিতে অনুষ্ঠিত হয় পার্লামেন্ট নির্বাচন। এর আগে অভিবাসন ছিল দেশটির রাজনীতির সবচেয়ে আলোচিত বিষয়।

তারও আগে জার্মানিতে ঘটে যাওয়া কয়েকটি সহিংস হামলার সঙ্গে অভিযুক্ত হিসেবে উঠে আসে শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের নাম। এর জের ধরে ভোটের মাঠে ভালো ফল করেছে অভিবাসনবিরোধী অতি-ডানপন্থী দল অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি)। সাধারণ নির্বাচনে ভোটের হিসাবে তাদের অবস্থান ছিল দ্বিতীয়।

ভোট শেষ হলেও অভিবাসন এখনো সমানভাবে আলোচিত।

ভোটের হিসাবে তৃতীয় স্থানে থাকা সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটদের নিয়ে জোট সরকার গঠনের আলোচনা করছে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া রক্ষণশীল সিডিইউ/সিএসইউ। সেখানেও অভিবাসন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিবেশী ৯টি দেশের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ শুরু করে জার্মানি। এ বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেই নিয়ন্ত্রণ জারি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানির বিদায়ী সরকার। সিডিইউ/সিএসইউ চায়, নিরাপদ দেশ থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের জার্মানির সীমান্ত থেকেই ফিরিয়ে দিতে।

এ নিয়েও চলছে বিতর্ক।

সরকার গঠনের আলোচনা চূড়ান্ত না হলেও এই দুটি রাজনৈতিক দল কোনো কোনো বিষয়ে একমত হয়েছে। তেমন একটি নথি দেখেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সেই নথি অনুযায়ী, নতুন করে কোনো ধরনের শরণার্থী পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু না করতে সম্মত হয়েছে জার্মানি সম্ভাব্য সরকারের দুই শরিক দল। এ রকম যেসব কর্মসূচিগুলো জার্মানিতে চালু আছে, সেগুলোও যতটা সম্ভব বন্ধ করে দিতেও ঐকমত্যে পৌঁছেছেন দল দুটির শীর্ষ নেতারা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পুনর্বাসন কর্মসূচির অংশ হিসাবে চলতি বছর ছয় হাজার ৫৬০ জন শরণার্থীকে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানি। এই কর্মসূচির আওতায় সাধারণত মিশর, জর্দান, কেনিয়া, লেবানন, পাকিস্তান, লিবিয়াসহ বিভিন্ন দেশের শরণার্থী বা রাষ্ট্রহীন মানুষদের আশ্রয় দেওয়া হয়। আশ্রয় আবেদনের হিসেবে জার্মানি এখন আর ইইউর শীর্ষ দেশ নয়।

আশ্রয় আবেদন কমেছে জার্মানিতে

ইউরোপীয় ইউনিয়নে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে জমা হওয়া আশ্রয় আবেদনের হিসাবেও জার্মানি এখন আর শীর্ষ দেশ নয়। বেশ কয়েক বছর পর এবার জার্মানিকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গেছে ফ্রান্স ও স্পেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি গোপন নথির বরাত দিয়ে সোমবার (৭ এপ্রিল) এ তথ্য জানিয়েছে জার্মান দৈনিক ভেল্ট আম জনটাগ।

এতে বলা হয়েছে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ফ্রান্স এবং স্পেনে আশ্রয় চেয়ে বেশি আবেদন জমা হয়েছে।

ইইউ'র পরিসংখ্যান কার্যালয় ইউরোস্ট্যাটের ফেব্রুয়ারির পরিসংখ্যানেও তেমন আভাস মিলেছে। দেখা গেছে, এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে জার্মানিতে ১২ হাজার ৭৭৫টি নতুন আশ্রয় আবেদন জমা হয়েছিল। সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৬৫টি আবেদন জমা পড়েছে ফ্রান্সে এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৯৭৫টি জমা হয়েছে স্পেনে।

৭ এপ্রিল জার্মানির অভিবাসন ও শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (বিএএমএফ) জানিয়েছে, জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে জমা হওয়া প্রথমবারের মতো আশ্রয়ের আবেদনের সংখ্যা ২০২৪ সালের তুলনায় প্রায় ৪৫ শতাংশ কমেছে। আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে বরাবরের মতোই শীর্ষে রয়েছে সিরিয়া, আফগান ও তুরস্কের নাগরিকরা।

সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, এ বছরের প্রথম তিন মাসে জার্মানিতে অন্তত ৪১ হাজার আশ্রয়ের আবেদন জমা পড়েছে। তবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশগুলোর কোনো তথ্য তারা প্রকাশ করেনি।

বিএএমএফ বলছে, মার্চে ৯ হাজারেরও কম আবেদন জমা পড়েছে। বেশ কয়েক বছর পর এই সংখ্যাটি প্রথমবারের মতো ১০ হাজারের নিচে নেমেছে।

এমনকি গত বছরেও আশ্রয় আবেদনের হিসাবে শীর্ষে ছিল জার্মানি। ২০২৪ সালে দুই লাখ ৫০ হাজার ৬১৫টি আশ্রয় আবেদন জমা পড়েছিল দেশটিতে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা স্পেনে জমা হয়েছিল এক লাখ ৬৬ হাজার ১৭৫টি আবেদন। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ইতালিতে জমা হয়েছিল এক লাখ ৫৮ হাজার ৬০৫টি আবেদন।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ