<p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">খুব বেশি তো বয়স হয়নি। এ বছরই পঞ্চাশের ঘর ছুঁয়েছিলেন গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান। একমাত্র ছেলে তাহসিন তাজওয়ারকে তাঁর মতোই গ্র্যান্ডমাস্টার বানানোর স্বপ্ন দেখতেন। কয়েক বছর ধরেই জাতীয় দাবায় বাবা-ছেলে একসঙ্গে খেলছেন। গতকালও তাঁরা এক কক্ষে। জিয়ার প্রতিপক্ষ ছিলেন আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন। খেলার ঘণ্টা দুয়েক পেরিয়েছে তখন। হঠাৎই চেয়ার থেকে মেঝেতে ঢলে পড়েন জিয়া। তখনো কেউ ভাবতে পারেননি এভাবে মৃত্যুর কোলেই ঢলে পড়েছেন তিনি। </span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">দাবা ফেডারেশন থেকে দ্রুত ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসকরা তাঁর জ্ঞান ফেরাতে পারেননি। সতীর্থ দাবাড়ু এনামুল সঙ্গেই ছিলেন। তিনিই জানান, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জিয়া ভাই আর নেই।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবউদ্দিন শামীম জানিয়েছেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হার্ট অ্যাটাক হয়েছে ওর। জানি না জিয়া মনের কোণে নিজেও এমন কিছু টের পেয়েছিল কি না। গতকালই এক সাক্ষাৎকারে দেখলাম, ও বলছিল, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমি এবার চ্যাম্পিয়ন হবই না। নীড় (মনন রেজা) হবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> ছেলেদের জাতীয় দাবার সবচেয়ে বেশিবারের চ্যাম্পিয়ন, দীর্ঘদিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ রেটিংধারী দাবাড়ু, দেশের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়া সত্যিই আর দাবার বোর্ডে মস্তিষ্কের ঘোড়া ছোটাবেন না। নিয়াজ মোরশেদ ছিলেন আদর্শ। কালের কণ্ঠে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তাঁর বাবা পয়গাম উদ্দিন আহমেদ তাঁর মধ্যে গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার বীজটা বুনে দিয়েছিলেন। ছোটবেলায় ছেলের মধ্যে জেদ তৈরি করতে তাঁকে ডাকতেন </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পিঁয়াজ মোরশেদ</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> নামে। সেই জিয়া ঠিকই গ্র্যান্ডমাস্টার হয়ে দেশের মুখ আলো করেন। ছেলে তাহসিনকে গ্র্যান্ডমাস্টার দেখে যাওয়া হলো না শুধু তাঁর।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">”</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এভাবে চলে যাওয়া কে মানতে পারেন। জিয়ার স্ত্রী লাবণ্য স্বামী-ছেলের সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন। তাঁরা যেখানেই খেলতে গেছেন, তিনি সঙ্গে থাকতেন। গতকালও দাবা ফেডারেশনে ছিলেন লাবণ্য। হাসপাতালে পাগলপ্রায় অবস্থায় দেখা গেছে তাঁকে। দাবাড়ুরাও সব খেলা ফেলে হাসপাতালে গেছেন। জাতীয় দাবার দ্বাদশ রাউন্ড চলছিল এদিন। আজই শেষ রাউন্ড হওয়ার কথা। জিয়া দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। শীর্ষে থাকা মননকে তিনিই চাপে রেখেছিলেন। কিন্তু হায়! সেই মননকেই রাজত্ব ছেড়ে দিয়ে দেশের অন্যতম শক্তিশালী এই দাবাড়ু পাড়ি জমালেন না-ফেরার দেশে। একেবারেই হঠাৎ, ক্রীড়াঙ্গনে গতকাল বজ্রপাতের মতো এসেছে খবরটা। জিয়া খেলতে খেলতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এই খবরটুকুর এত কাছেই যে মৃত্যু ওত পেতে ছিল, কে ভাবতে পেরেছিলেন। হাসপাতালে নেওয়ার কিছুক্ষণ পরই পাওয়া যায় তাঁর চলে যাওয়ার খবর।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">১৯৮৮ সালে প্রথম জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হন জিয়া। ১৯৯৯ সালে পান প্রথম জিএম নর্ম। গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব পান ২০০২ সালে। এরপর একে একে আরো তিন গ্র্যান্ডমাস্টার পেয়েছে বাংলাদেশ। তবে পারফরম্যান্সের দিক দিয়ে জিয়া ছিলেন সবচেয়ে এগিয়ে। ২০১৮ সালে জেতেন নিজের ১৪তম শিরোপা। আরো একটা শিরোপার খুব কাছেই ছিলেন। খেলে যেতে পারতেন আরো অনেক দিন। দাবার বোর্ড থেকে হঠাৎই জিয়ার জীবনের ঘোড়া ছুট দিল যে অন্যলোকে।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p> </p>