দারফুর অঞ্চলে লড়াই আরো তীব্র হয়েছে। আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফ জমজম ক্যাম্পে আক্রমণ চালিয়েছে বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে।
সোমবার জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, সুদানের দারফুর অঞ্চলের জমজম শরণার্থী শিবির থেকে অন্তত চার লাখ মানুষ পালাতে বাধ্য হয়েছেন। সুদানে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ঘরবাড়ি ছেড়ে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে তারা ওই ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
অভিযোগ, লড়াইরত আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফ দারফুর দখল নেওয়ার পর ওই ক্যাম্পে হামলা চালায়। ঘটনায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো বেশি। তারপরেই জমজম ক্যাম্প থেকে সকলে পালাতে শুরু করেন।
উল্লেখ্য, গৃহযুদ্ধের পর জমজম ক্যাম্পে সবচেয়ে বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়ে ছিলেন। গতকাল সোমবার জাতিসংঘ জানিয়েছে, জমজম অঞ্চলে গত তিনদিনে অন্তত তিনশ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে অন্তত ১০ জন মানবাধিকার কর্মী আছেন, যারা বিভিন্ন সংস্থার হয়ে শরণার্থীদের সাহায্য করছিলেন।
আরো পড়ুন
ট্রাম্পের নির্দেশ না মানায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুদান স্থগিত
সুদান সম্মেলন
সুদানের এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেই দেশটির ভবিষ্যৎ নিয়ে মঙ্গলবার লন্ডনে আলোচনায় বসছে জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আফ্রিকান ইউনিয়নসহ একাধিক দেশ।
সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক জানিয়েছেন, সুদানে মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সংগঠনকে ১২৫ মিলিয়ন ইউরো সাহায্য দেওয়া হবে। ওই অর্থ শরণার্থীদের খাবার এবং ওষুধ কিনতে ব্যবহার করা হবে।
বেয়ারবক জানিয়েছেন, ‘সুদানে এখন কেউ নিরাপদ নয়। শরণার্থী, শিশু, মানবাধিকার কর্মী, কেউ নয়।’
জাতিসংঘ জানিয়েছে, তাদের হিসেব অনুযায়ী সুদানে এখন পর্যন্ত এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ বাড়ি ছাড়া।
এর মধ্যে ৮০ লাখ মানুষ নিজের দেশেই অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। বাকিরা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। দেশের সেনাবাহিনীর প্রধানের সঙ্গে লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছিলেন আধাসামরিক বাহিনীর প্রধান। সেই লড়াই এখনো অব্যাহত।
আরএসএফ এখন দক্ষিণের শহরগুলো দখল করছে। অন্যদিকে এসএএফ অর্থাৎ, সুদানের সেনাবাহিনী রাজধানী খারতুম দখলে নিয়েছে। প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ, বিমানবন্দর এখন তাদের দখলে।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, যে কোনো দিন দেশজুড়ে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মানুষ শুধুমাত্র ত্রাণের ওপর নির্ভর করে বেঁচে আছে। পাশাপাশি শিশু এবং কিশোরদের ওপর যৌন নিগ্রহের খবরও মিলছে বহু জায়গা থেকে।