সুদানে আধাসামরিক বাহিনীর হামলায় উত্তর দারফুরের অবরুদ্ধ রাজধানী এল-ফাশার এবং নিকটবর্তী দুর্ভিক্ষপীড়িত একটি শিবিরে ৫৭ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। শুক্রবার কর্মীরা এই খবর জানিয়েছেন। সুদানের পশ্চিমাঞ্চল নিয়ন্ত্রণের যুদ্ধ তীব্রতর হয়েছে।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধরত র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব দিক থেকে ভারী কামান, স্নাইপার এবং আত্মঘাতী ড্রোন ব্যবহার করে এল-ফাশারে একটি বড় আক্রমণ শুরু করেছে।
স্থানীয় প্রতিরোধ কমিটি, একটি স্বেচ্ছাসেবক সহায়তা গোষ্ঠী জানিয়েছে, ‘স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা নাগাদ শহরে ৩২ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে চারজন নারী এবং এক থেকে পাঁচ বছর বয়সী ১০ জন শিশু রয়েছে। এ ছাড়া হামলায় কমপক্ষে ১৭ জন আহত হয়েছে। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
’
এর আগে, আরএসএফ যোদ্ধারা এল-ফাশারের আশপাশে জমজম বাস্তুচ্যুত শিবিরে হামলা চালিয়ে ২৫ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে। যার মধ্যে নারী, শিশু এবং বয়স্ক বাসিন্দারাও রয়েছেন বলে স্থানীয় একটি কমিটি জানিয়েছে।
দারফুরে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা একমাত্র রাজ্যের রাজধানী এল-ফাশার। প্রত্যক্ষদর্শীরা ভারী গুলি চালাতে চালাতে আরএসএফের যুদ্ধযান জমজম শিবিরে প্রবেশ করতে দেখেছেন বলে বর্ণনা করেছেন।
বৃহস্পতিবার আরএসএফের আবু শৌক শিবিরে গোলাবর্ষণ করা হয়। সেখানে কমপক্ষে ১৫ জন নিহত এবং ২৫ জন আহত হয় বলে উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন।
তিনজন এল-ফাশার বাসিন্দা এএফপিকে জানিয়েছেন, আরএসএফ শুক্রবার পূর্ব, দক্ষিণ এবং পশ্চিম দিক থেকে ভারী কামান এবং রকেট নিয়ে শহরটিতে আক্রমণ চালিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মধ্য এল-ফাশারে ড্রোন আক্রমণও দেখা গেছে। গত মাসে রাজধানী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর থেকে আধাসামরিক বাহিনী দারফুর জয়ের প্রচেষ্টা জোরদার করেছে।
সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তার সাবেক ডেপুটি আরএসএফের কমান্ডার মোহাম্মদ হামদান দাগালোর মধ্যে যুদ্ধ ২০২৩ সালের এপ্রিলে শুরু হয়েছিল। এই সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং এক কোটি ২০ লাখেরও বেশি লোককে উৎখাত করা হয়েছে। সেনাবাহিনী গত মাসের শেষের দিকে খার্তুম পুনরুদ্ধার করলেও, আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম দেশটি এখনো বিভক্ত।
সেনাবাহিনী পূর্ব এবং উত্তরে কর্তৃত্ব বজায় রেখেছে। অন্যদিকে আরএসএফ দারফুরের বেশির ভাগ অংশ এবং দক্ষিণের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।
সূত্র : এএফপি