<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জনকল্যাণে সরকার নানা ধরনের প্রকল্প নেয়। বিগত সরকারের আমলে এমন অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেসব প্রকল্প বাস্তবায়নের মান ও স্বচ্ছতা নিয়ে রয়েছে বিস্তর প্রশ্ন। প্রশ্ন আছে অনেক প্রকল্পের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও। এমন অভিযোগ আছে যে কেবল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করতে অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বিগত সময়ে। এসব প্রকল্প বাস্তবে কোনো ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে কি না, তা নিয়ে কোনো চিন্তা কখনো কারো ছিল না। লক্ষ্য ছিল একটিই, সরকারের সর্বোচ্চ ব্যক্তিকে খুশি করা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঠিক এ রকমই একটি প্রকল্প হচ্ছে রাজশাহী নগরীর তালাইমারী এলাকায় সরকারি জমিতে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার। কালের কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, প্রকল্পের আওতায় নির্মিত প্রায় ৬৩ কোটি টাকার একটি তিনতলা ভবন অবহেলায় পড়ে আছে। ১২৫ কোটি টাকার প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছিল মূলত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুশি করতে। পাশাপাশি ভবনটি নির্মাণে বাড়তি ব্যয় দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে। প্রকল্পটি হাতে নিয়েছিলেন তৎকালীন রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) চেয়ারম্যান। তিনি আবার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতিও। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ৬২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে চলতি বছরের মার্চে ভবনটির অবকাঠামো নির্মাণের প্রথম ধাপের কাজ শেষ হয়। ভবনটি কী কাজে ব্যবহার করা হবে, তা বলতে পারছে না আরডিএ কর্তৃপক্ষ। প্রকাশিত খবরে আরো বলা হয়েছে, ভবনটির অবকাঠামো নির্মাণের জন্য পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দিতে বাড়তি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছিল বলে শুরুতে অভিযোগ উঠেছিল। এ বিষয়ে ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর কালের কণ্ঠে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছিল। ওই সময় অভিযোগ উঠেছিল, শেখ হাসিনাকে খুশি করার পাশাপাশি এই প্রকল্পের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের ফন্দিই ছিল অন্যতম। সে কারণে পছন্দের ঠিকাদারকে দিয়ে কাজটি করানো হয়। ২০১৮ সালে প্রকল্পটি অনুমোদন হয় একনেকে। অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে, কিন্তু কাজের মাঝপথে এসে প্রকল্পটির নকশায় ব্যাপক পরিবর্তন আনে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। মহানগরীর তালাইমারী মোড়ে এই প্রকল্পের জন্য খরচ ধরা হয়েছিল প্রথমে ৫৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা। পরে সেটির ব্যয় বাড়িয়ে শুধু প্রথম ধাপের (অবকাঠামো নির্মাণ বাবদ) জন্য ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। প্রথমে প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০১৯ সাল পর্যন্ত। পরে সেটি ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়। রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কালের কণ্ঠকে বলেছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রকল্পটিতে কোনো অনিয়ম হয়নি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অবশ্য বিগত সরকারের আমলে ১৫ বছরে দেশে অনেক উন্নয়নকাজ হয়েছে। কিন্তু সেসবের কত শতাংশ নিয়ম মেনে হয়েছে, সেগুলো কতটা টেকসই হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। মূলত উন্নয়নের নামে করা হয়েছে লুটপাট। সম্প্রতি কালের কণ্ঠে প্রকাশিত তিন দিনের ধারাবাহিক প্রতিবেদনে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে নানা লুটপাটের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রকাশিত ওই ধারাবাহিক প্রতিবেদনের একটিতে বলা হয়েছে, অন্তত আটটি প্রকল্পে ব্যয় করা হয়েছে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। প্রকাশিত ধারাবাহিক প্রতিবেদনের দ্বিতীয় পর্বে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে ১৭ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। টিআইবির একটি গবেষণা বলছে, এই অনিয়ম, লুটপাট ও দুর্নীতির অঙ্ক কমবেশি চার লাখ কোটি থেকে সাত লাখ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এসব প্রকল্পে যেমন জনগণের অর্থের অপচয় হয়েছে, তেমনি দুর্নীতিবাজদের সহযোগিতা করা হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদের আইনের আওতায় আনা উচিত। তাঁদের যথোপযুক্ত বিচার হওয়া উচিত।</span></span></span></span></p> <p> </p>